আল-ফজল ইবনে আল-রাবি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
T. Galib (আলোচনা | অবদান)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''আল-ফজল ইবনে আল-রাবি''' ({{Lang-ar|الفضل بن الربيع}}, 757/8–823/4) ছিলেন হারুনুর রশিদ এর রাজত্বকালে (৭৮৬-৮০৯) আব্বাসীয় খিলাফত এর সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন এবং আল-আমিন এর রাজত্বকালে তিনি একজন চেম্বারলাইন ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার সৎ ভাই আল-মামুন এর বিরুদ্ধে আল-আমিন এর পক্ষ নিয়ে হারুনের মৃত্যূর পর সংগঠিত হওয়া গৃহযুদ্ধে একজন প্ররোচক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আর মামুনের এর বিজয়ের পর তিনি আত্মগোপন করেন, যদিও পরে নতুন শাসকের সাথে একজোট হন।
'''আল-ফজল ইবনে আল-রাবি''' ({{Lang-ar|الفضل بن الربيع}}, 757/8–823/4) ছিলেন হারুনুর রশিদ এর রাজত্বকালে (৭৮৬-৮০৯) আব্বাসীয় খিলাফত এর সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন এবং আল-আমিন এর রাজত্বকালে তিনি একজন চেম্বারলাইন ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার সৎ ভাই আল-মামুন এর বিরুদ্ধে আল-আমিন এর পক্ষ নিয়ে হারুনের মৃত্যূর পর সংগঠিত হওয়া গৃহযুদ্ধে একজন প্ররোচক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আর মামুনের এর বিজয়ের পর তিনি আত্মগোপন করেন, যদিও পরে নতুন শাসকের সাথে একজোট হন।
==জীবনী==
==জীবনী==
তিনি ১৩৮ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আল রাবি ইবনে ইউনূসের পূত্র। রাবি একজন সাবেক কৃতদাস ছিলেন এ তিনি পরবর্তীতে আল-মনসূর এব আল-মাহদী এর প্রভাবশালী পদ চেম্বারলাইন লাভ করেন। রবির ক্ষমতা খিলাফাতের বহিরাগতদের সাথে যোগাযোগ এবং খিলাফতের অসংখ্য এবং প্রভাবশালী মালওয়াদের (কৃতদাস এবং ভৃত্য) উপর তার দে ফেকতো নেতৃত্বের উপর নির্ভর করত। ফজল কার্যকরীভাবে আইনসভায় তার পিতার অবস্থান লাভ করেন এবং হারুন আল রশীদ প্রদত্ত সম্মান থেকে তিনি সুবিধা লাভ করেন। তার পদপ্রাপ্তিতে খলিফা তাকে তার ব্যাক্তিগত সীল মোহরের দায়িত্ব দেন এবং ৭৮৯/৯০ সালে তাকে দিওয়ান আল নাফাকাত (ব্যায় দপ্তর) পদটি দেওয়া হয়। আল-হাদি’র রাজত্বকালীন (৭৮৫-৭৮৬ হিজরি) সময়ে নির্বাসিত থাকা কবি ইবনে জামি’কে সফলভাবে খুজে পেলে তাকে ৭৯৫/৯৬ হিজরিতে তার পিতার পদ হাদজিব প্রদান করা হয়। মনিবের অতি বিশ্বস্থ থেকে তিনি হারুনের বিশ্বস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। হিউগ এন. কেনেডি এর মতে, হারুন যদি কাউকে গোপনে নিয়ে আসতে চাইত অথবা বিশ্বাসযোগ্য কিনা পরিক্ষা করতে চাইত, তাহলে তিনি তা বাস্তবায়ন করতে ফজলের উপর আস্থা রাখতেন। ”বারমাকিদের আইনসভার ঘটনাগুলোও স্বচ্ছভাবে থাকা তার কিছুটা ব্যবহারিক এবং কিছুটা কাল্পনিক চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলে” (কেনেডি), তিনি