সাজিটা (জ্যামিতি)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বৃত্তচাপের অভ্যন্তরীণ লাল রেখাংশটিই সংশ্লিষ্ট বৃত্তচাপের সাজিটা

জ্যামিতিতে যে কোন বৃত্তচাপের কেন্দ্র থেকে এর ভিত্তির দূরত্বকে[১] সাজিটা (sagitta বা sag[২]) বলা হয়। এই শব্দটি স্থাপত্যবিদ্যায় নির্দিষ্ট উচ্চতা বা দূরত্বে স্প্যানিংয়ের [৩] প্রয়োজনে বৃত্তচাপের হিসাব কার্যে ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আলোক বিজ্ঞানে গোলীয় দর্পণ ও লেন্সের গভীরতা নির্দেশ করতেও এর প্রয়োগ করা। শব্দটি সরাসরি ল্যাটিন থেকে এসেছে যার অর্থ শর বা তীর।

সূত্র[সম্পাদনা]

ধরাযাক, কোন বৃত্তচাপের গভীরতা বা উচ্চতা , বৃত্তচাপের বা সংশ্লিষ্ট বৃত্তের ব্যাসার্ধ এবং বৃত্তচাপের প্রান্তবিন্দু দুটিকে সংযোগকারী[৪] রেখা তথা জ্যা এর অর্ধাংশের দৈর্ঘ্য

এখন, একটি সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণ সংলগ্ন দুই বাহু এবং ঐ ত্রিভুজের অতিভূজ হওয়ায় পিথাগোরাসের উপপাদ্য হতে পাই—

এই সমীকরণকে পুনর্বিন্যাস করে নিম্নোক্ত সমীকরণ তিনটি পাওয়া যাবে—

or

এছাড়াও ভারসাইন ফাংশন থেকেও সাজিটার পরিমাপ করা যায়। যেমন—একক বৃত্তের ক্ষেত্রে বৃত্তচাপের স্প্যান কোণ Δ = 2θ হলে এবং বৃত্তচাপটি ভারসাইনের অনুরূপ হলে সাজিটার পরিমাপ হবে—

আসন্ন মান[সম্পাদনা]

সাজিটার দৈর্ঘ্য ব্যাসার্ধের তুলনায় ক্ষুদ্র হলে নিচের সূত্র থেকে এর আসন্ন মান পাওয়া যায়:

.[৫]

বিপরীতক্রমে, সাজিটা ছোট হলে এবং সাজিটা, ব্যাসার্ধ ও অর্ধ-জ্যা এর দৈর্ঘ্য জানা থাকলে বৃত্তচাপ-দৈর্ঘ্য এর আসন্ন মান নির্ণয়ে নিম্নোক্ত সূত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে—


এই সূত্রটি চিনা গণিতবিদ শেন কুওর জানা ছিল। দুই শতাব্দী পরে গুও শৌজিং চাপ-দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাজিটার সাথে সম্পর্কযুক্ত আরো নিখুঁত একটি সূত্রের[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] উন্নয়ন ঘটান।[৬]

প্রয়োগ[সম্পাদনা]

বাঁকা-চ্যাপ্টা কাঠামো যেমন— বাঁকা দেয়াল, বৃত্তচাপ আকৃতির ছাদ ও সেতু নির্মাণসহ অন্যান্য অসংখ্য কাজে স্থপতি, প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারেরা এই সমীকরণসমূহ প্রয়োগ করেন।

এছাড়া পদার্থবিজ্ঞানে ত্বরিত কণার বক্রতার ব্যাসার্ধ নির্ণয়ে জ্যা-দৈর্ঘ্যসহ সাজিটাও ব্যবহার করা হয়। বিশেষকরে, বুদবুদ চেম্বার পরীক্ষণে ক্ষয় কণাসমূহের ভরবেগ নির্ণয়ে এটা ব্যবহৃত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Geometry - Plane, Solid & Analytic Problem Solver, page: 359. Authors: Research & Education Association Editors, Ernest Woodward; Publisher: Research & Education Association (REA), 2012. ISBN 978-0-87891-510-1.
  2. Shaneyfelt, Ted V.। "德博士的 Notes About Circles, ज्य, & कोज्य: What in the world is a hacovercosine?"। Hilo, Hawaii: University of Hawaii। ২০১৫-০৯-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০৮ 
  3. সেতু, তোরণ ইত্যাদি গোলীয় কাঠামোয় একদিক থেকে আরেক দিকে প্রসারণকে স্প্যানিং বলা হয়।
  4. বৃত্তচাপের প্রান্তদ্বয়কে পরস্পরের দিকে প্রসারণকে স্প্যানিং বলে। স্প্যানিংয়ে উৎপন্ন রেখা বৃত্তচাপের ভিত্তি দিয়ে গমন করে অর্থাৎ স্প্যানিংয়ের ফলে বৃত্তচাপের ভিত্তি বৃত্তচাপটির প্রান্তবিন্দু দুটির দিকে সম্প্রসারিত হয়।
  5. Woodward, Ernest (ডিসেম্বর ১৯৭৮)। Geometry - Plane, Solid & Analytic Problem Solver। Problem Solvers Solution Guides। Research & Education Association (REA)। পৃষ্ঠা 359। আইএসবিএন 978-0-87891-510-1 
  6. Needham, Noel Joseph Terence Montgomery (১৯৫৯)। Science and Civilisation in China: Mathematics and the Sciences of the Heavens and the Earth3Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 9780521058018 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]