রাইটিং কাস্ট রাইটিং জেন্ডার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রাইটিং কাস্ট রাইটিং জেন্ডার: নেরেটিং দলিত উওমেনস তেস্তিমনিওস এই বইটি বিখ্যাত দলিত স্ত্রীবাদী সমাজতত্ববিদ শর্মিলা রেগে র ২০০৬ এ লেখা বই।

লেখিকা সম্পর্কে[সম্পাদনা]

ডা: শর্মিলা রেগেকে ভারতের অগ্রগণ্য নারীবাদীদের মধ্যে একজন মনে করা হয়। দলিত নারীবাদী দৃষ্টিকোণ চিন্তাধারা প্রথম ওনার লেখাতেই পাওয়া যায়। ভারতীয় নারীবাদী আলোচনায় তিনি জাতি, শ্রেণী , ধর্ম, যৌনতার নতুন দিশা খুলে দিয়েছিলেন। শিক্ষা জগতে তার অবদান, দলিত ছাত্রদের জন্যে তার আজীবন লড়াই, শিক্ষাক্ষেত্রে সংশোধনের প্রতি তার দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে।

উনার লেখা বইগুলি হলো:

  • সোসিওলোজি অফ জেন্ডার (২০০৪)
  • রাইটিং কাস্ট রাইটিং জেন্ডার (২০০৬) [১]
  • এগেইনস্ট দা ম্যাডনেস অফ মনু (২০১৩)

বইটির পটভূমি[সম্পাদনা]

এই বইটির ভূমিকায় লেখিকা বইটি লেখার পার্শ্বভূমি উল্লেখ করেন। সাম্প্রতিক কালে দলিত সাহিত্য অনুবাদ করার আগ্রহ দেখে মনে হয় যে জাতি অভ্যাসে একটা বড় বদল হতে চলেছে। সমাজবিজ্ঞান যখন জাতি নিয়ে পড়াশোনা করেছে তখন অব্রাহ্মণি দৃষ্টিকোণকে অন্তর্ভুক্ত করা হইনি। জাতি কে ধর্মীয় আচার বিচার এবং Sanskritization এর মধ্যে দিয়েই বোঝার চেষ্টা হয়েছে শুধু।

সাম্প্রতিক কালে ৩ টি ঘটনা জাতি অভ্যাসের শিক্ষাবিদদের জাতি কে নতুন করে জাতি নিয়ে ভাবতে, বুঝতে , নতুন করে অধ্যয়ন করতে বাধ্য করেছে।

  1. ৯০ এর দশকে মন্ডল কমিশন যখন ৫০% জাতি আধারিত সংরক্ষণ সুপারিশ করলো তখন যে সারা দেশে যে প্রতিবাদ হয়েছিল, সেটা নতুন করে প্রমাণ করলো যে "যোগ্যতা" র বা নাগরিক অধিকার এর নামে জাতি ভেদাভেদ ভিষন ভাবে পালন করা হছে।
  1. দলিত স্ত্রীবাদীরা ওই একই সময় "লিঙ্গ মুক্ত জাতি অভ্যাস" এবং "জাতি মুক্ত লিঙ্গ অভ্যাস" কে কঠোর বিরোধ করলেন।
  1. বর্ণবাদের বিরুদ্ধে হওয়া ২০০১ এর ডারবান সম্মেলনে দলিত অধিকার মানবাধিকার এমন দাবি ওঠা।

