বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(অ্যানাফিল্যাক্সিস থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া
বিশেষত্বজরুরী চিকিৎসাবিজ্ঞান, অনাক্রম্যবিজ্ঞান উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া, তীব্রগ্রাহিতা বা ইংরেজি পরিভাষায় অ্যানাফিল্যাক্সিস[১] (Anaphylaxis) হল একটি তাৎক্ষণিক, গুরুতর, সংকটজনক অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি) যা হঠাৎ শুরু হয় এবং যা চরম পর্যায়ে মানুষের মৃত্যুও ঘটাতে পারে। [২] বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার সাধারণত চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি, গলা ফোলা, এবং নিম্ন রক্তচাপসহ কয়েকটি রোগ লক্ষণ আছে। সাধারণত পোকার কামড়, খাদ্য এবং ঔষধ থেকে এ রোগের সৃষ্টি হয়।

কিছু নির্দিষ্ট ধরনের শ্বেতকণিকা থেকে প্রোটিনের অবমুক্তির ফলে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই প্রোটিনগুলি এমন পদার্থ যা কোন অতিপ্রতিক্রিয়া শুরু করতে পারে বা অতিপ্রতিক্রিয়াকে গুরুতর করতে পারে। কোন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিক্রিয়ার কারণে অথবা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত নয় এমন অন্য কারণেও তাদের অবমুক্তি হতে পারে। ব্যক্তির উপসর্গ ও লক্ষণগুলির ভিত্তিতে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া রোগ নির্ণয় করা হয়। এর প্রাথমিক চিকিৎসা হল এপিনেফ্রিন সূচিপ্রয়োগ (ইনজেকশন), যা কখনও কখনও অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে প্রয়োগ করা হয়।

বিশ্বব্যাপী প্রায় ০.০৫% মানুষের জীবনের কিছু সময়ে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। দেখা যাচ্ছে এর হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

লক্ষণ এবং উপসর্গ[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার শনাক্তকারী চিহ্ন ও উপসর্গসমূহ

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সাধারণত কয়েক মিনিট বা ঘণ্টার ব্যবধানে বিভিন্ন উপসর্গ সৃষ্টি করে।[৩][৪] রোগের কারণ যদি কোনও পদার্থ হয়ে থাকে যা সরাসরি রক্তধারায় (শিরাভ্যন্তরীণভাবে) শরীরে প্রবেশ করে, তবে লক্ষণগুলি গড়ে ৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে প্রদর্শিত হয় । ব্যক্তির আহার করা কোন খাদ্য রোগের কারণ হলে সেক্ষেত্রে গড়ে ২ ঘণ্টা সময় লাগে। [৫] যেসব স্থান সাধারণত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেগুলো হল: ত্বক (৪০-৯০%), ফুসফুস এবং শ্বাসপথ (৭০%), পাকস্থলী এবং অন্ত্র (৩০-৪৫%), হৃৎপিণ্ড এবং রক্তবাহী নালী (১০-৪৫%), এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (১০-১৫%)।[৪] সাধারণত এই প্রণালীগুলির দুই অথবা ততোধিক জড়িত থাকে। [৬]

ত্বক[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তির পিঠে আমবাত ও রক্তিমাভা

সাধারণত যেসব উপসর্গ দেখা যায় সেগুলো হল হঠাৎ ত্বকের স্ফীতি (আমবাত), চুলকানি, মুখ বা ত্বকের রক্তিমতা (রক্তিমাভা), অথবা ঠোঁট ফুলে যাওয়া।[৭] ত্বকের নিচে ফুলে গেলে (অ্যাঞ্জিওডেমা) চুলকানির পরিবর্তে ত্বকে জ্বালা অনুভূত হতে পারে।[৫] জিহ্বা অথবা গলা ২০% পর্যন্ত স্ফীত হতে পারে।[৮] অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে নাকে সর্দি এবং চোখ ও চোখের পাতার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর স্ফীতি (কনজাঙ্কটিভা)।[৯] ত্বকও অক্সিজেনের অভাবের কারণে নীল বর্ণ (সায়ানোসিস) ধারণ করতে পারে।[৯]

শ্বসন[সম্পাদনা]

শ্বাস প্রশ্বাসের উপসর্গ এবং লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, শ্বাস সমস্যায় নিচু শব্দে শ্বাস কার্য (শনশন শব্দ), অথবা শ্বাস সমস্যায় উচ্চ-তীক্ষ্ণ শব্দে শ্বাস কার্য (স্ট্রাইডর)।[৭] সাধারণত শ্বাসনালির নিচের অংশের পেশীর (শ্বাসনালি পেশী) কারণে বিক্ষেপের নিচু শব্দে শ্বাস হয়। [১০] উচ্চ-তীক্ষ্ণ স্বরবিশিষ্ট শ্বাস হয় উপরের শ্বাসনালি ফোলার কারণে,যা শ্বাসপ্রশ্বাসের পথ সরু করে দেয়।[৯] স্বরভঙ্গ, স্ফীতির সঙ্গে ব্যথা, বা কাশিও হতে পারে।[৫]

হৃৎপিণ্ড সম্বন্ধীয়[সম্পাদনা]

