জাজ (মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর)

পাকিস্তান মোবাইল কমিউকেশনস লিমিটেড

দুনিয়া কো বাতা দো (অনু. "পৃথিবীকে বলে দাও")
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অবস্থিত সদর দফতর
বাণিজ্যিক নাম	জাজ
স্থানীয় নাম	جاز
প্রাক্তন নাম	মোবিলিংক
ধরন	সাবসিডিয়ারি
শিল্প	টেলিফোন ও ইন্টারনেট
প্রতিষ্ঠাকাল	১৯৯৪ (মটোরোলা এবং সাইফ গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে)
সদরদপ্তর	ইসলামাবাদ , পাকিস্তান
বাণিজ্য অঞ্চল	পাকিস্তান
প্রধান ব্যক্তি	আমির হাফিজ ইবরাহিম (সিইও)
পণ্যসমূহ	মোবাইল টেলিফোনি মোবাইল ব্যাংকিং
আয়	রুপি২৬১.২ বিলিয়ন (US$১.৬৩ billion) (২০২২)
কর্মীসংখ্যা	৫,১২৮ (২০২২)
মাতৃ-প্রতিষ্ঠান	ভিওন
অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান	জাজক্যাশ
ওয়েবসাইট	www.jazz.com.pk

পাকিস্তান মোবাইল কমিউনিকেশনস লিমিটেড, যা জাজ হিসেবে ব্যবসা করছে (উর্দু: جاز‎‎ ) মোবিলিংক এবং ওয়ারিদ পাকিস্তানের একীভূতকরণের মাধ্যমে গঠিত পাকিস্তানের বৃহত্তম মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী।

এটি ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের প্রিপেইড এবং পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করে। কোম্পানিটির সদর দফতর ইসলামাবাদে অবস্থিত।

ইতিহাস

পূর্বে মোবিলিংক নামে পরিচিত কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে সাইফ গ্রুপ এবং মটোরোলা ইনকর্পোরেটেডের মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারীতে মিশর ভিত্তিক ওরাসকম ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিং ৬৯% নিয়ন্ত্রণের সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার হওয়ার জন্য জাজে মটোরোলার শেয়ার কিনেছিল। তারপর ২০০৭ সালের জুনে জাজের ১০০% মালিক হওয়ার জন্য ওরাসকম সাইফ গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে অবশিষ্ট শেয়ার ক্রয় করে।

২০১০ সালে রুশ অপারেটর ভিওন ৬.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে জাজসহ ওরাসকম-এর বেশিরভাগ টেলিকম সম্পদ অর্জন করতে সম্মত হয়, যা গ্রাহক বেস দ্বারা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর তৈরি করে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে আবুধাবি গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিওন পাকিস্তানের ওয়ারিদ টেলিকমের ১০০% অধিগ্রহণের ঘোষণা করেছে। যেটি যথাযথ অনুমোদনের পর জুলাই ২০১৬-এ সম্পূর্ণ হয়েছে, প্রথমবারের মতো স্থানীয় টেলিকম কোম্পানি অধিগ্রহণের ফলে ৫০ মিলিয়নের সম্মিলিত গ্রাহক বেস তৈরি হয়েছে।

মোবিলিংক এবং ওয়ারিদ পাকিস্তানের একীভূত হওয়ার পর ২০১৭ সালে মোবিলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে জাজ নামে পুনঃব্র্যান্ড করা হয়। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাজের পাকিস্তানে ৭০ মিলিয়ন গ্রাহক ছিল, যার মধ্যে ৪২ মিলিয়ন ফোরজি গ্রাহক।

ভিওন আবুধাবি গ্রুপ থেকে জাজের অবশিষ্ট ১৫% শেয়ার শতভাগ মালিকানার জন্য কিনে নেয়। ২০২১ সালের মার্চ মাসে ভিওন মার্কিন $২৭৩ মিলিয়ন এর বিনিময়ে আবুধাবি গ্রুপের ১৫ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছে।

নেটওয়ার্ক

জাজের দেশে ১৪,০০০টিরও বেশি সক্রিয় সেল সাইট রয়েছে, যেখানে ২৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি ফাইবার-অপ্টিক তারের স্থাপন করা হয়েছে। হুয়াওয়েই, নোকিয়া-সিয়েমেন্স এবং জেডটিই হল জাজএ রেডিও বেস স্টেশন, মাইক্রোওয়েভ সরঞ্জাম এবং নেটওয়ার্ক সুইচ সহ নেটওয়ার্কিং সরঞ্জামগুলির প্রাথমিক বিক্রেতা৷

২০১৪ সালে জাজ পিটিএ দ্বারা অনুষ্ঠিত ২০১৪ এনজিএমএস নিলামে অংশগ্রহণ করেছিল। যা তাদের একটি থ্রিজি লাইসেন্সের জন্য বিড করার অনুমতি দেয় এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের একটি ১০ মেগাহার্জ ব্লক জাজকে বরাদ্দ করা হয়েছিল।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে জাজ তাদের নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি) উদ্বোধন করে যা প্রতিদিনের নেটওয়ার্ক অপারেশন পরিচালনা করতে আইবিএম এবং ডেল ইএমসি পণ্য ব্যবহার করে এবং কোম্পানিকে সপ্তাহের সাতদিন চব্বিশ ঘন্টা নেটওয়ার্ক নজরদারি প্রদান করে।

রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সারাংশ

ফ্রিকোয়েন্সি	প্রোটোকল	ব্যান্ড	ক্লাস	চ্যানেলের প্রশস্ততা
৯০০ মেগাহার্জ	জিএসএম/জিপিআরএস /এজ		২জি	২.৪ মেগাহার্জ / ৭.৪ মেগাহার্জ
২১০০ মেগাহার্জ	ইউএমটিএস / এইচএসপিএ+ / ডিসি-এইচএসপিএ+	১	৩জি	৫ মেগাহার্জ/১০ মেগাহার্জ
১৮০০ মেগাহার্জ	এলটিই / এলটিই-এ	৩	ফোরজি/ফোরজি+	২০ মেগাহার্জ
৯০০ মেগাহার্জ	এলটিই / এলটিই-এ	৮	ফোরজি/ফোরজি+	৫ মেগাহার্জ/১০ মেগাহার্জ
২১০০ মেগাহার্জ	এলটিই / এলটিই-A	১	ফোরজি/ফোরজি+	৫ মেগাহার্জ

পিটিএ কর্তৃক অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের এনজিএমএস নিলামে জাজের অংশগ্রহণ তাদের থ্রিজি লাইসেন্সের জন্য বিড করার অনুমতি দেয়, যার মধ্যে ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ১০ মেগাহার্জ ব্লক অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৪ সালে জুলাইয়ে তারা ঘোষণা করেছিল যে তাদের ১০,০০০টিরও বেশি থ্রিজি এবং ৯,০০০ ফোরজি প্রস্তুত সেল সাইট ছিল। ২০১৪ সালের এনজিএমএস নিলামে জাজ কোনো ফোরজি স্পেকট্রামের জন্য বিড করেনি।

ওয়ারিদের সাথে একীভূত হওয়ার পরে, জাজ ওয়ারিদের লাইসেন্স ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছিল যাতে তারা ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডে ৫ মেগাহার্জ ব্লক ব্যবহার করে একটি ফোরজি নেটওয়ার্ক হতে পারে। ২০১৭ সালের মে মাসে জাজ পিটিএ দ্বারা অনুষ্ঠিত ২০১৭ এনজিএমএস নিলামে জিতেছিল। এর মধ্যে রয়েছে ১৮০০ মেগাহার্জ (এফডিডি-এলটিই ব্যান্ড ৩) ফ্রিকোয়েন্সিতে একটি ১০ মেগাহার্জ ব্লক যা জাজ ফোরজির জন্য ব্যবহার করা হবে। পিটিএ দ্বারা ২০১৭ সালের ৩০শে জুনে জাজকে অতিরিক্ত ফোরজি স্পেকট্রামও দেওয়া হয়েছিল।

ফোরজি+ / এলটিই-এ মুক্তি

জাজ তাদের বিদ্যমান ১৮০০ মেগাহার্জ ফোরজি স্পেকট্রামের সাথে ক্যারিয়ার সমষ্টির জন্য তার ৯০০ মেগাহার্জ স্পেকট্রাম থেকে একটি ১০ মেগাহার্জ ব্লক রিফার্ম করেছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এলটিই-এ নেটওয়ার্ক চালু করা হবে। এটি টেলিনর পাকিস্তান এবং জোং ফোরজির পর তৃতীয় ক্যারিয়ার হিসেবে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এলটিই-এ চালু করেছে।

২০২১ জুলাইয়ে ২৫৬-কিউএএম এবং ম্যাসিভ মিমো প্রবর্তনের সাথে তার বিদ্যমান এলটিই নেটওয়ার্ককে এলটিই-এ-প্রোতে আপগ্রেড করেছে। এটি বর্তমানে পাকিস্তানের একমাত্র নেটওয়ার্ক যা তার এলটিই নেটওয়ার্কে ৩সিই (ট্রাই-ব্যান্ড) ক্যারিয়ার অ্যাগ্রিগেশন এবং ২৫৬-কিউএএম অফার করছে।

ভয়েস ওভার এলটিই (ভোএলটিই)

জাজ তার অংশীদার হুয়াওয়েই এবং নোকিয়ার সাথে ২০১৭ সালের মে মাসে ভোলটিই পরীক্ষা করেছে, একটি প্রেস বিবৃতিতে ঘোষণা করা হয়েছে।

স্যামসাং, হুয়াওয়েই, অপো, ভিভো, আইটেল, শাওমি, রিয়েলমি, ইনফিনিক্স এবং জাজ ডিজিট ব্র্যান্ডের ফিচার ফোনসহ সমর্থিত ডিভাইসগুলিসহ জাজ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার নেটওয়ার্ক জুড়ে ভোলটিই চালু করেছে।

ওয়াইফাই কলিং (ভোওয়াইফাই)

জাজ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে 'জাজফাই' ব্র্যান্ডের ভয়েস ওভার ওয়াইফাই (ভোওয়াইফাই) ক্ষমতা চালু করেছে। এটি পাকিস্তানের একমাত্র ক্যারিয়ার যা বর্তমানে ভোওয়াইফাই প্রস্তাব করছে।

ফাইভজি ট্রায়াল

২০২০ সালের জানুয়ারিতে জাজ জানিয়েছিল যে তারা ১.৫জিবিপিএস গতিতে ৫জি ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই ট্রায়ালগুলি ২.৬ গিগাহার্জ স্পেকট্রামে করা হয়েছিল।

সাবসিডিয়ারি

জাজক্যাশ

জাজ শাখাবিহীন ব্যাংকিং বাজারে প্রবেশের জন্য মোবিলিংক মাইক্রোফাইন্যান্স ব্যাংকিয়ের সাথে অংশীদারিত্ব করেছিল, প্রথমে মোবিক্যাশ ব্র্যান্ড নামে চালু হয়েছিল, পরে এটি জাজক্যাশে পরিবর্তিত হয়। এটি টেলিনর পাকিস্তানের ইজিপয়সার সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী।