সত্যনারায়ণ পাঁচালী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সত্যনারায়ণ পাঁচালী বা (সত্যনারায়ণের বা সত্যপীরের পাঁচালী) অবিভক্ত বাংলায় সপ্তদশ শতকের শেষ থেকে রচনা শুরু হয়। 'সত্যপীর' হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষের ধর্মবিশ্বাস থেকে উদ্ভূত। এই পাঁচালীতে প্রধানত দুটি উপাখ্যান থাকে। একটিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণের দুঃখে দয়ার্দ্র হয়ে ফকিরের বেশে ঈশ্বর তথা নারায়ণ দেখা দেন এবং সিন্নি বা সির্ণি দিয়ে পূজার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পালনের ফলে দরিদ্র ব্রাহ্মণ ধনী হয়ে যান। অন্য উপাখ্যানে আছে, এক সওদাগর সত্যনারায়ণের আশীর্বাদে কন্যা লাভ করেন, কিন্তু সত্যনারায়ণের পূজা না করার কারণে নানাভাবে বিপদগ্রস্ত হন এবং শেষ পর্যন্ত সত্যনারায়ণের পূজা করায় সমস্ত বিপদ হতে মুক্তি পান এবং সেই সঙ্গে বিপুল ঐশ্বর্য তথা ধন-সম্পত্তি লাভ করেন। [১]

প্রাচীন পাঁচালীকারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন - ভৈরব ঘটক, ঘনরাম চক্রবর্তী, রামেশ্বর চক্রবর্তী, ফকিররাম দাস প্রমুখেরা। মধ্যযুগের সর্বশেষ কবি, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অগ্রদূত ভারতচন্দ্র রায় (১৭১২-১৭৬৯) এর প্রথম কাব্য ছিল সত্যনারায়ণের সম্মানে রচিত পাঁচালী। তিনি ১৭৩৭ খ্রিস্টাব্দে মাত্র পনেরো বৎসর বয়সে রামচন্দ্র মুন্সী পরিবার আয়োজিত সত্যনারায়ণের উৎসব উপলক্ষে তিনি পাঁচালিটি রচনা করেন। এছাড়াও আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ সম্পাদিত সত্যনারায়ণের পুঁথি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. শিশির কুমার দাশ (২০১৯)। সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী। সাহিত্য সংসদ, কলকাতা। পৃষ্ঠা ২১৮। আইএসবিএন 978-81-7955-007-9