হৃৎপিণ্ডের নির্দিষ্ট কোষ থেকে হিস্টামাইন অবমুক্তির কারণে হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী নালীসমূহ হঠাৎ (করোনারি ধমনীর সঙ্কোচন) সংকুচিত হতে পারে। [১০] হৃৎপিণ্ডে এই রক্তচলাচলে ব্যাঘাতের ফলে হৃদ-কোষের মৃত্যু হতে পারে (মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন), বা হৃৎ-স্পন্দন খুব ধীর গতিতে বা খুব দ্রুত গতিতে চলতে পারে (হৃৎস্পন্দন বৈকল্য বা কার্ডিয়াক ডিসরিদোমিয়া), বা হৃৎ-স্পন্দন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ (হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ) হয়ে যেতে পারে। .[৪][৬] যেসব ব্যক্তি ইতোমধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার (অ্যানাফিল্যাক্সিস) কারণে তাদের হৃদযন্ত্রের আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি থাকে।[১০] সচরাচর নিম্ন রক্ত চাপের কারণে দ্রুত হৃৎ-স্পন্দনের হার দেখা গেলেও,[৯] এ আক্রান্ত ১০% ব্যক্তির মধ্যে নিম্ন রক্ত চাপসহ ধীর হৃৎ-স্পন্দন (ব্র্যাডিকার্ডিয়া) দেখা দিতে পারে।(ধীর হৃৎ-স্পন্দন হার এবং নিম্ন রক্তচাপের মিশ্রণ বেজল্ড-জ্যারিচ ক্রিয়া হিসাবে পরিচিত)।[১১] রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মস্তিষ্ক হাল্কা অনুভব করতে পারে বা চেতনা হারাতে পারে। এই নিম্ন রক্তচাপ রক্তবাহী নালীর প্রসারের ফলে হতে পারে (বণ্টক শক) অথবা হৃৎপিণ্ডের নিলয়ের ব্যর্থতাঘটিত (কার্ডিওজেনিক শক) হতে পারে। [১০] বিরল ক্ষেত্রে,খুব নিম্ন রক্তচাপ অ্যানাফিল্যাক্সিস-এর একমাত্র লক্ষণ হতে পারে।[৮]

অন্যান্য[সম্পাদনা]

পাকস্থলী ও অন্ত্রের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে পেশির সঙ্কোচনজনিত পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, এবং বমি।[৭] সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি চিন্তায় বিভ্রান্ত হতে পারে, তার মূত্রথলীর নিয়ন্ত্রণও হারাতে পারে, এবং শ্রোণীতে (pelvis) জরায়ুর সংকোচন জনিত ব্যথা অনুভূত হতে পারে।[৭][৯] মস্তিষ্কের চারপাশের রক্তনালীসমূহের বিস্তৃতির কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। [৫] এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তি উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারে বা ধারণা করতে পারে যে সে মারা যাচ্ছে।[৬]

কারণসমূহ[সম্পাদনা]

বহিরাগত প্রায় সকল পদার্থের প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া থেকে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) হতে পারে।[১২] সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পোকামাকড়ের কামড় বা হুল থেকে বিষ, খাদ্য, এবং ঔষধ।[১১][১৩] শিশু এবং বয়োঃপ্রাপ্ত তরুণদের মধ্যে খাবার অতি সাধারণ কারণ। ঔষধ এবং পোকার কামড় ও হুল ফোটা থেকে বয়স্কদের মধ্যে এটি ঘটার প্রবণতা অতি সাধারণ। [৬] কম প্রচলিত কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে শারীরিক উপাদান, জৈব ঘটক (যেমন বীর্য), তরুক্ষীর, হরমোনের পরিবর্তন, খাদ্য সংযোজন দ্রব্য (যেমন মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট এবং খাদ্যের রং), এবং ঔষধ যা চামড়ায় (স্থানীয়ভাবে) প্রয়োগ করা হয়। [৯] ব্যায়াম বা তাপমাত্রা (গরম বা ঠান্ডা) কিছু নির্দিষ্ট কলা কোষে (মাস্ট কোষ নামে পরিচিত) অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদক রাসায়নিক পদার্থের অবমুক্তি ঘটিয়ে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। [৬][১৪] ব্যায়ামের ফলে সৃষ্ট অ্যানাফিল্যাক্সিস প্রায়ই নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য গ্রহণের সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে। [৫] কোন ব্যক্তির অনুভূতিনাশক গ্রহণের সময় বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া হলে, সচরাচর এর কারণ হয় অবশ করতে প্রয়োগ করা নির্দিষ্ট ঔষধ (স্নায়ুর পেশি রোধক বস্তু), অ্যান্টিবায়োটিক, এবং তরুক্ষীর। [১৫] ৩২-৫০% ঘটনার ক্ষেত্রে, কারণ জানা থাকে না, যার নাম "অজানা কারণজাত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া" (ইডিওপ্যাথিক অ্যানাফিল্যাক্সিস)।[১৬]

খাদ্য[সম্পাদনা]

অনেক খাবার বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি যখন প্রথমবারের জন্য সেটি খেলেও। [১১] পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হল বাদাম, গম, ট্রি নাট, খোলসি মাছ, মাছ, দুধ, এবং ডিম খাওয়া বা এসবের সংস্পর্শে আসা।[৪][৬] মধ্যপ্রাচ্যে সচরাচর যে খাদ্য থেকে এটি হয় তা হল তিল। এশিয়াতে, ধান এবং ছোলা প্রায়ই বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার কারণ হয়। [৬] খাদ্য গ্রহণ থেকেই সাধারণত গুরুতর অবস্থা সৃষ্টি হয়,[১১] তবে এসব খাদ্য কোন কোন ব্যক্তির শরীরের কোন কোন অংশের সংষ্পর্শে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বাচ্চারা তাদের অতিপ্রতিক্রিয়া কাটিয়ে উঠতে পারে। ১৬ বছরের মধ্যে দুধ অথবা ডিমে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার যুক্ত ৮০% শিশু এবং বাদামের ক্ষেত্রে একবার বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া ২০% শিশু সমস্যা ছাড়াই এসব খাবার খেতে সক্ষম হয়।[১২]

ঔষধ[সম্পাদনা]

যে কোন ঔষধ বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) ঘটাতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত হল β-ল্যাকটাম অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন পেনিসিলিন) এবং তার পরে রয়েছে অ্যাসপিরিন এবং এনএসএআইডি।[৪][১৭] কোন ব্যক্তির কোনও এনএসএআইডি-তে অতিপ্রতিক্রিয়া থাকলে তিনি সাধারণত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে আক্রান্ত করে না এমন অন্য একটি এনএসএআইডি ব্যবহার করতে পারেন। [১৭] বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার অন্যান্য সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক চিকিৎসা (কেমোথেরাপি), টিকা, প্রোটামিন (বীর্যে পাওয়া যায়), এবং ভেষজ ঔষধ।[৬][১৭] ভ্যানকোমাইসিন, মর্ফিন, এবং এক্স-রে ছবি উন্নত করতে ব্যবহৃত উপাদানসহ (রেডিওকনট্রাস্ট বস্তু) কোন কোন ঔষধ কলার নির্দিষ্ট কিছু কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করায় এগুলো হিস্টামাইন অবমুক্ত করে (মাস্ট কোষে সাইটোপ্লাজমিক দানা ক্ষরণ) বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া ঘটায়।[১১]

ওষুধ প্রয়োগে প্রতিক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি আংশিকভাবে নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কত ঘন ঘন ওষুধ সেবন করছে এবং আংশিকভাবে কীভাবে ঔষধ শরীরে কাজ করে তার ওপর।[১৮] পেনিসিলিন বা সেফালোসপোরিন-থেকে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে তা হয় শুধুমাত্র এগুলো শরীরের ভিতর প্রোটিনের সহিত আবদ্ধ হওয়ার পর, এবং এর কিছু অন্যগুলির তুলনায় সহজেই আবদ্ধ হয়ে থাকে।[৫] পেনিসিলিন দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রতি ২,০০০ থেকে ১০,০০ ব্যক্তির একবার বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া হয়। চিকিৎসা গ্রহণ নেয়া প্রতি ৫০,০০০ জনের মধ্যে একজনেরও কম মৃত্যু ঘটে বলে থাকে।[৫] প্রায় প্রতি ৫০,০০০ জনের মধ্যে একজনের অ্যাসপিরিন এবং এনএসএআইডি থেকে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া হয়।[৫] যদি কারো পেনিসিলিন থেকে কোন প্রতিক্রিয়া হয়, তার সেফালোসপোরিন থেকে প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, তবে ঝুঁকি প্রতি ১,০০০ জনে একজনেরও কম। [৫] এক্স-রে ছবি উন্নত করতে ব্যবহৃত পুরানো ওষুধ (রেডিওকনট্রাস্ট বস্তু) এক্ষেত্রে ১% প্রতিক্রিয়া ঘটিয়েছে। নিম্ন ঘনত্বের (osmolar) নতুন রেডিওকনট্রাস্ট বস্তুর ক্ষেত্রে ০.০৪% প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।[১৮]

বিষ[সম্পাদনা]

মৌমাছি ও বোলতার মত পোকামাকড়ের (হাইমেনোপ্টেরা) বা বড় ছাড়পোকারফুটানো হুল বা কামড়ের বিষ থেকে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) হতে পারে। [৪][১৯] বিষ থেকে অতীতে কোন ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে এবং হুলের চারিদিকে স্থানগত প্রতিক্রিয়ার চেয়ে বেশি কিছু হলে, ভবিষ্যতে তাদের বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার অধিক ঝুঁকি থাকে।[২০][২১] তবে, বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে যেসব লোক মারা গেছে তাদের অর্ধেকেরই পূর্ববর্তী কোনো ব্যাপক (তন্ত্র সংক্রান্ত) প্রতিক্রিয়া ছিল না।[২২]

ঝুঁকি[সম্পাদনা]

হাঁপানি, চর্মরোগ, বা অ্যালার্জির বংশগত (atopic) রোগ যুক্ত ব্যক্তিদের খাদ্য, তরুক্ষীর, এবং রেডিওকনট্রাস্ট বস্তু থেকে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) হবার উচ্চ ঝুঁকি থাকে। এসব ব্যক্তির সূচিপ্রয়োগ বা ইঞ্জেকশনভিত্তিক ঔষধ বা হুল ফোটা থেকে গুরুতর ঝুঁকি নেই।[৬][১১] এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে আাক্রান্ত ৬০% শিশুর মধ্যে পূর্ববর্তী বংশগত রোগের ইতিহাস ছিল। বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে মৃত্যু বরণকারী ৯০% এর অধিক শিশুর মধ্যে অ্যাজমা দেখা যায়।[১১] যেসব ব্যক্তি কলার মধ্যে অনেক বেশি মাস্ট কোষ থাকার কারণে (মাস্টোকাইটোসিস) অসুস্থ অথবা যারা সম্পদশালী তাদের অধিক ঝুঁকি রয়েছে।[৬][১১] বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টিওকারী বস্তুর সঙ্গে সর্বশেষ সংস্পর্শের পর যত বেশি সময় পার হবে নতুন প্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি তত কম হবে।[৫]

প্রক্রিয়া[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস( একটি গুরুতর অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি) যা হঠাৎ শুরু হয় এবং শরীরের অনেক তন্ত্রকে প্রভাবিত করে। [২][২৩] মাস্ট কোষ এবং বেসোফিল থেকে প্রদাহী উপাদান এবং বিশেষ ধরনের আমিষ (সাইটোকিন) অবমুক্তির ফলে এটি ঘটে। সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় কোন প্রতিক্রিয়ার কারণে এগুলোর অবমুক্তি ঘটে, তবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় কোন প্রতিক্রিয়া ছাড়াই এসব কোষের ক্ষতির দ্বারা তা সৃষ্ট হতে পারে।[২৩]

প্রতিষেধকবিদ্যা সংক্রান্ত[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাক্সিস) কোন রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে হলে ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই (আইজিই) বহিরাগত পদার্থ (প্রতি-উৎপাদক বা অ্যান্টিজেন) আবদ্ধ করে যা অতিপ্রতিক্রিয়া শুরু করে। আইজিই এর সঙ্গে এন্টিজেন এর সংযুক্তি মাস্ট কোষ এবং বেসোফিল-এর উপর FcεRI রিসেপ্টর সক্রিয় করে। মাস্ট কোষ এবং বেসোফিল হিস্টামাইনের মত প্রদাহী উপাদান অবমুক্তির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া করে। এ্সব উপাদান শ্বাসনালির মসৃণ পেশির সংকোচন বৃদ্ধি করে, রক্তবাহী নালীর বিস্তার ঘটায় (ভ্যাসোডিলেশন), রক্তবাহী নালী থেকে তরল নির্গত হওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে, এবং হৃদ পেশির ক্রিয়া অবদমিত করে।[৫][২৩] এছাড়া রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত আরেকটি প্রক্রিয়া আছে যা আইজিই-এর ওপর নির্ভর করে না, তবে মানবদেহে এটি ঘটলে তা জানা যায় না।[২৩]

