জিয়া গোকাল্প: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Mehedi Abedin (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা |
Mehedi Abedin (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা |
||
৪১ নং লাইন: | ৪১ নং লাইন: | ||
১৮৯৫ সালের গোড়ার দিকে গোকাল্প তার বস্তুবাদের আবিষ্কারের কারণে সৃষ্ট একটি অস্তিত্ব সংকটের পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।{{Sfn|Kieser|2018}} ডাক্তার জেভদেত তাকে উদ্ধার করেন, এর জন্য তিনি পরবর্তীতে আফসোস করেন কেননা গোকাল্প একজন তুর্কি মতাদর্শী হয়ে ওঠেন।<ref name=":1"/> দিয়ারবাকেরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি ১৮৯৫ সালে ইস্তাম্বুলে বসতি স্থাপন করেন।<ref>Joost Jongerden (2012), p.68</ref> সেখানে, তিনি [[পশুচিকিৎসক বিদ্যালয়|পশুচিকিৎসক বিদ্যালয়ে]] পড়াশোনা করেন ও গুপ্ত বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িত হন<ref name=":1" /> যার জন্য তিনি দশ মাস কারাভোগ করেন।<ref name="Parla12">Parla, Taha. ''The Social and Political Thought of Ziya Gokalp''. 1980, page 12.</ref> এই সময়ের মধ্যে তিনি গুপ্ত বিপ্লবী অনেক ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন, নিজের পশুচিকিৎসা অধ্যয়ন ত্যাগ করেন এবং গুপ্ত বিপ্লবী দল [[ঐক্য ও প্রগতি সমিতি]]র (সিইউপি) সদস্য হন।<ref name="Parla12" /> |
১৮৯৫ সালের গোড়ার দিকে গোকাল্প তার বস্তুবাদের আবিষ্কারের কারণে সৃষ্ট একটি অস্তিত্ব সংকটের পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।{{Sfn|Kieser|2018}} ডাক্তার জেভদেত তাকে উদ্ধার করেন, এর জন্য তিনি পরবর্তীতে আফসোস করেন কেননা গোকাল্প একজন তুর্কি মতাদর্শী হয়ে ওঠেন।<ref name=":1"/> দিয়ারবাকেরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি ১৮৯৫ সালে ইস্তাম্বুলে বসতি স্থাপন করেন।<ref>Joost Jongerden (2012), p.68</ref> সেখানে, তিনি [[পশুচিকিৎসক বিদ্যালয়|পশুচিকিৎসক বিদ্যালয়ে]] পড়াশোনা করেন ও গুপ্ত বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িত হন<ref name=":1" /> যার জন্য তিনি দশ মাস কারাভোগ করেন।<ref name="Parla12">Parla, Taha. ''The Social and Political Thought of Ziya Gokalp''. 1980, page 12.</ref> এই সময়ের মধ্যে তিনি গুপ্ত বিপ্লবী অনেক ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন, নিজের পশুচিকিৎসা অধ্যয়ন ত্যাগ করেন এবং গুপ্ত বিপ্লবী দল [[ঐক্য ও প্রগতি সমিতি]]র (সিইউপি) সদস্য হন।<ref name="Parla12" /> |
||
== কর্মজীবন == |
|||
[[কনস্টান্টিনোপল|কনস্টান্টিনোপলের]] তৎকালীন বিপ্লবী স্রোত অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় ছিলো; [[দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ|দ্বিতীয় আবদুল হামিদের]] শাসনের কুখ্যাতি সেই সময়ের মধ্যে কনস্টান্টিনোপলে বৈচিত্র্যময় বিপ্লবী অনুভূতি জাগ্রত করে। তিনি ১৯০৮ সালের জুলাই মাসে দিয়ারবাকেরে প্রথম সিইউপি দপ্তর উদ্বোধন করেন।