তাদের জন্য আব্বাসিদ নিয়ন্ত্রিত আইনসভা এবং শাসনবিভাগে আকস্মিক অপমান ছিলেন। বার্মার্কি’র গোষ্ঠীপতি ইয়াহইয়া ইবনে খালিদ এর সাথে তার ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কাহিনী অনুযায়ী তিনি ছিলেন আইনসভায় তাদের মূখ্য প্রতিদ্বন্দী। বারমাকিদের ক্ষমতা পতন হলে তিনি ইয়াহইয়া এর উজির পদটি লাভ করেন, ফলে তিনি খলিফার মুখ্যমন্ত্রী এবং পরামর্শক হিসেবে পদন্নোত হন। কিন্তু ইয়াহইয়া এর সমান ক্ষমতা তিনি পান না এবং তার ক্ষমতা শুধুমাত্র ব্যায় তদারকি এবং অর্থনৈতিক প্রতিনিধির অন্য দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে খলিফার দরখাস্ত বিবেচনা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
তিনি ১৩৮ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আল রাবি ইবনে ইউনূসের পূত্র। রাবি একজন সাবেক কৃতদাস ছিলেন এ তিনি পরবর্তীতে আল-মনসূর এব আল-মাহদী এর প্রভাবশালী পদ চেম্বারলাইন লাভ করেন। রবির ক্ষমতা খিলাফাতের বহিরাগতদের সাথে যোগাযোগ এবং খিলাফতের অসংখ্য এবং প্রভাবশালী মালওয়াদের (কৃতদাস এবং ভৃত্য) উপর তার দে ফেকতো নেতৃত্বের উপর নির্ভর করত। ফজল কার্যকরীভাবে আইনসভায় তার পিতার অবস্থান লাভ করেন এবং হারুন আল রশীদ প্রদত্ত সম্মান থেকে তিনি সুবিধা লাভ করেন। তার পদপ্রাপ্তিতে খলিফা তাকে তার ব্যাক্তিগত সীল মোহরের দায়িত্ব দেন এবং ৭৮৯/৯০ সালে তাকে দিওয়ান আল নাফাকাত (ব্যায় দপ্তর) পদটি দেওয়া হয়। আল-হাদি’র রাজত্বকালীন (৭৮৫-৭৮৬ সাল) সময়ে নির্বাসিত থাকা কবি ইবনে জামি’কে সফলভাবে খুজে পেলে তাকে ৭৯৫/৯৬ হিজরিতে তার পিতার পদ হাদজিব প্রদান করা হয়।
মনিবের অতি বিশ্বস্থ থেকে তিনি হারুনের বিশ্বস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। হিউগ এন. কেনেডি এর মতে, হারুন যদি কাউকে গোপনে নিয়ে আসতে চাইত অথবা বিশ্বাসযোগ্য কিনা পরিক্ষা করতে চাইত, তাহলে তিনি তা বাস্তবায়ন করতে ফজলের উপর আস্থা রাখতেন। ”বারমাকিদের আইনসভার ঘটনাগুলোও স্বচ্ছভাবে থাকা তার কিছুটা ব্যবহারিক এবং কিছুটা কাল্পনিক চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলে” (কেনেডি), তিনি তাদের জন্য আব্বাসিদ নিয়ন্ত্রিত আইনসভা এবং শাসনবিভাগে আকস্মিক অপমান ছিলেন। বার্মার্কি’র গোষ্ঠীপতি ইয়াহইয়া ইবনে খালিদ এর সাথে তার ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কাহিনী অনুযায়ী তিনি ছিলেন আইনসভায় তাদের মূখ্য প্রতিদ্বন্দী। বারমাকিদের ক্ষমতা পতন হলে তিনি ইয়াহইয়া এর উজির পদটি লাভ করেন, ফলে তিনি খলিফার মুখ্যমন্ত্রী এবং পরামর্শক হিসেবে পদন্নোত হন। কিন্তু ইয়াহইয়া এর সমান ক্ষমতা তিনি পান না এবং তার ক্ষমতা শুধুমাত্র ব্যায় তদারকি এবং অর্থনৈতিক প্রতিনিধির অন্য দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে খলিফার দরখাস্ত বিবেচনা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

৮০৮ সালের মার্চ মাসে যখন তিনি হারুনকে খোরাসান অভিযানে [[রাফি ইবরে আল লায়থ]] এর বিদ্রোহ দমনে সঙ্গ দেন এবং তুসে হারুনের মৃত্যুর সময় তিনি তার সাথে ছিলেন সেখানে তার একটি বাহিনী হারুনের উত্তরাধিকারী আল-আমিন এর কাছে অঙ্গিকারবদ্ধ ছিলেন, যিনি বাগদাদে আড়ালে ছিলেন। আমিনের হারুনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন ছিল এবং তিনি হারুনকে পত্র পাঠিয়ে রাজধানীতে ফিরে আসতে বলেন এবং সাথে তার বিদ্রোহ দমনে তৈরি সম্পূর্ণ বাহিনী ও কোষাগার নিয়ে আসতে বলেন, যা হারুন নিয়েছিলেন। হারুনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকার, আল মামুন সম্পূর্ণ বাহিনী বাতিল করার বিষয়টি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচনা করেন এবং ফজলকে বোঝানের ব্যার্থ চেষ্টা করেন।

১০:২৫, ২৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আল-ফজল ইবনে আল-রাবি (আরবি: الفضل بن الربيع, 757/8–823/4) ছিলেন হারুনুর রশিদ এর রাজত্বকালে (৭৮৬-৮০৯) আব্বাসীয় খিলাফত এর সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন এবং আল-আমিন এর রাজত্বকালে তিনি একজন চেম্বারলাইন ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার সৎ ভাই আল-মামুন এর বিরুদ্ধে আল-আমিন এর পক্ষ নিয়ে হারুনের মৃত্যূর পর সংগঠিত হওয়া গৃহযুদ্ধে একজন প্ররোচক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আর মামুনের এর বিজয়ের পর তিনি আত্মগোপন করেন, যদিও পরে নতুন শাসকের সাথে একজোট হন।

জীবনী

তিনি ১৩৮ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আল রাবি ইবনে ইউনূসের পূত্র। রাবি একজন সাবেক কৃতদাস ছিলেন এ তিনি পরবর্তীতে আল-মনসূর এব আল-মাহদী এর প্রভাবশালী পদ চেম্বারলাইন লাভ করেন। রবির ক্ষমতা খিলাফাতের বহিরাগতদের সাথে যোগাযোগ এবং খিলাফতের অসংখ্য এবং প্রভাবশালী মালওয়াদের (কৃতদাস এবং ভৃত্য) উপর তার দে ফেকতো নেতৃত্বের উপর নির্ভর করত। ফজল কার্যকরীভাবে আইনসভায় তার পিতার অবস্থান লাভ করেন এবং হারুন আল রশীদ প্রদত্ত সম্মান থেকে তিনি সুবিধা লাভ করেন। তার পদপ্রাপ্তিতে খলিফা তাকে তার ব্যাক্তিগত সীল মোহরের দায়িত্ব দেন এবং ৭৮৯/৯০ সালে তাকে দিওয়ান আল নাফাকাত (ব্যায় দপ্তর) পদটি দেওয়া হয়। আল-হাদি’র রাজত্বকালীন (৭৮৫-৭৮৬ সাল) সময়ে নির্বাসিত থাকা কবি ইবনে জামি’কে সফলভাবে খুজে পেলে তাকে ৭৯৫/৯৬ হিজরিতে তার পিতার পদ হাদজিব প্রদান করা হয়।

মনিবের অতি বিশ্বস্থ থেকে তিনি হারুনের বিশ্বস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। হিউগ এন. কেনেডি এর মতে, হারুন যদি কাউকে গোপনে নিয়ে আসতে চাইত অথবা বিশ্বাসযোগ্য কিনা পরিক্ষা করতে চাইত, তাহলে তিনি তা বাস্তবায়ন করতে ফজলের উপর আস্থা রাখতেন। ”বারমাকিদের আইনসভার ঘটনাগুলোও স্বচ্ছভাবে থাকা তার কিছুটা ব্যবহারিক এবং কিছুটা কাল্পনিক চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলে” (কেনেডি), তিনি তাদের জন্য আব্বাসিদ নিয়ন্ত্রিত আইনসভা এবং শাসনবিভাগে আকস্মিক অপমান ছিলেন। বার্মার্কি’র গোষ্ঠীপতি ইয়াহইয়া ইবনে খালিদ এর সাথে তার ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কাহিনী অনুযায়ী তিনি ছিলেন আইনসভায় তাদের মূখ্য প্রতিদ্বন্দী। বারমাকিদের ক্ষমতা পতন হলে তিনি ইয়াহইয়া এর উজির পদটি লাভ করেন, ফলে তিনি খলিফার মুখ্যমন্ত্রী এবং পরামর্শক হিসেবে পদন্নোত হন। কিন্তু ইয়াহইয়া এর সমান ক্ষমতা তিনি পান না এবং তার ক্ষমতা শুধুমাত্র ব্যায় তদারকি এবং অর্থনৈতিক প্রতিনিধির অন্য দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে খলিফার দরখাস্ত বিবেচনা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

৮০৮ সালের মার্চ মাসে যখন তিনি হারুনকে খোরাসান অভিযানে রাফি ইবরে আল লায়থ এর বিদ্রোহ দমনে সঙ্গ দেন এবং তুসে হারুনের মৃত্যুর সময় তিনি তার সাথে ছিলেন সেখানে তার একটি বাহিনী হারুনের উত্তরাধিকারী আল-আমিন এর কাছে অঙ্গিকারবদ্ধ ছিলেন, যিনি বাগদাদে আড়ালে ছিলেন। আমিনের হারুনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন ছিল এবং তিনি হারুনকে পত্র পাঠিয়ে রাজধানীতে ফিরে আসতে বলেন এবং সাথে তার বিদ্রোহ দমনে তৈরি সম্পূর্ণ বাহিনী ও কোষাগার নিয়ে আসতে বলেন, যা হারুন নিয়েছিলেন। হারুনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকার, আল মামুন সম্পূর্ণ বাহিনী বাতিল করার বিষয়টি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচনা করেন এবং ফজলকে বোঝানের ব্যার্থ চেষ্টা করেন।