চীন

স্থানাঙ্ক: ৩৫°৫০′৪১″ উত্তর ১০৩°২৭′৭″ পূর্ব / ৩৫.৮৪৪৭২° উত্তর ১০৩.৪৫১৯৪° পূর্ব / 35.84472; 103.45194
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন

中华人民共和国 (চীনা)
চীনের জাতীয় প্রতীক
জাতীয় প্রতীক
জাতীয় সঙ্গীত: 义勇军进行曲
Yìyǒngjūn Jìnxíngqǔ
("স্বেচ্ছাসেবকদের কুচকাওয়াজ")
চীনের শাসনাধীন অঞ্চল গাঢ় সবুজ; চীনের দাবীকৃত কিন্তু শাসন-বহির্ভূত অঞ্চল হালকা সবুজ৷ তিব্বত এবং তাইওয়ান
চীনের শাসনাধীন অঞ্চল গাঢ় সবুজ; চীনের দাবীকৃত কিন্তু শাসন-বহির্ভূত অঞ্চল হালকা সবুজ৷ তিব্বত এবং তাইওয়ান
রাজধানীবেইজিং
৩৯°৫৫′ উত্তর ১১৬°২৩′ পূর্ব / ৩৯.৯১৭° উত্তর ১১৬.৩৮৩° পূর্ব / 39.917; 116.383
বৃহত্তম নগরীসাংহাই
সরকারি ভাষাসরল চীনা[ক]
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষাদেখুন চীনের ভাষা
দাপ্তরিক লিপিসরলীকৃত চীনালিপি[খ]
নৃগোষ্ঠী
ধর্ম
(২০২০)[১]
জাতীয়তাসূচক বিশেষণচীনা
সরকারএককেন্দ্রিক মার্কসবাদ-লেনিনবাদ[২] একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র[৩]
শি জিনপিং
লি ছিয়াং
লি ঝানশু
ওয়াং ইয়াং
ওয়াং হানিং
ঝাও লেজি
হ্যান ঝেঙ
ওয়াং সিশান[ঙ]
ইয়াং শাউদু
ঝো শিয়াং
ঝাং জ্যান
আইন-সভাজাতীয় গণ পরিষদ
গঠন
আনু. ২০৭০ বিসিই
২২১ বিসিই
১লা জানুয়ারি ১৯১২
১লা অক্টোবর ১৯৪৯
২০শে সেপ্টেম্বর ১৯৫৪
৪ঠা ডিসেম্বর ১৯৮২
২০শে ডিসেম্বর ১৯৯৯
আয়তন
• মোট
৯৫,৯৬,৯৬১ কিমি (৩৭,০৫,৪০৭ মা)[চ][৬] (৩য়/৪র্থ)
• পানি (%)
২.৮% [ছ]
জনসংখ্যা
• ২০২০ আনুমানিক
বৃদ্ধি ১.৪১ বিলিয়ন[৮] (১ম)
• ঘনত্ব
১৪৫/কিমি (৩৭৫.৫/বর্গমাইল) (৮৩তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০২১ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $২৬.৬৬ ট্রিলিয়ন[৯] (১ম)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $১৮,৯৩১[৯] (৭০তম)
জিডিপি (মনোনীত)২০২১ আনুমানিক
• মোট
বৃদ্ধি $১৬.৬৪ ট্রিলিয়ন[৯] (২য়)
• মাথাপিছু
বৃদ্ধি $১১,৮১৯[৯] (৫৬তম)
জিনি (২০১৮)নেতিবাচক বৃদ্ধি ৪৬.৭[১০]
উচ্চ
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯)বৃদ্ধি ০.৭৬১[১১]
উচ্চ · ৮৫তম
মুদ্রারেন্মিন্বি (ইউয়ান; ¥)[জ] (CNY-রেন্মিন্বি)
HKD-হংকং)
MOP-ম্যাকাও
)
সময় অঞ্চলইউটিসি+8 (চীন প্রমাণ সময়)
তারিখ বিন্যাস
গাড়ী চালনার দিকডান (মূল ভূখণ্ড); বাম (হংকং এবং ম্যাকাও)
কলিং কোড+৮৬ (মূল ভূখণ্ড); +৮৫২ (হংকং); +৮৫৩ (ম্যাকাও)
ইন্টারনেট টিএলডি

চীন (চীনা: 中国 চুংকুও), সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বা সংক্ষেপে গণচীন, পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ১৪২ কোটি[১২] জনসংখ্যার দেশটি ভারতের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনবহুল রাষ্ট্র।[১৩] চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটি শাসন করে। বেইজিং শহর দেশটির রাজধানী। গণচীনের শাসনের আওতায় পড়েছে ২২টি ও ১টি অধীন প্রদেশ (যার মধ্যে তাইওয়ান প্রদেশ অন্তর্ভুক্ত, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন তাইওয়ানকে প্রদেশ হিসেবে দাবী করলেও এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে না।), পাঁচটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল, চারটি কেন্দ্রশাসিত পৌরসভা (বেইজিং, থিয়েনচিন, সাংহাই এবং ছুংছিং), এবং দুইটি প্রায়-স্বায়ত্বশাসিত বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (হংকং এবং মাকাউ)। এছাড়াও চীন তাইওয়ানের ওপরে সার্বভৌমত্ব দাবী করে আসছে। দেশটির প্রধান প্রধান নগর অঞ্চলের মধ্যে সাংহাই, কুয়াংচৌ, বেইজিং, ছোংছিং, শেনচেন, থিয়েনচিন ও হংকং উল্লেখযোগ্য। চীন বিশ্বের একটি বৃহৎ শক্তি এবং এশিয়ার মহাদেশের একটি প্রধান আঞ্চলিক শক্তি।[১৪][১৫]