প্রতিষেধকবিদ্যা-বহির্ভূত[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে না হলে, প্রতিক্রিয়া এমন কোন বস্তুর কারণে হয় যা সরাসরি মাস্ট কোষ এবং বেসোফিলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এর ফলে এগুলো হিস্টামাইন এবং অন্যান্য উপাদান অবমুক্ত করে যা সাধারণত কোন অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার (সাইটোপ্লাজমিক দানা ক্ষরণ) সঙ্গে সম্পর্কিত। যেসব বস্তু এই কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রেডিও-কন্ট্রাস্ট বস্তু, ওপিঅয়েড, তাপমাত্রা (গরম বা ঠান্ডা) ও কম্পন।[১৪][২৩]

রোগনির্ণয়[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস চিকিৎসাগত তথ্যের ভিত্তিতে নির্ণীত হয়। [৬] কোন অ্যালার্জি-উৎপাদকের সংস্পর্শে কয়েক মিনিট/ঘণ্টার মধ্যে যখন নিচের তিনটি ঘটনার যে কোন একটি ঘটে, তখন খুব সম্ভব সেই ব্যক্তির বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশিঃ[৬]

  1. ত্বক বা মিউকাসাল দেহকলাতে প্রভাব আর তার সাথে শ্বাসকষ্ট নয়তো নিম্ন রক্তচাপ
  2. দুই বা ততোধিক নিম্নলিখিত লক্ষণ:-
    এ.ত্বক বা মিউকাসাল দেহকলাতে প্রভাব
    বি. শ্বাসকষ্ট
    সি. নিম্ন রক্তচাপ
    ডি. আন্ত্রিক লক্ষণসমূহ
  3. পরিচিত অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদকের সংস্পর্শে নিম্ন রক্তচাপ

কোন ব্যক্তির যদি পোকা-মাকড়ের হুল বা ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, ট্রাইপটেজ বা হিস্টামিন (মাস্ট কোষ থেকে নির্গত) সংক্রান্ত রক্তপরীক্ষা বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দরকারী হতে পারে। তবে এই পরীক্ষাগুলি তত দরকারি নয় যদি কারণ হয় খাদ্য বা ব্যক্তির থাকে স্বাভাবিক রক্তচাপ,[৬] আর এগুলি থকলে যে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া নেই সেটাও বলা যায় না।[১২]

শ্রেণীকরণ[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসের মূল তিনটি ভাগ আছে। বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াজনিত অভিঘাত (অ্যানাফিল্যাক্টিক শক) তখনই সংঘটিত হয় যখন শরীরের বেশির ভাগ অংশে রক্তবাহী নালীগুলি বিস্তৃত হয়ে যায় (সিস্টেমিক ভাস্কোডাইলেশন), যার কারণে হয় নিম্ন রক্তচাপ যা ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপের কমপক্ষে ৩০% কম অথবা পরিমিত মাপের ৩০% নিচে।[৮] দ্বিস্তরীয় বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়ে যখন লক্ষণগুলি ফিরে আসে ১ –৭২ ঘণ্টার মধ্যে, এমন কি প্রথম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদকের সংস্পর্শে ব্যক্তি আবার না আসা সত্ত্বেও।[৬] কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ২০% এর মত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া হল দ্বিস্তরীয়।[২৪] সাধারণতঃ ৮ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণগুলি ফেরত আসে। [১১] দ্বিতীয় প্রতিক্রিয়ার চিকিৎসা মূল বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার মত একই ভাবে হবে।[৪] যে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সাধারণ অতিপ্রতিক্রিয়া থেকে না হয়ে বরং মাস্ট কোষে সরাসরি আঘাতের কারণে সংঘটিত হয়, তার পুরানো নাম হল ছদ্ম-বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (সিউডোঅ্যানাফিল্যাক্সিস বা অ্যানাফিল্যাক্টয়েড রিঅ্যাকশন)।[১১][২৫] বিশ্ব অ্যালার্জি সংস্থা বর্তমান যে নামটি দিয়েছে তা হল অনাক্রম্যতন্ত্র-বহির্ভূত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া (নন-ইমিউন অ্যানাফিল্যাক্সিস)।[২৫] কিছু লোকের মতে পুরানো নামটি আর ব্যবহার করা উচিত নয়। [১১]

অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি) পরীক্ষা[সম্পাদনা]

ডান হাতের উপরের দিকে ত্বকের অ্যালার্জি পরীক্ষা

অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যালার্জির পরীক্ষা কোনও ব্যক্তির বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসের কারণ খুঁজতে সাহায্য করতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য ও বিষের জন্য ত্বকের অতিপ্রতল্রঊয়া পরীক্ষা (যেমন প্যাচ টেস্ট) করা যায়। [১২] দুধ, ডিম, চিনাবাদাম, কাঠবাদাম ও মাছে অতিপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষিকা বা অ্যান্টিবডির জন্য রক্তপরীক্ষা করা যেতে পারে। [১২] ত্বক পরীক্ষায় পেনিসিলিন অতিপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে, তবে অন্যান্য ওষুধের জন্য কোন ত্বক পরীক্ষা নেই।[১২] অনাক্রম্য-বহির্ভূত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া নির্ণীত হতে পারে শুধুমাত্র ব্যক্তির ইতিহাস পরীক্ষা করে অথবা ব্যক্তির উপর অতীতে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল এমন অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদক প্রয়োগ করে। অনাক্রম্যতন্ত্র-বহির্ভূত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার কোনও ত্বক বা রক্ত পরীক্ষা নেই[২৫]

