টাপির

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

টাপির
সময়গত পরিসীমা: Early Eocene–Recent
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: স্তন্যপায়ী
বর্গ: পেরিসোডাক্টাইলা
মহাপরিবার: Tapiroidea
পরিবার: Tapiridae
গ্রে, ১৮২১
গণ: Tapirus
ব্রুনিখ, ১৭৭২
প্রজাতি

Tapirus bairdii
Tapirus indicus
Tapirus pinchaque
Tapirus terrestris

টাপির (ইংরেজি: Tapir); ( /ˈteɪpər/ TAY-pər বা /təˈpɪər/ tə-PEER) শুকর সদৃশ্য স্তন্যপায়ী চতুষ্পদী বন্য জন্তুবিশেষ। এ প্রজাতির প্রাণীটি টাপিরিডে পরিবারভূক্ত একমাত্র গণ টাপিরাস থেকে উদ্ভূত। দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা দেশগুলোর জঙ্গলে এদের আবাসস্থল।

এদের চারটি প্রজাতি রয়েছে। ব্রাজিলীয় টাপির, মালয় টাপির, বেয়ার্ড'স টাপির এবং পাহাড়ী টাপির। সকল প্রজাতির টাপিরই বন্য পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবার পথে কিংবা বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। তাদের নিকটতম সম্পর্কযুক্ত প্রাণী হিসেবে রয়েছে ঘোড়াগন্ডার। তন্মধ্যে মালয় টাপিয় বা এশীয় টাপিরের অবস্থান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। ঘন বনাঞ্চলে ও জলের কাছাকাছি এলাকায় বাস করতে এরা পছন্দ করে।

বৈশিষ্ট্যাবলী[সম্পাদনা]

টাপির গড়পড়তা ১ মিটার বা ৩ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট হয়ে থাকে। লম্বায় ২ মিটার বা ৭ ফুট এবং দেহের ওজন ১৫০-৩০০ কিলোগ্রাম বা ৩৩০-৭০০ পাউন্ডের হয়। শারীরিক কাঠামো গোলাকার এবং খুব ছোট লেজ রয়েছে। খুঁরাকৃতি পায়ের চারটি পায়ের পাতা সম্মুখের পায়ে এবং তিনটি পিছনের পায়ে বিদ্যমান যা এদেরকে কর্দমাক্ত ও নরম মাটিতে থাকতে সহায়তা করে। ওষ্ঠভাগের ঊর্ধ্বাংশ খাঁটো শূড়াকৃতি এবং লম্বা জিহ্বা রয়েছে। গায়ে অল্প লালচে-বাদামী-ধূসর কিংবা কালো লোম আছে। তন্মধ্যে ব্যতিক্রম হিসেবে রয়েছে পাহাড়ী টাপির। পাহাড়ী টাপিরের লম্বাটে লোম আছে। এশীয় টাপিরের পিছন দিকে ও পায়ে কালো লোম আছে এবং মাঝখানের অংশ সাদা রঙের। সকল শাবকের দেহই হাল্কা মিশেল, বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে।

টাপির ভালভাবে কোন কিছু দেখতে পায় না। কিন্তু এদের শ্রবণশক্তি খুবই প্রখর এবং ভাল ঘ্রাণশক্তির অধিকারী চতুষ্পদী প্রাণী। এছাড়াও এরা ভাল এশিয়ান হাতির মতো পানিতে সাঁতার কাটতে জানে। টাপির রাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে অর্থাৎ এরা নিশাচর প্রাণী। গাছের পাতা, ফলমূল, শাকসব্জী, বাদাম এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। এরা একাকী ঘুরে বেড়াতে ভালবাসে।

জীবনকাল[সম্পাদনা]

এদের গর্ভধারনের সময়কাল প্রায় ১৩ মাস। স্ত্রী টাপিরের একজোড়া স্তন আছে ও একটিমাত্র শাবক প্রসব করে।[১] স্বাভাবিকভাবে স্ত্রী প্রাণীটি দু'বছর অন্তর অন্তর গর্ভধারণ করতে পারে। অর্ধ-বছর পর শাবক তার শৈশবের গায়ের রঙটি হারাতে শুরু করে ও সহজাত লোম জন্মায়। এক বছর অতিক্রান্ত হলে শিশু টাপিরকে পরিপূর্ণ টাপিরের ন্যায় দেখা যায়। ঐসময়ই এরা মায়ের সান্নিধ্য ছেড়ে দেয়। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই এদের জীবন পূর্ণাঙ্গতা পায়। এক্ষেত্রে স্ত্রীজাতীয় টাপিরের শারীরিক সক্ষমতা পুরুষের তুলনায় পূর্বেই অর্জন করে।[২] বন্য পরিবেশ এবং আবদ্ধ অবস্থায় চিড়িয়াখানায় গড়পড়তা ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত এরা বেঁচে থাকে।[৩] শৈশব ও মিলনের সময় ছাড়া এরা অধিকাংশ সময়ই একাকী থাকে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Gorog, A. 2001. Tapirus terrestris, Animal Diversity Web. Retrieved June 19, 2006
  2. ""Woodland Park Zoo Animal Fact Sheet: Malayan Tapir (Tapirus indicus)". Zoo.org. Retrieved 2009-11-02"। ২০০৬-০৮-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৯-০১ 
  3. "Morris, Dale. "Face to face with big nose." BBC Wildlife, March 2005, page 37" (পিডিএফ)। ৬ মে ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]