চীনের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। স্থলভূমির আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের ৩য়/৪র্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র (বিতর্কিত)।[১৬]। সামগ্রিক আয়তনের বিচারে ও পরিমাপের পদ্ধতিভেদে এটি বিশ্বের তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম এলাকা।[ঝ] চীনের ভূমিরূপ বিশাল ও বৈচিত্র্যময়। দেশটির অনুর্বর উত্তরাংশে অরণ্য স্টেপ তৃণভূমি এবং গোবিতাকলা মাকান মরুভূমি যেমন আছে, তেমনি এর আর্দ্র দক্ষিণাংশে আছে উপক্রান্তীয় অরণ্যসমূহ। হিমালয়কারাকোরাম পর্বতমালা, পামির মালভূমিথিয়েন শান পর্বতমালা চীনকে দক্ষিণ এশিয়ামধ্য এশিয়া থেকে ভৌগলিকভাবে আলাদা করেছে। ইয়াংসিকিয়াং নদী (বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম) ও পীত নদী (বিশ্বের ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম) তিব্বতের মালভূমি থেকে উত্‌সারিত হয়ে পূর্বের জনবহুল অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে পড়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪,৫০০ কিলোমিটার (৯,০০০ মা)। বোহাই উপসাগর, পীতসাগর, পূর্ব চীন সাগরদক্ষিণ চীন সাগর এর সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণ করেছে। চীনের উত্তরে রয়েছে মঙ্গোলিয়া; উত্তর পূর্বে রাশিয়াউত্তর কোরিয়া; পূর্বে চীন সাগর; দক্ষিণে ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার, ভারত, ভুটান, নেপাল; দক্ষিণ পশ্চিমে পাকিস্তান; পশ্চিমে আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, কির্গিজিস্তানকাজাকিস্তান। এই ১৪টি দেশ বাদে চীনের পূর্বে পীত সাগরের পাশে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াজাপান; দক্ষিণ চীন সাগরের উল্টো দিকে আছে ফিলিপাইন

চীনারা তাদের দেশকে চুংকুও নামে ডাকে, যার অর্থ "মধ্যদেশ" বা "মধ্যবর্তী রাজ্য"। "চীন" নামটি বিদেশীদের দেওয়া; এটি সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের চিন রাজবংশের নামের বিকৃত রূপ। চীনে বিশ্বের জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বাস। এদের ৯০%-এরও বেশি হল চৈনিক হান জাতির লোক। হান জাতি বাদে চীনে আরও ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতির বাস। এদের মধ্যে আছে তিব্বতি, মঙ্গোল, উইঘুর, ছুয়াং, মিয়াও, য়ি এবং আরও অনেক ছোট ছোট জাতি। হান জাতির লোকদের মধ্যেও অঞ্চলভেদে ভাষাগত পার্থক্য দেখা যায়। যদিও শিক্ষাব্যবস্থায় ও গণমাধ্যমে পুতোংহুয়া নামের একটি সাধারণ ভাষা ব্যবহার করা হয়, আঞ্চলিক কথ্য ভাষাগুলি প্রায়শ পরস্পর বোধগম্য নয়। তবে চিত্রলিপিভিত্তিক লিখন পদ্ধতি ব্যবহার করে বলে সব চীনা উপভাষাই একই ভাবে লেখা যায়; এর ফলে গোটা চীন জুড়ে যোগাযোগ সহজ হয়েছে।

উত্তর চীন সমভূমি অঞ্চলে পীত নদীর উর্বর অববাহিকাতে বিশ্বের আদিতম সভ্যতাগুলির একটি হিসেবে চীনের উদয় হয়। হাজার হাজার বছর ধরে রাজারা বংশানুক্রমে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতেন। এর মধ্যে প্রথম রাজবংশটির নাম ছিল শিআ রাজবংশ(আনু. 2070 BCE)। ২২১ BCE চিন রাজবংশ অন্যান্য ৬টি বৃহত্তম রাজ্য করায়ত্ত করে প্রথম একীভূত চৈনিক সাম্রাজ্য গঠন করে। এর পরে বহু হাজার বছর ধরে চীনের বহুবার সম্প্রসারণ, বিভাজন, ও সংস্কার সাধন হয়েছে। ১৯১২ সালে সর্বশেষ রাজবংশ চিন রাজবংশের পতন ঘটে ও এর স্থানে চীন প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয়। প্রজাতন্ত্রিটি ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ড শাসন করে। সে বছর চীনের গৃহযুদ্ধে সাম্যবাদী জনগণের মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে এটি পরাজয় বরণ করেন। চীনের সাম্যবাদী দল ১৯৪৯ সালের ১লা অক্টোবর বেইজিং শহরে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা করে। চীন প্রজাতন্ত্র সরকার তাইওয়ান দ্বীপে স্থানান্তরিত হন এবং সেখানে সাময়িক রাজধানী হিসেবে তাইপেই প্রতিষ্ঠা করেন। চীন প্রজাতন্ত্র সরকার ও গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার উভয়েই সমগ্র চীনের একমাত্র আইনসম্মত সরকার হিসেবে নিজেদের দাবী করে আসছে, তবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার বেশি অঞ্চলের অধিকারী এবং সারা বিশ্বে এর স্বীকৃতিও বেশি।

