ডেনমার্ক–মিয়ানমার সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডেনমার্ক-মিয়ানমার সম্পর্ক
মানচিত্র Myanmar এবং Denmark অবস্থান নির্দেশ করছে

মিয়ানমার

ডেনমার্ক

ডেনমার্ক-মিয়ানমার সম্পর্ক, ডেনমার্ক, এবং মিয়ানমার এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ডেনমার্কে, মিয়ানমারের কোন স্থায়ী দূতাবাস নেই। ১৯৫৫ সালে এই দুই দেশের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১] এর পাশাপাশি এই দুই দেশের মাঝে অত্যন্ত আন্তরিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান।[১]

যুক্তরাজ্যে অবস্থিত মিয়ানমার দূতাবাসের মাধ্যমে ডেনমার্ক সম্পর্কিত কূটনৈতিক এবং অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।[২] অপরদিকে, মিয়ানমারেও ডেনমার্কের কোন স্থায়ী দূতাবাস নেই। থাইল্যান্ডে অবস্থিত, ডেনমার্ক দূতাবাসের নিকটেই, মিয়ানমার সম্পর্কিত সমস্ত কূটনৈতিক এবং অন্যান্য কার্যক্রমের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে এবং এই দূতাবাসের মাধ্যমেই ডেনমার্ক মিয়ানমারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করে।[৩]

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর প্রায় সব দেশের সাথেই মিয়ানমারের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে এবং দেশগুলোর সাথে মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুক্ত। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর এই দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কের সাথে মিয়ানমারের বাণিজ্যের পরিমাণ সর্বনিম্ন।[৪] ডেনমার্ক নরওয়েভিত্তিক রেডিও স্টেশন ডেমোক্র্যাটিক ভয়েস অব বার্মাকে সমর্থন করে।[৫]

মিয়ানমারকে ডেনমার্কের সহায়তা[সম্পাদনা]

মিয়ানমারকে সহায়তা দেয়ার বিষটিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তে ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করে। তাঁদের কার্যক্রমের আওতায় মায়নামারকে ৯৩ মিলিয়ন (৯.৩ কোটি) ড্যানিশ ক্রোনা দেয়া হয়।[৬]

মানবাধিকারের উন্নয়নের বিষয়েই প্রধানত এই ড্যানিশ সহায়তা প্রদান করা হয়। ঘূর্ণিঝড় নার্গিস মিয়ানমারে আঘাত হানার পর, ডেনমার্ক অতি সত্বর মিয়ানমারকে মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ পাঠিয়ে সহায়তা করে।[৭]

২০০৬ সালে থ্রি ডিজিস ফান্ড প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৯ সালে ডেনমার্ক এই কার্যক্রমে যোগ দেয়। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে মিয়ানমার এইডস রোগ মোকাবিলায় অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য লাভ করে। এই কার্যক্রমের আওতায় মিয়ানমারকে এখন পর্যন্ত ৭৩ মিলিয়ন (৭.৩ কোটি) মার্কিন ডলারের সাহায্য লাভ করেছে।[৮]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালে, মিয়ানমারে অবস্থিত ডেনমার্ক দূতাবাসের একজন কূটনৈতিক জেমস লিয়েন্ডার নিকোলসকে মিয়ানমারের একটি আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। নিকোলস এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অবৈধভাবে নিজের কাছে দুটি ফ্যাক্স মেশিন এবং একটি টেলিফোন সুইচবোর্ড রেখেছিলেন। রায় ঘোষণার দুই মাস পর, কারাগারেই নিকোলস এর মৃত্যু হয়। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার জন্য কোন স্বাধীন ময়নাতদন্ত করে নি। ডেনমার্কের অব্যাহত দাবি সত্ত্বেও, মিয়ানমার তা প্রত্যাখ্যান করে।[৯]

এরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, এবং ডেনমার্ক মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আহবান জানায়।[১০][১১]

ডেজ ওয়ার্ক ডে[সম্পাদনা]

২০১০ সালের ৩ নভেম্বর ডেনমার্কের ১৪০ টি ভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ড্যানচার্চএইড বার্ষিক ডেজ ওয়ার্ক ডে নামক এক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। এই কার্যক্রম থেকে শিক্ষার্থীরা যে অর্থ লাভ করে, তা মিয়ানমারের শিশুদের শিক্ষার জন্য এবং শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য ব্যবহার করা হয়।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Far Eastern economic review। ১৯৭২। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-২৪Diplomatic relations Between Burma and Denmark, while friendly, have been limited to formal exchanges of greetings and condolences on appropriate occasions ... 
  2. "Embassy of Myanmar in the United Kingdom"। ৩০ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  3. "Burmese embassy in Bangkok, Thailand"। ২৫ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  4. Burma's economic relations with Denmark ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ মে ২০১৩ তারিখে অনলাইন বার্মা/মিয়ানমার লাইব্রেরি
  5. "Danish paper calls for more support for Burmese radio station in Norway"নিউজ লাইব্রেরি / পলিটিকেন। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭। ১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১০The military junta in Burma is showing no signs of yielding to the ever stronger popular demands for democratization and dialogue... 
  6. "Activities in Burma"। ডেনমার্কের পররাষ্ট্র দপ্তর। ১১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 
  7. "DANIDA in Burma"। ডেনমার্কের পররাষ্ট্র দপ্তর। ১১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 
  8. "Three Diseases Fund (3DF)"। ডেনমার্কের পররাষ্ট্র দপ্তর। ১১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 
  9. আনাইস তামেন (২০০২–২০০৩)। "The European Union's Sanctions Related to Human Rights: The Case of Myanmar" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 98। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১০ 
  10. "James Leander Nichol's Death Imprisoned For Owning an Illegal Fax Machine in Burma"। কানাডিয়ান ফ্রেন্ডস অব বার্মা। ১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 
  11. "Response of the Union of Myanmar to the United Nations"। কানাডিয়ান ফ্রেন্ডস অব বার্মা। ১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 
  12. "21.000 gymnasieelever arbejder onsdag for bedre uddannelse i Burma" (ডেনীয় ভাষায়)। U-landsnyt.dk। ১ নভেম্বর ২০১০। ২৭ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]