সুধাংশুবালা হাজরা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুধাংশুবালা হাজরা
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাআইনজীবী, শিক্ষাবিদ
পরিচিতির কারণভারতে আইনজীবী হিসাবে নথিভুক্ত করতে মহিলাদের অধিকারের জন্য লড়াই
উল্লেখযোগ্য কর্ম
ওম্যান অ্যাট ল (স্মৃতিকথা)
পিতা-মাতাঅম্বিকা চরণ হাজরা (পিতা)
পরিবারশৈলবালা দাস (বোন)

সুধাংশুবালা হাজরা ছিলেন একজন ভারতীয় আইনজীবী, যিনি ভারতীয় নারীদের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে সক্ষম করার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মামলা লড়েছিলেন এবং প্রচারাভিযান চালিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেতা মধুসূধন দাসের দত্তক কন্যা এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ শৈলাবালা দাসের বোন।

জীবন[সম্পাদনা]

সুধাংশুবালা হাজরার বাবা-মা ছিলেন বাঙালি খ্রিস্টান। তাঁর জন্মদাতা পিতা অম্বিকা চরণ হাজরা ছিলেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেতা মধুসূদন দাসের বন্ধু। অম্বিকা চরণ হাজরার মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা সুধাংশুবালা এবং শৈলাবালাকে মধুসূদন দাস দত্তক নেন।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সুধাংশুবালা হাজরা প্রাথমিকভাবে একজন শিক্ষক হিসাবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, তিনি কটকের রাভেনশ গার্লস স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হয়েছিলেন। এইসঙ্গে তিনি আইনের ডিগ্রি অর্জন করার জন্য সান্ধ্যকালীন ক্লাসে ভর্তি হন।[২] ১৯১৭ সালে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের স্নাতক পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন করেছিলেন। এর আগে রেজিনা গুহ এবং হান্না সেনকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁরা আইনে স্নাতক অর্জন করেছিলেন। তিনি কলকাতায় পড়াশোনা করেননি বলে তাঁকে এটি করার অনুমতি দেওয়া হয়নি, এবং তাঁর আবেদনটি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দিতে অস্বীকার করেছিল। ১৯১৯ সালে, তাঁকে শেষ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয় এবং তিনি ১৯২০ সালে যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।[২]

১৯২১ সালে, সুধাংশুবালা হাজরা লিগ্যাল প্র্যাকটিশনারস অ্যাক্ট ১৮৭৯ -এর অধীনে আইনজীবী হিসাবে নথিভুক্ত হওয়ার অনুমতি চেয়ে পাটনা হাইকোর্টে একটি আবেদন দাখিল করেন। কলকাতা হাইকোর্টে অনুরূপ ভিত্তির রেজিনা গুহের দায়ের করা আগের একটি আবেদন ব্যর্থ হয়েছিল। এদিকে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট কর্নেলিয়া শোরাবজিকে আইনজীবী হিসেবে নাম নথিভুক্ত করার অনুমতি দিয়ে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছিল। সুধাংশুবালা হাজরা কর্নেলিয়া শোরাবজির উদাহরণ তুলে ধরেন, সেইসাথে সম্প্রতি প্রণীত ব্রিটিশ সেক্স ডিসকোয়ালিফিকেশন (রিমুভাল) অ্যাক্ট ১৯১৯-এ যাতে তাঁকে নথিভুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয় আদালতে তার দরখাস্ত করেন। যাইহোক, পাটনা হাইকোর্ট ইন রে মিস সুধাংশু বালা হাজরা (মিস সুধাংশু বালা হাজরার জবাবে) রায় দেয় যে তারা কলকাতা হাইকোর্টের যুক্তির দ্বারা আবদ্ধ এবং আইন অনুশীলনকারী আইনে 'ব্যক্তি' শব্দটিতে "মহিলা" শব্দটি অন্তর্ভুক্ত নেই। তারা সেই অনুযায়ী তাঁকে নথিবদ্ধ হতে বাধা দেয়।[২][৩][৪]

সুধাংশুবালা হাজরার বোন শৈলাবালা দাস ও বাবা মধুসূধন দাস এবং আইনজীবী ও লেখক, হরি সিং গৌর তাঁকে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা মহিলাদের আইনজীবী হিসাবে নথিভুক্ত করার অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি প্রচারাভিযান আরম্ভ করেন, যার শুরু হয়েছিল প্রিভি কাউন্সিলের কাছে একটি সফল আবেদনের মাধ্যমে।[২] ১৯২৩ সালে, লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার (মহিলা) আইন পাস হয় এবং সুধাংশুবালা হাজরা পাটনায় একজন আইনজীবী হিসাবে নথিভুক্ত হন।[২] তিনি পরে তাঁর জীবনের একটি স্মৃতিকথা প্রকাশ করেন, যার নাম ওম্যান অ্যাট ল[৫]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Chand, Somarani (ফেব্রু–মার্চ ২০১৬)। "Madhusudan Das and Women Uplift" (পিডিএফ): 42–47। 
  2. "The Indian Women Who Fought Their Way Into the Legal Profession"The Wire। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০৪ 
  3. Mishra, Saurabh Kumar (২০১৫-১২-১৫)। "Women in Indian Courts of Law: A Study of Women Legal Professionals in the District Court of Lucknow, Uttar Pradesh, India" (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1647-0737ডিওআই:10.4000/eces.1976অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. Mossman, MaryJane (২০২০-০৬-০৬)। "Cornelia Sorabji (1866–1954): a pioneer woman lawyer in Britain and India": 737–747। আইএসএসএন 0961-2025ডিওআই:10.1080/09612025.2019.1702791 
  5. जैन, Arvind Jain अरविंद (২০১৯-০৬-১২)। "No place for women in temples of justice"Forward Press (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০৪