১৯৭৮ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের অবতারণার পর থেকে চীন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান প্রধান অর্থনীতিগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রাক্কলন অনুসারে এটি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম অর্থনীতি (নামমাত্র মোট দেশজ উৎপাদন অনুযায়ী) এবং সর্ববৃহত্‌ অর্থনীতি (ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুযায়ী)। এছাড়াও চীন বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক ও দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক রাষ্ট্র।[১৭] চীন একটি স্বীকৃত পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র এবং বিশ্বের বৃহত্তম সক্রিয় সেনাবাহিনীর অধিকারী। এর প্রতিরক্ষা বাজেট বিশ্বের ২য় বৃহত্তম।[১৮][১৯] গণপ্রজাতন্ত্রী চীন জাতিসংঘের একটি স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে এটি চীন প্রজাতন্ত্রকে প্রতিস্থাপিত করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। এছাড়াও চীন বহু আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বহুপাক্ষিক সংগঠনের সদস্য, যার মধ্যে অন্যতম হল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ব্রিক্‌স, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার ফোরাম এবং জি-২০। চীনের দুইটি বৃহত্তম নদী হোয়াংহোইয়াংসি

মর্ম[সম্পাদনা]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে হান রাজবংশের বিস্তার দেখানো মানচিত্র

প্রাচীনকালে চীন ছিল পূর্ব এশিয়ার আধিপত্য বিস্তারকারী সভ্যতা। এ অঞ্চলের অন্যান্য সভ্যতাগুলি, যেমন- জাপানি, কোরীয়, তিব্বতি, ভিয়েতনামীয়, এদের সবাইকে চীন প্রভাবিত করেছিল। তারা চীনের শিল্পকলা, খাদ্য, বস্তুসংস্কৃতি, দর্শন, সরকার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি এবং লিখন পদ্ধতি গ্রহণ ও অনুসরণ করত। বহু শতাব্দী ধরে, বিশেষ করে ৭ম শতাব্দী থেকে ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত চীন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর সভ্যতা। কাগজ, ছাপাখানা, বারুদ, চীনামাটি, রেশম এবং দিকনির্ণয়ী কম্পাস সবই চীনে প্রথম উদ্ভাবিত হয় এবং সেখান থেকে বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। যার ব্যবহার পৃথিবীর যেকোন স্থানে দেখতে পাওয়া যায়।

ইউরোপীয় শক্তিগুলি পূর্ব এশিয়ায় আগমন করলে চীনের রাজনৈতিক শক্তি বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে। চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের একটি ক্ষুদ্র প্রশাসনিক অঞ্চল মাকাও মধ্য-১৬শ শতকে পর্তুগিজ নিয়ন্ত্রণে এবং কাছেই অবস্থিত হংকং ১৮৪০-এর দশকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯শ শতকে অভ্যন্তরীণ বিপ্লব এবং বিদেশী হস্তক্ষেপের ফলে চীনের শেষ রাজবংশ কিং রাজবংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯১১ সালে চীনা জাতীয়তাবাদীরা শেষ পর্যন্ত এই রাজতন্ত্রের পতন ঘটায়। পরবর্তী বেশ কিছু দশক ধরে একাধিক সামরিক নেতার অন্তর্কোন্দল, জাপানি আক্রমণ, এবং সাম্যবাদী ও কুওমিনতাঙের জাতীয়তাবাদী সরকারের মধ্যকার গৃহযুদ্ধ দেশটিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর আগে ১৯২৮ সালে জাতীয়তাবাদীরা প্রজাতান্ত্রিক চীন প্রতিষ্ঠা করে।

১৯৪৯ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করে এবং চীনের মূল ভূখণ্ডে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। কুওমিনতাঙেরা দ্বীপ প্রদেশ তাইওয়ানে পালিয়ে যায় এবং সেখানে একটি জাতীয়তাবাদী সরকার গঠন করে। জাতীয়তাবাদী সরকারটি তাইওয়ান ও পার্শ্ববর্তী কিছু দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রাথমিকভাবে এটিই বহির্বিশ্বে সমগ্র চীনের প্রকৃত সরকার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। তবে বর্তমানে বেশির ভাগ দেশ মূল ভূখণ্ডের গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারকেই চীনের প্রকৃত সরকার হিসেবে গণ্য করে।

১৯৪৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর চীনের কমিউনিস্ট সরকার কৃষি ও শিল্পব্যবস্থাকে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার অধীনে নিয়ে আসে। ১৯৭০-এর দশকের শেষ থেকে সরকার অবশ্য অর্থনৈতিক সংস্কার সাধন করে যাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকের আরও সংস্কারের ফলে চীনা অর্থনীতি ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বছরে ১০% হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে ২১শ শতকের শুরুতে এসে চীনা অর্থনীতি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়।

১৯৯৭ সালে চীন ব্রিটেনের কাছ থেকে হংকং এর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়, তবে অঞ্চলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখেছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষে এসে পর্তুগাল মাকাওকে চীনের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ১৯৯৯ সালে অঞ্চলটি চীনের কাছে হস্তান্তর করে; মাকাওকেও বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হয়।

সরকার[সম্পাদনা]

The 12th ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস held in 2013

ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস হল গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ কক্ষ।

স্টেট কাউন্সিল[সম্পাদনা]

  • প্রিমিয়ার - লি খছিয়াং
  • ভাইস প্রিমিয়ার - হান ঝেং (উন্নয়ন ও সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার), সান চুনলান (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা), হু চুনুয়া (কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়, দারিদ্র্যবিরোধী, জলের সম্পদ, বৈদেশিক বাণিজ্য), লিউ হি (অর্থ, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, শিল্প ও পরিবহন)

রাজ্য কাউন্সিলর[সম্পাদনা]