<ref name=":02222">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Social Relations in Ottoman Diyarbekir, 1870-1915|শেষাংশ=Üngör|প্রথমাংশ=Uğur Ümit|বছর=2012|প্রকাশক=Brill|পাতাসমূহ=272|আইএসবিএন=9789004225183}}</ref> ১৯০৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি [[থেসালোনিকি]]তে চলে যান, সেখানে তিনি ১৯১০ সালে সিইউপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সেখানে তিনি ''[[জেঞ্জ কালেমের]]'' নামক একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পত্রিকার সহ-প্রতিষ্ঠা ছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://doi.org/10.1057/9780230277397_3|শিরোনাম=Turkey's Engagement with Modernity|শেষাংশ=Murat Belge|তারিখ=2010|প্রকাশক=Palgrave Macmillan|পাতাসমূহ=27–37|অধ্যায়=Genç Kalemler and Turkish Nationalism|doi=10.1057/9780230277397_3|আইএসবিএন=978-1-349-31326-6}}</ref> থেসালোনিকিতে বসবাস করার সময় [[তালাত পাশা]] প্রায়শই তার বাড়িতে অতিথি হতেন, সেখানে তারা রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতেন। সেলানিকে থাকার সময়ই তিনি গোকাল্প নামটি ব্যবহার করতে শুরু করেন ও সিইউপিতে তার ভবিষ্যত ভূমিকা নির্ধারণ করা হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=hhtEDwAAQBAJ&pg=PR11|শিরোনাম=Talaat Pasha: Father of Modern Turkey, Architect of Genocide|শেষাংশ=Kieser|প্রথমাংশ=Hans-Lukas|তারিখ=26 June 2018|প্রকাশক=Princeton University Press|পাতাসমূহ=98–99|আইএসবিএন=978-1-4008-8963-1}}</ref> ১৯১২ সালে তিনি সিইউপির সাথে কনস্টান্টিনোপলে ফিরে আসেন।<ref>Kieser, Hans-Lukas (2018), p.99</ref> ১৯১৫ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে গোকাল্প সামরিক গবেষণাপত্র ''[[হার্প মেজমুয়াসার]]''-এর নিয়মিত অবদানকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Eyal Ginio|তারিখ=Fall 2005|শিরোনাম=Presenting the Desert to the Ottomans During WWI: The Perspective of the Harb Mecmuası|পাতাসমূহ=48–50|doi=10.1017/S0896634600004234}}</ref> |
|||
[[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধের]] পর, ঐক্য ও প্রগতি সমিতির সাথে জড়িত থাকার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়<ref name="chalk">Chalk, Frank and Jonassohn, Kurt. ''The History and Sociology of Genocide: Analyses and Case Studies''. page 249</ref> এবং ১৯১৯ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য [[মাল্টা নির্বাসন|মাল্টায় নির্বাসিত করা হয়]]।<ref>Jongerden (2012), p.72</ref> |
|||
মাল্টায় নির্বাসিত থাকাকালীন তিনি নিজের ধারণাগুলো লিখতে ও একত্রিত করতে থাকেন এবং ১৯২৩ সালে প্রকাশিত তার ''তুর্কিবাদের নীতি''-এর পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। তিনি ১৯২১ সালের বসন্তে তুরস্কে ফিরে আসেন, কিন্তু ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার আসন ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তিনি তার নিজ শহর দিয়ারবাকেরে বসতি স্থাপন করেন যেখানে তিনি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং শিক্ষকের সেমিনারিতে সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞান পড়ান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=63weAAAAIAAJ&q=Ali&pg=PA16|শিরোনাম=The Social and Political Thought of Ziya Gökalp: 1876-1924|শেষাংশ=Parla|প্রথমাংশ=Taha|তারিখ=1 January 1985|আইএসবিএন=978-9004072299}}</ref> তিনি একটি ছোট সাপ্তাহিক পত্রিকা ''কুচুক মেজমুয়া'' প্রকাশ করতে শুরু করেন, এটি ধীরে ধীরে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে এবং ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার প্রধান দৈনিক সংবাদপত্রগুলোয় অবদানের দিকে পরিচালিত করে। ১৯২২ সালের শেষের দিকে, গোকাল্পকে [[জাতীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়|শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের]] প্রকাশনা ও অনুবাদ বিভাগ পরিচালনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি ১৯২৪ সালে আমৃত্যু পর্যন্ত তুরস্কের [[তুরস্কের মহান জাতীয় সভা|মহান জাতীয় সভার]] সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্বাচিত হন ও শিক্ষা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন,<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Between Two Empires: Ahmet Agaoglu and the New Turkey|শেষাংশ=Shissler|প্রথমাংশ=Ada Holland|তারিখ=2003|প্রকাশক=I.B.Tauris|পাতাসমূহ=23|ভাষা=en|আইএসবিএন=186064855X}}</ref> এটি তার নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয় ব্যবস্থা, পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করে। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে প্রদত্ত শিক্ষার মধ্যে [[সর্ব তুর্কিবাদ|তুর্কিবাদ]], আধুনিকতাবাদ ও [[ইসলামবাদ]] অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তুর্কি সংস্কৃতি ও ভাষার পাশাপাশি তিনি পাঠ্যসূচিতে ফার্সি ও আরবি ভাষা, [[কুরআন]] ও গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং কিছু ইউরোপীয় ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে কথা বলেন।<ref name=":0">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=WvqDzoUmjvgC&dq=%C3%9Cng%C3%B6r%2C+U%C4%9Fur+%C3%9Cmit+%282012%29.+The+Making+of+Modern+Turkey%3A+Nation+and+State+in+Eastern+Anatolia%2C+1913-1950.+Oxford+University+Press.+ISBN+978-0-19-965522-9.&pg=PR4|শিরোনাম=The Making of Modern Turkey: Nation and State in Eastern Anatolia, 1913-1950|শেষাংশ=Üngör|প্রথমাংশ=Ugur Ümit|তারিখ=March 2012|প্রকাশক=OUP Oxford|পাতাসমূহ=172|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-0-19-965522-9}}</ref> উপরন্তু, তিনি [[১৯২৪-এর তুর্কি সংবিধান|১৯২৪ সালের সংবিধানের]] খসড়া তৈরিতে অংশগ্রহণ করেন। |
|||
জিয়া গোকাল্প স্থাবর সম্পত্তির মালিক ছিলেন যার মধ্যে দিয়ারবাকিরের উত্তর-পূর্বে ৫টি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত ছিলো।<ref>Joost Jongerden (2012), p.69</ref> |
|||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
০৩:২৭, ৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
মেহমেত জিয়া গোকাল্প | |
---|---|
Mehmet Ziya Gökalp | |
![]() | |
জন্ম | মেহমেত জিয়া ২৩ মার্চ ১৮৭৬ |
মৃত্যু | ২৫ অক্টোবর ১৯২৪ ইস্তাম্বুল, তুরস্ক | (বয়স ৪৮)
সমাধি | চ্যাম্বেরলিতাশ, ফাতিহ, ইস্তাম্বুল |
শিক্ষা | পশুচিকিৎসা বিদ্যালয় |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | ইবনে আরাবী, এমিল দ্যুর্কেম, নামোক কেমাল |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | ব্রাঙ্কো মেরজানি, সাতি আল হাসরি, মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক |
মেহমেত জিয়া গোকাল্প (২৩ মার্চ ১৮৭৬ – ২৫ অক্টোবর ১৯২৪) ছিলেন একজন তুর্কি সমাজবিজ্ঞানী, লেখক, কবি ও রাজনীতিবিদ। ১৯০৮ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যে সাংবিধানিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারী তরুণ তুর্কি বিপ্লবের পরে তিনি গোকাল্প ("স্বর্গীয় বীর") নামটি গ্রহণ করেছিলেন, যা তিনি আমৃত্যু ব্যবহার করেছিলেন। একজন সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে জিয়া গোকাল্প মতাদর্শিক, সাংস্কৃতিক ও সমাজতাত্ত্বিক শনাক্তকারী হিসেবে ইসলামবাদ, সর্ব-ইসলামবাদ ও উসমানীয়বাদকে অস্বীকার করার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ছিলেন। ১৯৩৬ সালের একটি প্রকাশনায়, গোকাল্পকে সমাজবিজ্ঞানী নিয়াজি বার্কেস "বিদেশী সমাজবিজ্ঞানের একজন অনুবাদক বা দোভাষী না হওয়ায় তুর্কি সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা" হিসেবে বর্ণনা করেন।[১]
