জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৪২ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:


=== বিপর্যয়ের ঝুঁকি, প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তুতি ===
=== বিপর্যয়ের ঝুঁকি, প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তুতি ===
জলবায়ু পরিবর্তন বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়াকে বিপর্যয় ঝুঁকি কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন। একইভাবে, বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনা টেকসই উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনার একই রকম লক্ষ্য রয়েছে - বিপদের সম্ভাব্য প্রভাব কমিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা। উভয় পন্থা একই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং একই ধরনের গবেষণা দ্বারা সমর্থিত।
জলবায়ু পরিবর্তন বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়াকে [[দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস|বিপর্যয় ঝুঁকি কমানোর]] একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন।<ref>{{Cite journal|last2=Gaillard|first2=J C|date=March 2015|title=Climate Change's Role in Disaster Risk Reduction's Future: Beyond Vulnerability and Resilience|pages=21–27|language=en|doi=10.1007/s13753-015-0038-5|issn=2095-0055|doi-access=free|last1=Kelman|first1=Ilan|last3=Mercer|first3=Jessica|journal=International Journal of Disaster Risk Science|volume=6|issue=1|bibcode=2015IJDRS...6...21K}}</ref> একইভাবে, বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনা [[টেকসই উন্নয়ন|টেকসই উন্নয়নের]] একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনার একই রকম লক্ষ্য রয়েছে - বিপদের সম্ভাব্য প্রভাব কমিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা। উভয় পন্থা একই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং একই ধরনের গবেষণা দ্বারা সমর্থিত।<ref>{{Cite web|title=Managing the Risks of Extreme Events and Disasters to Advance Climate Change Adaptation — IPCC|url=https://www.ipcc.ch/report/managing-the-risks-of-extreme-events-and-disasters-to-advance-climate-change-adaptation/|access-date=2022-11-16}}</ref>


বিপর্যয় সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ঘটে। আগুন বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো নিজেরাই বিপর্যয় নয়। বরং, যখন এগুলো মানুষের উপর প্রভাব ফেলে বা মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে ঘটে তখনই এগুলো বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। বলা হয় যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় সবসময় মানুষের কর্মকাণ্ড বা নিষ্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত থাকে অথবা মানুষের সৃষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে। বিপর্যয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ঝুঁকি বৃদ্ধির মূলে থাকা দুর্বলতাগুলো ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ঝুঁকি সর্বত্র বিরাট প্রভাব ফেলছে। বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ার ঘটনা এবং বিপর্যয়ের ঘন ঘনতা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে প্রস্তুতি বৃদ্ধি এবং বিপর্যয় মোকাবেলার ক্ষমতা উন্নত করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বিপর্যয় সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ঘটে। আগুন বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো নিজেরাই বিপর্যয় নয়। বরং, যখন এগুলো মানুষের উপর প্রভাব ফেলে বা মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে ঘটে তখনই এগুলো বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। বলা হয় যে [[প্রাকৃতিক দুর্যোগ|প্রাকৃতিক বিপর্যয়]] সবসময় মানুষের কর্মকাণ্ড বা নিষ্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত থাকে অথবা মানুষের সৃষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে। বিপর্যয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ঝুঁকি বৃদ্ধির মূলে থাকা দুর্বলতাগুলো ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ঝুঁকি সর্বত্র বিরাট প্রভাব ফেলছে।<ref>{{Cite book|url=https://www.worldcat.org/oclc/1337569431|title=Global Assessment Report on Disaster Risk Reduction 2022. Our world at risk transforming governance for a resilient future|date=2022|publisher=United Nations Office for Disaster Risk Reduction|isbn=978-92-1-232028-1|oclc=1337569431|location=Geneva}}</ref> বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ার ঘটনা এবং বিপর্যয়ের ঘন ঘনতা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে প্রস্তুতি বৃদ্ধি এবং বিপর্যয় মোকাবেলার ক্ষমতা উন্নত করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==

১৫:০৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য কাঠামোগত, প্রাকৃতিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক পন্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ: ম্যানগ্রোভ রোপণ ও আবাসস্থল সংরক্ষণ (ম্যানগ্রোভ বনভূমি সমুদ্রের ঢেউ এবং ঝড় থেকে তীরভূমি রক্ষা করতে একটি প্রাকৃতিক বাধা।), সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির বিরুদ্ধে সমুদ্র প্রাচীর নির্মাণ (বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।), খরা-সহনশীল ফসলের জন্য বাছাই প্রজনন (কৃষিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল।), শহরাঞ্চলে তাপদ্বীপ প্রভাব কমাতে গ্রিন রুফ তৈরি (শহর এলাকায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতি।)

জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া হলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। এগুলো বর্তমান বা সম্ভাব্য প্রভাব উভয়ই হতে পারে।[১] খাপ খাইয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো মানুষের ক্ষতি হ্রাস করা, এমনকি এ থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগগুলো কাজে লাগানো। প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় মানিয়ে নেওয়ার জন্যও মানুষের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে।[২] জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অনেক কৌশল বা বিকল্প রয়েছে। এগুলো মানুষ ও প্রকৃতির ওপর প্রভাব এবং ঝুঁকি পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে। অভিযোজনের পদক্ষেপগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়: অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত; প্রাতিষ্ঠানিক; আচরণগত ও সাংস্কৃতিক; এবং প্রকৃতিভিত্তিক।[৩]:fig. ১৬.৫

জায়গাভেদে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। এটা ঐ এলাকায় মানুষ কিংবা প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর ঝুঁকির পরিমাণের উপর নির্ভর করে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অভিযোজন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[৪] এর কারণ তারা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে এর প্রভাবগুলো বহন করে।[৫][৬] খাদ্য, পানি ও অর্থনৈতিক উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য ক্ষেত্রের জন্য খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও অধিক।

জলবায়ু ঝুঁকি পরিচালনা করতে দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ। ৭০% এরও বেশি দেশে পরিকল্পনা, নীতিমালা বা কৌশল প্রস্তুত আছে।[৭] শহর ও প্রদেশের মতো সরকারের অন্যান্য স্তরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ব্যবহার করে; অর্থনৈতিক খাতগুলোও ব্যবহার করে। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য উন্নয়নশীল দেশসমূহ আন্তর্জাতিক তহবিল পেতে পারে। আরও বেশি খাপ খাইয়ে নেওয়ার বাস্তবায়নের জন্য এটা তাঁদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্যন্ত সম্পাদিত খাপ খাইয়ে নেওয়া বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলো মোকাবেলায় পর্যাপ্ত নয়।[৮]:২০[৯] :১৩০ ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলোর কথাও মাথায় রাখা জরুরি। আগামী দশকগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় খরচ হতে পারে বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে, এই খরচ এর ফলে যে ক্ষতি এড়ানো যাবে সেই তুলনায় কম হবে।

পারিভাষিক সংজ্ঞা

আইপিসিসি (IPCC) জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াকে নিম্নভাবে সংজ্ঞায়িত করে:

  • মানব ব্যবস্থায়: বাস্তব বা সম্ভাব্য জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবের সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া, যার লক্ষ্য ক্ষতি কমানো বা উপকারী সুযোগগুলো কাজে লাগানো।[১০]:
  • প্রাকৃতিক ব্যবস্থায়: খাপ খাইয়ে নেওয়া হল প্রকৃত জলবায়ুর সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া; মানুষের হস্তক্ষেপ একে ত্বরান্বিত করতেও পারে। খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদক্ষেপগুলো ক্রমবর্ধমান বা রূপান্তরকারী হতে পারে।[১১]:

ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপ: এ ধরনের পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো একটি ব্যবস্থার মূল প্রকৃতি এবং অখণ্ডতা বজায় রাখা।

রূপান্তরকারী পদক্ষেপ: এ ধরনের পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় একটি ব্যবস্থার মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলিকে পরিবর্তন করে।[১২]

অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা

১৯৯০ এর দশক থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজনের উপর গবেষণা চলছে। সেই থেকে এই বিষয়ে অধ্যয়নের উপ-বিষয়গুলোর সংখ্যা এবং বৈচিত্র্য অনেক বেড়েছে। ২০১০ এর দশকে, বিশেষত প্যারিস চুক্তির পর থেকে, অভিযোজন বা খাপ খাইয়ে নেওয়া নীতি-নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এটি নীতি-গবেষণার (policy research) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।[১৩]:১৬৭[১৪]

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ক গবেষণা

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন এর উপর বৈজ্ঞানিক গবেষণা সাধারণত শুরু হয় মানুষ, বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাবের বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই প্রভাবগুলো জীবন, জীবিকা, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা, বাস্তুতন্ত্র ও প্রজাতি, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং অবকাঠামোর উপর এর প্রভাবগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।[১৫] :২২৩৫ এই প্রভাবের মধ্যে থাকতে পারে কৃষি উৎপাদনে পরিবর্তন, বন্যা ও খরার পরিমাণ বৃদ্ধি বা প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি (coral reef bleaching)। বর্তমান ও ভবিষ্যতের অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা এবং উপায় বোঝার ক্ষেত্রে এই ধরণের প্রভাবগুলোর বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