  • রাজ্য কাউন্সিলর - ওয়েই ফেংহে (জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী), ওয়াং ইয়ং (রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ তদারকি ও প্রশাসন কমিশন), ওয়াং ইই (বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী), জিয়াও জি (সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্য কাউন্সিলের), ঝাও কেজি (জন সুরক্ষা মন্ত্রী)

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়[সম্পাদনা]

জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়[সম্পাদনা]

রাজ্য কাউন্সিলের অধীনে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী মন্ত্রক। মন্ত্রণালয় পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) উপর কর্তৃত্ব ব্যবহার করে না। সেনা কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের (সিএমসি) অধীনস্থ। বিদেশি সামরিক বাহিনীর সাথে সামরিক বিনিময় ও সহযোগিতা করার সময় মন্ত্রণালয় কেবল সিএমসি এবং পিএলএর প্রতিনিধিত্বকারী যোগাযোগ সংস্থা হিসাবে কাজ করে। মন্ত্রীর পদটি সর্বদা একজন সক্রিয় সামরিক কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে।

লিন পিয়াও ছিলেন উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী , যিনি ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধে প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন। চি হাওটিয়ান ছিলেন অপর উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী , যিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন।

জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন[সম্পাদনা]

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়[সম্পাদনা]

রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

গণপ্রজাতান্ত্রিক চিনের রাজনীতি একটি একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক কাঠামোয় সংঘটিত হয়। গণচীনের বর্তমান সংবিধানটি ১৯৫৪ সালে প্রথম গৃহীত হয় এবং এতে দেশের শাসনব্যবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। দেশের ৭ কোটিরও বেশি লোক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৯৮০-র দশকের অর্থনৈতিক সংস্কারের পর থেকে চীনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে এবং স্থানীয় সরকারের নেতাদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।

চীনের মৌলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাটি গণ কংগ্রেসব্যবস্থা নামে পরিচিত। গণকংগ্রেস ব্যবস্থা পাশ্চাত্য দেশগুলোর মত নির্বাহী, আইনপ্রণয়ন ও বিচার- এই তিন ক্ষমতা পৃথকীকরণ ব্যবস্থা নয়। চীনের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় গণ কংগ্রেস চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ সংস্থা। গণ কংগ্রেসের স্থানীয় পর্যায়ের সদস্যরা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। গণকংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চীনের গণ-আদালত নামের বিচার ব্যবস্থাকেও নিয়ন্ত্রণ করে।

পররাষ্ট্রনীতি[সম্পাদনা]

চীন-মার্কিন সম্পর্ক[সম্পাদনা]

সামরিক শক্তি[সম্পাদনা]

ছেংদু J-20 ৫ম প্রজন্মের ফাইটার জেট বিমান

পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনী হিসাবে বিবেচিত এবং সাম্প্রতিক দশকগুলিতে দ্রুত আধুনিকীকরণ করেছে।[২০] এটি গ্রাউন্ড ফোর্স (PLAGF), নৌবাহিনী (PLAN), বিমান বাহিনী (PLAAF), রকেট ফোর্স (PLARF) এবং স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স (PLASSF) নিয়ে গঠিত। এর প্রায় ২.২ মিলিয়ন সক্রিয় ডিউটি ​​কর্মী বিশ্বের যা বিশ্বের ২য় বৃহত্তম। চীনে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে,[২১][২২] এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে।[২৩] ২০২২-এর জন্য চীনের সরকারী সামরিক বাজেট ছিল মোট $২৩০ বিলিয়ন (১.৪৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান), যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম, যদিও SIPRI অনুমান করে যে সেই বছর তার প্রকৃত ব্যয় ছিল $২৯২ বিলিয়ন।[২৪] SIPRI এর মতে, ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এর সামরিক ব্যয় গড়ে প্রতি বছর ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা জিডিপির ১.৭ শতাংশ, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক খাতের পিছনে প্রতি বছর $৭৩৪ বিলিয়ন খরচ করে যা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ।[২৫] পিএলএ পার্টি এবং রাজ্যের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন (সিএমসি) দ্বারা পরিচালিত হয়; যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি পৃথক সংস্থা, নেতৃত্বের পরিবর্তনের সময় ব্যতীত দুটি CMC-এর অভিন্ন সদস্যপদ রয়েছে এবং কার্যকরভাবে একটি সংস্থা হিসাবে কাজ করে। CMC-এর চেয়ারম্যান হলেন PLA-এর কমান্ডার-ইন-চিফ, অফিসহোল্ডারও সাধারণত CCP-এর সাধারণ সম্পাদক হন, যা তাদেরকে চীনের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা করে তোলে।[২৬]

ভূগোল[সম্পাদনা]

ভূ–উপগ্রহ টপোগ্রাফি
Longsheng Rice Terrace

অবস্থান ও সীমানা[সম্পাদনা]

চীন এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। চীনের স্থলভাগের আয়তন প্রায় ৯৬,০০,০০০ কিমি (৩৭,০০,০০০ মা)[২৭] বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে চীন এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং রাশিয়া ও কানাডার পর চীন বিশ্বে তৃতীয় অথবা চতুর্থ বৃহত্তম দেশ।[২৮] উত্তর-দক্ষিণে চীন মোহো অঞ্চলের উত্তরের হেইলুংচিয়াং নদীর কেন্দ্রস্থল অর্থাৎ ৫৩.৩০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে দক্ষিণে নানসা দ্বীপপুঞ্জের চেনমু-আনসা অর্থাৎ ৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের সর্বদক্ষিণ আর সর্বউত্তর প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫৫০০ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে চীন পূর্বের হেইলুংচিয়াং নদী আর উসুলিচিয়াং নদীর সঙ্গমস্থল অর্থাৎ ১৩৫.০৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে পশ্চিমে পামির মালভূমি অর্থাৎ ৭৩.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশটির পূর্ব আর পশ্চিম প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার।