রোগণির্ণয়ে পার্থক্য[সম্পাদনা]

মাঝে মাঝে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিসকে অ্যাজমা থেকে এবং অক্সিজেনের অভাবে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (সিনকপি) ও আতঙ্কিত হওয়াকে আলাদা করাটা কঠিন হয়ে যায়।[৬] সাধারণতঃ অ্যাজমা রোগীদের চুলকানী বা পাকস্থলী বা অন্ত্রের সমস্যা থকে না। কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে তার ত্বক বিবর্ণ হয়ে যায় এবং তাতে কোন ফুসকুড়ি থাকে না। কোনও ব্যক্তি আতঙ্কিত হলে তার ত্বক লালচে হতে পারে কিন্তু তাতে লালচে দাগ থাকে না।[৬] অন্য যেসব ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি একইরকম হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে পচা মাছ থেকে খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ফুড পয়জনিং (স্কমব্রয়ডোসিস) এবং কিছু পরজীবী থেকে সংক্রমণ (অ্যানিসাকিয়াসিস)।[১১]

প্রতিরোধ[সম্পাদনা]

অতীতে প্রতিক্রিয়া ঘটার যা যা কারণ ছিল সেগুলিকে এড়িয়ে চলাই বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস নিবারণের সুপারিশকৃত পথ। যখন তা সম্ভব হয় না, তখন পরিচিত অ্যালার্জি-উৎপাদক শরীরে যেন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে না পারে চিকিৎসার মাধ্যমে সে ব্যবস্থা করা যায় (ডিসেন্সিটাইজেশন)। মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল, ভোমরা, এবং কাঠপিঁপড়ে থেকে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে হাইমেনোপ্টেরা ভেনোম দ্বারা প্রতিরোধ ব্যবস্থার চিকিৎসায় (ইমিউনোথেরাপি) সংবেদনশীলতা রোধ (ডিসেন্সিটাইজিং) বড়দের ক্ষেত্রে ৮০% –৯০% এবং ছোটদের ক্ষেত্রে ৯৮% কার্যকর। দুধ, ডিম, বাদাম ও মটরশুঁটির মত খাদ্য থেকে কোন কোন লোকের সংবেদনশীলতা রোধে মুখের মাধ্যমে ইমিউনোথেরাপি কার্যকর হতে পারে; তবে এই ধরনের চিকিৎসায় প্রায়ই মন্দ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেক ওষুধের ক্ষেত্রেও ডিসেন্সিটাইজেশন সম্ভব, তবে বেশির ভাগ লোকের উচিত সমস্যা সৃষ্টিকারী ওষুধ থেকেই দূরে থাকা। যাদের ল্যাটেক্সে প্রতিক্রিয়া হয়, তাদের ইমিউন রেসপন্স ঘটিয়েছে এমন পদার্থ যুক্ত খাবার (ক্রস-রিঅ্যাক্টিভ ফুড)যেমন নাসপাতি, কলা, আলু ইত্যাদির এড়িয়ে চলা উচিত।[৬]

ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস জরুরি চিকিৎসার আওতাভূক্ত যেখানে জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয় যেমন হাওয়া চলাচল ব্যবস্থাপনা, পরিপূরক অক্সিজেন, প্রচুর পরিমাণে শিরায় প্রয়োগযোগ্য তরল, এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ।[৪] এর এক উত্তম চিকিৎসা হল এপিনেফ্রিন। প্রায়শই এপিনেফ্রিনের সাথে অ্যান্টিহিস্টামিন ও স্টেরয়েড ব্যবহৃত হয়।[৬] কোন ব্যক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে তাকে হাসপাতালে ২ থেকে ২৪ ঘণ্টা রেখে পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হতে হয় যে লক্ষণগুলি আর ফিরে আসছে না, কারণ সে ব্যক্তির দ্বি-স্তরিক বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া থাকলে এমনটি ঘটতে পারে।[৫][১১][২৪][২৬]

এপিনেফ্রিন[সম্পাদনা]

An old version of an EpiPen auto-injector

এপিনেফ্রিন (অ্যাড্রিনালিন) হল বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসের প্রাথমিক চিকিৎসা। এটি ব্যবহার না হবার কোন কারণ নেই (কোন চরম আপত্তিকর লক্ষণ নেই)।[৪] অ্যাবিষম অতিপ্রতিক্রিয়া সন্দেহ হবার সাথে সাথে উরুর মধ্য অ্যান্টেরোলেটারাল অংশের পেশিতে এপিনেফ্রিন সলিউশন ইঞ্জেক্ট করার সুপারিশ করা হল।[৬] ব্যক্তি চিকিৎসায় ভালভাবে সাড়া না দিলে প্রতি ৫ থেকে ১৫ মিনিট অন্তর ইঞ্জেকশনটি দিয়ে যেতে হবে।[৬] ১৬ থেকে ৩৫% ঘটনায় দ্বিতীয় ডোজের দরকার পড়ে।[১১] দুই ডোজের বেশি খুবই কম দরকার পড়ে।[৬] পেশিতে ইঞ্জেকশন (ইন্ট্রামাস্কুলার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ত্বকের নিচে ইঞ্জেকশনের (সাবকিউটেনিয়াস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) চাইতে বেশি প্রচলিত, কারণ দ্বিতীয়টিতে ওষুধ খুব ধীরে ধীরে আত্মীকৃত হয়।[২৭] এপিনেফ্রিনে কিছু ছোটোখাটোো সমস্যা হয়, যেমন কম্পন, উদ্বেগ, মাথাব্যথা এবং দ্রুত হৃৎ-স্পন্দন।[৬]

যারা বি-ব্লকার নেয় এপিনেফ্রিন তাদের ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে।[১১] এই অবস্থায় এপিনেফ্রিন কাজ না করলে তাদের শিরায় গ্লুকাগণ দেওয়া যেতে পারে। গ্লুকাগণ যে প্রক্রিয়ায় কাজ করে তার সঙ্গে বিটা-রিসেপটর এর সংশ্লিষ্টতা নেই। [১১]

