উলামায়ে হিন্দ কা শানদার মাযী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উলামায়ে হিন্দ কা শানদার মাযী
লেখকমুহাম্মদ মিয়া দেওবন্দি
মূল শিরোনামউর্দু: علماء ہند کا شاندار ماضی‎‎
অনুবাদকইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
দেশভারত
ভাষাউর্দু
বিষয়ভারতীয় উপমহাদেশের আলেম
প্রকাশিত১৯৩৯ – ১৯৫৭
প্রকাশকজমিয়ত উলামায়ে হিন্দ
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট
আইএসবিএন৯৭৮৮১৯০৫৬৩০৭৯ ইংরেজি সংস্করণ
ওসিএলসি৯৯৪৭৮৭৪৯৬
২৯৭.০৯২২৫৪
এলসি শ্রেণীবিপি১৮৫ .এম৫৯১৩ ২০১৫

উলামায়ে হিন্দ কা শানদার মাযী (উর্দু: علماء ہند کا شاندار ماضی‎‎) ভারতীয় উপমহাদেশের আলেম সমাজের বিপ্লবী ঐতিহ্য নিয়ে উর্দু ভাষায় রচিত মুহাম্মদ মিয়া দেওবন্দির একটি ঐতিহাসিক বই। এর প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হয় ১৯৩৯ সালে। প্রকাশের পর ব্রিটিশ সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে এবং লেখককে কারাবন্দি করা হয়। লেখক মুক্তি পাওয়ার ১৯৫৭ পর্যন্ত বইটির মোট ৪টি খণ্ড প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে মুজাদ্দিদে আলফে সানী আহমেদ সিরহিন্দি থেকে ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের আলেমদের সংগ্রাম ও ইতিহাসের বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করা হয়েছে।[১] বইটি লেখার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুইটি। প্রথমত, রাজনৈতিক আন্দোলনে ওলামাদের অংশগ্রহণকে ওলামাদের মর্যাদার বিরুদ্ধে এক ধরনের বিদআত বলে অভিহিত করা হচ্ছিল। এ গ্রন্থে দেখা গেছে যে, প্রতিটি যুগে ওলামারা সে যুগের রাজনীতিতে বাস্তবিক অংশ নিয়েছেন এবং এর ফল ভোগ করেছেন। দ্বিতীয়ত, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে শক্তিশালী করা।[২] এই বইয়ের পরিপূরক গ্রন্থ উলামায়ে হক আওর উনকে মুজাহিদানা কারনামে। যেখানে ১৮৫৭ পরবর্তী সময়ের আলোচনা স্থান পেয়েছে।

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

এই বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৯ সালে। তখন ছিল বৃটিশ শাসনামল ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন চলমান। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই 'ডিফেন্স অব ইণ্ডিয়া এ্যাক্ট-এর অধীনে মামলা দায়ের করে বইটি বাজেয়াপ্ত ও লেখককে কারাবন্দি করা হয়। আদালতে প্রমাণিত হয় যে, প্রকাশিত গ্রন্থটিতে প্রামাণিক রেফারেন্সে যা বলা হয়েছে তা ঐতিহাসিক, আপত্তিকর নয়।[২] লেখক মুক্ত হওয়ার পর বইটির ওপর পুনঃদৃষ্টি আরোপ করেন এবং অল্প সময়ে ১ম খণ্ড ১৬০ পৃষ্ঠার স্থলে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠা এবং দ্বিতীয় খণ্ড দেড়শত পৃষ্ঠার কলেবর নিয়ে প্রকাশিত হয়। ১ম খণ্ডটির নাম হল উলামায়ে হিন্দ কা শানদার মাযী, ২য় খন্ডটির নাম হল উলামায়ে হক আউর উনকে মুজাহিদানা কারনামে। ১৯৫৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী সৈয়দ মাহমুদের সভাপতিত্বে 'ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম'-এর ইতিহাস রচনার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক হিফজুর রহমান সিওহারভিনাদওয়াতুল মুসান্নিফীনের মহাপরিচালক আতিকুর রহমান উসমানি তাকে পুনরায় কলম হাতে নিয়ে লেখা শুরুর জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। ইত্যবসরে একই কাজের জন্য নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৈয়দ মাহমুদ। ১৯৫৭ পর্যন্ত এর ৪টি খণ্ড রচিত হয়।[৩][৪]

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

প্রথম খন্ডে আহমেদ সিরহিন্দি এবং তার সমসাময়িক খলিফা, মুঘল সাম্রাজ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় খন্ডে শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, তার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, শাহ আবদুল আজিজের রাজনৈতিক অবদান, তার ফতোয়া এবং এর সর্বাধিক জাতীয় প্রভাব, সেই সাথে শাহ মুহাম্মদ ইসমাইল শহীদ ও তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখ রয়েছে। তৃতীয় খণ্ডে শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর কৃতকর্মের দ্বিতীয় সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে। যার জন্য ব্রিটিশদের বারবার সামরিক অভিযান চালাতে হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে এবং শাস্তি দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ খন্ডে আলোচিত হয়েছে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ।[১]

অনুবাদ[সম্পাদনা]

Glorious past of the Indian Ulama শিরোনামে গ্রন্থটির ইংরেজি অনুবাদ করেন ইশরাত হোসেন আনসারি ও হামিদ আফাক কোরেশী, যা ২০১৫ সালে ইদারায়ে আদাবিয়াত দিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির একাধিক বঙ্গানুবাদ হয়েছে। উপমহাদেশের আলিম সমাজের বিপ্লবী ঐতিহ্য নামে একটি বঙ্গানুবাদ প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশআমাদের অতীত আমাদের ঐতিহ্য নামে ২০২১ সালে স্বরলিপি থেকে হাসান মুহাম্মাদ শরীফের আরেকটি বঙ্গানুবাদ প্রকাশিত হয়।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আহমদ, ইশতিয়াক (২০২০)। স্বাধীনতার পূর্বে উলামায়ে দেওবন্দের জীবনী সাহিত্য চর্চা নিয়ে একটি সমালোচনামূলক গবেষণা (গবেষণাপত্র)। ভারত: মাওলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৪৩—১৪৯। hdl:10603/338413 
  2. খলিল আমিনী, নূর আলম (২০১০)। পাসে মার্গ জিন্দাহ। ভারত: ইদারায়ে ইলম ও আদব। পৃষ্ঠা ১০২–১০৩। ওসিএলসি 711638946 
  3. দ্বিতীয় খন্ডের ভূমিকা দ্রষ্টব্য।
  4. Iqbal, Faisal; Ullah, Muhammad Ikram; Akbar, Junaid (২০২০)। "A Research Based Study of the Contribution of Hanfi Juristis of Lahore (1974- 2015)"Al-Azhār (ইংরেজি ভাষায়)। 6 (1): ১২১। আইএসএসএন 2519-6707 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]