ভারতীয় উওমেনস স্টাডিস Women's studies লিঙ্গ কে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ এর অঙ্গ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে লড়াই করেছে এত বছর। কিন্তু তারাও জাতি কে বোঝার জন্যে চিরচারিত কাঠাম ব্যবহার করেছেন। উওমেনস স্টাডিস Women's studies এর শিক্ষাবিদরা দলিত স্ত্রীবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি কে নিজে দের গবেষণা/ পড়াশোনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি। তারা এক পাপবোধের মধ্যে আটকে গেছেন যে তারা নিজেরাও জাতিবাদী। তাদের ধারণা যে জাতি সংক্রান্ত সমস্যা দলিত স্ত্রী দের একার সমস্যা। এতে জাতি এবং লিঙ্গ ইতিহাসের জটিল সংযোগ হারিয়ে যায়। অন্যদিকে কিছু দলিত স্ত্রীরা মনে করেন যে উচ্চ জাতির মহিলা মানেই ব্রাহ্মণী মানসিকতা হবে। তারা ব্রাহ্মণ এবং ব্রাহ্মণী মানসিকতার মধ্যে পার্থ্যক দেখেন না।

লেখিকার মতে যে সব মহিলা জাতি ব্যবস্থার সুযোগ, সুবিধা, ক্ষমতা ভোগ করেন, তারা আত্মদর্শন করলে বুঝতে পারবেন যে মহিলা জাতির মধ্যেও কত বিভিন্নতা রয়েছে। আমাদের জাত, বর্গ, ইত্যাদি অবস্থান আমাদের মহিলা হিসেবে সামাজিক মর্যাদা নির্ধারণ করে। জাতি এবং লিঙ্গকে আরো ভালো ভাবে বোঝার জন্যে জাতি বিরুদ্ধ আন্দোলনের সার্বজনীন স্তরের অভিজ্ঞতা এবং দলিত দের ব্যক্তিগত বৈষ্যম্যের অভিজ্ঞতা কে একত্র আনতে হবে।

এই প্রেক্ষাপটে লেখিকা কিছু দলিত নারীর জাত কে নিয়ে অভিজ্ঞতা কে অনুবাদ করার চেষ্টা করেছেন। অনুবাদ এর এখানে দুরকম অর্থ হয়। এক, বই এ যে দলিত স্ত্রী জীবন কথা গুলি আছে, সেগুলি আসলে মারাঠি ভাষায় লেখা। অনুবাদের প্রথম অর্থ হলো মারাঠি থেকে ইংরেজি তে অনুবাদ করা। কিন্তু অনুবাদের দ্বিতীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থ হলো তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা গুলো কে কি করে জাতি স্টাডিস এবং লিঙ্গ স্টাডিস এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে এই দুই শিক্ষাক্ষেত্র কে আরো সমৃদ্ধ কি করে করা যায়।

বইটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ[সম্পাদনা]

শর্মিলা রেগে এই বইটির শুরুতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্যব করেন যে দলিত আত্বকথা বা জীবন কথা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হয়না। সেটি তেস্তিমনীয় Testimonio অথবা Testimony হয়ে দাড়ায়। Testimonio একটি স্প্যানিশ শব্দ যার মানে Testimony জীবন কথাকে Testimonio বলার যুক্তি তিনি ব্যাখা করেছেন। Testimonio কারণ এই আত্বকথাগুলি ব্যক্তিসত্বার ঊর্ধ্বে গিয়ে ভুলে যাওয়া জাতি শোষনের সংগ্রাম এবং সেটা প্রতিরোধ তুলে ধরে।

দলিত নারীদের আত্বকথা যখন আমরা Testimonio হিসেবে পড়ি, তখন আরেকটি প্রশ্ন করা খুব জরুরি হয়ে ওঠে। প্রথমত, দলিত মহিলারা কি অভিজ্ঞতাকে অন্য ভাবে মনে রাখেন? দ্বিতীয়ত যদি তারা অন্য ভাবে মনে রাখেন এবং লেখেন, তাহলে সেটা কি ভাবে এবং কততা আলাদা মূলধারার আত্বকথন গুলি থেকে? এই প্রশ্নগুলিকে সামনে রেখে এ বইটির সারমর্ম বোঝা যায়।

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Rege, S. (2006). Writing Caste,Writing Gender:Narrating Dalit Women's Testimonios. Zubaan.