বিজন ভট্টাচার্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Piyal Kundu (আলোচনা | অবদান) |
Piyal Kundu (আলোচনা | অবদান) |
||
১৫ নং লাইন: | ১৫ নং লাইন: | ||
==পারিবারিক জীবন== |
==পারিবারিক জীবন== |
||
বিখ্যাত লেখিকা [[জ্ঞানপীঠ |
বিখ্যাত লেখিকা [[জ্ঞানপীঠ]] পুরস্কার বিজয়ী [[মহাশ্বেতা দেবী]] বিজন ভট্টাচার্যের স্ত্রী । তবে পরবর্তীকালে তাঁরা বিবাহ বিচ্ছিন্ন হন । তাঁদের এক সন্তান [[নবারুণ ভট্টাচার্য]] যিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহন করেছিলেন। নবারুণ ভট্টাচার্য একজন সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক এবং কবি । |
||
==সমালোচনা ও কৃতিত্ব== |
==সমালোচনা ও কৃতিত্ব== |
১৮:১২, ৫ মার্চ ২০০৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
বিজন ভট্টাচার্য (১৭ জুলাই ১৯১৭ - ১৯ জানুয়ারি ১৯৭৮) একজন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব । ১৯১৭ সালে তিনি বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহন করেন ।
নাট্যজীবন
বিজন ভট্টাচার্যের নাট্যজীবনের শুরু হয় ১৯৪০ এর দশকে । প্রচলিত বাণিজ্যিক থিয়েটারের ধারার বাইরে স্বতন্ত্র নাট্য আন্দোলনের সূচনা করেন কিছু ফ্যাসিবাদ বিরোধী লেখক শিল্পী গোষ্ঠী । এঁদেরই সাংস্কৃতিক শাখা ছিল ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ বা ইণ্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েসন যা আইপিটিএ নামে বেশি পরিচিত। বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন এই গণনাট্য সঙ্ঘের প্রথম সারির নাট্যকর্মী । চিন্তা, চেতনা এবং সংগ্রামের প্রগতিশীল চিন্তা ভাবনার দিশারী ছিল ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ । বিজন ভট্টাচার্যের নাটক রচনা, অভিনয় এবং নির্দেশনা সাফল্য লাভ করেছিল এই গণনাট্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ।
গণনাট্য সঙ্ঘের (সেই সময় ফ্যাসিবিরোধী লেখক শিল্পী সঙ্ঘ) প্রথম নাটক আগুন বিজন ভট্টাচার্যের রচনা । এই নাটকটি ১৯৪৩ সালে মঞ্চস্থ হয়েছিল । ১৯৪৪ সালে তাঁর লেখা নাটক জবানবন্দী এবং নবান্ন অভিনীত হয়েছিল । এই নাটকগুলিতে তিনি প্রধান অভিনেতা এবং নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ।
১৯৪৪ সালের ২৪ অক্টোবর শ্রীরঙ্গম মঞ্চে নবান্নের প্রথম অভিনয় হয় । এই নাটকটির পটভূমিকা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অস্থিরতা, ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলন, পঞ্চাশের মন্বন্তর এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ । গণনাট্য আন্দোলন এবং বিজন ভট্টাচার্যের নাটক বাংলা নাটক রচনা এবং অভিনয়ের এক যুগবদলের সূচনা করে ।
১৯৪৮ সাল থেকে গণনাট্য সঙ্ঘের সঙ্গে বিজন ভট্টাচার্যের মতান্তর ঘটে । ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ তিনি বোম্বাইতে হিন্দি সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকেন । ১৯৫০ সালে তিনি আবার বাংলায় ফিরে আসেন এবং নিজের নাটকের দল ক্যালকাটা থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন । এখানেও তিনি নাট্যকার, প্রধান অভিনেতা এবং নির্দেশকের ভূমিকা পালন করেন । এই থিয়েটারে তাঁর রচিত নাটকের মধ্যে অন্যতম ছিল কলঙ্ক, গোত্রান্তর, মরাচাঁদ, দেবী গর্জন, গর্ভবতী জননী প্রভৃতি ।
১৯৭০ সালে তিনি ক্যালকাটা থিয়েটার ছেড়ে দিয়ে কবচ-কুণ্ডল নামে নতুন দল গঠন করেন । এখানে তাঁর রচিত নাটকগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কৃষ্ণপক্ষ, আজবসন্ত, চলো সাগরে, লাস ঘুইর্যা যাউক প্রভৃতি ।
পারিবারিক জীবন
বিখ্যাত লেখিকা জ্ঞানপীঠ পুরস্কার বিজয়ী মহাশ্বেতা দেবী বিজন ভট্টাচার্যের স্ত্রী । তবে পরবর্তীকালে তাঁরা বিবাহ বিচ্ছিন্ন হন । তাঁদের এক সন্তান নবারুণ ভট্টাচার্য যিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহন করেছিলেন। নবারুণ ভট্টাচার্য একজন সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক এবং কবি ।
সমালোচনা ও কৃতিত্ব
বিজন ভট্টাচার্য মার্কসীয় দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন । কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা ও বাঁচবার কথা তাঁর নাটকগুলির মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল । কিন্তু আস্তে আস্তে তিনি এই ভাবনা থেকে সরে যান । গণনাট্য সঙ্ঘ ত্যাগ এবং নিজের নাটকের দল একাধিক বার ভেঙে গড়ে তিনি তৈরি করেন । ক্রমে মার্কসীয় দর্শনের পরিবর্তে বা সঙ্গে তাঁর রচনায় লোকায়ত ধর্ম দর্শন, হিন্দু ধর্মের সমন্বয় প্রয়াসী মানসিকতা কাজ করেছিল । চিরকালীন মাতৃকা ভাবনা তাঁর নাটকে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় ।
অভিনেতা হিসাবে বিজন ভট্টাচার্য অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন । নানারকম চরিত্রকে মূর্ত করে তুলতে তিনি দক্ষ ছিলেন । নানা উপভাষার সংলাপ উচ্চারণেও তিনি সাফল্য অর্জন করেছিলেন । তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চরিত্রের মধ্যে ছিল বেন্দা (জবানবন্দী), প্রধান সমাদ্দার (নবান্ন), পবন ও কেতকাদাস (মরাচাঁদ), হরেন মাস্টার (গোত্রান্তর), প্রভঞ্জন (দেবীগর্জন), মামা (গর্ভবতী জননী), কেদার (আজ বসন্ত), সুরেন ডাক্তার (চলো সাগরে) প্রভৃতি ।
নাট্যনির্দেশক হিসাবেও তিনি সমান সফল ছিলেন । গণনাট্য সঙ্ঘে তাঁর নাটক জবানবন্দী এবং নবান্ন ছিল অসাধারন দুটি প্রযোজনা । পরে তিনি তাঁর নিজের গ্রুপ থিয়েটারেও বহু নাটকের সফল প্রযোজক এবং নির্দেশক ছিলেন ।
রচিত নাটক
|
|
|
তথ্যসূত্র
- বাংলা থিয়েটারের ইতিহাস – দর্শন চৌধুরী
- মহাশ্বেতা দেবীর সাক্ষাৎকার
- আইএমডিবিতে বিজন ভট্টাচার্য