গোকাল্পের সৃষ্টিকর্ম মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের সংস্কার গঠনে বিশেষভাবে প্রভাবশালী ছিলো; কামালবাদের বিকাশে ও আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্রে এর উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে তার প্রভাব বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।[২] সমসাময়িক ইউরোপীয় চিন্তাধারা বিশেষত এমিল দ্যুর্কেমের সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে[৩] গোকাল্প তুর্কি জাতীয়তাবাদের পক্ষ হয়ে উসমানীয়বাদ ও ইসলামবাদ উভয়কেই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।[৪] তিনি সকল উসমানীয় নাগরিকদের কাছে তুর্কি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার করে উসমানীয় সাম্রাজ্যের তুর্কিকরণের পক্ষে ছিলেন। জাতীয়তাবাদী তুর্কি রাষ্ট্রে তিনি গ্রিক, আর্মেনীয় ও ইহুদিদের একটি বিদেশী উপাদান বলে মনে করতেন।[৫] সর্ব-তুর্কিবাদ ও তুরানবাদকে জনপ্রিয় করা তার চিন্তাধারাকে "জাতীয়তাবাদ ও আধুনিকীকরণের ধর্ম" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৬] তার জাতীয়তাবাদী আদর্শ উসমানীয় তুরস্কের নিকটবর্তী আরব প্রতিবেশীদের সাথে একটি অতি-জাতীয় তুর্কি (বা সর্ব-তুর্কি) পরিচয়ের পরিবর্তে "একটি আঞ্চলিক উত্তর-পূর্ব-মুখীকরণ [তুর্কি জনগণের জন্য]"-এর থেকে পরিচয় মুক্ত করে।[৭]
প্রারম্ভিক জীবন
মেহমেত জিয়া ২৩ মার্চ ১৮৭৬ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের দিয়ারবাকেরে মুহাম্মাদ তেফভিক বে ও জেলিহা হানমের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পরিবারের দ্বিতীয় পুত্র।[৮] কিছু সূত্র অনুযায়ী তিনি, বিশেষত তার মাতৃকুল[৯] কুর্দি বংশোদ্ভূত ছিলো।[১০][১১][১২] জিয়া তার পৈতৃক পরিবারকে সিরীয় তুর্কমেন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।[৯][১৩] তার পিতা একজন উসমানীয় আমলা ও দিয়ারবাকেরে সালনামে প্রকাশের জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন।[৮] নিজের চাচার সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো, তিনি জিয়াকে তার মেয়েকে বিয়ে হতে দেখতে পছন্দ করতেন।[৮] তার চাচা ধার্মিক ছিলেন ও নাস্তিক আবদুল্লাহ জেভদেতের সাথে জিয়ার সম্পর্কের বিরোধী ছিলেন।[৮] দিয়ারবাকের ছিলো ১৬শ শতাব্দী পর্যন্ত আরব ও পারস্যদের দ্বারা শাসিত একটি "সাংস্কৃতিক সীমান্ত" এবং তুর্কি, কুর্দি ও আর্মেনীয়দের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে "বিরোধপূর্ণ জাতীয় ঐতিহ্য" বৈশিষ্ট্যযুক্ত ছিলো।[১৪] এই সাংস্কৃতিক পরিবেশ প্রায়ই তার জাতীয় পরিচয়বোধকে অবহিত করা হয়েছে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়; তার জীবনের পরবর্তী সময়ে যখন রাজনৈতিক বিরোধিতাকারীরা অভিযোগ দিয়েছিলেন যে তিনি কুর্দি থেকে এসেছেন তখন গোকাল্প প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিলেন যে তিনি পিতৃতান্ত্রিক তুর্কি জাতিগত ঐতিহ্য সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন, এটি তুচ্ছ ছিলো: "আমি আমার সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে শিখেছি যে জাতীয়তা শুধুমাত্র লালন-পালনের উপর ভিত্তি করে।"[১৪]
