এলি আহমেদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এলি আহমেদ
নিজ বাসভবনে এলি আহমেদ
জন্ম (1934-03-14) ১৪ মার্চ ১৯৩৪ (বয়স ৯০)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশালেখক, গীতিকার, কলামিস্ট, চিত্রনাট্যকার
পুরস্কারপদ্মশ্রী (২০১৭)

এলি আহমেদ (১৪ মার্চ, ১৯৩৪) একজন ভারতীয় লেখক, চিত্রনাট্যকার, নির্দেশক, পরিচালক, গীতিকার, কস্টিউম ডিজাইনার, অভিনেত্রী এবং সামাজিক কর্মী। এছাড়াও তিনি নারী পত্রিকা 'ওরানী'-এর সম্পাদক, প্রকাশক এবং স্বত্বাধিকারী। এটি ১৯৭০ সাল থেকে উত্তর-পূর্বের একমাত্র নারী ম্যাগাজিন। এলি ১৯৬৭ সালে আসামে প্রথম মহিলা নাট্যদল সংগঠিত করেন। সাহিত্য ও শিক্ষায় অবদানের কারণ তিনি ২০১৭ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন।[১]

জীবনের প্রথমার্ধ[সম্পাদনা]

এলি আহমেদ নাজিরার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্দুর রশিদ ছিলেন একজন সার্জন এবং মা হামিদা বাসিদ।[২] অল্প বয়সেই এলি মাকে হারান। এলির পূর্বপুরুষ মেদিনী মোহন চৌধুরীর বই লুইত, বারাক এবং ইসলামে উল্লেখিত পাঁচটি পার্সি পরিবারের একটিতে তার শিকড় খুঁজে পেয়েছেন। এলি অনেকের কাছেই বিভিন্ন নামে পরিচিত। নলিনীবালা দেবী তাকে পোখিলা (প্রজাপতি), নির্মলপ্রভা বরদলৈ তাকে বেলি (সূর্য), চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রজেন বড়ুয়া তাকে গীত (গান) এবং ভূপেন হাজারিকা তাকে রং বলে ডাকেন। আর বন্ধুরা তাকে জুঁই (আগুন) বলে ডাকেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ছোটবেলা থেকেই তিনি স্ব-রচিত কবিতা এবং শিশুতোষ ছড়া আবৃত্তি করতেন। ১৯৬৭ সালে, তিনি রং চোরা নামে একটি শিশু সাংস্কৃতিক দল গঠন করেন এবং আসামের বিভিন্ন অঞ্চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করেছেন। ১৯৬২ সালে আসাম সাহিত্য সভার নাজিরা অধিবেশনে তার প্রথম গান ভাগ্যর চকোরি ঘুরে পরিবেশিত হয়েছিল।

তিনি ১৯৬৫ সালে সমাজকল্যাণ বিভাগের অধীনে বালক সেবিকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একটি সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত হতে গুয়াহাটিতে এসেছিলেন।

ব্রজেন বড়ুয়ার বিখ্যাত চলচ্চিত্র ডাক্তার বেজবড়ুয়া-তে দ্বীপেন বড়ুয়ার বিখ্যাত গান গা গা আজি গাই জা এই গীতোকে গা - এর মধ্য দিয়ে তিনি একজন গীতিকার হিসাবে তার পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। তিনি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখেছেন যেমন:

  • বড়ুয়ার সংসার
  • সদরী
  • সোনময়না
  • প্রতিদিন
  • দেবতা
  • ডাক্তার বেজবড়ুয়া ২

তিনি টেলিভিশন সিরিয়াল গোধূলি, সাহুয়াল এবং অপবাদের জন্য গান লিখেছেন।

তিনি বেশ কয়েকটি অসমীয়া চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার ছিলেন

  • ধ্রুবতরা
  • বরদৈচিলা
  • বনফুল
  • জন্মভূমি

তিনি পাঁচটি তথ্যচিত্রের চিত্রনাট্য করেছেন-

  • আহোম যুগের পুরাতন স্মৃতিস্তম্ভ (Old Monuments of Ahom Age)
  • শিশু মনোবিজ্ঞান (Child Psychology)
  • মহাশ্বেতা (Mahasheeta)
  • সৈয়দ আব্দুল মালিক
  • দুধ (The Milk)

কিছু চলচ্চিত্রের গল্পকার ছিলেন তিনি[২]

  • বড়ুয়ার সংসার
  • জখিনি
  • বনফুল
  • মুখাগ্নি
  • জন্মভূমি
  • রিক্সাওয়ালা

তিনি অনেক চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার, শিল্প পরিচালক এবং কস্টিউম ডিজাইনার ছিলেন। বেশ কিছু সফল নাটকের কৃতিত্ব আছে তার-

  • ভাখখারি
  • কোথাতুনু কি
  • সকিনা জেঠাইর মনি
  • কাকদেউতার সাধু
  • নাটুসোলা
  • আমি অভিনয় কারা নাই

তার কিছু বই হলো -

  • অঙ্কুর, একটি ছোট গল্প সংকলন
  • মনিরাম দেওয়ান, আসাম সাহিত্য সভা থেকে প্রকাশিত
  • রংমনোর সোম
  • মোই কেতিয়া আইতা হোম, অসম প্রকাশন পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত
  • অসম বীরাঙ্গনা, ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগ দ্বারা প্রকাশিত

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

তিনি অসম সাহিত্য সভার একজন আজীবন সদস্য এবং ১৯৭৬ সালে তার বই বনফুল এর জন্য বয়স্ক শিক্ষার জন্য জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী। সাহিত্যের ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য তিনি[৪] সালে ড. নির্মলপ্রভা বরদলৈ পুরস্কার এবং[৫] সালে অমলপ্রভা দাস পুরস্কার পান। আসামীয় শিশুসাহিত্যে অমূল্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে তিনি সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান।[৬]

সাহিত্য ও শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৭ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "The Sentinel"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "Niyomiya Barta - The Assamese Daily"web.archive.org। ২০২৩-০৫-০২। ২০২৩-০৫-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০২ 
  3. "The Telegraph - Calcutta : Northeast"। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ 
  4. Trade, TI। "The Assam Tribune Online"। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. "পলকতে সুখ দুখৰ বতৰা"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ 
  6. "সাহিত্য একাডেমি" (পিডিএফ)