মেস আইনাক

স্থানাঙ্ক: ৩৪°২৪′ উত্তর ৬৯°২২′ পূর্ব / ৩৪.৪০০° উত্তর ৬৯.৩৬৭° পূর্ব / 34.400; 69.367
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেস আইনাক
مس عينک
মেস আইনাকে বৌদ্ধমঠের ধ্বংসাবশেষ
মেস আইনাকে বৌদ্ধমঠের ধ্বংসাবশেষ
মেস আইনাক আফগানিস্তান-এ অবস্থিত
মেস আইনাক
মেস আইনাক
Mes Aynak
স্থানাঙ্ক: ৩৪°২৪′ উত্তর ৬৯°২২′ পূর্ব / ৩৪.৪০০° উত্তর ৬৯.৩৬৭° পূর্ব / 34.400; 69.367
Countryআফগানিস্তান
Provinceলোগার প্রদেশ
জেলামুহম্মদ আঘা জেলা
উচ্চতা২,১২০ মিটার (৬,৯৫৮ ফুট)

মেস আইনাক (পশতু/ফার্সি: مس عينکযার অর্থ "তামার ছোট উৎস" বলা হয়, এছাড়াও মিস আইনাক বা মিস-ই- আইনাক আফগানিস্তানের, কাবুলের  ৪০ কিমি (২৫ মা) দক্ষিণ-পূর্বে লোগার প্রদেশের অনুর্বর অঞ্চলে অবস্থিত একটি স্থান।  মেস আয়নাক আফগানিস্তানের বৃহত্তম তামার মজুদ এবং সেইসাথে সেখানে ৪০০ বুদ্ধ মূর্তি,স্তূপ ও একটি ৪০ হেক্টর (১০০ একর) আশ্রম কমপ্লেক্স সহ একটি প্রাচীন বসতির অবশিষ্টাংশ রয়েছে। পুরাতত্ত্ববিদরা একটি প্রাচীন তামার খনি সহ বৌদ্ধ স্তরের নিচে একটি ৫০০০ বছরের পুরোনো ব্রোঞ্জ যুগ স্থলের অবশিষ্টাংশ খুঁজে পেতে শুরু করেছেন।

বু্ত্পত্তি[সম্পাদনা]

মেস আইনাক (مس عينک) শব্দটির আক্ষরিক অর্থ "তামার সামান্য উৎস"; "মিস" (مس) হল "তামা", যেখন "আইনাক" (عينک) আইন (عين), যার মানে "উৎস" এর ক্ষুদাতিক্ষুদ্র আকার।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মেস আইনাক নামটির মানে যা-সেই তামার উপস্থিতি, ১৯৭৩-৭৪ সালে রুশ ও আফগান ভূতত্ত্ববিদদের অনুসন্ধানের পর সেই সময় থেকে অল্প পরিচিত হয় এবং এই স্থানটির প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ সম্পর্কে জানা যায়।[১] বহুপুরানো এই বৌদ্ধ পুরানির্দশন কুষাণ যুগের সময়ের যদিও তা ধীরে ধীরে তাং রাজবংশের এবং উইঘুরের প্রভাবকে তুলে ধরে। মেস আইনাক পঞ্চম এবং সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে তার সমৃদ্ধির শীর্ষে ছিল। অষ্টম শতাব্দীতে ধীরে ধীরে পতন শুরু হয় এবং পরিশেষে ২০০ বছর পরে পরিত্যক্ত হয়।[২]

খনন ইজারা[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের নভেম্বরে চীনা মেটালারজিকাল গ্রুপকে(এমসিসি) ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ৩০ বছরের জন্য  তামার খনির ইজারা দেওয়া হয়।  আফগানিস্তানের ইতিহাসে এটি বৃহত্তম বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক উদ্যোগ।[৩] অভিযোগ চলতে থাকে খনির তৎকালীন মন্ত্রী ঠিকাদারি প্রক্রিয়া ব্যাহত করেন এবং একটি বড় ঘুষ, নিলামে জড়িত অন্যান্য কোম্পানিগুলিকে নিলাম থেকে বহিষ্করণে গৃহীত হয়।

আফগান মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী খনিটিতে ৬ মিলিয়ন টন তামা (৫.৫২ মিলিয়ন মেট্রিক টন) আছে। খনিটি কোটি কোটি ডলারের মূল্যের হতে পারে এবং দেশের জন্য চাকরি ও অর্থনৈতিক কার্য্যকলাপ উৎপন্ন করতে পারে, তাতে কিন্তু এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থলটির অবশেষ ঝুকিপূর্ন হতে পারে।[৪][৫] কাবুল এবং গার্ডেসের মধ্যে পাকা সড়ক থেকে ১৫ কিলোমিটার (৯.৩ মা) বাহন চলাচল উপযুক্ত রাস্তা দিয়ে স্থানটি পৌঁছান যায়। [৬] তামার খনি পরিষেবার কাজে খনির ইজারা ধারকগণ রেলওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব করেন।[৭]

