জানুয়ারি ২০১৮-এর চন্দ্রগ্রহণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ
৩১ জানুয়ারি ২০১৮
263x263পিক্সেল
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পূর্ণচন্দ্রের দৃশ্য

চাঁদ তার কক্ষপথ বরাবর পূর্ব দিকে (ডান থেকে বাম) স্থানান্তরিত হবার সময় পৃথিবীর ছায়ার মধ্য দিয়ে যায়
সারস (ও সদস্য) ১২৪ (৭৪-এর ৪৯)
গামা −০.৩০১৪
স্থিতিকাল (ঘ:মি:সে)
পূর্ণ ১:১৬:০৪
আংশিক ৩:২২:৪৪
উপচ্ছায়া ৫:১৭:১২
সংস্পর্শ (ইউটিসি)
P১ ১০:৫১:১৫
U১ ১১:৪৮:২৭
U২ ১২:৫১:৪৭
সর্বাধিক ১৩:২৯:৫০
U৩ ১৪:০৭:৫১
U৪ ১৫:১১:১১
P৪ ১৬:০৮:২৭

বিগত ৩১শে জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে একটি পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ সংঘটিত হয়েছে। এ সময় চাঁদ পৃথিবীর নিকটতম অবস্থানে আসে এবং তাই চাঁদকে অন্যান্য সময়েের চেয়ে খানিকটা বড় দেখায়। অতিকায় আকারের এ চাঁদকে 'সুপারমুন' নামে অভিহিত করা হয়। এর আগে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ তে সর্বশেষ অতিকায় চাঁদ ঘটিত চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করা হয়েছিলো।

গ্রেগরীয় সৌর বর্ষপঞ্জির একই মাসে দুটি পূর্ণিমা সংঘটিত হলে দ্বিতীয় পূর্ণিমার চাঁদকে 'ব্লু মুন' বা 'নীল চন্দ্র' বলা হয়। ৩১শে জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখের পূর্ণিমাটি ছিলো এ মাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা। তাই, এ পূর্ণিমাটি 'অতিকায় চাঁদ' হবার পাশাপাশি 'নীল চন্দ্র'ও বটে। তবে, 'নীলচন্দ্র' নামের সাথে পূর্ণিমাকালীন চাঁদের রঙের কোন সম্পর্ক নেই।

৩১শে জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখের পূর্ণিমাটির আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিলো, পূর্ণগ্রাস এই চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের দৃশ্যমান অংশ রক্তিম বর্ণ ধারণ। এ জন্য এ পূর্ণিমাকে 'ব্লাড মুন' বা 'রক্তাভ চন্দ্র' নামে অভিহিত করা হয়। বিরল তিন বৈশিষ্ট্য খ্যাত এ পূর্ণিমা চাঁদ 'সুপার ব্লু ব্লাড মুন' তথা অতিকায় রক্তাভ নীল চন্দ্র নামে আখ্যায়িত হয়েছে। এটি পৃথিবীর প্রায় সব স্থান থেকে দেখা গেছে। এর আগে ৩০শে ডিসেম্বর, ১৯৮২ সালে কেবল মাত্র পূর্ব গোলার্ধ থেকে দ্রষ্টব্য এই অতিকায় রক্তাভ নীল চন্দ্র দেখা গিয়েছিল। ৩১ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখের পূর্ণিমার মত পৃথিবীর প্রায় সব স্থান থেকে দ্রষ্টব্য হয়েছে এমন ঘটনা এর আগে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিলো ৩১শে মার্চ, ১৮৬৬ সালে। দীর্ঘ ১৯ বছরের ১ মেটোনিক চক্র শেষে একই রকম ঘটনা আবারো প্রত্যক্ষ করা যাবে আগামি ২০৩৭ সালের ৩১শে জানুয়ারি।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

পৃথিবীর চারিদিকে সতত ঘূর্ণনশীল চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়া দ্বারা আচ্ছাদিত অঞ্চল দিয়ে ভ্রমণ করে তখনই চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে। চন্দ্রগ্রহণ যখন শুরু হয়, তখন প্রথমে পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে আবছাভাবে অন্ধকার করে ফেলে। এরপর, ধীরে ধীরে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের অংশবিশেষকে ঢেকে ফেলে। এ সময় চাঁদের রং খানিকটা লালচে বাদামি দেখায়। তবে, বায়ুমণ্ডলের অবস্থার উপর ভিত্তি করে এ বর্ণের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হতে পারে। চাঁদকে লালচে দেখাবার কারণ র‍্যালে বিক্ষেপণ (র‍্যালে বিক্ষেপণের জন্যই অস্তরবি লাল দেখায়)এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে ছায়াবেষ্টিত অঞ্চলে যাবার সময় আলোকরশ্মির প্রতিসরণ।

