স্টিভ আরউইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্টিভ আরউইন
২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া জুয়ে স্টিভ আরউইন
জন্ম
স্টিফেন রবার্ট আরউইন

(১৯৬২-০২-২২)২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২
এসেনডন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু৪ সেপ্টেম্বর ২০০৬(2006-09-04) (বয়স ৪৪)
বাট রিফ, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যুর কারণহৃৎপিণ্ডে আঘাত
জাতীয়তাঅস্ট্রেলীয়
অন্যান্য নাম"দ্য ক্রোকোডাইল হান্টার"
পেশাপ্রকৃতিপ্রেমী
প্রাণীবিসারদ
সংরক্ষণবাদী
টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব
হারপেটোলজিস্ট
কর্মজীবন১৯৯৬-২০০৬
উল্লেখযোগ্য কর্ম
দ্য ক্রোকোডাইল হান্টার
দাম্পত্য সঙ্গীটেরি রেইনেস (বি. ১৯৯২২০০৬)
সন্তানবিন্দি সু (জন্ম: ১৯৯৮)
রবার্ট ক্ল্যারেন্স (জন্ম: ২০০৩)
পিতা-মাতাবব আরউইন
লিন আরউইন
ওয়েবসাইটঅস্ট্রেলিয়া জু

স্টিভেন রবার্ট আরউইন (ইংরেজি: Steve Irwin; ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬২ – ৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৬), একজন অস্ট্রেলীয় প্রকৃতিবাদী, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও টিভি ব্যক্তিত্ত্ব ছিলেন। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ক্রোকোডাইল হান্টার নামের টেলিভিশন প্রামাণ্যচিত্রের জন্য বিখ্যাত। তিনি এবং তার স্ত্রী টেরী আরউইন অস্ট্রেলিয়া জু নামের একটি চিড়িয়াখানার অংশীদার এবং পরিচালনায় ছিলেন, যা তার বাবা-মা কুইন্স ল্যান্ডে স্থাপন করেছিলেন।

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ডুব-সাঁতার দেয়ার সময় একটি স্টিং-রে বার্ব তার বুক ফুটো করে হুল ফোটালে তিনি তৎক্ষণাৎ মারা যান।

শৈশব এবং পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

মায়ের জন্মদিনে[১] মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করা আর উইন শৈশবে বাবা বব আরউইন এবং মা লিনের সাথে কুইন্সল্যান্ডে চলে আসেন। আর উইন তার বাবাকে একজন বণ্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞ বলে অভিহিত করেন যার আগ্রহ ছিল হারপেটোলজি বা চর্মরোগ নিয়ে এবং তার মা ছিলেন বণ্যপ্রাণি পুণর্বাসনকারি। কুইন্সল্যান্ডে আসার পর বব এবং লিন আর উইন একটি সরীসৃপ এবং প্রাণির পার্ক স্থাপন করেন। স্টিভ এখানেই কুমির এবং অন্যান্য সরীসৃপের সান্নিধ্যে বড় হয়ে ওঠেন।

পার্কটির সাথে আরউইন নানারূপে যুক্ত হয়ে ওঠেন; যার মধ্যে প্রাণীদের খাওয়ানো, যত্ন নেওয়া এবং রক্ষণাবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ষষ্ঠ জন্মদিনে তাকে একটি ১২ ফুট লম্বা স্ক্রাব পাইথন উপহার দেয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই বাবার কাছে[২] সরীসৃপ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা আরউইন নয় বছর বয়সে কুমিরের (রক্ষণাবেক্ষণ) শুরু করেন।[৩] সেই বছরই তার বাবার তত্ত্বাবধানে আরউইন প্রথমবার কুমিরের সাথে কুস্তিতে লিপ্ত হন। তিনি ক্যালোউনড্রা স্টেট হাই স্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। দ্রুতই তিনি নর্দার্ন কুইন্সল্যান্ডে চলে আসেন এবং এথানে কুমির শিকারী হয়ে ওঠেন। তিনি জনবসতিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টিকারী কুমিরগুলোকে সরিয়ে আনেন। কুমিরগুলোকে পার্কে নিয়ে যেতে পারার শর্তসাপেক্ষে বিনামূল্যে তিনি এই কাজ করেন। আর উইন পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে কুইন্সল্যান্ড সরকারের ইস্ট কোস্ট ক্রোকোডাইল ম্যানেজমেণ্ট প্রোগ্রামে সেচ্ছাসেবকরূপে অংশগ্রহণ করেন।

