১৯৯৮ গুয়েতেমালা ছাত্রী গণধর্ষণ

১৯৯৮ সালের ১৬ জানুয়ারি গুয়েতেমালায় শিক্ষা সফরকালে পাঁচজন মার্কিন ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। এই ঘটনা মার্কিন ও গুয়েতেমালান সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, এবং বিদেশ ভ্রমণকালে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার পর্যাপ্ততা নিয়ে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়। ঘটনাটিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা সেন্ট মেরিজ কলেজ অফ মেরিল্যান্ডে অধ্যয়নরত ছিলেন।

পটভূমি

কলেজটি সেসময়ে গুয়েতেমালায় বার্ষিক সফরের আয়োজন করত। ১৭ দিনব্যাপী ওই সফরগুলো শীতকালে পরিচালিত হত এবং এর খরচ কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করত। কলেজটি এর পূর্বে এরকম দুইটি সফরের আয়োজন করেছিল, কিন্তু সেগুলোর কোনোটিতেই কোনো রকম সমস্যা হয় নি। তবে ওই অঞ্চলে নারীদের প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ১৯৯৭ সালের জুলাইয়ে সেখানে একটি বাস হাইজ্যাক হয়। বাসের প্রতিটি যাত্রী লুটপাটের শিকার হন এবং দুইজন মার্কিন নারীসহ পাঁচজন নারীকে ধর্ষণ করা হয়। ১৯৯৭ সালের জুলাই ও আগস্টে অন্যান্য ঘটনায় গুয়েতেমালায় আরো চারজন মার্কিন নারী ধর্ষিত হন।

ঘটনার বিবরণ

গুয়েতেমালায় শিক্ষা সফর শেষে সেন্ট মেরিজ কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি দল গুয়েতেমালা সিটিতে ফিরছিল। দলটিতে মোট ১৬ জন ছিলেন যাদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন শিক্ষার্থী (১২ জন ছাত্রী এবং ১ জন ছাত্র) আর ৩ জন শিক্ষক। ১৯৯৮ সালের ১৬ জানুয়ারি দুপুর ৩:৩০ মিনিটে তাদের বাসটিকে কমপক্ষে চারজন বন্দুকধারী জোরপূর্বক থামায়। বাসটিকে পার্শ্ববর্তী একটি ইক্ষুক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে সেটিকে রাস্তা থেকে দেখা যেত না। বাসের প্রতিটি যাত্রী লুটপাটের শিকার হন, কিন্তু তাদের কাছে আরো বেশি টাকাপয়সা ছিল না বলে বন্দুকধারীরা হতাশ হয়। এরপর তারা ধর্ষণ করার জন্য পাঁচজন মেয়েকে বেছে নেয়। এদের মধ্যে একজন মেয়েকে বাসের মধ্যে তার সহপাঠীদের সামনে ধর্ষণ করা হয়, আর বাকি চার মেয়েকে মাঠের মধ্যে ধর্ষণ করা হয়। প্রতিটি মেয়েকেই বারবার গণধর্ষণ করা হয়। ধর্ষিতাদের বয়স ছিল ১৯ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ধর্ষণের শিকার ছাত্রীরা দলের অন্যান্যদের সঙ্গে ১৯৯৮ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাবর্তন করেন।

বিচার

ধর্ষিতাদের মধ্যে দুইজন ১৯৯৯ সালের জানুয়ারিতে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য গুয়েতেমালায় আসেন। দোষী ব্যক্তিদের মধ্যে ছিল ৩৭ বছর বয়সী শ্রমিক কসবি উরিয়াস, ২৫ বছর বয়সী গাড়িচালক রনি পোলাঙ্কো এবং ২৫ বছর বয়সী একজন হকার। তিনজনকেই ধর্ষণের জন্য ১৮ বছর এবং ডাকাতির জন্য ১০ বছর করে মোট ২৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।