প্রয়োজন হলে পাতলা দ্রবণের মাধ্যমে এপিনেফ্রিন শিরাতেও ইঞ্জেক্ট করা যেতে পারে (ইন্ট্রাভেনাস ইঞ্জেকশন)। তবে, ইন্ট্রাভেনাস এপিনেফ্রিনে হৃৎ-স্পন্দন অনিয়মিত (ডিসরিদমিয়া) এবং হার্ট অ্যাটাকের (মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন)সম্ভাবনা আছে।[২৮] এপিনেফ্রিন স্বয়ংসূচিপ্রয়োগযন্ত্র (অটোইঞ্জেকটর) ব্যবহার করে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেরাই পেশিতে এপিনেফ্রিন সূচিপ্রয়োগ করতে পারে। এটি সাধারণতঃ দুইটি মাত্রাতে পাওয়া যায়, একটি বয়স্ক বা ২৫ কেজি ওজনের বেশি বাচ্চাদের জন্য এবং অন্যটি বাচ্চাদের জন্য যাদের ওজন ১০ থেকে ২৫ কেজি।[২৯]

সংযোজন[সম্পাদনা]

এপিনেফ্রিনের সাথে অ্যান্টিহিস্টামিনের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। তাত্ত্বিক যুক্তির ভিত্তিতে একে কার্যকর ভাবা হত, কিন্তু এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস চিকিৎসায় অ্যান্টিহিস্টামিন প্রকৃতপক্ষে কার্যকর। ২০০৭ কোক্রেন পর্যালোচনায় কোন উত্তম -মানসম্পন্ন গবেষণা পাওয়া যায়নি যাতে এর সুপারিশ করা যায়। [৩০] ফ্লুইড জমে যাওয়া বা শ্বাসনালিতে খিঁচুনির ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন যে কার্যকর তা বিশ্বাস করা যায় না।[১১] যে ব্যক্তির বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার জের বর্তমান রয়েছে করর্টিকোস্টারয়েড সেই ব্যক্তির কোন কাজে আসে না। এগুলি দ্বি-পর্যায় ভিত্তিক বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কমাবার প্রত্যাশায় ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ভবিষ্যত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে এদের কার্যকারিতা অনিশ্চিত।[২৪] এপিনেফ্রিন প্রয়োগে শ্বাসনালির খিঁচুনির লক্ষণের উপশম না হলে কোন শ্বাস সহায়ক যন্ত্রের (নেবুলাইজার)মাধ্যমে সালবিউটামল দিলে তা কার্যকর হতে পারে।[১১] অন্য পদ্ধতি কাজ না করলে মাইথিলিন ব্লু সেখানে ব্যবহৃত করা হয়েছে, কারণ এটি মসৃণ পেশিগুলিকে শিথিল করতে পারে।[১১]

প্রস্তুতি[সম্পাদনা]

যেসব ব্যক্তির বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তাদের "অতিপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত কর্ম-পরিকল্পনা" রাখার পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে। বাবা মায়ের উচিত তাদের বাচ্চাদের অতিপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এবং বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াঘটিত জরুরি পরিস্থিতিতে কী করতে হবে বিদ্যালয়কে তা জানিয়ে রাখা।[৩১] কর্ম-পরিকল্পনায় সাধারণতঃ থাকে এপিনেফ্রিন অটো-ইঞ্জেকশন-এর ব্যবহার, চিকিৎসা সতর্কীকরণ ব্রেসলেট পরার সুপারিশ, এবং কীভাবে ‘সূত্রপাত’ এড়ানো যায় সে বিষয়ে পরামর্শ প্রদান।[৩১] কোনও কোনও ক্ষেত্রে যে পদার্থের জন্য অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদক প্রতিক্রিয়া হয়, শরীরকে সেসব পদার্থের প্রতি কম সংবেদনশীল করার চিকিৎসা তথা অতিপ্রতিক্রিয়া-উৎপাদক অনাক্রম্য চিকিৎসা (অ্যালার্জেন ইমিউনোথেরাপি) বিদ্যমান। এই ধরনের চিকিৎসা বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার ভবিষ্যত আক্রমণকে প্রতিরোধ করতে পারে। হুলযুক্ত পতঙ্গের বিরুদ্ধে অধস্ত্বকীয় অবেদনীকরণের (সাব-কিউটেনিয়াস ডিসেন্সিটাইজেশন) কয়েক বছরব্যাপী কোর্স এবং বেশ কিছু খাবারের ক্ষেত্রে মুখের মাধ্যমে অবেদনীকরণ (ডিসেন্সিটাইজেশন) কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।[৪]

একনজরে[সম্পাদনা]

কারণ জানা থাকলে আর দ্রুত চিকিৎসা করা হলে ব্যক্তির সুস্থ হবার ভাল সম্ভাবনা থাকে।[৩২] এমনকি কারণ অজানা হলেও, প্রতিক্রিয়া বন্ধ করার ওষুধ পাওয়া গেলে সাধারণতঃ সুস্থ হবার ভাল সম্ভাবনা থাকে। [৫] যদি মৃত্যু হয়, তবে তা হয় শ্বাসকষ্ট (সাধারণতঃ শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে) নয়তো হৃৎ ও হৃৎ-নালীর সমস্যা বা কার্ডিওভাস্কুলার (আঘাত) কারণে।[১১][২৩] Anaphylaxis causes death in 0.7–20% of cases.[৫][১০] কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে কয়েক মিনিটে।[৬] যে সব বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস আক্রান্ত ব্যক্তি ব্যায়াম করে তাদের ক্ষেত্রে সাধারণতঃ ফলাফল ভাল হয়, বয়স বাড়লে কম ক্ষেত্রে গুরুতর ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়।[১৬]

সম্ভাবনা[সম্পাদনা]

প্রতি বছর বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসে আক্রান্ত হয় প্রতি ১০০০০০ (১ লক্ষ) লোকের মধ্যে ৪–৫ জন,[১১] যার ভিতর জীবনভর ঝুঁকি ০.৫%–২%।[৬] এই হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮০ সালে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ছিল বছরে প্রতি ১০০,০০০ জনে প্রায় ২০ জন, আর ১৯৯০-এ এটা দাঁড়ায় বছরে প্রতি ১০০,‌০০০ জনে ৫০ জন।[৪] খাদ্যজনিত বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার কারণে এই বৃদ্ধি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।[৩৩] কমবয়সী লোক ও মহিলাদের মধ্যে এই ঝুঁকি সবচাইতে বেশি। [৪][১১]

সাম্প্রতিক কালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার কারণে বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০০–১,০০০ (প্রতি মিলিয়নে ২.৪), যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা বছরে ২০ (প্রতি মিলিয়নে ০.৩৩), এবং অস্ট্রেলিয়ায় বছরে ১৫ (প্রতি মিলিয়নে ০.৬৪)।[১১] ১৯৭০ থেকে ২০০০-এর মধ্যে মৃত্যুহার কমেছে।[৩৪] অস্ট্রেলিয়ায় বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে মৃত্যু মহিলাদের মধ্যে মূলতঃ খাদ্যের কারণে এবং পুরুষদের মধ্যে মূলতঃ পতঙ্গের কামড়ে ঘটে থাকে।[১১] বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াতে মৃত্যু ওষুধের কারণে ঘটে।[১১]

পরিভাষার ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিষম অতিপ্রতিক্রিয়াকে নির্দেশ করতে পাশ্চাত্যে "অ্যাফিলেক্সিস" শব্দটি ১৯০২ সালে প্রথম চালু করেন চার্লস রিশেট এবং পরবর্তকালে এটি পরিবর্তিত হয়ে হয় "অ্যানাফিল্যাক্সিস", কারণ এটি শুনতে আরো ভাল।[১২] বিষম অতিপ্রতিক্রিয়ার উপর তার কাজের জন্য পরবর্তীকালে ১৯১৩ সালে তিনি চিকিৎসা ও শরীরবৃত্তে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।[৫] তবে প্রাচীন কাল থেকেই অ্যালার্জি বা অতিপ্রতিক্রিয়ার উপর গবেষণার বিষয়ে জানা যায়।[২৫] শব্দটি এসেছে গ্রিক ভাষা থেকে| গ্রিক শব্দ ἀνά অ্যানা, বিপক্ষে, এবং φύλαξις ফিল্যাক্সিস, সুরক্ষা থেকে।[৩৫]

গবেষণা[সম্পাদনা]