ক্যারিয়ার[সম্পাদনা]

সুনাম অর্জন[সম্পাদনা]

আরউইন অস্টেলিয়া জু তে কুমিরকে খাওয়াচ্ছেন।

আরউইন দায়িত্ব নেবার আগ পর্যন্ত পার্কটি একটি পারিবারিক বাণিজ্য ছিল। তিনি পার্কটি চালানোর ভার গ্রহণ করেন যাকে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া জু বলা হয়। ১৯৯২ সালে তিনি সরীসৃপ এবং ওয়াইল্ড লাইফ বিষয়ক এক পর্বের টিভি অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৯১তে পার্কের প্রদর্শনীতে পারফরম্যান্সের সময় তিনি টেরি রাইনসের সাথে পরিচিত হয়। এই জুটি ১৯৯২ সালের জুনে ওরিগনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের মধুচন্দ্রিমায় কুমির ধরার দৃশ্য নিয়ে দি ক্রোকোডাইল হাণ্টার-এর প্রথম পর্ব প্রচারিত হয়; দৃশ্যগুলো ধারণ করেন জন স্টাইনটন। অস্ট্রেলিয়ান টিভির পর্দায় সিরিজটির অভিষেক ঘটে ১৯৯৬ সালে এবং পরের বছরে উত্তর আমেরিকার টেলিভিশনে স্থান দখল করে নেয়। দি ক্রোকোডাইল হাণ্টার যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে সাফল্য অর্জন করে। ১৯৯৮ সালে তিনি প্রযোজক এবং পরিচালক মার্ক স্ট্রিকসনের সাথে কাজ চালিয়ে যান এবং দি টেন ডেডলিয়েস্ট স্নেকস ইন দি ওয়ার্ল্ড অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। ১৯৯৯ সালের মধ্যেই তিনি আমেরিকায় বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং দি টুনাইট শো উইথ জে লেনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। এর মাঝেই দি ক্রোকোডাইল হাণ্টার সিরিজটি ১৩৭ টিরও বেশি দেশে প্রচারিত হতে থাকে যা প্রায় ৫০ কোটি মানুষের কাছে পৌছে। তার উচ্ছসিত এবং উদ্যমী উপস্থাপনা, অস্ট্রেলিয়ান বাচনভঙ্গি, স্বভাবসুলভ খাকি শর্টস এবং ক্যাচফ্রেস ক্রিকি দুনিয়াজুড়ে পরিচিত হয়ে ওঠে।[৪] প্রকৃতির সাথে অসংখ্য মানুষের শখ্য গড়ে তোলার জন্য স্যার ডেভিড এটেনবরা তার তারিফ করেন এবং বলেন সে তাদের শিখিয়েছিল কত অসাধারণ এবং উত্তেজনাকর ছিল এটি (প্রকৃতি), সে ছিল একজন জন্মগত সমন্বয়কারী।"[৫]

চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

২০০১ সালে এডি মারফির চলচ্চিত্র ডক্টর ডুলিটল ২ এ আর উইন একটি ছোট চরিত্রে অংশ নেন। আরউইনের প্রধান চরিত্রে অভিনীত একমাত্র চলচ্চিত্র হল ২০০২ এর দি ক্রোকোডাইল হাণ্টার:কোয়ালিশন কোর্স। চলচ্চিত্রটিতে আরউইন (যিনি নিজের চরিত্রেরই রূপদান করেন এবং অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যে নিজেই অংশ নেন) ভুল করে কিছু সিআইএ এজেণ্টকে পশু চোরাচালানি বলে মনে করেন। তিনি একটি কুমিরকে ধরে নিয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করেন যেটি, তার অগোচরে একটি ট্র্যাকিং ট্রান্সমিটার গিলে ফেলে।চলচ্চিত্রটি কমেডি শাখায় শ্রেষ্ঠ পারিবারিক ফিচার ফিল্ম পুরস্কার জেতে ইয়ং আর্টিস্ট এওয়ার্ডসে। চলচ্চিত্রটি তৈরিতে ব্যয় হয় $১২ মিলিয়ন এবং তা $৩৩ মিলিয়ন আয় করে।[৬] ছবিটির প্রচারের জন্য আরউইন একটি এনিমেটেড শর্টে অংশ নেন যা এনিম্যাক্স এণ্টারটেইনমেণ্ট তৈরি করে ইণ্টারমিক্সের জন্য।[৭]

২০০২ সালে আরউইনরা উইগলসের ভিডিও এবং ডিভিডি উইগলি সাফারিতে অংশ গ্রহণ করেন। এটির মধ্যে আরউইন থিম সং যেমন- ক্রোকোডাইল হাণ্টার, অস্ট্রেলিয়ান জু, স্নেকস এবং উই’র দি ক্রোকোডাইল বার্ড ছিল। ডিভিডির কভারে আর উইনকে বিশেষভাবে দেখানো হয় যা সমগ্র চলচ্চিত্রেও অব্যাহত রাখে। ২০০৩ সালে এক রিপোর্ট অনুসারে আরউইনের একটি টক শোতে অংশ নেবার কথা থাকলেও তা পরে আর তৈরি হয়নি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০০৬ সালে আর উইন এনিমেশন চলচ্চিত্র হ্যাপি ফিটের জন্য কণ্ঠদান করেন, যাতে তার কণ্ঠদানকারি চরিত্রট ছিল একটি এলিফ্যাণ্ট সিল। চলচ্চিত্রটি তৈরি হবার পরবর্তি সময়ে আর উইন মৃত্যুবরণ করেন এবং ছবিটি তার নামে উংসর্গ করা হয়। [৮]

এনিমেল প্ল্যানেট এবং পরবর্তি প্রজেক্টসমূহ[সম্পাদনা]

এনিমেল প্ল্যানেট শেষ পর্ব স্টিভ’স লাস্ট এডভেঞ্চার এর মাধ্যমে দি ক্রোকোডাইল হাণ্টারের সমাপ্তি ঘোষণা করে। তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত শেষ পর্বে হিমালয়, ইয়াঙ্গজে নদী, বর্নিও এবং ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক সহ স্টিভের বিশ্বময় অভিযান তুলে ধরা হয়। আরউইন এনিমেল প্ল্যানেটের তথ্যচিত্র ক্রক ফাইলস, দি ক্রোকোডাইল হাণ্টার ডায়ারিজের মাধ্যমে এগিয়ে চলেন।

২০০৬ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ট্রেলিয়া সপ্তাহ উংযাপনের অংশ হিসেবে আর উইন লস এঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়ার পাউল প্যাভিলিয়ন, ইউসিএলএ তে হাজির হন। “দি টুনাইট শো উইথ জে লেনো”তে আর উইন বলেন যে ডিসকভারি কিডস তার মেয়ে বিন্ডি স্যু আরউইনএর জন্য একট প্রদর্শনী পরিচালনা করবে।[৯] জাংগল গার্ল নামের শোটি দি উইগলার্স চলচ্চিত্র থেকে ছোট হবে বলে পরামর্শ দেয়া হয় যার গল্প ঘিরে থাকবে গান। অস্ট্রেলিয়ান শিশুদের অনুষ্ঠান দি উইগলসের একটি ফিচরদৈর্ঘ্যের পর্ব আর উইনকে উংসর্গ করা হয় এই পর্ব তার স্ত্রী এবং তাকে ব্যাপকভাবে প্রকাশ করা হয়। এই শোতে ক্রোকোডাইল হাণ্টার, বিগ স্টিভ আর উইন অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০০৬ সালে আমেরিকান নেট ওয়ার্ক চ্যানেল দি ট্রাভেল চ্যানেল একটি অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় যাতে আর উইন এবং তার পরিবারের বিশ্বময় যাত্রার অভিজ্ঞতা দেখানো হয়।

