ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
+ 10টি বিষয়শ্রেণী হটক্যাটের মাধ্যমে |
জীববৈচিত্র্য - অনুচ্ছেদ |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{Infobox protected area |
{{Infobox protected area |
||
| name = |
| name = ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান |
||
| alt_name = |
| alt_name = |
||
| iucn_category = II |
| iucn_category = II |
||
| photo = |
| photo = Atticora fasciata -Rio Tiputini, Yasuni National Park, Ecuador-8.jpg |
||
| photo_alt = |
| photo_alt = |
||
| photo_caption = |
| photo_caption = |
||
| photo_width = |
| photo_width = |
||
| map = Localización de Yasuní en Ecuador.svg |
| map = Localización de Yasuní en Ecuador.svg |
||
| map_alt = |
| map_alt = |
||
| map_caption = |
| map_caption = ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান (ঘন সবুজ) |
||
| map_width = |
| map_width = |
||
| location = {{ECU}}<br /> [[Napo Province| |
| location = {{ECU}}<br /> [[Napo Province|নাপো]] ও [[Pastaza Province|পাস্তাজা প্রদেশ]] |
||
| nearest_city = |
| nearest_city = |
||
| lat_d = 1 |
| lat_d = 1 |
||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| coords_ref = |
| coords_ref = |
||
| region = EC |
| region = EC |
||
| area = |
| area = ৯৮২৩ বর্গকিলোমিটার |
||
| established = |
| established = ২৬ জুলাই, ১৯৭৯ |
||
| visitation_num = |
| visitation_num = |
||
| visitation_year = |
| visitation_year = |
||
৩২ নং লাইন: | ৩২ নং লাইন: | ||
| url = |
| url = |
||
}} |
}} |
||
__NOTOC__ |
|||
[[File:Atticora fasciata -Rio Tiputini, Yasuni National Park, Ecuador-8.jpg|thumb|[[White-banded swallow]]s perching of a tree stump on the bank of Rio Tiputini, Yasuni National Park]] |
|||
'''ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান''' ({{Lang-es|Parque Nacional Yasuní}}) ইকুয়েডরে অবস্থিত।<ref name=nyt>{{cite web|url=http://dotearth.blogs.nytimes.com/2010/01/20/a-durable-yet-vulnerable-eden-in-amazonia/?_r=0|title= |
'''ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান''' ({{Lang-es|Parque Nacional Yasuní}}) [[ইকুয়েডর|ইকুয়েডরে]] অবস্থিত।<ref name=nyt>{{cite web|url=http://dotearth.blogs.nytimes.com/2010/01/20/a-durable-yet-vulnerable-eden-in-amazonia/?_r=0|title= |
||
A Durable Yet Vulnerable Eden in Amazonia|work=nytimes.com|accessdate=4 March 2015}}</ref> [[Amazon basin|আমাজনীয়]] ইকুয়েডরের [[Napo Province|নাপো]] ও [[Pastaza Province|পাস্তাজা প্রদেশের]] [[Napo River|নাপো]] ও [[Curaray River|কুরারে নদীর]] মধ্যবর্তী এলাকায় এর অবস্থান। এ উদ্যানের আয়তন প্রায় ৯,৮২০ বর্গকিলোমিটার। মূলতঃ [[ |
A Durable Yet Vulnerable Eden in Amazonia|work=nytimes.com|accessdate=4 March 2015}}</ref> [[Amazon basin|আমাজনীয়]] ইকুয়েডরের [[Napo Province|নাপো]] ও [[Pastaza Province|পাস্তাজা প্রদেশের]] [[Napo River|নাপো]] ও [[Curaray River|কুরারে নদীর]] মধ্যবর্তী এলাকায় এর অবস্থান। এ উদ্যানের আয়তন প্রায় ৯,৮২০ বর্গকিলোমিটার। মূলতঃ [[অতিবৃষ্টি অরণ্য|বৃষ্টিবহুল বনাঞ্চলে]] [[জাতীয় উদ্যান|জাতীয় উদ্যানটি]] গড়ে তোলা হয়েছে। রাজধানী [[Quito|কিটো]] থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বে এ উদ্যানটি অবস্থিত। ১৯৮৯ সালে ইউনেস্কো [[Biosphere Reserve|বায়োস্পেফার সংরক্ষণ]] হিসেবে এ উদ্যানকে ঘোষণা করেছে। [[Huaorani|হুয়াওরানি]] আদিবাসী জনগোষ্ঠী এখানে বসবাস করে থাকে। এছাড়াও, [[Tagaeri|তাগেইরি]] ও [[Taromenane|তারোমেনানে]] নামের দু'টি [[uncontacted peoples|জনবিচ্ছিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীরও]] আবাস এখানে।<ref name=AP /> |
||
== জীববৈচিত্র্য == |
|||
নিঃসন্দেহে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা জীববৈচিত্র্যের অধিকারী উদ্যান হিসেবে ইয়াসুনি জাতীয় পার্কের |
নিঃসন্দেহে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা [[biodiversity|জীববৈচিত্র্যের]] অধিকারী উদ্যান হিসেবে ইয়াসুনি জাতীয় পার্কের সুখ্যাতি রয়েছে। উদ্যানটি ছোট্ট অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে গড়ে উঠেছে। উভচর প্রাণী, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, স্বরীসৃপ, বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের বৈচিত্রপূর্ণ সমাহার রয়েছে যা পশ্চিম গোলার্ধের সর্বাধিক বসবাস উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান। ১০০ বর্গ কিলোমিটারের কম এলাকায় স্থানীয় প্রজাতির গাছ, উভচর প্রাণী ও বাদুর প্রজাতির বসবাসে উদ্যানটি [[বিশ্বরেকর্ড]] ভঙ্গ করেছে।<ref name=journal.pone.0008767>{{cite journal |url=http://www.plosone.org/article/info:doi/10.1371/journal.pone.0008767 |title=Global Conservation Significance of Ecuador's Yasuní National Park |author=Margot S. Bass; Matt Finer; Clinton N. Jenkins; Holger Kreft; Diego F. Cisneros-Heredia; Shawn F. McCracken; Nigel C. A. Pitman; Peter H. English; Kelly Swing; Gorky Villa; Anthony Di Fiore; Christian C. Voigt; Thomas H. Kunz |journal=[[Public Library of Science]] |year=2010 |volume=5 |issue=1 |doi=10.1371/journal.pone.0008767 |accessdate=06-07-2011 |editor1-last=Hector |editor1-first=Andy |pages=e8767 }}</ref> এছাড়াও বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ স্থান হিসেবে স্থানীয় প্রজাতিরসহ পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিশাল সম্ভার রয়েছে। |
||
ভূমির অবস্থানে তুলনামূলকভাবে ১৫০ প্রজাতির উভচর প্রাণী বসবাস করছে যা বিশ্বরেকর্ড। অন্যান্য স্থান বিশষতঃ পশ্চিম আমাজনে বসবাসরত উভচর প্রাণীর তুলনায়ও এটি শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। এমনকি সর্বমোট উভচর প্রাণীর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশী। পার্কে অবস্থানরত সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যাও বেশ উচ্চ পর্যায়ের। কাগজপত্রে ১২১ প্রজাতির কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। আমাজন অববাহিকার তুলনায় আয়তনে মাত্র ০.১৫% ভাগ হওয়া স্বত্ত্বেও ইয়াসুনিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উভচর ও সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল। এছাড়াও, উদ্যানের জলাভূমিতে মাছের বৈচিত্রতাও সবিশেষ উল্লেখ্যযোগ্য। পরিচিত ৩৮২ প্রজাতির মাছ রয়েছে এখানে। এই সংখ্যা পুরো মিসিসিপি নদীর অববাহিকা পাওয়া মৎস্য প্রজাতির পরিমাণের চেয়েও অনেক বেশী। ইয়াসুনিতে কমপক্ষে ৫৯৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে যা আমাজনের সাথে তুলনান্তে এক-তৃতীয়াংশ। উদ্যানে অগণিত বাদুর প্রজাতিরও সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। আঞ্চলিক মানদণ্ডে আমাজন অববাহিকায় ১১৭ প্রজাতির বাদুর থাকলেও ইয়াসুনি তুলনামূলকভাবে অধিক সমৃদ্ধ। ইয়াসুনির এক হেক্টর ভূমিতে ১,০০,০০০-এর অধিক বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়ের বাসস্থান। যা খসড়াভাবে উত্তর আমেরিকার সবগুলো মিলিয়ে একই সংখ্যায় দাঁড়াবে। এছাড়াও উদ্যানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পর্যায়ের রক্তচোষা গাছপালা রয়েছে। বিশ্বের নয়টি জায়গার মধ্যে একটি হিসেবে প্রতি ১০,০০০ বর্গকিলোমিটারে ৪,০০০ অধিক রক্তচোষা গাছ বিদ্যমান। উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, ঝোপঝাড় রয়েছে। এরফলে প্রামাণ্য দলিলে উদ্যানটি কমপক্ষে চারটি বিশ্বরেকর্ড ধারণ করে আছে। এছাড়াও, অরণ্যময় উদ্ভিদ প্রজাতিতে পুষ্পলতায় সমৃদ্ধ থাকায় বৈচিত্রতার দিক দিয়েও তিনটি বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী এলাকাটি। উদ্যানে মেরুদণ্ডী প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে। ৪৩টি বিভিন্ন প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণী ও ২২০-৭২০ জাতের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। লফোস্তোমা ইয়াসুনি নামীয় এক প্রজাতির বাদুর উদ্যানে রোগ ছড়ায়। |
ভূমির অবস্থানে তুলনামূলকভাবে ১৫০ প্রজাতির উভচর প্রাণী বসবাস করছে যা বিশ্বরেকর্ড। অন্যান্য স্থান বিশষতঃ পশ্চিম আমাজনে বসবাসরত উভচর প্রাণীর তুলনায়ও এটি শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।<ref name=journal.pone.0008767/> এমনকি সর্বমোট উভচর প্রাণীর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশী। পার্কে অবস্থানরত সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যাও বেশ উচ্চ পর্যায়ের। কাগজপত্রে ১২১ প্রজাতির কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। আমাজন অববাহিকার তুলনায় আয়তনে মাত্র ০.১৫% ভাগ হওয়া স্বত্ত্বেও ইয়াসুনিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উভচর ও সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল। এছাড়াও, উদ্যানের জলাভূমিতে মাছের বৈচিত্রতাও সবিশেষ উল্লেখ্যযোগ্য। পরিচিত ৩৮২ প্রজাতির মাছ রয়েছে এখানে। এই সংখ্যা পুরো মিসিসিপি নদীর অববাহিকা পাওয়া মৎস্য প্রজাতির পরিমাণের চেয়েও অনেক বেশী। ইয়াসুনিতে কমপক্ষে ৫৯৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে যা আমাজনের সাথে তুলনান্তে এক-তৃতীয়াংশ। উদ্যানে অগণিত বাদুর প্রজাতিরও সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। আঞ্চলিক মানদণ্ডে আমাজন অববাহিকায় ১১৭ প্রজাতির বাদুর থাকলেও ইয়াসুনি তুলনামূলকভাবে অধিক সমৃদ্ধ। ইয়াসুনির এক হেক্টর ভূমিতে ১,০০,০০০-এর অধিক বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়ের বাসস্থান। যা খসড়াভাবে উত্তর আমেরিকার সবগুলো মিলিয়ে একই সংখ্যায় দাঁড়াবে। এছাড়াও উদ্যানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পর্যায়ের রক্তচোষা গাছপালা রয়েছে। বিশ্বের নয়টি জায়গার মধ্যে একটি হিসেবে প্রতি ১০,০০০ বর্গকিলোমিটারে ৪,০০০ অধিক রক্তচোষা গাছ বিদ্যমান। উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, ঝোপঝাড় রয়েছে। এরফলে প্রামাণ্য দলিলে উদ্যানটি কমপক্ষে চারটি বিশ্বরেকর্ড ধারণ করে আছে। এছাড়াও, অরণ্যময় উদ্ভিদ প্রজাতিতে [[liana|পুষ্পলতায়]] সমৃদ্ধ থাকায় বৈচিত্রতার দিক দিয়েও তিনটি বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী এলাকাটি। উদ্যানে মেরুদণ্ডী প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে। ৪৩টি বিভিন্ন প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণী ও ২২০-৭২০ জাতের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।<ref name=journal.pone.0008767/> [[Lophostoma yasuni| লফোস্তোমা ইয়াসুনি]] নামীয় এক প্রজাতির [[বাদুর]] উদ্যানে রোগ ছড়ায়। |
||
ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যানে ৮০০ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের মজুদ রয়েছে। এ পরিমাণ তৈল ইকুয়েডরের সংরক্ষিত তেলের ২০%। ইশপিঙ্গো-তিপুতিনি-তাম্বোকোচা (আইটিটি) তৈলক্ষেত্র এখানেই রয়েছে। তবে, এ সম্পদ অবমুক্ত না করার জন্য জেন গুডঅল ও ই.ও. উইলসন এবং স্টুয়ার্ট পিমের ন্যায় পরিবেশবাদী ও বিজ্ঞানীরা সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এর জবাবে জুন, ২০০৭ সালে রাষ্ট্রপতি রাফায়েল কোরেয়া উদ্যানের প্রাকৃতিক সম্পদের রক্ষা করার জন্য ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ উদ্বোধন করেন। এর বিনিময়ে প্রতিশ্রুত উদ্যানের অবন্টিত সম্পদ রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের কথা বলেন তিনি। উদ্যানের কূপ খনন কার্য তৈরি করা হলে বাতাসে ৪০০ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিশে যাবে বলে এক কর্মকর্তা জানান। সরকার আশাবাদী যে, লাভের অন্তত ৫০% অর্থ সংগ্রহ করা গেলে তেল মজুদের কাজে লাগানো যাবে। ১২ বছরেরও অধিক সময়কালে সর্বমোট ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগৃহীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ সময় পরিকল্পনাবিদদের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে যা বিশ্বের গরিব দেশগুলোর উপর পরিবেশগত সংরক্ষণের ভার কমাতে প্রভূতঃ সহায়তা করবে। |
|||
অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং এডওয়ার্ড নর্টন, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বৈশ্বিক পরিবেশবাদী আন্দোলনকর্মী / বিজ্ঞানী মাইকেল চার্লস তোবিয়াস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি আল গোর ইকুয়েডর সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তহবিল সংগ্রহের জন্য তুরস্ক, চিলি, কলম্বিয়া, জর্জিয়া, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন এবং বেলজিয়াম কাজ করে যাচ্ছে। তবে অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টায় ইকুয়েডর সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে যে, সরকার একাই অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিবে যে কোথায়, কিভাবে তহবিল ব্যয়িত হবে। |
|||
জুলাই, ২০১৩ সালে, কোরেয়া ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ-এর অগ্রগতি মূল্যায়ন করার জন্য একটি কমিশন গঠন করেন। কমিশনের মতে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি তেমন যথেষ্ট নয়। ১৫ আগস্ট, কোরেয়া এ পরিকল্পনা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দূর্বল দৃষ্টিভঙ্গীর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন,"বিশ্ববাসী আমাদের নিরাশ করেছে"। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ কপটাচারীতার আশ্রয় নিয়েছে। তাঁরা গ্রীনহাউজ থেকে নির্গত গ্যাস মোকাবেলার কথা বলছে। অথচ, তার দেশ পরিবেশের জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বলিদান করেছে। এরপর তিনি ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ প্রকল্পটি একটি নির্বাহী আদেশ মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ উদ্যোগের ছয় বছরে মাত্র ৩৩৬ মিলিয়ন ডলার অঙ্গীকার করা হয়েছে যাতে তাঁর দেশ মাত্র ১৩.৩ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। |
|||
কোরেয়া আরও বলেন, অর্থনৈতিক, আইনগত ও কারিগরি গবেষণার পর জাতীয় আইনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যানের কূপ খননের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ইকুয়েডর তেল উৎপাদন বিস্তৃতি ঘটানো প্রয়োজন। দেশের অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির দারিদ্র মোকাবেলায় সমর্থন জোগাবে ও তা অপরিহার্য ছিল। তিনি বলেন, ইয়াসুনি অববাহিকায় এ কূপ খনন করা হলে তা মাত্র ১% প্রভাব বিস্তার করবে। একজন মুখপাত্র জানান, খনন কার্যটি পরিবেশের কোনরূপ ক্ষতিসাধন ছাড়াই পরিচালিত হতে পারে। |
|||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
১০:৪০, ২০ মে ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 480 নং লাইনে: নির্দিষ্ট অবস্থান মানচিত্রের সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়নি। "মডিউল:অবস্থান মানচিত্র/উপাত্ত/Localización de Yasuní en Ecuador.svg" বা "টেমপ্লেট:অবস্থান মানচিত্র Localización de Yasuní en Ecuador.svg" দুটির একটিও বিদ্যমান নয়। | |
অবস্থান | ইকুয়েডর নাপো ও পাস্তাজা প্রদেশ |
আয়তন | ৯৮২৩ বর্গকিলোমিটার |
স্থাপিত | ২৬ জুলাই, ১৯৭৯ |
ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যান (স্পেনীয়: Parque Nacional Yasuní) ইকুয়েডরে অবস্থিত।[১] আমাজনীয় ইকুয়েডরের নাপো ও পাস্তাজা প্রদেশের নাপো ও কুরারে নদীর মধ্যবর্তী এলাকায় এর অবস্থান। এ উদ্যানের আয়তন প্রায় ৯,৮২০ বর্গকিলোমিটার। মূলতঃ বৃষ্টিবহুল বনাঞ্চলে জাতীয় উদ্যানটি গড়ে তোলা হয়েছে। রাজধানী কিটো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বে এ উদ্যানটি অবস্থিত। ১৯৮৯ সালে ইউনেস্কো বায়োস্পেফার সংরক্ষণ হিসেবে এ উদ্যানকে ঘোষণা করেছে। হুয়াওরানি আদিবাসী জনগোষ্ঠী এখানে বসবাস করে থাকে। এছাড়াও, তাগেইরি ও তারোমেনানে নামের দু'টি জনবিচ্ছিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীরও আবাস এখানে।[২]
জীববৈচিত্র্য
নিঃসন্দেহে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা জীববৈচিত্র্যের অধিকারী উদ্যান হিসেবে ইয়াসুনি জাতীয় পার্কের সুখ্যাতি রয়েছে। উদ্যানটি ছোট্ট অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে গড়ে উঠেছে। উভচর প্রাণী, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, স্বরীসৃপ, বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের বৈচিত্রপূর্ণ সমাহার রয়েছে যা পশ্চিম গোলার্ধের সর্বাধিক বসবাস উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান। ১০০ বর্গ কিলোমিটারের কম এলাকায় স্থানীয় প্রজাতির গাছ, উভচর প্রাণী ও বাদুর প্রজাতির বসবাসে উদ্যানটি বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেছে।[৩] এছাড়াও বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ স্থান হিসেবে স্থানীয় প্রজাতিরসহ পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিশাল সম্ভার রয়েছে।
ভূমির অবস্থানে তুলনামূলকভাবে ১৫০ প্রজাতির উভচর প্রাণী বসবাস করছে যা বিশ্বরেকর্ড। অন্যান্য স্থান বিশষতঃ পশ্চিম আমাজনে বসবাসরত উভচর প্রাণীর তুলনায়ও এটি শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।[৩] এমনকি সর্বমোট উভচর প্রাণীর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশী। পার্কে অবস্থানরত সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যাও বেশ উচ্চ পর্যায়ের। কাগজপত্রে ১২১ প্রজাতির কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। আমাজন অববাহিকার তুলনায় আয়তনে মাত্র ০.১৫% ভাগ হওয়া স্বত্ত্বেও ইয়াসুনিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উভচর ও সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল। এছাড়াও, উদ্যানের জলাভূমিতে মাছের বৈচিত্রতাও সবিশেষ উল্লেখ্যযোগ্য। পরিচিত ৩৮২ প্রজাতির মাছ রয়েছে এখানে। এই সংখ্যা পুরো মিসিসিপি নদীর অববাহিকা পাওয়া মৎস্য প্রজাতির পরিমাণের চেয়েও অনেক বেশী। ইয়াসুনিতে কমপক্ষে ৫৯৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে যা আমাজনের সাথে তুলনান্তে এক-তৃতীয়াংশ। উদ্যানে অগণিত বাদুর প্রজাতিরও সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। আঞ্চলিক মানদণ্ডে আমাজন অববাহিকায় ১১৭ প্রজাতির বাদুর থাকলেও ইয়াসুনি তুলনামূলকভাবে অধিক সমৃদ্ধ। ইয়াসুনির এক হেক্টর ভূমিতে ১,০০,০০০-এর অধিক বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়ের বাসস্থান। যা খসড়াভাবে উত্তর আমেরিকার সবগুলো মিলিয়ে একই সংখ্যায় দাঁড়াবে। এছাড়াও উদ্যানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পর্যায়ের রক্তচোষা গাছপালা রয়েছে। বিশ্বের নয়টি জায়গার মধ্যে একটি হিসেবে প্রতি ১০,০০০ বর্গকিলোমিটারে ৪,০০০ অধিক রক্তচোষা গাছ বিদ্যমান। উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, ঝোপঝাড় রয়েছে। এরফলে প্রামাণ্য দলিলে উদ্যানটি কমপক্ষে চারটি বিশ্বরেকর্ড ধারণ করে আছে। এছাড়াও, অরণ্যময় উদ্ভিদ প্রজাতিতে পুষ্পলতায় সমৃদ্ধ থাকায় বৈচিত্রতার দিক দিয়েও তিনটি বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী এলাকাটি। উদ্যানে মেরুদণ্ডী প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে। ৪৩টি বিভিন্ন প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণী ও ২২০-৭২০ জাতের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।[৩] লফোস্তোমা ইয়াসুনি নামীয় এক প্রজাতির বাদুর উদ্যানে রোগ ছড়ায়।
ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যানে ৮০০ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের মজুদ রয়েছে। এ পরিমাণ তৈল ইকুয়েডরের সংরক্ষিত তেলের ২০%। ইশপিঙ্গো-তিপুতিনি-তাম্বোকোচা (আইটিটি) তৈলক্ষেত্র এখানেই রয়েছে। তবে, এ সম্পদ অবমুক্ত না করার জন্য জেন গুডঅল ও ই.ও. উইলসন এবং স্টুয়ার্ট পিমের ন্যায় পরিবেশবাদী ও বিজ্ঞানীরা সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এর জবাবে জুন, ২০০৭ সালে রাষ্ট্রপতি রাফায়েল কোরেয়া উদ্যানের প্রাকৃতিক সম্পদের রক্ষা করার জন্য ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ উদ্বোধন করেন। এর বিনিময়ে প্রতিশ্রুত উদ্যানের অবন্টিত সম্পদ রক্ষার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের কথা বলেন তিনি। উদ্যানের কূপ খনন কার্য তৈরি করা হলে বাতাসে ৪০০ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিশে যাবে বলে এক কর্মকর্তা জানান। সরকার আশাবাদী যে, লাভের অন্তত ৫০% অর্থ সংগ্রহ করা গেলে তেল মজুদের কাজে লাগানো যাবে। ১২ বছরেরও অধিক সময়কালে সর্বমোট ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগৃহীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ সময় পরিকল্পনাবিদদের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে যা বিশ্বের গরিব দেশগুলোর উপর পরিবেশগত সংরক্ষণের ভার কমাতে প্রভূতঃ সহায়তা করবে।
অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং এডওয়ার্ড নর্টন, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বৈশ্বিক পরিবেশবাদী আন্দোলনকর্মী / বিজ্ঞানী মাইকেল চার্লস তোবিয়াস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি আল গোর ইকুয়েডর সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তহবিল সংগ্রহের জন্য তুরস্ক, চিলি, কলম্বিয়া, জর্জিয়া, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন এবং বেলজিয়াম কাজ করে যাচ্ছে। তবে অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টায় ইকুয়েডর সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে যে, সরকার একাই অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিবে যে কোথায়, কিভাবে তহবিল ব্যয়িত হবে।
জুলাই, ২০১৩ সালে, কোরেয়া ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ-এর অগ্রগতি মূল্যায়ন করার জন্য একটি কমিশন গঠন করেন। কমিশনের মতে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি তেমন যথেষ্ট নয়। ১৫ আগস্ট, কোরেয়া এ পরিকল্পনা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দূর্বল দৃষ্টিভঙ্গীর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন,"বিশ্ববাসী আমাদের নিরাশ করেছে"। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ কপটাচারীতার আশ্রয় নিয়েছে। তাঁরা গ্রীনহাউজ থেকে নির্গত গ্যাস মোকাবেলার কথা বলছে। অথচ, তার দেশ পরিবেশের জন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বলিদান করেছে। এরপর তিনি ইয়াসুনি-আইটিটি পদক্ষেপ প্রকল্পটি একটি নির্বাহী আদেশ মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ উদ্যোগের ছয় বছরে মাত্র ৩৩৬ মিলিয়ন ডলার অঙ্গীকার করা হয়েছে যাতে তাঁর দেশ মাত্র ১৩.৩ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
কোরেয়া আরও বলেন, অর্থনৈতিক, আইনগত ও কারিগরি গবেষণার পর জাতীয় আইনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যানের কূপ খননের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ইকুয়েডর তেল উৎপাদন বিস্তৃতি ঘটানো প্রয়োজন। দেশের অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির দারিদ্র মোকাবেলায় সমর্থন জোগাবে ও তা অপরিহার্য ছিল। তিনি বলেন, ইয়াসুনি অববাহিকায় এ কূপ খনন করা হলে তা মাত্র ১% প্রভাব বিস্তার করবে। একজন মুখপাত্র জানান, খনন কার্যটি পরিবেশের কোনরূপ ক্ষতিসাধন ছাড়াই পরিচালিত হতে পারে।
তথ্যসূত্র
- ↑ "A Durable Yet Vulnerable Eden in Amazonia"। nytimes.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৫।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;AP
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ গ Margot S. Bass; Matt Finer; Clinton N. Jenkins; Holger Kreft; Diego F. Cisneros-Heredia; Shawn F. McCracken; Nigel C. A. Pitman; Peter H. English; Kelly Swing; Gorky Villa; Anthony Di Fiore; Christian C. Voigt; Thomas H. Kunz (2010)। Hector, Andy, সম্পাদক। "Global Conservation Significance of Ecuador's Yasuní National Park"। Public Library of Science। 5 (1): e8767। ডিওআই:10.1371/journal.pone.0008767। সংগ্রহের তারিখ 06-07-2011। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)
আরও পড়ুন
- Greenberg, J. A., S. C. Kefauver, H. C. Stimson, C. J. Yeaton, and S. L. Ustin. 2005. Survival analysis of a neotropical rainforest using multitemporal satellite imagery. Remote Sensing of Environment 96(2):202-211.
- Hennessy, L. A. (2000). Whither the Huaorani? competing interventions in indigenous Ecuador. Master’s thesis, Berkeley, University of California, Berkeley.
- Lu, F. E. (1999). Changes in subsistence patterns and resource use of the Huaorani Indians in the Ecuadorian Amazon. PhD dissertation. Chapel Hill, University of North Carolina at Chapel Hill.
- Pitman, N. C. A. (2000). A large-scale inventory of two Amazonian tree communities. PhD dissertation. Durham, Duke University.
- Vogel, J.H. (2009). The economics of the Yasuní Initiative: climate change as if thermodynamics mattered. London, Anthem Press.
বহিঃসংযোগ
- “Opinion: Yasuní and the New Economics of Climate Change” CNN. Edition: International. August 23, 2010.
- Yasuni Green Gold Campaign to save the park and its indigenous people
- Yasuni Campaign by New Internationalist
- Yasuni Campaign by Ecuadorian civil society organizations - Amazonia por la Vida
- Background article at Deutsche Welle climate-project 'Global Ideas' on Ecuador's controversial plan to refrain from drilling for oil in its rainforests in return for money.
- Deutsche Welle report on Yasuni National Park