প্লাজমা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শীর্ষে: বজ্রপাত এবং নিয়ন সাইনে প্লাজমা তৈরি হয়। নিচে বামদিকে: প্লাজমা বাতিতেফিলামেন্টেশন সহ প্লাজমার আরও জটিল কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। নীচে ডানদিকে: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় স্পেস শাটল আটলান্টিস থেকে দেখা একটি প্লাজমা ট্রেইল , যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকেও দেখা যায় ৷

আয়নিত গ্যাস ও ইলেকট্রনের সমন্বয়ে গঠিত পদার্থের চতুর্থ অবস্থাকে প্লাজমা বলে।[১] প্লাজমা পদার্থের চতুর্থ অবস্থা (কঠিন, তরল ও বায়বীয়র পর)। প্লাজমা হচ্ছে আয়নিত গ্যাস যেখানে মুক্ত ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক আয়নের সংখ্যা প্রায় সমান। আন্তঃনাক্ষত্রিক স্থানে, গ্যাস ক্ষরণ টিউবে, নক্ষত্রের (এমনকী সূর্যের) বাতাবরণে এবং পরীক্ষামূলক তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়কে (Thermonuclear reactor) প্লাজমা দেখতে পাওয়া যায়।[২][৩][৪][৫] বৈদ্যুতিকভাবে প্রশম থাকা সত্ত্বেও প্লাজমা সহজেই বিদ্যুৎ পরিবহন করে। এদের থাকে অত্যুচ্চ তাপমাত্রা[৬]

প্লাজমার কণাগুলি আয়নিত হওয়ায় গ্যাসের সাথে এর কিছু আচরণগত পার্থক্য আছে। গবেষণাগারে নিম্নচাপে রেখে গ্যাসকে (যতক্ষণ না গ্যাসীয় কণাগুলির গড় গতিশক্তি গ্যাসীয় অণু বা পরমাণুসমূহের আয়নীকরণ শক্তির কাছাকাছি হচ্ছে ততক্ষণ) উত্তপ্ত করে প্লাজমা তৈরি করা যায়। অত্যুচ্চ তাপমাত্রায় (প্রায় ৫০০০০ কেলভিন বা তার উপরে) গ্যাসীয় কণাগুলির মাঝে সংঘর্ষের কারণে গ্যাসের ঝটিতি আয়নায়ন (Cascading ionization) ঘটে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, যেমন- প্রতিপ্রভ(Fluorescent) বাতিতে, প্লাজমাকণাগুলি নিরন্তর ধারকের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ায় শীতলীকরণ এবং পুনর্মিলন (Recombination) ঘটে যার ফলে সামগ্রিক তাপমাত্রা বেশ নিচু থাকে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত আংশিক আয়নীকরণ ঘটে এবং বিপুল শক্তির জোগান (Input) দরকার হয়। তাপ-নিউক্লীয় বিক্রিয়কে প্লাজমাকণাসমূহকে তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের মাধ্যমে ধারকের দেয়াল থেকে দূরে রাখা হয় যাতে প্লাজমার তাপমাত্রা অত্যুচ্চ থাকে (পিঞ্চ ক্রিয়া দেখুন)।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Liddell, Henry George; Scott, Robert (১৯৪০)। "πλάσμα"A Greek-English Lexicon। Clarendon Press। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১০ 
  2. Chu, P.K.; Lu, XinPel (২০১৩)। Low Temperature Plasma Technology: Methods and Applications। CRC Press। পৃষ্ঠা 3আইএসবিএন 978-1-4665-0990-0 
  3. Piel, A. (২০১০)। Plasma Physics: An Introduction to Laboratory, Space, and Fusion PlasmasSpringer। পৃষ্ঠা 4–5। আইএসবিএন 978-3-642-10491-6। ৫ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. Phillips, K. J. H. (১৯৯৫)। Guide to the SunCambridge University Press। পৃষ্ঠা 295। আইএসবিএন 978-0-521-39788-9। ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. Aschwanden, M. J. (২০০৪)। Physics of the Solar Corona. An Introduction। Praxis Publishing। আইএসবিএন 978-3-540-22321-4 
  6. Chiuderi, C.; Velli, M. (২০১৫)। Basics of Plasma AstrophysicsSpringer। পৃষ্ঠা 17। আইএসবিএন 978-88-470-5280-2