১৮৯৫ সালের গোড়ার দিকে গোকাল্প তার বস্তুবাদের আবিষ্কারের কারণে সৃষ্ট একটি অস্তিত্ব সংকটের পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।[১৫] ডাক্তার জেভদেত তাকে উদ্ধার করেন, এর জন্য তিনি পরবর্তীতে আফসোস করেন কেননা গোকাল্প একজন তুর্কি মতাদর্শী হয়ে ওঠেন।[৮] দিয়ারবাকেরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি ১৮৯৫ সালে ইস্তাম্বুলে বসতি স্থাপন করেন।[১৬] সেখানে, তিনি পশুচিকিৎসক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ও গুপ্ত বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িত হন[৮] যার জন্য তিনি দশ মাস কারাভোগ করেন।[১৭] এই সময়ের মধ্যে তিনি গুপ্ত বিপ্লবী অনেক ব্যক্তিত্বের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন, নিজের পশুচিকিৎসা অধ্যয়ন ত্যাগ করেন এবং গুপ্ত বিপ্লবী দল ঐক্য ও প্রগতি সমিতির (সিইউপি) সদস্য হন।[১৭]
কর্মজীবন
কনস্টান্টিনোপলের তৎকালীন বিপ্লবী স্রোত অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় ছিলো; দ্বিতীয় আবদুল হামিদের শাসনের কুখ্যাতি সেই সময়ের মধ্যে কনস্টান্টিনোপলে বৈচিত্র্যময় বিপ্লবী অনুভূতি জাগ্রত করে। তিনি ১৯০৮ সালের জুলাই মাসে দিয়ারবাকেরে প্রথম সিইউপি দপ্তর উদ্বোধন করেন।[১৮] ১৯০৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি থেসালোনিকিতে চলে যান, সেখানে তিনি ১৯১০ সালে সিইউপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। সেখানে তিনি জেঞ্জ কালেমের নামক একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পত্রিকার সহ-প্রতিষ্ঠা ছিলেন।[১৯] থেসালোনিকিতে বসবাস করার সময় তালাত পাশা প্রায়শই তার বাড়িতে অতিথি হতেন, সেখানে তারা রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতেন। সেলানিকে থাকার সময়ই তিনি গোকাল্প নামটি ব্যবহার করতে শুরু করেন ও সিইউপিতে তার ভবিষ্যত ভূমিকা নির্ধারণ করা হয়।[২০] ১৯১২ সালে তিনি সিইউপির সাথে কনস্টান্টিনোপলে ফিরে আসেন।[২১] ১৯১৫ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে গোকাল্প সামরিক গবেষণাপত্র হার্প মেজমুয়াসার-এর নিয়মিত অবদানকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।[২২]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, ঐক্য ও প্রগতি সমিতির সাথে জড়িত থাকার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়[২৩] এবং ১৯১৯ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য মাল্টায় নির্বাসিত করা হয়।[২৪]
মাল্টায় নির্বাসিত থাকাকালীন তিনি নিজের ধারণাগুলো লিখতে ও একত্রিত করতে থাকেন এবং ১৯২৩ সালে প্রকাশিত তার তুর্কিবাদের নীতি-এর পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। তিনি ১৯২১ সালের বসন্তে তুরস্কে ফিরে আসেন, কিন্তু ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার আসন ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তিনি তার নিজ শহর দিয়ারবাকেরে বসতি স্থাপন করেন যেখানে তিনি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং শিক্ষকের সেমিনারিতে সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞান পড়ান।