মিডিয়া সংশ্লিষ্টতা[সম্পাদনা]

আরউইন বেশকিছু মিডিয়া কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তিনি আগ্রহভরে অস্ট্রেলিয়ান কোয়ারানটাইন এন্ড ইন্সপেকসন সার্ভিসের সাথে যুক্ত হন অস্ট্রেলিয়ার কঠোর কাস্টমস প্রয়োজনীয়তার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে।[১০]

২০০৪ সালে তিনি দি ঘান-এর ব্র্যান্ড এম্বাসেডর নিযুক্ত হন; এটি একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন যা এডিলেইড থেকে মধ্য অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল এলিস স্প্রিংসে যাতায়াত করে। তার সাথে চুক্তির সময় ট্রেন লাইনটি উত্তরাঞ্চলীয় তীরের ডারউইন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিছু সময়ের জন্য টয়োটা তাকে স্পন্সর করে।[১১]

আরউইন কুইন্সল্যান্ডসহ সমগ্র অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন শিল্পের প্রসারে অবদান রাখেন। ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ান জু কুইন্সল্যান্ডের শীর্ষ পর্যটন আকর্ষণ স্থানরূপে নির্বাচিত হয়।[১২] যুক্তরাষ্ট্রে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তার অর্থ দাড়ায় তিনি প্রায়ই সেখানে পর্যটন আকর্ষণরূপে অস্ট্রেলিয়াকে তুলে ধরেন।[১৩]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

সমগ্র বিশ্বের প্রাণী সংরক্ষণ এবং অস্ট্রেলীয় পর্যটনে অবদান রাখার জন্য ২০০১ সালে তাঁকে সেণ্টেনারি মেডেলে ভূষিত করা হয়।[১৪] বছরের সেরা পর্যটন বিশেষজ্ঞ নির্বাচিত হন ২০০৪ সালে।[১৫] একই বছরে তিনি বর্ষসেরা অস্ট্রেলীয় হবার জন্য মনোনীত হন; এই পুরস্কারটি জয় করেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট খেলোয়াড় স্টিভ ওয়াহ। তার মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয় যখন "বেবি বব" ঘটনাটি জনরব তোলে; এতে একটি কুমিরকে খাওয়ানোর সময় স্টিভকে তার বাচ্চা ছেলেকে কোলে করে রাখতে দেখা যায়। ঘটনাটি সেই বছরের জানুয়ারিতে ঘটে।[১৬] মৃত্যুর অল্প তাকে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যলয়ের ইণ্টিগ্রটিভ বায়োলজি বিভাগের একজন সহকারী প্রফেসর করার ঘোষণা করা হয়।[১৭] রুয়ান্ডার সরকার ২০০৭ এর মে মাসে ঘোষণা করে, তারা বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণে স্টিভের অবদান স্মরণে তার নামে একটি বাচ্চা গরিলার নাম রাখবে।[১৮] নেইয়ার বণ্যপ্রাণী স্যাংকচুয়ারির দি ক্রোকোডাইল রিহ্যাবিটেশন এণ্ড রিসার্চ সেণ্টারটিকে (কুমির পূণর্বাসন এবং গবেষণা কেন্দ্র) কেরল সরকার তার নামে নামকরণ করে।[১৯][২০]

এনভায়রনমেণ্টালিজম[সম্পাদনা]

