বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

পরীক্ষিত
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
সভাপতিরাকিবুল ইসলাম রাকিব
সাধারণ সম্পাদকনাসির উদ্দিন নাসির
মাতৃ সংগঠনবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
প্রতিষ্ঠাতাজিয়াউর রহমান
প্রতিষ্ঠা১ জানুয়ারি ১৯৭৯; ৪৫ বছর আগে (1979-01-01)
সদর দপ্তর২৮/১ নয়া পল্টন, ঢাকা
ভাবাদর্শবাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, প্রগতিশীলতা
স্লোগানশিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠন।[][] এটি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির প্রধান কার্যালয় ঢাকার নয়া পল্টনে অবস্থিত। বর্তমানে যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত, তাদের মধ্যে অনেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে যুক্ত ছিলেন।[]

ইতিহাস এবং সংগঠন

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠার পর জিয়াউর রহমান বুঝতে পারেন যে ভবিষ্যতের বিএনপি নেতাদের জন্য একটি শক্তিশালী ছাত্র সংগঠনের প্রয়োজন, এরই প্রেক্ষিতে তিনি ১ জানুয়ারি ১৯৭৯ তারিখে ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন। ছাত্রদল ১৯ দফার একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যা মূল দল বিএনপির কাঠামো এবং পন্থার ভিত্তিতে নির্মিত। ছাত্রদল ১৯৯০ সালের গণতান্ত্রিক গণঅভ্যুত্থানে সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে অগ্রণী সংগঠন ছিল।[][]

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি কমিটির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়, যার সব সদস্যই ছাত্র। ছাত্রদলের ৭৩৬ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি রয়েছে। ২০১৬ সালে গঠিত এই কমিটি ছাত্রদের বাদ দিয়ে এবং তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা থাকা লোকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দলীয় কর্মীদের সমালোচনার শিকার হয়; যদিও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এটি নিষিদ্ধ করেছিলেন। বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিরাও এর সদস্য ছিলেন।[]

সহিংসতা

[সম্পাদনা]

১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্যের সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল চলাকালে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের গোলাগুলি চলাকালে মিছিলের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন হোসেন রাজু নিহত হন। রাজুসহ সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনের সকল নিহতদের স্মরণে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য নির্মিত হয়।[][]

২০০৪ সালে, ছাত্রদলের সদস্যরা প্রশিকা নামক একটি এনজিও-কে হয়রানি করে, যার ফলে মেহদিগঞ্জ, বরিশাল-এ এর সদর দপ্তর এবং দুটি স্থানীয় অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনাগুলি তখনকার বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অধীনে ঘটে।[] ১১ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে, ছাত্রদল সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আআমস আরেফিন সিদ্দিকের অফিস ভাঙচুর করে।[১০] ১৫ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে, দৌলতপুরের বি এল কলেজে ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে, যার ফলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।[১১]

২০০২ সালের ৮ জুন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সনি ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।[১২][১৩] ১৯ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে, ছাত্রদলের সদস্যরা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পাঁচ কর্মীকে আক্রমণ করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বোমা ফাটায়।[১৪] সিলেটে সংঘর্ষের সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার জন্য ১৫০ জন ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করে।[১৫] ৯ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে, ছাত্রদলের ঝিনাইদহ ইউনিটের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম পিন্টুকে একটি বন্দুক ও বোমাসহ আটক করা হয়।[১৬]

১৯ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে, ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ গ্রুপের সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়, তাদের মধ্যে একজন প্রক্টর এবং চারজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।[১৭] ১২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে, ২০০ জন ছাত্রদল কর্মী তাদের প্রধান কার্যালয় নয়া পল্টনে ইউনিট কমিটি গঠনের প্রতিবাদে হামলা চালায়।[১৮] ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কর্মী সাইদুজ্জামান পাশার বন্দুকধারী ছবি প্রকাশের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ একাধিক ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে।[১৯]

২৬ মে ২০১৩ তারিখে, ছাত্রদলের সদস্যরা ঢাকা শহরে তারেক রহমানের সমর্থনে বিক্ষোভের সময় ২৫টি যানবাহন ভাঙচুর করে।[২০] ১৫ আগস্ট ২০১৩ তারিখে, ছাত্রদল চট্টগ্রামে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, যার ফলে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হয়।[২১] ২৮ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে, ছাত্রদল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর ছাত্র শাখা বাংলাদেশ ছাত্র লীগের এক বিক্ষোভে হামলা চালায়, যার ফলে দুই ছাত্র লীগ সদস্যের মৃত্যু হয়।[২২]

নয়া পল্টনে ১৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে ছাত্রদল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়।[২৩] ৭ মার্চ ২০১৫ তারিখে, একটি বোমা তৈরির চেষ্টা করার সময় চট্টগ্রামে এক ছাত্রদল নেতা আহত হয়।[২৪] ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় ইয়াবা মাদকসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসানসহ পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।[২৫]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. bdnews24.com। "ছাত্রদল অঙ্গ নয়, স্বকীয় সহযোগী সংগঠন: ইসিকে বিএনপি"বিডিনিউজ.২৪ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২১ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৪ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৪ 
  4. Crossette, Barbara (৯ ডিসেম্বর ১৯৯০)। "Revolution Brings Bangladesh Hope"The New York Times 
  5. "The Other Woman"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০১-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  6. "Non-students rule new JCD committee"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০২-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  7. "সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য ও শহীদ মইন হোসেন রাজু"চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৯ 
  8. "যেভাবে শহীদ হলেন রাজু"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৯ 
  9. Zaman, Mustafa। "Proshika A Case Gone Sour"Star Magazine। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  10. "JCD let loose terror on DU campus"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  11. "Shibir, Chhatra Dal clash at BL College"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  12. "আফসোস নিয়েই পৃথিবী ছেড়ে গেলেন সনির বাবা"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৪ 
  13. "দেড় যুগেও হয়নি বুয়েট ছাত্রী সনি হত্যাকাণ্ডের বিচার"thedailycampus.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৪ 
  14. "JCD men attack Chhatra Sangram Parishad activists on DU campus"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  15. "150 JCD men sued for violence, vandalism"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  16. "Jhenidah Chhatra Dal leader sent to jail"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ নভেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  17. "JCD men fight at DU"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  18. "Dhaka College JCD men ransack central office"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  19. "Chhatra Dal cadre Pasha arrested"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  20. "JCD men vandalise 17 vehicles in capital"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  21. "JCD men clash over celebration"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  22. "2 killed on last day of blockade"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  23. "Aggrieved JCD men postpone agitation following assurance"The Daily Star। ১৯ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  24. "'Bomb-maker' JCD leader hurt in city"The Daily Star। ২২ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-০৬ 
  25. "JCD president, 5 others sent to jail"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৭