চীনের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,৮০০ কিলোমিটার। চীনের পূর্ব দিকে উত্তর কোরিয়া, উত্তর দিকে মঙ্গোলিয়া, উত্তর -পূর্ব দিকে রাশিয়া, উত্তর-পশ্চিম দিকে কাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তাজিকিস্তান, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ও ভুটান, দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার, লাওসভিয়েতনাম। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়াইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চীনের সমুদ্র সীমানা রয়েছে।

চীনের মূল ভূভাগের তটরেখা উত্তর দিকের ইয়ালুচিয়াং নদীর মোহনা থেকে দক্ষিণ দিকের কুয়াংসি স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলের পেইলুন হো নদীর মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত; এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার। চীনের উপকূলীয় অঞ্চলের ভূমিরূপ সমতল এবং এখানে বহু বিখ্যাত বন্দর অবস্থিত। এই বন্দরগুলির বেশির ভাগই সারা বছর বরফমুক্ত থাকে। চীনের নিকটে পোহাই সাগর, হুয়াংহাই সাগর, পূর্ব সাগর, নানহাই সাগর এবং তাইওয়ানের পূর্ব অঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সহ পাঁচটি সাগর রয়েছে। এগুলির মধ্যে পোহাই সাগর চীনের অভ্যন্তরীণ সাগর। তাইওয়ানের পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল পূর্বদিকে জাপানের রিইউকিয়ু দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমের সাখি সীমা দ্বীপপুঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিকের বাস প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত।

চীনের অভ্যন্তরীণ নদী আর সামুদ্রিক জলসীমা নিয়ে গঠিত সামুদ্রিক অঞ্চলের মোট আয়তন ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। চীনের সামুদ্রিক অঞ্চলে ৫০০০-এরও বেশি দ্বীপ রয়েছে। এগুলির মোট আয়তন প্রায় ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বীপগুলির তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার। দ্বীপগুলির মধ্যে বৃহত্তম তাইওয়ান দ্বীপের আয়তন ৩৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বিতীয় বৃহত্তম হাইনান দ্বীপের আয়তন ৩৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। তাইওয়ান দ্বীপের উত্তর-পূর্ব সমুদ্রে অবস্থিত তিয়াও ইয়ু তাও দ্বীপ ও ছিওয়েই ইয়ু দ্বীপ চীনের সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ। দক্ষিণ চীন সমুদ্রে ছড়িয়ে থাকা দ্বীপ ও প্রবাল-প্রাচীরগুলিকে নানহাই দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়। এটি চীনের সবচেয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপপুঞ্জ। অবস্থান অনুযায়ী এগুলোকে তুঙসা দ্বীপপুঞ্জ, সিসা দ্বীপপুঞ্জ, চুংসা দ্বীপপুঞ্জ এবং নানসা দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়।

চীনের মূল অঞ্চলটি তিনটি নদীবিধৌত অববাহিকার কৃষিভিত্তিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই তিনটি নদী হল উত্তরের হুয়াং হো, মধ্য চীনের ইয়াং ছি (বা "ছাং চিয়াং"), এবং দক্ষিণের মুক্তা নদী (বা "পার্ল নদী", "চু চিয়াং")। দেশটির ভূপ্রকৃতি বিচিত্র। এখানে আছে বিস্তীর্ণ মরুভূমি, সুউচ্চ পর্বত ও মালভূমি, এবং প্রশস্ত সমভূমি। দেশের উত্তর অঞ্চলে অবস্থিত বেইজিং বা পেইচিং চীনের রাজধানী এবং দেশের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ কেন্দ্র। ইয়াংছে নদীর কাছে অবস্থিত সাংহাই শহর সবচেয়ে জনবহুল শহর, বৃহত্তম শিল্প ও বাণিজ্য নগরী এবং চীনের প্রধান বন্দর।

জলবায়ু[সম্পাদনা]

চীনের বেশিরভাগ উত্তর নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে অবস্থিত, যা স্বতন্ত্র ঋতু এবং একটি মহাদেশীয় মৌসুমী জলবায়ু দ্বারা চিহ্নিত। বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সাইবেরিয়া এবং মঙ্গোলীয় মালভূমি থেকে শুষ্ক ও ঠান্ডা বর্ষা বয়ে যায়, যার ফলে ঠান্ডা ও শুষ্ক শীত হয় এবং উত্তর ও দক্ষিণ চীনের তাপমাত্রার মধ্যে বড় পার্থক্য দেখা যায়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উষ্ণ এবং আর্দ্র বর্ষা সাগর থেকে পূর্ব ও দক্ষিণে প্রবাহিত হয়, যার ফলে সামগ্রিক উচ্চ তাপমাত্রা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং উত্তর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যে তাপমাত্রার সামান্য পার্থক্য হয়। তাপমাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে, দেশটিকে দক্ষিণ থেকে উত্তরে নিরক্ষীয়, গ্রীষ্মমণ্ডলীয়, উপক্রান্তীয়, উষ্ণ-নাতিশীতোষ্ণ, নাতিশীতোষ্ণ এবং ঠান্ডা-নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ভাগ করা যেতে পারে। বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর-পশ্চিম অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে হ্রাস পায়, যেখানে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত স্থানভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় এটি ১,৫০০ মিমি; উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি ২০০  মিলিমিটারের নিচে নেমে আসে।

ভূমিরূপ[সম্পাদনা]

চীন একটি পর্বতময় দেশ। এর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে চীনের ৩৩% উঁচু পর্বত, ২৬% মালভূমি, ১৯% অববাহিকা, ১২% সমতলভূমি এবং প্রায় ১০% ক্ষুদ্র পাহাড়। কয়েক মিলিয়ন বছর আগে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি সৃষ্টি হয়। আকাশ থেকে দেখলে মনে হবে চীনের ভূভাগ সিঁড়ির মতো পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে। সমুদ্র সমতল থেকে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি বলে মালভূমিটি "বিশ্বের ছাদ" নামে পরিচিত; এটি চীনের ভূমিরূপের প্রথম সিঁড়ি গঠন করেছে। মালভূমিটিতে অবস্থিত হিমালয়ের অন্যতম প্রধান পর্বতশৃঙ্গ চুমোলাংমা শৃঙ্গের উচ্চতা ৮৮৪৮.১৩ মিটার। আন্তঃমঙ্গোলিয়া মালভূমি, দো-আঁশ মালভূমি, ইয়ুন্নান-কুইচৌ মালভূমি এবং থালিমু অববাহিকা, চুনগার অববাহিকা ও সিছুয়ান অববাহিকা নিয়ে চীনের ভূগোলের দ্বিতীয় সিড়ি গঠিত। এর গড় উচ্চতা ১০০০-২০০০ মিটার। দ্বিতীয় সিড়ির পূর্বপ্রান্ত অতিক্রম করে বড় সিং আনলিন পর্বত, থাইহান শ্যান পাহাড়, উশ্যান পাহাড়, আরস্যুয়ে ফোং শ্যান পাহাড় পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বিস্তৃত হয়েছ; এটি তৃতীয় সিঁড়ি। তৃতীয় সিঁড়ির ভূখণ্ড ৫০০-১০০০ মিটার নিচে নেমে গেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ দিক পর্যন্ত বিস্তৃত তৃতীয় সিঁড়িতে উত্তর-পূর্বসমতল-ভূমি, উত্তর চীন সমতল-ভূমি, ইয়াংসি নদীর মধ্য ও নিম্ন অববাহিকা সমতল-ভূমি আর সমতল-ভূমির প্রান্তে নিচু ও ক্ষুদ্র পাহাড় ছড়িয়ে আছে। এরও পূর্বদিকে চীনের মহাদেশীয় সোপান তথা স্বল্প গভীর সাগরীয় এলাকা অর্থাৎ চতুর্থ সিঁড়িটি বিস্তৃত; এর গভীরতা ২০০ মিটারের কিছু কম।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

ক্রয়ক্ষমতার সমতার (Purchasing power parity) বিচারে চীনের অর্থনীতি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম। এদেশের জিডিপি (GDP) ৮.১৮৫ ট্রিলিয়ন আমেরিকান ডলার। আমেরিকান ডলার বিনিময় হারের (USD exchange-rate) দিক থেকে দেখলে এর অর্থনীতি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম (২০০৫ সালের হিসাব)। তথাপি, বিশাল জনসংখ্যার কারণে, চীনের মাথাপিছু আয় (Purchasing power parity-র মাপকাঠিতে) ৬,২০০ আমেরিকান ডলার যা আমেরিকার এক সপ্তমাংশ।

১৯৫০ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশের সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে রাষ্ট্রায়ত্ত করে। তবে ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া সংষ্কার কর্মসূচীর আওতায় সরকার আস্তে আস্তে সোভিয়েত ধারার কেন্দ্রীভূত অর্থনৈতিক মডেল থেকে বাজারমূখী অর্থনীতির দিকে সরে আসে। এর ফলে ১৯৮০ সালে চীনে ১০.২% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় এবং ১৯৯০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত গড়ে ১০% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়। ২০০১ সালে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (World Trade Organization) সদস্য পদ লাভ করে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার চীনে এক নতুন গতিপথ সৃষ্টি করেছে।

পরিবহন[সম্পাদনা]

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পরিবহন ব্যবস্থায় ১৯৪৯ সালের পর থেকে, বিশেষত ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্ধন ঘটেছে। নিত্যনতুন বিমানবন্দর, সড়করেলপথ নির্মাণের প্রকল্পসমূহ আগামী দশকগুলিতেও চীনের শ্রমবাজারে বিপুল পরিমাণে কাজের সৃষ্টি করবে।

রেলপথ চীনের প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা। বিংশ শতকের মধ্যভাগের তুলনায় বর্তমান চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে। একটি বিস্তৃত রেলব্যবস্থা বর্তমানে সমগ্র চীন জুড়ে প্রসারিত। বড় বড় শহরগুলিতে পাতাল রেল হয় ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে কিংবা নির্মাণাধীন বা পরিকল্পনাধীন অবস্থায় আছে।

চীনের সড়ক ও মহাসড়ক ব্যবস্থাতেও দ্রুত পরিবর্ধন সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে চীনে মোটরযান ব্যবহারের পরিমাণ আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। বিশালাকার চীনের পরিবহন ব্যবস্থাটিও বহু পরিবহন নোড বা কেন্দ্রের সমন্বয়ে গঠিত বিশাল একটি নেটওয়ার্ক। তবে এই পরিবহন নোডগুলি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ সমুদ্র-উপকূলীয় এলাকা এবং দেশের অভ্যন্তরে বড় বড় নদীগুলির তীরে অবস্থিত।

ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে চীনের পরিবহন অবকাঠামোতে বৈচিত্র্য ও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও অযান্ত্রিক উপায়ে মালামাল পরিবহন ঘটতে দেখা যায়। অন্যদিকে আধুনিক সাংহাই শহর ও তার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির মাঝে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিক ম্যাগ্‌লেভ (চৌম্বকীয় উত্তোলন) রেল ব্যবস্থা।