এপিনেফ্রিনের উন্নয়নের প্রয়াস চলমান রয়েছে যাতে বিষম অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিলেক্সিসের চিকিৎসায় এটি জিভের তলায় রেখে প্রয়োগ করা যায় (সাবলিঙ্গুয়াল এপিনেফ্রিন)[১১] পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে আইজিই (IgE) নিরাময়ের অধস্ত্বকীয় সূচিপ্রয়োগ (সাবকিউটেনিয়াস ইঞ্জেকশন) করে অ্যান্টিবডি ওমালাইজুম্যাব প্রয়োগের বিষয়ে গবেষণা চলছে, তবে এখন পর্যন্ত তা সুপারিশ করা হয়নি।[৬][৩৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ইংরেজি "অ্যানাফিল্যাক্সিস" পারিভাষিক শব্দটি গ্রিক শব্দ ἀνά অ্যানা, বিরুদ্ধে, এবং φύλαξις ফিল্যাক্সিস, সুরক্ষা থেকে এসেছে।
  2. Tintinalli, Judith E. (২০১০)। Emergency Medicine: A Comprehensive Study Guide (Emergency Medicine (Tintinalli))। New York: McGraw-Hill Companies। পৃষ্ঠা 177–182। আইএসবিএন 0-07-148480-9 
  3. Oswalt ML, Kemp SF (২০০৭)। "Anaphylaxis: office management and prevention"। Immunol Allergy Clin North Am27 (2): 177–91, vi। ডিওআই:10.1016/j.iac.2007.03.004পিএমআইডি 17493497Clinically, anaphylaxis is considered likely to be present if any one of three criteria is satisfied within minutes to hours  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  4. Simons FE (২০০৯)। "Anaphylaxis: Recent advances in assessment and treatment" (পিডিএফ)J. Allergy Clin. Immunol.124 (4): 625–36; quiz 637–8। ডিওআই:10.1016/j.jaci.2009.08.025পিএমআইডি 19815109। ২৭ জুন ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১২  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  5. Marx, John (২০১০)। Rosen's emergency medicine: concepts and clinical practice 7th edition। Philadelphia, PA: Mosby/Elsevier। পৃষ্ঠা 15111528। আইএসবিএন 9780323054720 
  6. Simons, FE (2010 May)। "World Allergy Organization survey on global availability of essentials for the assessment and management of anaphylaxis by allergy-immunology specialists in health care settings." (পিডিএফ)Annals of allergy, asthma & immunology : official publication of the American College of Allergy, Asthma, & Immunology104 (5): 405–12। পিএমআইডি 20486330। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১২  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Sampson HA, Muñoz-Furlong A, Campbell RL; ও অন্যান্য (২০০৬)। "Second symposium on the definition and management of anaphylaxis: summary report—Second National Institute of Allergy and Infectious Disease/Food Allergy and Anaphylaxis Network symposium"J. Allergy Clin. Immunol.117 (2): 391–7। ডিওআই:10.1016/j.jaci.2005.12.1303পিএমআইডি 16461139  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  8. Limsuwan, T (2010 Jul)। "Acute symptoms of drug hypersensitivity (urticaria, angioedema, anaphylaxis, anaphylactic shock)." (পিডিএফ)The Medical clinics of North America94 (4): 691–710, x। পিএমআইডি 20609858। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১২  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  9. Brown, SG (2006 Sep 4)। "Anaphylaxis: diagnosis and management."The Medical journal of Australia185 (5): 283–9। পিএমআইডি 16948628  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  10. Triggiani, M (2008 Sep)। "Allergy and the cardiovascular system."Clinical and experimental immunology। 153 Suppl 1: 7–11। পিএমআইডি 18721322পিএমসি 2515352অবাধে প্রবেশযোগ্য  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  11. Lee, JK (2011 Jul)। "Anaphylaxis: mechanisms and management."। Clinical and experimental allergy : journal of the British Society for Allergy and Clinical Immunology41 (7): 923–38। পিএমআইডি 21668816  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  12. Boden, SR (2011 Jul)। "Anaphylaxis: a history with emphasis on food allergy."। Immunological reviews242 (1): 247–57। পিএমআইডি 21682750  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  13. Worm, M (২০১০)। "Epidemiology of anaphylaxis."। Chemical immunology and allergy95: 12–21। পিএমআইডি 20519879 
  14. editors, Marianne Gausche-Hill, Susan Fuchs, Loren Yamamoto, (২০০৭)। The pediatric emergency medicine resource (Rev. 4. ed. সংস্করণ)। Sudbury, Mass.: Jones & Bartlett। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 9780763744144 
  15. Dewachter, P (2009 Nov)। "Anaphylaxis and anesthesia: controversies and new insights."। Anesthesiology111 (5): 1141–50। ডিওআই:10.1097/ALN.0b013e3181bbd443পিএমআইডি 19858877  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  16. editor, Mariana C. Castells, (২০১০)। Anaphylaxis and hypersensitivity reactions। New York: Humana Press। পৃষ্ঠা 223। আইএসবিএন 9781603279505 
  17. Volcheck, Gerald W. (২০০৯)। Clinical allergy : diagnosis and management। Totowa, N.J.: Humana Press। পৃষ্ঠা 442। আইএসবিএন 9781588296160 
  18. Drain, KL (২০০১)। "Preventing and managing drug-induced anaphylaxis."। Drug safety : an international journal of medical toxicology and drug experience24 (11): 843–53। পিএমআইডি 11665871  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  19. Klotz, JH (2010 Jun 15)। ""Kissing bugs": potential disease vectors and cause of anaphylaxis."। Clinical infectious diseases : an official publication of the Infectious Diseases Society of America50 (12): 1629–34। পিএমআইডি 20462351  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  20. Bilò, MB (2011 Jul)। "Anaphylaxis caused by Hymenoptera stings: from epidemiology to treatment."। Allergy। 66 Suppl 95: 35–7। পিএমআইডি 21668850  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  21. Cox, L (2010 Mar)। "Speaking the same language: The World Allergy Organization Subcutaneous Immunotherapy Systemic Reaction Grading System."The Journal of allergy and clinical immunology125 (3): 569–74, 574.e1–574.e7। পিএমআইডি 20144472  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  22. Bilò, BM (2008 Aug)। "Epidemiology of insect-venom anaphylaxis."। Current opinion in allergy and clinical immunology8 (4): 330–7। পিএমআইডি 18596590  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  23. Khan, BQ (2011 Aug)। "Pathophysiology of anaphylaxis."। Current opinion in allergy and clinical immunology11 (4): 319–25। পিএমআইডি 21659865  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  24. Lieberman P (২০০৫)। "Biphasic anaphylactic reactions"Ann. Allergy Asthma Immunol.95 (3): 217–26; quiz 226, 258। ডিওআই:10.1016/S1081-1206(10)61217-3পিএমআইডি 16200811  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  25. Ring, J (২০১০)। "History and classification of anaphylaxis." (পিডিএফ)Chemical immunology and allergy95: 1–11। পিএমআইডি 20519878  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  26. "Emergency treatment of anaphylactic reactions – Guidelines for healthcare providers" (PDF)। Resuscitation Council (UK)। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-২২  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  27. Simons, KJ (2010 Aug)। "Epinephrine and its use in anaphylaxis: current issues."। Current opinion in allergy and clinical immunology10 (4): 354–61। পিএমআইডি 20543673  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  28. Mueller, UR (2007 Aug)। "Cardiovascular disease and anaphylaxis."। Current opinion in allergy and clinical immunology7 (4): 337–41। পিএমআইডি 17620826  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  29. Sicherer, SH (2007 Mar)। "Self-injectable epinephrine for first-aid management of anaphylaxis."। Pediatrics119 (3): 638–46। পিএমআইডি 17332221  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  30. Sheikh A, Ten Broek V, Brown SG, Simons FE (২০০৭)। "H1-antihistamines for the treatment of anaphylaxis: Cochrane systematic review"। Allergy62 (8): 830–7। ডিওআই:10.1111/j.1398-9995.2007.01435.xপিএমআইডি 17620060  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  31. Martelli, A (2008 Aug)। "Anaphylaxis in the emergency department: a paediatric perspective."। Current opinion in allergy and clinical immunology8 (4): 321–9। পিএমআইডি 18596589  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  32. Harris, edited by Jeffrey (২০০৭)। Head and neck manifestations of systemic disease। London: Informa Healthcare। পৃষ্ঠা 325। আইএসবিএন 9780849340505  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  33. Koplin, JJ (2011 Oct)। "An update on epidemiology of anaphylaxis in children and adults."। Current opinion in allergy and clinical immunology11 (5): 492–6। পিএমআইডি 21760501  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  34. Demain, JG (2010 Aug)। "Anaphylaxis and insect allergy."। Current opinion in allergy and clinical immunology10 (4): 318–22। পিএমআইডি 20543675  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  35. "anaphylaxis"। merriam-webster.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-২১ 
  36. Vichyanond, P (2011 Sep)। "Omalizumab in allergic diseases, a recent review."। Asian Pacific journal of allergy and immunology / launched by the Allergy and Immunology Society of Thailand29 (3): 209–19। পিএমআইডি 22053590  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]


টেমপ্লেট:Consequences of external causes টেমপ্লেট:Hypersensitivity and autoimmune diseases