খেরুর মসজিদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুর্শিদাবাদের খেরুর মসজিদ

খেরুর (খের উল) মসজিদ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার একটি প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। এটি বহরমপুর শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিমি উত্তরে অবস্থিত। ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ- এর বিবৃতি অনুযায়ী এই মসজিদটি ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে হুসেন শাহী রাজবংশীয় সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে নির্মিত হয়েছিল। খেরুর মসজিদ নির্মাণ করান সুলতানের সভাসদ মুয়াজ্জম রিফাত খান।

অবস্থান[সম্পাদনা]

এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদীঘি ব্লকের অন্তর্গত খেরুর গ্রামে অবস্থিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

খেরুর মসজিদ নির্মিত হয়েছিল হুসেন শাহী রাজবংশের সময়কালে। খেরুর একটি প্রাচীন স্থান। সুলতানী আমলের পূর্বেও এটি একটি প্রসিদ্ধ জনপদ ছিল বলে মনে করা হয়।[১] মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপরে দুটি কালো প্রস্তরফলকে আরবী ভাষায় মসজিদের নির্মাণকর্তা হিসেবে মুয়াজ্জম রিফাত খানের নাম লেখা রয়েছে। সম্ভবত আরবী মাসের 796 হিজরী সনে মসজিদটি স্থাপিত হয়েছিল।

স্থাপত্য[সম্পাদনা]

খেরুর মসজিদ বাংলার স্থাপত্য শিল্পের একটি অন্যন নিদর্শন। মসজিদটি সম্পূর্ণ টেরাকোটা বা পোড়ামাটিতে নির্মিত হয়েছে। উঁচু ঢিবির ওপর অবস্থিত খেরুর মসজিদের ওপর এখন তিনটি গম্বুজ অবশিষ্ট রয়েছে। মসজিদে প্রবেশের পাঁচটি রাস্তা রয়েছে। বাংলায় প্রচলিত টেরাকোটার অপূর্ব অলঙ্করণে মসজিদটি দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৬ মিটার, প্রস্থ ৩২ মিটার এবং উচ্চতা প্রায় ২৪ ফুট। পূর্বে এটির উচ্চতা আরও বেশি ছিল। ১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে খেরুর মসজিদের প্রার্থনাকক্ষের মূল এবং বৃহৎ গম্বুজটি ভেঙে পড়ে।[২] মসজিদটি বাংলার স্থাপত্যরীতির অপূর্ব নিদর্শন। দেয়ালের সূক্ষ্ম অলঙ্করণ হিন্দু মুসলিম মিশ্র সংস্কৃতির পরিচয় দেয়। টেরাকোটায় সুসজ্জিত এত অপূর্ব অলঙ্কৃত মসজিদ পশ্চিমবঙ্গে বিরল ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বিজয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘পশ্চিমবঙ্গের পুরাসম্পদ: মুর্শিদাবাদ’
  2. "ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পাঠান আমলের খেরুর মসজিদ"আনন্দবাজার পত্রিকা 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]