চীনের পরিবহন ব্যবস্থার বেশির ভাগই ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পরে নির্মিত হয়েছে। তার আগে চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২১,৮০০ কিমি। বর্তমানে চীনের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৮৬,০০০ কিমি। ১৯৯০-এর দশকে সরকারি উদ্যোগে চীনের সর্বত্র যোগাযোগ রক্ষাকারী মহাসড়কব্যবস্থা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যার ফলে ২০০৯ সালে এসে বর্তমানে মহাসড়ক ব্যবস্থার দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ৬৫,০০০ কিমি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে এটি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মহাসড়ক ব্যবস্থা।

১৯৯০-এর দশকের শেষে এসে চীনের অভ্যন্তরে বিমান ভ্রমণের পরিমাণও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও দূরপথে যাত্রার জন্য রেলপথই চীনাদের বেশি পছন্দ।

জনগোষ্ঠী[সম্পাদনা]

পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠী চীনে বাস করে। এদের মধ্যে ৯২% জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। এছাড়াও চীনে আরো ৫৫ জাতিগোষ্ঠীর লোক বসবাস করে। জুলাই ২০০৬ এ হিসেব অনুযায়ী চীনের মোট জনসংখ্যা হবে ১৩১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭১৩ জন। এর ২০.৮% শতাংশের বয়স ১৪ বছরের নিচে, ৭১.৪% শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে এবং ৭.৭ শতাংশের বয়স ৬৫র উপরে। ২০০৬ সালে চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল .৫৯%।

ভাষা[সম্পাদনা]

চীনের ভাষাজাতিগত গোষ্ঠীসমূহের মানচিত্র, ১৯৯০

চীনের সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাগুলি চৈনিক-তিব্বতি ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও চীনা ভাষার ভেতরে একাধিক প্রধান দল আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাদলগুলি হল ম্যান্ডারিন চীনা ভাষা (চীনের জনসংখ্যার ৭০% এই দলের ভাষাগুলিতে কথা বলে)[২৯]), (যার মধ্যে সাংহাই ভাষা পড়েছে), ইউয়ে ভাষা (যার মধ্যে ক্যান্টনীয় ভাষাতাইশানীয় ভাষা অন্তর্গত), মিন চীনা ভাষা (যার মধ্যে হোক্কিয়েনতেওচিউ উপভাষা অন্তর্গত), সিয়াং চীনা ভাষা, গান চীনা ভাষা, এবং হাক্কা চীনা ভাষা। আদিবাসী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত অ-চৈনিক ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে চুয়াং ভাষাসমূহ, মঙ্গোলীয় ভাষা, তিব্বতি ভাষা, উইগুর ভাষা, হমং ভাষা এবং কোরীয় ভাষা[৩০] আদর্শ বা প্রমিত চীনা ভাষা ম্যান্ডারিন ভাষাদলের বেইজিং উপভাষার উপর ভিত্তি করে সৃষ্ট হয়েছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের জাতীয় ভাষা এবং বিশাল দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভাবে আদানপ্রদানের জন্য লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[৩১]

হাজার বছর ধরে ধ্রুপদী চীনা ভাষা লিখিত চীনা ভাষার আদর্শ মানদন্ড ছিল। এর ফলে চীনের বিভিন্ন পরস্পর-অবোধগম্য ভাষা ও উপভাষার বক্তারা নিজেদের মধ্যে লিখিত মাধ্যমের সাহায্যে যোগাযোগ করতে পারতেন। মিং রাজবংশের আমলে লেখা উপন্যাসগুলিতে ম্যান্ডারিন ভাষার উপর ভিত্তি করে যে লিখিত ভাষার মানদন্ডটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার নাম পাইহুয়া। এই আদর্শটিকেই ব্যাপকভাবে পরিমার্জন করে ২০শ শতকের শুরুতে জাতীয় আদর্শের মর্যাদা দেওয়া হয়। আজও চীনের উচ্চবিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে ধ্রুপদী চীনা ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়, ফলে বহু চীনাভাষী লোক এটি বুঝতে পারে। ১৯৫৬ সালে চীন সরকার সরলীকৃত চীনা অক্ষরের প্রবর্তন করেন। বর্তমানে এটিই চীনা ভাষার আদর্শ সরকারি লিপি, যা চীনের মূল ভূখণ্ডে ব্যবহার করা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষরগুলি আর ব্যবহৃত হয় না।

নগরায়ন[সম্পাদনা]

জাতীয় প্রতীকসমূহ[সম্পাদনা]

জাতীয় পতাকা[সম্পাদনা]

চীনের জাতীয় পতাকাটি পাঁচটি তারকাখচিত একটি লাল পতাকা। এর দৈর্ঘ্য ও উচ্চতার অনুপাত হল ৩:২। চীনের জাতীয় পতাকার লাল রঙ বিপ্লবের নিদর্শন। পতাকাতে পাঁচটি হলুদ রঙের পাঁচ-কোনা তারকা আছে, যাদের মধ্যে একটি বড় ও মূল তারকা। চারটি ছোট তারকার প্রত্যেকটির একটি কোনা মূল তারকার কেন্দ্রস্থলের দিকে মুখ করে আছে। এটি কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী জনগণের ঐক্যের নিদর্শন।

জাতীয় প্রতীক[সম্পাদনা]

