আরমিলুস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আরমিলুস (হিব্রু ভাষায়: ארמילוס‎) (আরমিলোসআরমিলিউস নামেও উচ্চারিত হয়)[১] হল মধ্যযুগীয় ইহুদি পরকালবিদ্যায় একজন খ্রিষ্টারি যে সমগ্র পৃথিবী দখল করবে, জেরুসালেমকে নিজের রাজধানী বানাবে এবং ইহুদি মশীহের হাতে পরাজয়ের আগ পর্যন্ত ইহুদি ধর্মে বিশ্বাসীদের উপর নিপিড়ন চালাতে থাকবে। ধর্মবিশ্বাস মতে তার পতন হবে মশীহের যুগে ইহুদি মশীহের বিজয়ের নিশানা।

সূত্র[সম্পাদনা]

আরমিলুসের উল্লেখ রয়েছে ইহুদি ধর্মের গ্রন্থ শেফের জেরুব্বাবেলে যা সম্ভবত খ্রিস্টাব্দ সপ্তম শতাব্দীতে লেখা হয়েছে বলে মনে করা হয়। আরমিলুসকে বাইজেন্টাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতিচ্ছবি বলে মনে করা হয়, এবং এটা ভাবা হয় যে শেফের জেরুব্বাবেলে উল্লেখিত ঘটনাগুলো হিরাক্লিয়াসের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্রোহের সাথে কাকতালীয়ভাবে সম্পর্কিত।[২]

একাদশ শতাব্দীর মিদরাশ ভায়োশা ১৫১৯ সালে কনস্টান্টিনোপলে প্রথম প্রকাশিত হয়। এই বইটিতে আরমিলুসের সম্পর্কে কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়।

ইহুদি বিশ্বকোষ অনুসারে, আরমিলুস হল "একজন রাজা যে পৃথিবীর শেষ সময়ে মশীহের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, এবং ইসরায়েলের উপর অনেক দূর্দশা নিয়ে আসার পরে মশীহের দ্বারা পরাজিত হবে।" তার ব্যাপারে মিদরাশ ভায়োশা, শেফের জেরুব্বাবেল এবং অন্যান্য গ্রন্থে লেখা রয়েছে। ইয়াজুজ ও মাজুজের ন্যায় সে একজন প্রতিপক্ষ, এবং কিছু ক্ষেত্রে তাকে তাদের মতই মনে করা হয়, কিন্তু ভিন্ন নামে।[৩] শেফের জেরুব্বাবেলে সে মাজুজদের জায়গা নিয়ে নেয় এবং মশীহ বেন যোষেফকে পরাজিত করে।[৪]: ৬০

এই চরিত্রের উৎপত্তি হিসেবে বলা হয় যে আরমিলুস শয়তান এবং একজন কুমারী মা কিংবা শয়তান এবং একটি প্রতিমার (কিংবা পাথরের) সন্তান, এই তথ্যটি ইহুদি বিশ্বকোষে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে যেহেতু এর বর্ণনার সাথে খ্রিস্টীয় কাহিনীর মিল পাওয়া যায়।[৩] আরমিলুসের কুমারী মায়ের গর্ভে জন্ম, মেরির সাথে ইহুদি সূত্রে এই তুলনা সম্ভবত দেখায় যে খ্রিস্টানরা তাকে নিজেদের মশীহ ও ঈশ্বর হিসেবে মেনে নিবে এবং কিছু ইহুদি এর ফলে আরমিলুসকে যিশু খ্রিস্টের সাথে চিহ্নিত করে।[৩]

নাম[সম্পাদনা]

এই নামটি রোম শহরের প্রতিষ্ঠাতা রমুলাস অথবা জরাথুস্ট্রবাদের খল চরিত্র আহরিমানের (আংরা মাইন্যু) নাম থেকে আসতে পারে।[৩]

অবয়ব[সম্পাদনা]

মিদরাশ ভায়োশায় আরমিলুসকে কেশশূন্য মাথার, আংশিক পঙ্গু এবং আংশিক কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. In the Apocalypse of Pseudo-Methodius (Greek redactions), Armalaos and Armaleus: A.C. Lolos, Die Apokalypse des Ps.-Methodios. Beiträge zur klassischen Philologie 83. Meisenheim am Glan: Hain, 1976. Chapter IX.
  2. Jewish Martyrs in the Pagan and Christian Worlds। Cambridge university press. Cambridge , New York, Melbourne, Madrid, Cape Town, Singapore, Sao Paulo। ২০০৬। পৃষ্ঠা 108-109। আইএসবিএন 9781139446020। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১০ 
  3. Jewish Encyclopedia: Armilus:
  4. John C. Reeves (২০০৫)। Trajectories in Near Eastern Apocalyptic: A Postrabbinic Jewish Apocalypse Reader। Society of Biblical Literature Atlanta। আইএসবিএন 9781589831025। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৪ 
  5. "Midrash Vayosha"। ২০১২-০৩-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৩