কার্থেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Carthage
Top: Carthage Saint-Louis Cathedral, Malik-ibn Anas Mosque, Middle: Carthage Palace, Bottom: Baths of Antoninus, Amphitheatre of Carthage (all items from left to right)
কার্থেজ তিউনিসিয়া-এ অবস্থিত
কার্থেজ
তিউনিসিয়ায় অবস্থান
অবস্থানTunisia
অঞ্চলTunis Governorate
স্থানাঙ্ক৩৬°৫১′১০″ উত্তর ১০°১৯′২৪″ পূর্ব / ৩৬.৮৫২৮° উত্তর ১০.৩২৩৩° পূর্ব / 36.8528; 10.3233
ধরনCultural
মানকii, iii, vi
অন্তর্ভুক্তির তারিখ1979 (3rd session)
রেফারেন্স নং37
RegionNorth Africa
The layout of the Punic city-state Carthage, before its fall in 146 BC.

কারথেজ ছিল একটি প্রাচীন নগরী যা বর্তমান তিউনিসিয়ার তিউনিস হ্রদের পূর্ব পাশে অবস্থিত ছিল। কারথেজ প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি এবং শাস্ত্রীয় বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধশালী শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। পরবর্তীতে এটি প্রাচীন কারথেজ সভ্যতার রাজধানীতে পরিণত হয় এবং রোমানদের সময়ে রোমান কারথেজ নামে পরিচিত ছিল।

ফিনিসীয় উপনিবেশ হিসেবে এই শহরের যাত্রা শুরু হয়, যা পরবর্তীতে প্রথম সহস্রাব্দের দক্ষিণ-পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এক বিশাল পানিক সাম্রাজ্যের আকার নেয়। কিংবদন্তি অনুসারে, টায়ারের রাণী এলিসা, আল্যাসা বা ডিডো, এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যদিও তাঁর ঐতিহাসিকতা নিয়ে বেশ প্রশ্ন উঠেছে। কাহিনী অনুযায়ী, ডিডো একটি স্থানীয় উপজাতির কাছ থেকে জমি চান এবং উপজাতি তাকে বলে যে একটি বলদের চামড়া যতটুকু জমি আবৃত করতে পারে ততটুকুই জমি তিনি পাবেন। রাণী সেই চামড়াটি কেটে সরু ফালি তৈরি করেন এবং নতুন শহরের সীমানা রচনা করেন। কারথেজ সমৃদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে, সাম্রাজ্য উপনিবেশগুলি পরিচালনার জন্য বিদেশে উপনিবেশবাদীদের পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটদের পাঠাতে শুরু করে।

তৃতীয় পিউনিক যুদ্ধের সময় রোমান প্রজাতন্ত্রের প্রায় তিন বছরব্যাপী অবরোধের পর ১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রাচীন শহর কারথেজ ধ্বংস হয়ে যায়। এক শতাব্দী পরে এটিকে রোমান কারথেজে পুনর্নির্মাণ করা হয়, এবং অবশেষে আফ্রিকা প্রদেশের সীমানার ভেতর রোমান সাম্রাজ্যের একটি প্রধান শহরে পরিণত হয়। প্রাচীন যুগের শেষের দিকে এবং মধ্যযুগেও বাইজেন্টাইন সময়কালে কারথেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা পালন করেছিল। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পুনর্দখল রুখতে ৬৯৮ সালে কারথেজের যুদ্ধের পর উমাইয়া বাহিনী শহরটি লুণ্ঠন করে ধ্বংস করে দেয়। মুসলিম আমলে এই অঞ্চল দখলে থাকে এবং হাফসিদ আমল পর্যন্ত মুসলিমদের দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হত। এখানকার অধিবাসীদের অষ্টম ক্রুসেডের সময় গণহত্যা করা হয় এবং হাফসিদরা এর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয় যাতে এটিকে শত্রু শক্তি পুনরায় ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে। এটি একটি এপিস্কোপাল আসন বা বিশপের এলাকা হিসাবে কাজ করা অব্যাহত রাখে।

আঞ্চলিক শক্তির কেন্দ্র মধ্যযুগে কাইরুয়ান এবং টিউনিসের মদিনায় স্থানান্তরিত হয়। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, কারথেজ টিউনিসের একটি উপকূলীয় উপশহর হিসাবে বিকশিত হতে শুরু করে; ১৯১৯ সালে এটি কারথেজ পৌরসভা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি প্রথম ১৮৩০ সালে ড্যানিশ কনসাল ক্রিশ্চিয়ান টাক্সেন ফালবে দ্বারা জরিপ করা হয়েছিল। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে চার্লস আর্নেস্ট বেউলে এবং আলফ্রেড লুই ডেলাত্রে খননকাজ সম্পন্ন করেন। কার্থেজ ন্যাশনাল মিউজিয়ামটি ১৮৭৫ সালে কার্ডিনাল চার্লস লাভিগেরি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯২০-এর দশকে ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা পরিচালিত খননকার্যগুলো প্রথমবারের মতো অসাধারণ মনোযোগ আকর্ষণ করে কারণ তারা শিশু বলির প্রমাণ খুঁজে পায়। প্রাচীন কারথেজে শিশু বলি প্রচলিত ছিল কিনা তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় খনন করা ওপেন-এয়ার কারথেজ প্যালিও-ক্রিশ্চিয়ান মিউজিয়ামে সেসব প্রদর্শনী রয়েছে। এই ধ্বংসাবশেষের স্থানটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]