আরউইন একজন আবেগপ্রবণ সংরক্ষণবাদী (কনজারভেসনিস্ট) ছিলেন এবং উপদেশ দেবার চেয়ে তার উত্তেজনাকর অনুভূতি ভাগ করে নেবার মাধ্যমে পরিবেশবাদকে (এনভায়রনমেণ্টালিজম) এগিয়ে নেবার পক্ষে ছিলেন। তিনি বিপন্ন প্রাণী সংরক্ষণ এবং বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে প্রাণীদের আবাস ধ্বংস করা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তিনি সংরক্ষণকে তার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করতেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে একজন ওয়াল্ডলাইফ যোদ্ধা মনে করি। আমার লক্ষ্য বিশ্বের বিপন্ন প্রজাতিসমূহকে রক্ষা করা। আরউইন অস্ট্রেলিয়া, ভানুয়াটু, ফিজি এবং ইউনাইটেড স্টেটসে প্রচুর পরিমাণ জমি কেনেন যেগুলোকে তিনি ন্যাশনাল পার্কের মত বলে অভিহিত করেন। এর মাধ্যমে তিনি মানুষকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে তারা প্রত্যেকেই চাইলে পরিবর্তন আনতে পারে।[২১]

তিনি মানুষকে সুবিবেচিত পর্যটনে আগ্রহী হতে আহ্বান জানান এবং কচ্ছপের খোল ও তিমির স্যুপ না কেনার মাধ্যমে বে-আইনি পশু নিধনকে নিরুৎসাহিত করেন।[২২]

তিনি স্টিভ আর উইন কনসারভেশন ফাউণ্ডেশন প্রতিষ্ঠিত করেন যা পরবর্তিতে ওয়াল্ডলাইফ ওয়ারিওরস ওয়ার্ল্ডওয়াইড নামে রূপান্তরিত হয় এবং একটি স্বাধীন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তার মৃত্যুর আরএসপিসিএ এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তাকে “আধুনিক কালের নুহ বলে আখ্যায়িত করেন এবং ব্রিটিশ প্রকৃতিবাদী ডেভিড বেলেমি তার প্রতিভার প্রশংসা করতে গিয়ে তাকে প্রাকৃতিক ইতিহাসবিদ বলে ভূষিত করেন।[২৩] আর উইন এবং তার বাবা মিলে একটি নতুন প্রজাতির কচ্ছপ আবিষ্কার করেন যেটি এখন তার নাম বহন করেন, এলসেয়া আরউইনি-- আরউইনের কচ্ছপ। এই প্রজাতির কচ্ছপ কুইন্সল্যান্ডের তীরে পাওয়া যায়।[২৪]

অতিরিক্ত চারণভূমি, লবণাক্ততা এবং ক্ষয়করণ নিয়ে সমস্যার উত্তরে আর উইন বলেন, “আমাদের ভূমিতে গরু এত বেশি সময় ধরে আছে যে অস্ট্রেলিয়া এই বড় প্রাণীগুলো পালতে পরিণত হয়ে পড়েছে। সিডনি মর্নিং হেরাল্ড মতবাদ প্রকাশ করে যে তার বার্তাটি সংশয়ের উদ্রেক করে এবং যা দাঁড়ায় "রু এবং কুমির খাওয়া টুরিজমের জন্য খারাপ, এবং সে জন্য অন্যান্য প্রাণী খাওয়ার থেকে বেশি অমানবিক"।[২৫]

টেরির মতে স্যার ডেভিড এটেনবরা ছিলেন আরউইনের প্রেরণা। এটেনবরাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানে টেরি বলেন, যদি এমন একজন লোক থাকে যে সরাসরি আমার স্বামীকে অনুপ্রাণিত করেছে তবে তা সেই ব্যক্তি যাকে আজকে সম্মাননা দেয়া হাচ্ছে। "[২৬]

ফিল্মোগ্রাফি[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

পরিবার[সম্পাদনা]

