ইয়ামড্রক হ্রদ

স্থানাঙ্ক: ২৮°৫৬′ উত্তর ৯০°৪১′ পূর্ব / ২৮.৯৩৩° উত্তর ৯০.৬৮৩° পূর্ব / 28.933; 90.683
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইয়ামড্রক হ্রদ
গাম্পা পাস হতে গৃহীত ছবি (লাসা এবং গিয়ান্তসে শহরের মধ্যবর্তী সড়ক হতে)
স্থানাঙ্ক২৮°৫৬′ উত্তর ৯০°৪১′ পূর্ব / ২৮.৯৩৩° উত্তর ৯০.৬৮৩° পূর্ব / 28.933; 90.683
ধরনস্বাদু পানির প্রাকৃতিক হ্রদ
অববাহিকার দেশসমূহচীন
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য৭২ কিমি (৪৫ মা)
পৃষ্ঠতল অঞ্চল৬৩৮ কিমি (২৪৬ মা)
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতা৪,৪৪১ মি (১৪,৫৭০ ফু)
১৯৯৭ সালের নভেম্বরে মহাকাশ থেকে তোলা চিত্রে ইয়ামড্রক হ্রদ (উর্ধাংশ) এবং পুমা ইয়ুমকো হ্রদ
ইয়ামড্রক হ্রদের নিকট চড়ে বেড়ানো ইয়াক
Yamdrok Lake
শান্ত ইয়ামড্রক লেকের সামনে বিচরনশীল একটি ইয়াক[১]

ইয়ামড্রক হ্রদ (তিব্বতি: ཡར་འབྲོག་གཡུ་མཚོ་ওয়াইলি: yar-'drog. G’yu-mtsho, ZYPY: Yamzhog Yumco; চীনা: 羊卓雍錯; ফিনিন: Yángzhuō Yōngcuò) হলো তিব্বতের একটি স্বাদু পানির হ্রদ। এটি তিব্বতের বৃহত তিনটি পবিত্র হ্রদের একটি।[২] এই লেকটির দৈর্ঘ্য ৭২ কিমি (৪৫ মা)-এরও অধিক। হ্রদটি অনেকগুলো তুষারআবৃত পর্বত দ্বারা বেষ্টিত এবং অনেকগুলো ছোট ছোট প্রবাহ ধারা এতে এসে মিলিত হয়েছে। হ্রদটির পশ্চিমের শেষ প্রান্তে একটি জলপ্রবাহ রয়েছে এবং এটি এর রঙের কারণে এটিকে ইংরেজিতে ফিরোজ বলে অবিহিত করা হয়।[৩] ইয়ামড্রক হ্রদ হতে তিব্বতী শহর গিয়ান্তসে ৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং তিব্বতের রাজধানী লাসা ১০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে অবস্থিত। স্থানীয় পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, ইয়ামড্রক ইউমৎসো হ্রদ আসলে একজন দেবীর রূপান্তরিত রূপ।

হ্রদের পশ্চিম প্রান্তের ছোট গ্রাম বাইদীতে ইয়ামড্রক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয় এবং ১৯৯৬ সাল হতে এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়। এটি তিব্বতের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।[৪]

ভূ-প্রাকৃতিক তথ্য[সম্পাদনা]

হ্রদটি পাখা-আকৃতির এবং এর দক্ষিণাংশ বিস্তৃত হলেও উত্তরাংশ ক্রমান্বয়ে সংকীর্ণ হয়েছে। এর মোট এলাকায় আয়তন ৬৩৮ বর্গ কিলোমিটার এবং এটির গড় গভীরতা ৩০ মিটার ও গভীরতম স্থানে ৬০ মিটার। পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত এই হ্রদটিতে বেশ কয়েকটি উপবৃত্তীয় জলাধার এবং অন্তঃসলিলা রয়েছে। শীতকারে হ্রদটি জমাটবদ্ধ বরফে পরিণত হয়।

জলবায়ু[সম্পাদনা]

ইয়ামড্রক হ্রদ এলাকার জলবায়ু মৃদু শুষ্ক যেখানে দীর্ঘস্থায়ী ঠান্ডা ও অতি শুষ্ক শীতকাল এবং স্বল্পস্থায়ী শীতল ও সিক্ত গ্রীষ্মকাল বিরাজমান। এখানে কিছুটা আলপাইন অঞ্চলে দৃষ্ট তুন্দ্রা জলবায়ুর এবং উপ-মেরুবৃত্তীয় অঞ্চলের জলবায়ুর প্রভাবও পরিলক্ষিত হয়। দিন এবং রাতের আবহাওয়াগত পার্থক্য খুব বেশি।

সাংস্কৃতিক তাৎপর্য[সম্পাদনা]

পর্বতের ন্যায় হ্রদগুলোকেও তিব্বতী জনগণ পবিত্র বলে গণ্য করে। তাদের ধারণা হচ্ছে যে, এই হ্রদগুলো তাদের রক্ষাকারী দেবতার আবাসস্থল এবং এখানে তাই সেই দেবতাগণ বিশেষ আধ্যাত্মিক শক্তির সঞ্চয় ঘটিয়েছে। ইয়ামড্রক হ্রদটি চার বিশেষ পবিত্র হ্রদের একটি বলে মান্য করা হয়; দালাই লামা থেকে শুরু করে স্থানীয় গ্রামবাসী - সকলেই সেখানে তীর্থযাত্রা করে থাকেন।

অর্থনৈতিক তাৎপর্য[সম্পাদনা]

ইয়ামড্রক হ্রদটি মৎস সম্পদে সমৃদ্ধ এবং এখান হতে স্থানীয় জনগণ বাণিজ্যিকভাবে মৎস আহরণ করে থাকে। এই হ্রদ হতে এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধৃত মাছ তিব্বতের রাজধানী লাসার বাজারে বিক্রি করা হয়।

উপরন্তু, হ্রদের তীরবর্তী এলাকা স্থানীয় অধিবাসীদের গবাদি পশুর সমৃদ্ধ চারণভূমি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. "Guide to Tibet - Things to do, Place to visit, Practicalities" 
  2. "পবিত্র হ্রদের সামনে নগ্ন ফটোশ্যুট বিপাকে সুন্দরী"। ইন্ডিয়ান টাইমস। ১৪ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৮ 
  3. "Guide to Tibet - Things to do, Places to visit and Practicalities" 
  4. Petra Seibert and Lorne Stockman। "The Yamdrok Tso Hydropower Plant in Tibet: A Multi-facetted and Highly Controversial Project"। ২০০৭-০৮-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-২৯ 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]