২০১২ সালের জুলাই মাসের হিসাবে, এমসিসি পরিবেশগত প্রভাবের  পরিকল্পনা তৈরি করেনি এবং খনি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রেখেছে সেইসঙ্গে খনির কাজ শুরু ও বন্ধের ব্যাপারে ও  চুক্তির নিশ্চয়তার ব্যাপারে পরিষ্কার নয়।[৮] আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই প্রকল্প, এবং অন্যান্য অনুরূপ প্রকল্প, আফগানিস্তানে ঝুকিপূর্ন হতে পারে, কারণ এমসিসি, উদ্বাস্তু গ্রামবাসীদের সঠিক পুনর্বাস প্রকল্পের ব্যাপারে আফগান সরকারকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে নি। অন্যান্য বিনিয়োগ আছে যা এখনো পূরণ করা হয় নি সেগুলি হল একটি রেলওয়ে, একটি ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কয়লা খনি।[৯] গ্লোবাল উইটনেস নামক, একটি স্বাধীন এডভোকেসি গ্রুপ  যারা, প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণের উপর গুরুত্ত্ব দেয় তাদের রিপোর্ট অনুসারে, সরকারের প্রতিশ্রুতি, স্বচ্ছতা এবং সেটি অনুসরণের মধ্যে বড় ফাঁক আছে। [১০]

প্রত্নতাত্ত্বিক কাজ[সম্পাদনা]

প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করেন যে মেস আইনাক একটি প্রধান ঐতিহাসিক ঐতিহ্যবাহী স্থান। এটি ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ ফিলিপ মার্কুইস দ্বারা "সিল্ক রোড বরাবর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলির একটি" বলা হয়েছে।[১১] উপত্যকায় ১৯ টি ভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আছে বলে মনে করা হয় যাতে দুটি ছোট কেল্লা, একটি গড়, চারটি দুর্গম মঠ, বহু বৌদ্ধ স্তূপ এবং একটি জ্যোতিষ অগ্নিমন্দিরসহ প্রাচীন তামার কর্মশালা, তামা নিষ্কাশনের কারখানা, একটি টাঁকশাল ও খনির শ্রমিকদের বাসস্থান ছিল।[২]

সদ্য খননকৃত বৌদ্ধ স্তূপ.
এই প্রত্নতাত্ত্বিক শিবিরটি একটি বৌদ্ধমঠের তলদেশে।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বৌদ্ধমঠগুলি খুঁড়ে বার করছেন

তামার দাম কমে যাওয়ার কারণে খনির পরিকল্পনা বিলম্বিত হচ্ছে এমন ইঙ্গিতও রয়েছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক খনন স্থান পরিদর্শন চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Aynak Information Package ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে, Afghanistan Geological Survey and the British Geological Survey, 2005
  2. Dalrymple, William (31 May 2013) Mes Aynak: Afghanistan's Buddhist buried treasure faces destruction guardian.co.uk
  3. Bailey, Martin (April 2010) Race to save Buddhist relics in former Bin Laden camp ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে theartnewspaper.com
  4. Vogt, Heidi (14 November 2010) Chinese Copper Mine In Afghanistan Threatens 2,600-Year-Old Buddhist Monastery The Huffington Post
  5. Huffman, Brent (17 May 2012)Are Chinese Miners Destroying a 2,000-Year-Old Buddhist Site in Afghanistan? http://asiasociety.org
  6. "Aynak Information Package Part I Introduction" (পিডিএফ)। Afghanistan Geological Survey and the British Geological Survey। ২০০৫। ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮ 
  7. "Agreement signed for north-south corridor"Railway Gazette International। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০। ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৮ 
  8. Benard, Dr Cheryl (4 July 2012) Afghanistan’s Mineral Wealth Could Be a Bonanza—or Lead to Disaster thedailybeast.com
  9. Nissenbaum, Dion (14 June 2012) Afghanistan mining wealth thwarted by delays The Australian, theaustralian.com
  10. (24 April 2012)Future of Afghan mining sector threatened by weak contracts
  11. (15 November 2010) Copper load of this! Company digging mine in Afghanistan unearths 2,600-year-old Buddhist monastery Dailymail.co.uk

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]