বাবা শিভো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাবা শিভোজী (বাবা গোরান)
বাবা শিভোজীর পূজার মূর্তি
প্রধান অর্চনাকেন্দ্র centerজম্মু, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব অঞ্চল
আবাসগোরান, সাম্বা, জম্মু ও কাশ্মীর, ভারত
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
মাতাপিতাপিতা: রাজা লাধ দেব, মাতা: রানী কলাবতী

বাবা শিভো (গোরান বাবাও বলা হয়, আনু. ১৩ - ১৪ শতক) হলেন একজন লোক দেবতা, ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশে তাঁর পূজা করা হয়। তিনি একজন যোদ্ধা-বীর, সাধক এবং শিবের রুদ্রাংশ অবতার হিসাবে পূজিত। জম্মুর লোককাহিনীতে তাঁর উল্লেখ রয়েছে। তিনি রাজা লাধ দেব ওরফে রাজা লাধ এবং রাণী কলাবতী ওরফে রানী কাল্লির ছেলে ছিলেন, এ ছাড়া তাঁর সম্পর্কে আর বিশেষ কিছু ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়না।

রাজত্ব[সম্পাদনা]

বাবা শিভোজীর পিতা ছিলেন পত্তনের রাজা। উপত্যকার প্রায় কেন্দ্রে অবস্থিত কাশ্মীরের ঐতিহাসিক রাজধানীগুলির মধ্যে একটি হল পত্তন। পত্তন তহসিল পৌর সীমার মধ্যে দুটি প্রাসাদ সহ মোট চারটি প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। রাজতরঙ্গিনী থেকে জানা যায় যে কাশ্মীরের রাজা শঙ্করবর্ম্মা পাট্টানা নামে একটি শহর তৈরি করেছিলেন।[১]

কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

কিংবদন্তি অনুযায়ী, গুরু গোরক্ষনাথের আশীর্বাদে শিভোর জন্ম হয়। গুরু গোরক্ষনাথ রাজা লাধ দেব এবং রানী কল্লিকে ভগবান শিবের মতো একটি সন্তানের জন্য আশীর্বাদ করেছিলেন। তাঁর নামেই শিশুটির নাম দেওয়া হয়েছিল।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

রাজা লাধ দেবের কোন সন্তান ছিল না। তখন তিনি তাঁর কুলগুরু কে তাঁর কুন্ডলীটি দেখিয়েছিলেন। কুলগুরু তাঁকে বলেছিলেন যে তাঁর ভাগ্যে একটাই জিনিস থাকতে পারে: হয় রাজ্যাধিকার নাহলে সন্তান। যদি তিনি একটি পুত্র চান তবে তাঁকে অবশ্যই তাঁর রাজ্য ত্যাগ করতে হবে এবং কঠোর নীতিনিষ্ঠা (তপস্যা) গ্রহণ করতে হবে এবং সন্তানের জন্য গোরক্ষনাথের কাছে প্রার্থনা করতে হবে। ছোট ভাইয়ের হাতে সিংহাসন তুলে দেওয়ার পর, রাজা ও রাণী উভয়েই সামোথা চলে গেলেন এবং সেখানে তাঁরা বহু বছর ধরে গোরক্ষনাথের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। গোরক্ষনাথ তাঁদের আশীর্বাদ করেছিলেন যে তাঁদের একটি পুত্র হবে যার মধ্যে শিবের মতো ঈশ্বরীয় বৈশিষ্ট্য থাকবে। এই কারণে তাঁর নাম হয় শিভো।

অন্যান্য[সম্পাদনা]

বড় হবার পর, তিনি জম্মুর রাজার কাছে, তাঁর প্রাসাদে, কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। লোককাহিনী অনুসারে, একটি বাঘ প্রাসাদে এসেছিল। শিভো তখন তার মাথাটি নিয়ে প্রাসাদের নিচে রেখেছিলেন। রাজা জানতে পারলেন যে শিভো একজন দৈবী মানুষ। তিনি তখন তাঁর পদধূলি নিলেন এবং বাবা তাঁকে আধ্যাত্মিক "জ্ঞান" দিলেন।

শিভো একটি বাদ্যযন্ত্র (বাঁশি বা গিটার) বাজাতেন। সামোথায় বেশিরভাগ খরদখত্রী রাজপুত বাস করত। যখন তিনি বাদ্য বাজাতেন, তখন তাদের মহিলারা তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে আসত। তাই তারা তাঁর বাজানোকে পাগলামি বলে মনে করল এবং যখন তিনি কাঞ্চনবেল গাছের বাগানে বসে ধ্যান করছিলেন, তখন তারা শিভোকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। মাথা কেটে শিভোজীকে হত্যা করার পর, তাঁর মাথা সেখানেই পড়ে ছিল, কিন্তু তাঁর দেহ গোরানে চলে যায়। পরে সেখানে বাবাজির মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। সামোথার অধিকাংশ খত্রী নিহত হয়, অন্যরা বাবার অভিশাপের কারণে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। বলা হয় যে যারা সত্যিকারের হৃদয় এবং দৃঢ় সংকল্প নিয়ে প্রার্থনা করে, বাবা গোরান সেই ভক্তদের ইচ্ছা পূরণ করেন। অনেকে বাবার কাছে কিছু কামনা করেন এবং কামনা পূরণ হওয়ার পরে মন্দিরে ভান্ডারা (দাতব্য রান্নাঘর) নিবেদন করেন।[২] সেখানে ছাগল বলি দেওয়া হয়। বাবা শিভো (গোরান বাবা) হলেন সূর্যবংশী ডোগরা রাজপুতদের সরমল বংশের কুলদেব[৩][৪] হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ভক্তরা প্রধানত রবিবার ও মঙ্গলবার মন্দিরে ভিড় করেন।[২]

উৎসব[সম্পাদনা]

প্রতি বছর মন্দিরে বাবা শিভোর নামে একটি কুস্তি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।[৫] সামোথা থেকে গোরান পর্যন্ত ছড়ি যাত্রা হয়।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Rajatarangini of Kalhana:Kings of Kashmira/Book V,p.121
  2. Excelsior, Daily (জুন ২১, ২০১৫)। "Ancient shrine of Baba Shivo crying for attention" 
  3. "अमर क्षत्रिय राजपूत सभा में सामाजिक कुरीतियों पर चर्चा"Dainik Jagran 
  4. Baba Shivo Amar Gatha, p18, Priest of Baba Shivo Temple
  5. "JBSMKD Maha Dangal" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. Baba Shivo Amar Gatha, p12, Priest of Baba Shivo Temple