তামিলনাড়ুতে নারীর প্রতি সহিংসতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

তামিলনাড়ুতে নারীর প্রতি সহিংসতার মধ্যে রয়েছে শ্লীলতাহানি, অপহরণ, যৌতুক সংক্রান্ত সহিংসতা ও গার্হস্থ্য সহিংসতা। ২০১৩ সালে প্রথম সাত মাসে পুলিশ ১,১৩০ টি মামলা নথিভুক্ত করে, যা ২০১২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৮৬০ টির বেশি। উসিলামপট্টি তালুকে, ১৯৮৭–৮৮ সালের সময়কালে দুই বছরের ব্যবধানে প্রায় ৬,০০০ টি নারী শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল, যা নথিভুক্ত নারী শিশুহত্যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

নারীর প্রতি সহিংসতার একটি প্রধান অন্তর্নিহিত কারণ হল - এই ধারণা, যে বিবাহিত মহিলারা তাদের স্বামীর সম্পত্তি। এছাড়াও অ্যালকোহল ব্যবহার এবং সমাজে মহিলাদের চিত্রায়ন ও যৌন বস্তু হিসেবে সিনেমায় প্রদর্শন প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়।

মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ মোকাবেলায় তামিলনাড়ু হল প্রথম ভারতীয় রাজ্য যেখানে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত "মহিলা থানা" স্থাপন করা হয়। ২০১২ সালে দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনার পর, সমস্ত পাবলিক বিল্ডিংয়ে ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) স্থাপন এবং ১ বছর পর্যন্ত অ-জামিনযোগ্য ভাবে ১৯৮২ সালের গুন্ডাস অ্যাক্টে অপরাধীদের ধরে রাখা সহ সহ তামিলনাড়ু সরকার ১৩-দফা কর্মপরিকল্পনা উন্মোচন করে। দিল্লির ঘটনাটিতে চলন্ত বাসে একটি মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল, যার ফলে তার মৃত্যু হয়।

সহিংসতার প্রধান রূপ[সম্পাদনা]

অপরাধ
বছর ধর্ষণ যৌতুক
মৃত্যু
২০০৩ ৫৫৭ ২২০
২০০৪ ৬১৮ ২২৫
২০০৫ ৫৭১ ২১৫
২০০৬ ৪৫৭ ১৮৭
২০০৭ ৫২৩ ২০৮[১]

যৌতুক মৃত্যু[সম্পাদনা]

যৌতুক মৃত্যু, যা "কনে পোড়ানো" নামেও পরিচিত, ভারতে যৌতুক প্রথা সম্পর্কিত একটি অপরাধ, যা বরের পরিবারকে কনের বা পাত্রীর পরিবার থেকে উপহার দেওয়ার প্রথা। বিশ্বাস করা হয় যে এই প্রথাটি হিন্দু বিবাহের রীতিতে উদ্ভূত হয়েছে, কিন্তু আধুনিক সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই বর -কনের পরিবারের মধ্যে আলোচিত একটি ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে দেখা যায়। যৌতুক হয়রানি ও যৌতুক মৃত্যু ঘটে এমন পরিস্থিতিতে, যেখানে বরের পরিবার যৌতুক নিয়ে অসন্তুষ্ট হয় বা যৌতুক পেতে বিলম্ব ঘটে, তারপর বরের পরিবার থেকে কনেকে অপমান করা এবং তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার করে প্রতিক্রিয়া জানোর ঘটনায়। ভারতে, বেশিরভাগ পারিবারিক বিরোধ যার ফলে সহিংসতা হয়, তা হল যৌতুকের লেনদেন নিয়ে বিরোধ।[২] ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) ৩০৪বি অনুসারে, যদি কোনও মহিলা বিবাহের প্রথম সাত বছরে পোড়া, শারীরিক আঘাত বা অন্য "অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে" মারা যান, তাহলে কর্তৃপক্ষকে যৌতুক হয়রানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি মৃত্যুটি যৌতুকের মৃত্যু হিসাবে নির্ধারিত হয়, তবে ভিকটিমের স্বামী ও শ্বশুরবাড়িকে দায়ী করা যেতে পারে। যদি একজন মুমূর্ষু নারী তার আঘাতের কারণ সম্পর্কে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সাক্ষ্য দেন, তাহলে তার সাক্ষ্য বিচারের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।[৩] দেশে ১৯৯৮ সালে ও ১৯৯৯ সালের বছরগুলিতে ১২,৬১২ টি যৌতুক মৃত্যুর রেকর্ড করেছে।[২] তামিলনাড়ুতে ২০০৮ সালে ১৯৮ টি যৌতুক সংক্রান্ত মৃত্যুর খবর সামনে আসে। যৌতুকের মৃত্যু, মহিলাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য অপরাধের মত, কম রিপোর্ট করা হয় বলে মনে করা হয়; দগ্ধ বা অন্যান্য আঘাতের অনেক ঘটনা, যা দুর্ঘটনা হিসাবে রেকর্ড করা হয় তা আসলে যৌতুক হয়রানির কারণে হতে পারে।[২][৩] যৌতুকের মৃত্যুর কয়েকটি ক্ষেত্রে অপরাধীদের শাস্তি হয়। ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, তামিলনাড়ুতে ২০০৮ সালে সংগঠিত ১৯৮ টি যৌতুক-মৃত্যু মামলার ফলে কেবলমাত্র একজনকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং ২০০৭ সালে ২০৮ টি মামলায় কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।[৩]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. Tamil Nadu Police Crime Report 2007, p. 28
  2. Natarajan 2012, pp. 68-70
  3. Ramanathan, Lakshmy (২২ জানুয়ারি ২০০৯)। "194 dowry deaths in Tamil Nadu in 2008"TNN। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৪ 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও পড়া[সম্পাদনা]

আরও দেখুন:Sundaram, Shanmugha (২১ আগস্ট ২০১২)। "Feminist on a mission to uplift Dalit women"The Indian ExpressIndian Express Limited। পৃষ্ঠা 3।