[২৫] তিনি একটি ছোট সাপ্তাহিক পত্রিকা কুচুক মেজমুয়া প্রকাশ করতে শুরু করেন, এটি ধীরে ধীরে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে এবং ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার প্রধান দৈনিক সংবাদপত্রগুলোয় অবদানের দিকে পরিচালিত করে। ১৯২২ সালের শেষের দিকে, গোকাল্পকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশনা ও অনুবাদ বিভাগ পরিচালনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি ১৯২৪ সালে আমৃত্যু পর্যন্ত তুরস্কের মহান জাতীয় সভার সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্বাচিত হন ও শিক্ষা কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন,[২৬] এটি তার নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয় ব্যবস্থা, পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করে। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে প্রদত্ত শিক্ষার মধ্যে তুর্কিবাদ, আধুনিকতাবাদ ও ইসলামবাদ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তুর্কি সংস্কৃতি ও ভাষার পাশাপাশি তিনি পাঠ্যসূচিতে ফার্সি ও আরবি ভাষা, কুরআন ও গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং কিছু ইউরোপীয় ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে কথা বলেন।[২৭] উপরন্তু, তিনি ১৯২৪ সালের সংবিধানের খসড়া তৈরিতে অংশগ্রহণ করেন।
জিয়া গোকাল্প স্থাবর সম্পত্তির মালিক ছিলেন যার মধ্যে দিয়ারবাকিরের উত্তর-পূর্বে ৫টি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত ছিলো।[২৮]
তথ্যসূত্র
- ↑ Berkes, Niyazi (১৯৩৬)। "Sociology in Turkey": 238–246। জেস্টোর 2768789। ডিওআই:10.1086/217392।
- ↑ Parla, Taha. (1980) The Social and Political Thought of Ziya Gokalp. Leiden: E.J. Brill, p.7, আইএসবিএন ৯৭৮-৯০-০৪-৪৯১৬৩-২.
- ↑ Türkay Salim Nefes (মে ২০১৩)। "Ziya Gökalp's adaptation of Emile Durkheim's sociology in his formulation of the modern Turkish nation": 335–350। ডিওআই:10.1177/0268580913479811।
- ↑ Moaddel, Mansoor. (2005). Islamic Modernism, Nationalism, and Fundamentalism. Episode and Discourse. Chicago, Il: University of Chicago Press, p.157, আইএসবিএন ৯৭৮-০-২২৬-৫৩৩৩৩-৯.
- ↑ Kiernan, Ben (২০০৭)। Blood and Soil: A World History of Genocide and Extermination from Sparta to Darfur। Yale University Press। পৃষ্ঠা 402। আইএসবিএন 978-0-300-10098-3।
- ↑ Erickson, Edward J. (2001). Ordered to Die: A History of the Ottoman Army in the First World War. Greenwood Press, Westport, CT, p.97, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩১৩-৩১৫১৬-৯
- ↑ Mihran Dabag (২০০৫)। "Modern societies and collective violent: The framework of interdisciplinary genocide studies"। Genocide: Approaches, Case Studies, and Responses। Algora Publishing। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 978-0-87586-379-5।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Uzer, Umut (২০১৬)। An Intellectual History of Turkish Nationalism: Between Turkish Ethnicity and Islamic Identity (ইংরেজি ভাষায়)। University of Utah Press। পৃষ্ঠা 63–66। আইএসবিএন 978-1-60781-465-8।
- ↑ ক খ Parla, Taha (১৯৮৫-০১-০১)। The Social and Political Thought of Ziya Gökalp: 1876-1924 (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-07229-9।
- ↑ Uzer, Umut (2013). "The Kurdish Identity of Turkish Nationalist Thinkers: Ziya Gökalp and Ahmet Arvasi between Turkish Identity and Kurdish Ethnicity" (PDF) 14(2): 394–409.
- ↑ Naci Kutay, İttihat Terakki ve Kürtler, Koral Yayınevi, 1991, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৭৫-৮২৪৫-৬৯-৭, p. 38.
- ↑ Sabine Adatepe, "Das osmanische Muster“: Das frühe Ideal des M. Ziya' (Gökalp) anhand ausgewählter Artikel in der Wochenschrift Peyman" in Hendrik Fenz, Strukturelle Zwänge- persönliche Freiheiten: Osmanen, Türken, Muslime: Reflexionen zu gesellschaftlichen Umbrüchen. Gedenkband zu ehren Petra Kapperts, Walter de Gruyter, 2009, আইএসবিএন ৯৭৮-৩-১১-০২০০৫৫-৩, p. 31.
- ↑ Kirisci, Kemal; Winrow, Gareth M. (২০১৩-১১-০৫)। The Kurdish Question and Turkey: An Example of a Trans-state Ethnic Conflict (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-1-135-21770-9।
- ↑ ক খ Parla, Taha. The Social and Political Thought of Ziya Gökalp. 1980, p10.
- ↑ Kieser 2018।
- ↑ Joost Jongerden (2012), p.68
- ↑ ক খ Parla, Taha. The Social and Political Thought of Ziya Gokalp. 1980, page 12.
- ↑ Üngör, Uğur Ümit (২০১২)। Social Relations in Ottoman Diyarbekir, 1870-1915। Brill। পৃষ্ঠা 272। আইএসবিএন 9789004225183।
- ↑ Murat Belge (২০১০)। "Genç Kalemler and Turkish Nationalism"। Turkey's Engagement with Modernity। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 27–37। আইএসবিএন 978-1-349-31326-6। ডিওআই:10.1057/9780230277397_3।
- ↑ Kieser, Hans-Lukas (২৬ জুন ২০১৮)। Talaat Pasha: Father of Modern Turkey, Architect of Genocide। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 98–99। আইএসবিএন 978-1-4008-8963-1।
- ↑ Kieser, Hans-Lukas (2018), p.99
- ↑ Eyal Ginio (Fall ২০০৫)। "Presenting the Desert to the Ottomans During WWI: The Perspective of the Harb Mecmuası": 48–50। ডিওআই:10.1017/S0896634600004234।
- ↑ Chalk, Frank and Jonassohn, Kurt. The History and Sociology of Genocide: Analyses and Case Studies. page 249
- ↑ Jongerden (2012), p.72
- ↑ Parla, Taha (১ জানুয়ারি ১৯৮৫)। The Social and Political Thought of Ziya Gökalp: 1876-1924। আইএসবিএন 978-9004072299।
- ↑ Shissler, Ada Holland (২০০৩)। Between Two Empires: Ahmet Agaoglu and the New Turkey (ইংরেজি ভাষায়)। I.B.Tauris। পৃষ্ঠা 23। আইএসবিএন 186064855X।
- ↑ Üngör, Ugur Ümit (মার্চ ২০১২)। The Making of Modern Turkey: Nation and State in Eastern Anatolia, 1913-1950 (ইংরেজি ভাষায়)। OUP Oxford। পৃষ্ঠা 172। আইএসবিএন 978-0-19-965522-9।
- ↑ Joost Jongerden (2012), p.69
আরও পড়ুন
- Taha Parla: The social and political thought of Ziya Gökalp : 1876 – 1924. Leiden 1985
- Mihran Dabag: Jungtürkische Visionen und der Völkermord an den Armeniern, in: Dabag / Platt: Genozid und Moderne (Band 1), Opladen 1998. আইএসবিএন ৩-৮১০০-১৮২২-৮
- Katy Schröder: Die Türkei im Schatten des Nationalismus. Hamburg, 2003, আইএসবিএন ৩-৮৩১১-৪২৬৬-১, S. 50–54
- Alexander Safarian: Ziya Gökalp on National Education, "Iran and the Caucasus", vol.8.2, Brill, Leiden - Boston, 2004, pp. 219–229.