পৃথিবীর ছায়া পড়ে আচ্ছাদিত হয়েছে এমন অঞ্চল দিয়ে চাঁদ যখন পরিভ্রমণ করতে থাকে তখন চাঁদকে ঠিক কেমন দেখায় তার মোটামুটি একটি নমুনা নিচের সিমুলেশনে তুলে ধরা হয়েছে।

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

চন্দ্রগ্রহণটি কর্কট তারকামণ্ডলে ঘটেছে, যা মৌচাক স্তবক থেকে কয়েক ডিগ্রী পূর্বে

দৃশ্যমানতা[সম্পাদনা]

আলোচ্য পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর প্রশান্ত মহাসাগর চাঁদের দিকে মুখ করে ছিলো। মধ্য ও পূর্ব এশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, নিউজিল্যান্ড, এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চল থেকে চাঁদের এ বিরল দৃশ্য সন্ধ্যাবেলা থেকেই স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। পশ্চিম এশিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সন্ধ্যা হবার আগে থেকেই চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়। এসব অঞ্চল থেকে সন্ধ্যার পরও দীর্ঘ সময় যাবত পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করা সম্ভবপর হয়।   


বৃহত্তর অংশে গ্রহণ লাগার সময়কালীন চাঁদ থেকে দৃষ্ট পৃথিবীর স্বরূপ

দৃশ্যমানতার মানচিত্র

সময়[সম্পাদনা]

সময়অঞ্চল অনুযায়ী ইভেন্টের সময়
গ্রহণ HST AKST PST MST CST EST UTC MSK IST ICT CST JST AEDT NZDT
ইউটিসি থেকে অঞ্চল −১০ ঘ −৯ ঘ −৮ ঘ −৭ ঘ −৬ ঘ −৫ ঘ ০ ঘ +৩ ঘ +৫½ ঘ +৭ ঘ +৮ ঘ +৯ ঘ +১১ ঘ +১৩ ঘ
আংশিক প্রচ্ছায়া শুরু ০০:৫১ ০১:৫১ ০২:৫১ ০৩:৫১ ০৪:৫১ ০৫:৫১ ১০:৫১ ১৩:৫১ ১৭:৫১ ১৮:৫১ ১৯:৫১ ২১:৫১ ২৩:৫১
আংশিক গ্রহণ শুরু ০১:৪৮ ০২:৪৮ ০৩:৪৮ ০৪:৪৮ ০৫:৪৮ ০৬:৪৮ ১১:৪৮ ১৪:৪৮ ১৭:১৮ ১৮:৪৮ ১৯:৪৮ ২০:৪৮ ২২:৪৮ ০০:৪৮
পূর্ণগ্রহণ শুরু ০২:৫২ ০৩:৫২ ০৪:৫২ ০৫:৫২ ০৬:৫২ ১২:৫২ ১৫:৫২ ১৮:২২ ১৯:৫২ ২০:৫২ ২১:৫২ ২৩:৫২ ০১:৫২
মধ্য-গ্রহণ ০৩:৩০ ০৪:৩০ ০৫:৩০ ০৬:৩০ ১৩:৩০ ১৬:৩০ ১৯:০০ ২০:৩০ ২১:৩০ ২২:৩০ ০০:৩০ ০২:৩০
পূর্ণগ্রহণ শেষ ০৪:০৮ ০৫:০৮ ০৬:০৮ ০৭:০৮ ১৪:০৮ ১৭:০৮ ১৯:৩৮ ২১:০৮ ২২:০৮ ২৩:০৮ ০১:০৮ ০৩:০৮
আংশিক গ্রহণ শেষ ০৫:১১ ০৬:১১ ০৭:১১ ১৫:১১ ১৮:১১ ২০:৪১ ২২:১১ ২৩:১১ ০০:১১ ০২:১১ ০৪:১১
আংশিক প্রচ্ছায়া শেষ ০৬:০৮ ০৭:০৮ ১৬:০৮ ১৯:০৮ ২১:৩৮ ২৩:০৮ ০০:০৮ ০১:০৮ ০৩:০৮ ০৫:০৮

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]