টেরি

১৯৯২ সালে আর উইন ও টেরি রেইনস বিবহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মতে, এটি ছিল প্রথম দেখায় প্রেম। টেরি সেইসময় বলেন, আমি ভেবেছিলাম তার মত কেউ এই পৃথিবীতে নেই। তাকে বলা যায় টারজান, জীবনের চেয়েও বড় একজন মহানায়ক।"[২৭] তাদের দুটি সন্তান, মেয়ে বিণ্ডি স্যু আর উইন এবং ছেলে রবার্ট ক্ল্যারেনস “বব” আর উইন। বিন্ডি স্যু নাম দেয়া হয় আর উইনের প্রিয় দুটি প্রাণী: বিন্ডি যা একটি নোনা জলের কুমির এবং সুই যা একটি স্ট্যাফোর্ডশায়ার বুল টেরিয়ার যে ২০০৪ সালের মে মাসে মৃত্যুবরণ করে।

টীকা ও তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "CNN.com - Transcripts"transcripts.cnn.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-৩১ 
  2. "Biography: Steve Irwin"The Australian। News Limited। 4 September 2006। ২০০৭-০৫-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. Wulff, Jennifer (September 18, 2006)। "Wild by Nature. (STEVE IRWIN 1962-2006)"। People Weekly। Time, Inc। 66 (12): 60।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. Lee, Sandra (18 June, 2000)। "Wild Thing"USA Weekend Magazine। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Terri Irwin presents award to Attenborough"The Australian। News.com.au। 2006-11-02। ২০০৭-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2006-11-03  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  6. "The Crocodile Hunter:Collision Course"Box Office Mojo। Box Office Mojo, LLC। 
  7. "The Crocodile Hunter"। Animax। ২০০৬-১০-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-১০ 
  8. "Trivia for Happy Feet (2006)"IMDB। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-২৬ 
  9. The Tonight Show with Jay Leno, 13 January 2006.
  10. Willis, Louise (2003-11-04)। "PM - Steve Irwin defends quarantine ad"ABC  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  11. Google cache copy of a Toyota Australia page: Crikey! Steve Irwin loves his Toyotas!
  12. King Murdoch, Anna (10 June 2003)। "He's smart, by crikey"The Age। The Age Company Ltd। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  13. Elliot, Geoff (27 January 2006)। "Keep it simple, mate"। The Australian। News Limited।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)Copy at www.australianmade.com.au ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ আগস্ট ২০০৬ তারিখে
  14. "www.itsanhonour.gov.au"। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০০৭ 
  15. Crocodile Hunter: Croc Hunter Wins Top Export Gong ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে, copy of Sunshine Coast Daily article, originally published 10 December 2004.
  16. "Irwin defends stunt"। Sydney Morning Herald। 2004-01-06। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-04  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  17. "Irwin was set to be academic"। NEWS.com.au। 2006-09-20। ২০০৭-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-20  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  18. "Rwanda to name baby gorilla after Steve Irwin"ABC Online। মে ৮, ২০০৭। ২০০৭-০৫-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৭ 
  19. "Kerala crocodile park named after Irwin"NDTV। মে ৮, ২০০৭। মে ১৯, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৭ 
  20. "Thiruvananthapurams memorial to Crocodile Hunter"। 
  21. Denton, Andrew (2003-10-06)। "ENOUGH ROPE with Andrew Denton - episode 30: Steve Irwin"ABC। ২০০৬-০৭-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  22. "Death of the crocodile hunter"। The First Post। September 4 2006। ২০০৬-১০-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-10  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  23. Tait, Paul (2006-09-04)। "Australia stunned by death of "modern-day Noah""Reuters.com। Reuters। ২০০৮-০২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  24. "Elseya irwini"Australian Faunal Directory। Department of the Environment and Heritage, Commonwealth of Australia।  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  25. Robson, Frank (First published April 2002, republished 2006-09-04)। "Crikey, it's raw Stevo!"Good Weekend। Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ 2006-09-05  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  26. "Wildlife legend honoured"ITN News। ITN। 2006-11-01। সংগ্রহের তারিখ 2006-11-01  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  27. "Reptile Romance"Who Magazine। Time Inc। 2002-11-02। ২০০৭-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |accessyear= উপেক্ষা করা হয়েছে (|access-date= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |accessmonthday= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]