২০২২ সাল পর্যন্ত, শিল্প বিপ্লবের আগের তুলনায় বিশ্বব্যাপী উষ্ণতার মাত্রা ১.২° সেলসিয়াস (২.২° ফারেনহাইট) বৃদ্ধি পেয়েছে। শতাব্দীর শেষ নাগাদ এটি ২.৫ থেকে ২.৯° সেলসিয়াস (৪.৫ থেকে ৫.২° ফারেনহাইট) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।[১৬] এর ফলে বৈচিত্র্যময় গৌণ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং মানব সমাজের উপর প্রভাব ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী ক্রমশ উষ্ণ হচ্ছে, আবহাওয়া আরও চরম হচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলো প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী, মানব বসতি এবং সমাজের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।[১৭] মানুষের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ব্যাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী। যদি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না গ্রহণ করি, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে জলবায়ু সংকট হিসাবে বর্ণনা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে রয়েছে চরম আবহাওয়ার ঘটনার ধরন বা ভিন্নতার পরিবর্তন। এখানে গড় অবস্থার পরিবর্তনের চেয়ে চরম ঘটনাগুলোর পরিবর্তনই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।[১৮] উদাহরণস্বরূপ, কোনো বন্দরে সাধারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এত গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঝড়ের সময় সমুদ্রতলের উচ্চতা। কারণ, ঝড়ের কারণেই বন্যা দেখা দেয়। আবার, কোনো এলাকায় গড় বৃষ্টিপাত কতটুকু তা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ হলো খরা বা অতিবৃষ্টির মতো ঘটনা কতবার ও কত তীব্রভাবে ঘটছে।[১৯]

বিপর্যয়ের ঝুঁকি, প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তুতি

জলবায়ু পরিবর্তন বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়াকে বিপর্যয় ঝুঁকি কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন।[২০] একইভাবে, বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনা টেকসই উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনার একই রকম লক্ষ্য রয়েছে - বিপদের সম্ভাব্য প্রভাব কমিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা। উভয় পন্থা একই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং একই ধরনের গবেষণা দ্বারা সমর্থিত।[২১]

বিপর্যয় সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ঘটে। আগুন বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো নিজেরাই বিপর্যয় নয়। বরং, যখন এগুলো মানুষের উপর প্রভাব ফেলে বা মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে ঘটে তখনই এগুলো বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। বলা হয় যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় সবসময় মানুষের কর্মকাণ্ড বা নিষ্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত থাকে অথবা মানুষের সৃষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে। বিপর্যয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ঝুঁকি বৃদ্ধির মূলে থাকা দুর্বলতাগুলো ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ঝুঁকি সর্বত্র বিরাট প্রভাব ফেলছে।[২২] বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ার ঘটনা এবং বিপর্যয়ের ঘন ঘনতা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে প্রস্তুতি বৃদ্ধি এবং বিপর্যয় মোকাবেলার ক্ষমতা উন্নত করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