জাতীয় পতাকা, থিয়েন আনম্যান, চাকা আর ধানের শীষ নিয়ে গণচীনের জাতীয় প্রতীক গঠিত। চীনা সরকারের মতে এটি ৪ঠা মে আন্দোলনের পর চীনা জনগণের চালিত নতুন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী সংগ্রাম আর শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বাধীন শ্রমিক-কৃষক মৈত্রীর ভিত্তিতে গঠিত জনগণের গণতান্ত্রিক একনায়কত্বের নয়া চীনের প্রতিষ্ঠা

জাতীয় সঙ্গীত[সম্পাদনা]

গণচীনের জাতীয় সঙ্গীত মূলত এক বীরবাহিনীর অগ্রযাত্রার গান। গানটি ১৯৩৫ সালে রচনা করা হয়। গানের কথাগুলো লিখেছেন নাট্যকার থিয়েনহান, আর এটিতে সুর দিয়েছেন চীনের নতুন সংগীত-আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা নিয়ের আর। গানটি প্রকৃতপক্ষে সংগ্রামের অগ্রগামী সন্তানেরা নামক চীনা চলচ্চিত্রের থিম-সঙ্গীত। ১৯৩১ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর জাপান চীনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের তিনটি প্রদেশ দখল করে। চীনারা জাপানিদের হটাতে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, চলচ্চিত্রটিতে সে কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর এই সঙ্গীতটি সমগ্র চীনে মুক্তিসঙ্গীত হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৪৯ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে গণচীনের জাতীয় সঙ্গীত আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বীরবাহিনীর অগ্রযাত্রার গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গ্রন্থ, রচনা ও ওয়েব উৎসের তালিকা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Chinese Religion | Data on Chinese Religions | GRF"www.globalreligiousfutures.org। ২১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০২১ 
  2. "Xi Jinping is making great attempts to 'Sinicize' Marxist–Leninist Thought 'with Chinese characteristics' in the political sphere," states Lutgard Lams, "Examining Strategic Narratives in Chinese Official Discourse under Xi Jinping" Journal of Chinese Political Science (2018) volume 23, pp. 387–411 at p. 395
  3. "China (People's Republic of) 1982 (rev. 2004)"। Constitute project। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৯ 
  4. "Demographic Yearbook — Table 3: Population by sex, rate of population increase, surface area and density" (পিডিএফ)। UN Statistics। ২০০৭। ২৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১০ 
  5. "China"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১২ 
  6. "Largest Countries in the World by Area – Worldometers"worldometers.info 
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; CIA নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. http://www.xinhuanet.com/english/2021-05/11/c_139937914.htm
  9. "China World Economic Outlook Database: April 2021"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২১ 
  10. "China Economic Update, December 2019 : Cyclical Risks and Structural Imperatives" (পিডিএফ)openknowledge.worldbank.org। World Bank। পৃষ্ঠা 21। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২০The Gini coefficient, a measure of overall income inequality, declined to 0.462 in 2015, and has since risen to 0.467 in 2018 (Figure 27). Higher income inequality is partly driven by unequal regional income distribution. The eastern coastal regions have been the driver of China's rapid growth, due to its geographic location and the early introduction of reforms. As a result, the eastern coastal region is now home to 38% of the population, and its per capita GDP was 77% higher than that of the central, western, and northeastern regions in 2018. This gap widened further in the first three quarters of 2019. This is in part due to a disproportionate slowdown in interior provinces, which are more dependent on commodities and heavy industry. The slowdown has been negatively affected by structural shifts, especially necessary cuts in overcapacity (Figure 28). 
  11. "Human Development Report 2020" (পিডিএফ)। United Nations Development Programme। ১৫ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  12. "China Population (2024) - Worldometer"www.worldometers.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৫ 
  13. "Population by Country (2024) - Worldometer"www.worldometers.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৫ 
  14. Muldavin, Joshua (৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "From Rural Transformation to Global Integration: The Environmental and Social Impacts of China's Rise to Superpower"। Carnegie Endowment for International Peace। ১৪ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১০ 
  15. "A Point Of View: What kind of superpower could China be?"। BBC। ১৯ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০১২ 
  16. "Countries of the world ordered by land area"। Listofcountriesoftheworld.com। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১০ 
  17. White, Garry (১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "China trade now bigger than US"Daily Telegraph। London। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  18. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ChineseNukes নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; SIPRI2014 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. Maizland, Lindsay (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "China's Modernizing Military"Council on Foreign Relations (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৪ 
  21. "Which Countries Have the Most Nuclear Weapons?"। Visual Capitalist। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০২১ 
  22. "Chinese Nuclear Program"Atomic Heritage Foundation। জুলাই ১৯, ২০১৮। 
  23. Lendon, Brad (৬ মার্চ ২০২১)। "Analysis: China has built the world's largest navy. Now what's Beijing going to do with it?"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৪ 
  24. "Trends in World Military Expenditure, 2022" (পিডিএফ)Stockholm International Peace Research Institute। এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০২৩ 
  25. "SIPRI Military Expenditure Database"। Stockholm International Peace Research Institute। 
  26. "What China's New Central Military Commission Tells Us About Xi's Military Strategy"Asia Society (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২১ 
  27. "Geography – china.org.cn"। china.org.cn। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৫ 
  28. Amitendu, Palit (২০১২)। China-India Economics: Challenges, Competition and Collaboration। Routledge। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 9781136621628 
  29. "China: 400 Million Cannot Speak Mandarin"New York Times। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩। 
  30. "Languages" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ জুলাই ২০১৩ তারিখে. 2005. Gov.cn. Retrieved 3 May 2006.
  31. Rough Guide Phrasebook: Mandarin Chinese। Rough Guides। ২০১১। পৃষ্ঠা 19। 

টীকা[সম্পাদনা]



উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি