হিদায়েত শেফকাতলি তুকসাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

হিদায়েত শেফকাতলি তুকসাল (জন্ম ১৯৬৩) একজন তুর্কি মানবাধিকার কর্মী, ইসলামী নারীবাদী এবং কলাম লেখক। তিনি মার্ডিন আরতুকলু বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের একজন প্রভাষক।

জীবনী[সম্পাদনা]

হিদায়েত শেফকাতলি তুকসাল ১৯৬৩ সালে বলকান অঞ্চলভুক্ত রাষ্ট্র তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১] ১৯৮০ সালে তিনি আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব অনুষদে ভর্তি হন। তিনি সেখানে পড়াশোনাকালীন সময়ে একটি ধর্মীয় অনুশাসনে যোগ দেন এবং পর্দা করা শুরু করেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি মুসলিম ধর্মতত্ত্বে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[২]

১৯৯৪ সালে তুকসাল ক্যাপিটাল উইমেন্স প্ল্যাটফর্মের (বাস্কেন্ট কাদিন প্ল্যাটফর্ম) সহ-প্রতিষ্ঠাতার ভূমিকায় ছিলেন। এই প্ল্যাটফর্মে যৌনতার ধর্মীয় ভিত্তিতে আপত্তি জানানো হয় এবং ধর্মভীরু মহিলাদের বৈষম্য এবং অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার ব্যাপারে ধর্মনিরপেক্ষতার আলোকে দৃষ্টি-আকর্ষণ করা হয়।[২]

তুকসাল মিডল ইস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেন। মাথার স্কার্ফের কারণে বাধা এবং আক্রমণের সম্মুখীন হওয়ায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হন। সে সময়ে তিনি তার পছন্দসই চাকরি খুঁজে না পাওয়ায় তিনি মা ও বোনদেরকে নিয়ে একটি কাপড়ের দোকান খুলেছিলেন। ডক্টরাল প্রোগ্রামে ভর্তির আগে কিছুদিনের জন্য তুকসাল একটি ইমাম হাতিপ স্কুলে (তুরস্কের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) শিক্ষকতা করেছিলেন।[১] ১৯৯৭ সালের উত্তরাধুনিক অভ্যুত্থান এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির প্রক্রিয়ার পর সামরিক স্মারকলিপির মাধ্যমে তুর্কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাথার স্কার্ফ নিষিদ্ধ করা হয়। তুকসাল এটিকে মহিলাদের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং দেখেন যে, সংশ্লিষ্ট যেসব মহিলা মাথায় স্কার্ফ পরেন তারা এই প্রক্রিয়ার দ্বারা সবচেয়ে বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তুরস্কে কালামবাদ প্রচলিত থাকায় কিছু রক্ষণশীল মুসলিম এবং ইসলামপন্থী পুরুষরা পর্যন্ত ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোতে মহিলাদের মাথায় স্কার্ফ পরা দৃশ্যমান হতে হবে বলে মনে করেন না।[৩]

তুকসাল একজন ধর্মীয় নারীবাদী হিসেবে পরিচিত। তিনি ধর্মীয় গ্রন্থ নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন এবং ইসলামপন্থী যেসব ধারণা নারীদের প্রান্তিকতার দিকে নিয়ে যায় সেগুলোর প্রতিবাদ করেছেন।[১] তিনি ২০০১ সালে হাদিসের লিঙ্গগত পক্ষপাত নিয়ে একটি প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণাপত্র লেখেন। তিনি নারীর অধিকার নিয়ে হাদীসে থাকা পরস্পরবিরোধী দাবিগুলোর সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।[২]

তুকসাল তুরস্কের ইসলামপন্থী নারী আন্দোলনের ইতিহাসও লিখেছেন। তিনি তুরস্কে ইসলামী ও ধর্মনিরপেক্ষ নারীবাদীদের মধ্যে বিভেদ লক্ষ্য করেছেন।[২]

২০১২ এর শুরুতে তিনি তরফ সংবাদপত্রের কলামিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিজীবনে তুকসাল বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জননী।

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

  • Kadin Karsiti Soylemin Islam Gelenegindeki Izdusumleri[৪][৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hurtas, Sibel (মার্চ ২০, ২০১৫)। "Islamic feminist challenges orthodoxy from within"Al-Monitor 
  2. Haynes, Jeffrey (২০০৮)। Development Studies। Polity Press। পৃষ্ঠা 183–184। আইএসবিএন 978-0-7456-3848-5 
  3. Akbulut, Zeynep (২০১৫)। "The Headscarf Ban and Muslim Women's Rights Discourse in Turkey"। Contesting Feminisms: Gender and Islam in Asia। SUNY Press। পৃষ্ঠা 120। আইএসবিএন 978-1-4384-5793-2 
  4. "Kadın Karşıtı Söylemin İslam Geleneğindeki İzdüşümleri"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০১ 
  5. "Kadin Karsiti Soylemin Islam Gelenegindeki Izdusumleri"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০১