তথ্যসূত্র

  1. IPCC, 2022: Annex II: Glossary [Möller, V., R. van Diemen, J.B.R. Matthews, C. Méndez, S. Semenov, J.S. Fuglestvedt, A. Reisinger (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2897–2930, ডিওআই:10.1017/9781009325844.029
  2. IPCC, 2022: Annex II: Glossary [Möller, V., R. van Diemen, J.B.R. Matthews, C. Méndez, S. Semenov, J.S. Fuglestvedt, A. Reisinger (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2897–2930, ডিওআই:10.1017/9781009325844.029
  3. O'Neill, B., M. van Aalst, Z. Zaiton Ibrahim, L. Berrang Ford, S. Bhadwal, H. Buhaug, D. Diaz, K. Frieler, M. Garschagen, A. Magnan, G. Midgley, A. Mirzabaev, A. Thomas, and R.Warren, 2022: Chapter 16: Key Risks Across Sectors and Regions. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2411–2538, ডিওআই:10.1017/9781009325844.025
  4. Kasotia, Paritosh (২০০৭)। "The Health Effects Of Global Warming: Developing Countries Are The Most Vulnerable"United Nations (ইংরেজি ভাষায়)। 
  5. "Unprecedented Impacts of Climate Change Disproportionately Burdening Developing Countries, Delegate Stresses, as Second Committee Concludes General Debate"United Nations। ৮ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১২ 
  6. Sarkodie, Samuel Asumadu; Ahmed, Maruf Yakubu; Owusu, Phebe Asantewaa (২০২২-০৪-০৫)। "Global adaptation readiness and income mitigate sectoral climate change vulnerabilities"। Humanities and Social Sciences Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 9 (1): 1–17। hdl:11250/2999578অবাধে প্রবেশযোগ্যআইএসএসএন 2662-9992এসটুসিআইডি 247956525 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1057/s41599-022-01130-7অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  7. UNEP (২০২১-০১-০৯)। "Adaptation Gap Report 2020"UNEP – UN Environment Programme (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৬ 
  8. IPCC, 2022: Summary for Policymakers [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, M. Tignor, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 3–33, ডিওআই:10.1017/9781009325844.001
  9. Ara Begum, R., R. Lempert, E. Ali, T.A. Benjaminsen, T. Bernauer, W. Cramer, X. Cui, K. Mach, G. Nagy, N.C. Stenseth, R. Sukumar, and P. Wester, 2022: Chapter 1: Point of Departure and Key Concepts. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 121–196, ডিওআই:10.1017/9781009325844.003
  10. IPCC, 2022: Summary for Policymakers [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, M. Tignor, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 3–33, ডিওআই:10.1017/9781009325844.001
  11. IPCC, 2022: Summary for Policymakers [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, M. Tignor, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 3–33, ডিওআই:10.1017/9781009325844.001
  12. Noble, I.R., S. Huq, Y.A. Anokhin, J. Carmin, D. Goudou, F.P. Lansigan, B. Osman-Elasha, and A. Villamizar, 2014: "Chapter 14: Adaptation needs and options". In: Climate Change 2014: Impacts, Adaptation, and Vulnerability. Part A: Global and Sectoral Aspects. Contribution of Working Group II to the Fifth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Field, C.B., V.R. Barros, D.J. Dokken, K.J. Mach, M.D. Mastrandrea, T.E. Bilir, M. Chatterjee, K.L. Ebi, Y.O. Estrada, R.C. Genova, B. Girma, E.S. Kissel, A.N. Levy, S. MacCracken, P.R. Mastrandrea, and L.L.White (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 833–868.
  13. Ara Begum, R., R. Lempert, E. Ali, T.A. Benjaminsen, T. Bernauer, W. Cramer, X. Cui, K. Mach, G. Nagy, N.C. Stenseth, R. Sukumar, and P. Wester, 2022: Chapter 1: Point of Departure and Key Concepts. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 121–196, ডিওআই:10.1017/9781009325844.003
  14. Klein, R.J.T., Adams, K.M., Dzebo, A., and Siebert, C.K. (2017). Advancing climate adaptation practices and solutions: emerging research priorities. SEI Working Paper 2017-07. Stockholm, Sweden.
  15. IPCC, 2021: Annex VII: Glossary [Matthews, J.B.R., V. Möller, R. van Diemen, J.S. Fuglestvedt, V. Masson-Delmotte, C.  Méndez, S. Semenov, A. Reisinger (eds.)]. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 2215–2256, ডিওআই:10.1017/9781009157896.022
  16. "Temperatures"climateactiontracker (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৩ 
  17. "Effects of climate change"Met Office (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২৩ 
  18. "Climate Change 2001: Impacts, Adaptation and Vulnerability"। Grida.no। ৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০ 
  19. "Climate change impacts | National Oceanic and Atmospheric Administration"noaa Government। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৮ 
  20. Kelman, Ilan; Gaillard, J C; Mercer, Jessica (মার্চ ২০১৫)। "Climate Change's Role in Disaster Risk Reduction's Future: Beyond Vulnerability and Resilience"। International Journal of Disaster Risk Science (ইংরেজি ভাষায়)। 6 (1): 21–27। আইএসএসএন 2095-0055ডিওআই:10.1007/s13753-015-0038-5অবাধে প্রবেশযোগ্যবিবকোড:2015IJDRS...6...21K 
  21. "Managing the Risks of Extreme Events and Disasters to Advance Climate Change Adaptation — IPCC"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৬ 
  22. Global Assessment Report on Disaster Risk Reduction 2022. Our world at risk transforming governance for a resilient future। Geneva: United Nations Office for Disaster Risk Reduction। ২০২২। আইএসবিএন 978-92-1-232028-1ওসিএলসি 1337569431