ব্রজেন্দ্রকুমার দে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রজেন্দ্রকুমার দে
জন্ম১ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭
মৃত্যু১২ মার্চ, ১৯৭৬
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
শিক্ষাএম এ
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাযাত্রাপালাকার
পিতা-মাতা
  • হরিকিশোর দে (পিতা)
  • ক্ষীরোদাসুন্দরী দে (মাতা)

ব্রজেন্দ্রকুমার দে (১ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৭ - ১২ মার্চ, ১৯৭৬) যাত্রার পালাবদলের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি কেবলমাত্র পালাসম্রাট বা লোকনাট্যগুরু ছিলেন না তিনি ছিলেন বাংলার যাত্রাপালা ও লোকাভিনয়ের ইতিহাসে এক নবযুগের প্রবর্ত্তক। উচ্চশিক্ষিত এবং স্কুলশিক্ষক হয়েও সুদীর্ঘ ৫০টি বছর ধরে নিবিষ্ট চিত্তে তিনি শুধু যাত্রাপালাই লিখে গেছেন। তিনি যাত্রার আধার এবং আধেয় পরিবর্তনের সাথেসাথে যাত্রার সু-সংস্কৃত ও মার্জিত রূপ প্রদান করে যাত্রাশিল্পকে শিক্ষিত মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছিলেন। আট ঘণ্টার যাত্রাকে তিন ঘণ্টায় নিয়ে আসেন। সংলাপের সংস্কার করে ছোট ছোট সংলাপ ব্যবহার করেছেন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

ব্রজেন্দ্রকুমারের জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার অন্তর্গত গয়ঘর গঙ্গানগর গ্রামে। তার মাতার নাম ক্ষীরোদাসুন্দরী দে এবং পিতার নাম হরিকিশোর দে।[১] তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে অর্থনীতিতে এম.এ.এবং ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে বি.টি.পাশ করেন ।[১]

অবদান[সম্পাদনা]

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দুই বাংলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন । বিংশ শতকে বাংলানাটকের মূলস্থপতি যেমন বিজন ভট্টাচার্য তেমনই যাত্রাপালার প্রধানস্রস্টা ব্রজেন্দ্রকুমার দে। প্রখ্যাত পালাকার ভোলানাথ কাব্যশাস্ত্রীর উত্তরসূরি তিনি। নাট্যকার যোগেশচন্দ্র চৌধুরীর ছাত্র তিনি যাত্রানাট্যে নতুন আঙ্গিকসহ আধুনিকতার প্রবর্তন করেছিলেন। পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, কাল্পনিক, সামাজিক, জীবনীমূলক, দেশাত্মবোধক, গীতিকা আশ্রিত পালা-সব মিলিয়ে দেড়শর বেশি পালা রচনা করে তিনি যাত্রাপালার উৎকর্ষ সাধন করেছেন। বলা হয় বাংলা মঞ্চাভিনয়ের ক্ষেত্রে গিরীশচন্দ্র ঘোষের যে স্থান,বাংলার একালের যাত্রাভিনয়ের ক্ষেত্রে ব্রজেন্দ্রকুার দে সেই স্থানের অধিকারী।

রচিত যাত্রাপালা[সম্পাদনা]

  • স্বর্ণলঙ্কা (১৯২৫)
  • বজ্রনাভ (১৯৩১)
  • লীলাবসান(১৯৩৪)
  • চাঁদের মেয়ে(১৯৩৬)
  • দেবতার গ্রাস(১৯৪২)
  • মায়ের ডাক(১৯৪৫)
  • উজানীর চর
  • লোহার জাল(১৯৬০)
  • বালির বাঁধ(১৯৬০)
  • ধ্বংসের ডাক(১৯৬০
  • সোনাই দীঘি(১৯৫৯)
  • আঁধারের মুসাফির(১৯৭২)
  • কলঙ্কিনী রাই(১৯৭২)
  • নটী বিনোদিনী(১৯৭৩)
  • কৃষ্ণ সুদামা(১৯৭৩)
  • বিদ্রোহী নজরুল(১৯৭৪)
  • ভারত পথিক রামমোহন(১৯৭৪)
  • নন্দকুমারের ফাঁসি(১৯৭৫)
  • অনাথ জননী(১৯৭৫)
  • ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য(১৯৭৪)
  • রক্ত তিলক(১৯৪১)
  • দানবীর প্রভৃতি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২৪৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  • ড. রতনকুমার মন্ডল, বাংলার যাত্রা ও ব্রজেন্দ্রকুমার দে

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]