জয়ন্তিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জয়ন্তিয়া
মোট জনসংখ্যা
৩,১৯,২৩৪ (২০১১) [১]
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
মেঘালয়, ভারত৩,১৬,৮৬৩ (২০১১)[২]region1
আসাম, ভারত২,১৬৯ (২০১১)[৩]
ভাষা
পনার
ধর্ম
খ্রিস্টধর্ম, নিয়ামত্রে (নিয়াম খাসি)[৪]
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
খাসিয়া

জয়ন্তিয়া, যারা পনার বা সিন্টেঙ্গ নামেও পরিচিত, হল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া জনগোষ্ঠীর একটি উপ-উপজাতি গোষ্ঠী।[৫] এই উপজাতির মানুষ মাতৃবংশ। তারা জয়ন্তিয়া ভাষায় কথা বলে, যেটি অস্ট্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত এবং খাসি ভাষার সাথে খুব মিল যুক্ত। জয়ন্তিয়া জনগণ ভারতের মেঘালয়ের পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় এবং পূর্ব জয়ন্তিয়া পার্বত্য জেলার অধিবাসী। তারা নিজেদেরকে "কি খুন হাইনিউ ট্রেপ" (৭-কুটিরের শিশু) বলে ডাকে। তাদের প্রধান উৎসব হল বেহেদেইনখলাম, চাদ সুকরা, চাদ পাস্তিয়েহ এবং লাহো নৃত্য।

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

"পনার" নামটি হল একটি অন্তঃনাম, যেখানে "জয়ন্তিয়া" এবং "সিন্টেঙ্গ" হল বহিঃনাম[৫] "জয়ন্তিয়া" শব্দটি একটি সাবেক রাজ্যের নাম থেকে এসেছে, যেটি হল জয়ন্তিয়া রাজ্য, এর শাসক ছিল সিন্টেঙ্গরা। একটি তত্ত্ব বলে যে "জয়ন্তিয়া" শব্দটি জয়ন্তী দেবী বা জৈন্তেশ্বরীর মন্দিরের নাম থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তিনি ছিলেন হিন্দু দেবী দুর্গার অবতার। অন্য একটি তত্ত্ব বলে যে নামটি একটি প্রাক্তন বসতি সুতঙ্গা থেকে সিন্টেঙ্গ এর মাধ্যমে এসেছে; জয়ন্তী দেবীর পৌরাণিক কাহিনী সম্ভবত জয়ন্তিয়া রাজ্যের হিন্দুকরণের পরে তৈরি হয়েছিল।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

খাসি উপজাতির সমস্ত উপ-উপজাতির মতো, জয়ন্তিয়া উপ-উপজাতিদের নিজস্ব কোনো নথিভুক্ত ইতিহাস নেই। অবশ্য, আসামের বুরঞ্জী ঘটনাপঞ্জি এবং ব্রিটিশ নথিতে তাদের উল্লেখ আছে।[৬]

খাসি উপজাতির অন্যান্য উপ-উপজাতির মতো, জয়ন্তিয়া জনগণও কি হাইনিউ ট্রেপ (সাত মা বা সাতটি পরিবার) এর বংশধর বলে দাবি করে। মধ্যযুগের জয়ন্তিয়া রাজ্যের শাসকরা সিন্টেঙ্গ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৫] রাজ্যটি ১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিয়ে নেয় এবং আসাম প্রদেশে একীভূত করে। ১৯৭২ সালে স্বাধীন ভারতে মেঘালয় রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর এই অঞ্চলে জয়ন্তিয়া পার্বত্য জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জৈন্তাপুর উপজেলা, সিলেট, বাংলাদেশে জয়ন্তিয়ারা রয়েছে।

ধর্ম[সম্পাদনা]

জয়ন্তিয়াদের আদি উপজাতীয় ধর্ম নিয়ামত্রে নামে পরিচিত।[৭] জয়ন্তিয়া আদিবাসীরা বিশ্বাস করে যে তাদের ধর্ম ঈশ্বর প্রদত্ত (মানুষ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়) এবং ঈশ্বরের আদেশে এই পৃথিবীতে আসে। ঈশ্বরের দ্বারা নির্দেশিত তিনটি মূল নীতি হল কামাই ইয়ে হক, টিপব্রু টিপব্লাই এবং টিপকুর টিপখা। তারা সঠিক জীবিকার উপর ভিত্তি করে সঠিক জীবনযাপন এবং অনুশীলন; ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর জন্য সহনাগরিকদের প্রতি কর্তব্য পালন; এবং পিতা ও মাতার গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা সূচিত করে। তাই, নিয়ামত্রে ঈশ্বর উপলব্ধি অর্জনের জন্য সহ-নাগরিকের প্রতি সম ব্যবহার করার উপর জোর দেয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  2. https://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  3. https://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
  4. Betty, Laloo (২০ জুলাই ২০১৬)। "Reconstructing the early Jaintia state through oral traditions"Universityhdl:10603/217208 
  5. Soumen Sen (২০০৪)। Khasi-Jaintia folklore: context, discourse, and history। NFSC। পৃষ্ঠা 56। আইএসবিএন 978-81-901481-3-9। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১১ 
  6. Hamlet Bareh (২০০১)। Encyclopaedia of North-East India: Meghalaya। Mittal Publications। পৃষ্ঠা 307। আইএসবিএন 978-81-7099-791-7 
  7. Kumar Suresh Singh; Anthropological Survey of India (১৯৯৪)। People of India: MeghalayaAnthropological Survey of India। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 978-81-7046-123-4 

টেমপ্লেট:Scheduled tribes of India টেমপ্লেট:Hill tribes of Northeast India