হরতাল ডাক্তার কনট্রাক

হরতাল ডাক্তার কনট্রাক
সরকারী ডাক্তারদের একটি দল সকাল ১১টায় সারাদেশের হাসপাতালে তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু করেন যেখানে পদ্ধতিগত সংস্কারের জন্য চাপ দেওয়া হয় যা তাদের পড়াশোনাকে এগিয়ে নিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং সেইসাথে চাকরির নিরাপত্তা প্রদান করে না।
তারিখ	২০২১-এর ২৬ জুলাই
অবস্থান	মালয়েশিয়ার হাসপাতাল
কারণ	মালয়েশিয়ান চুক্তিতে মেডিকেল অফিসার নিয়োগ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
লক্ষ্যসমূহ	জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসা কর্মকর্তাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ স্থায়ী সরকারী কর্মকর্তাদের থেকে চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তাদের গ্রহণ পদ্ধতির স্বচ্ছতা চাকরীর নিরাপত্তা এবং চুক্তি-পরবর্তী অধ্যয়ন অব্যাহত
প্রক্রিয়াসমূহ	হরতাল ইন্টারনেট সক্রিয়তা
নাগরিক সংঘাতের দলসমূহ
চুক্তির আওতায় মেডিকেল অফিসাররা মালয়েশিয়া মালয়েশিয়া সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রী সরকারি কর্ম বিভাগ রয়্যাল মালয়েশিয়ান পুলিশ
সংখ্যা
আনুমানিক ৪,০০০ কর্মকর্তা

হরতাল ডাক্তার কনট্রাক (মালয়ː Hartal Doktor Kontrak, চুক্তিবদ্ধ চিকিৎসকদের হরতাল) ছিল ২০২১ সালের ২৬ জুলাই মালয়েশিয়ায় মেডিকেল অফিসারদের দ্বারা আয়োজিত একটি দেশব্যাপী শ্রমিক আন্দোলন যা ২০১৬ সালের শেষের দিকে বাস্তবায়ন হওয়া মেডিকেল অফিসার নিয়োগের সরকারী চুক্তি ব্যবস্থার প্রতিবাদ স্বরূপ সংঘটিত হয়।

পটভূমি

মালয়েশিয়ান চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসার নিয়োগ নীতি হল একটি নীতি যা মালয়েশিয়ার সরকার ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং সাধারণভাবে কর্মজীবনে নতুন মেডিকেল অফিসারদের নিয়োগের মাধ্যমে প্রণয়ন করে। মালয়েশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অত্যধিক প্রতিষ্ঠার কারণে মেডিকেল স্নাতকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

তবে এই চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পদ্ধতি বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে আপত্তির মুখে পড়ে। এই নীতি নিয়ে প্রধান সমস্যাটি হল পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি শেষ হওয়ার পরে সরকারি মেডিকেল অফিসারদের অনিশ্চয়তা কেননা মেডিকেল অফিসারদের স্থায়ী পদে নিয়োগের জন্য কোন সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। ২০২১ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ আধাম বাবার দেওয়া একটি বিবৃতির উপর ভিত্তি করে, প্রায় ৩২,০০০ মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে মাত্র ৩% (৭৮৯ জন) চুক্তিবদ্ধ মেডিকেল অফিসার সফলভাবে স্থায়ী মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান। এছাড়াও, নিম্ন বেতন, কর্মচারীদের ছুটি নিয়ে সমস্যা এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্য তাদের পড়াশোনা আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ সহ আরও বেশ কিছু বিষয় উত্থাপিত হয়।

এই ধরনের নিয়োগ পদ্ধতির প্রধান পরিণতি হচ্ছে দেশের মেডিকেল অফিসারদের সংখ্যা হ্রাসের প্রবণতা। এই নীতির প্রতিক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে বিদেশী মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় যারা এই নীতি থেকে উদ্ভূত অনিশ্চয়তার কারণে মালয়েশিয়ার চেয়ে বিদেশে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মালয়েশিয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ঘাটতির সমস্যাটিও এই নীতির ইস্যুতে একটি হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সময়রেখা

আগে

চুক্তি ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পাঁচ বছর পর, মেডিকেল অফিসাররা দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় মেডিকেল অফিসারদের আত্তীকরণের সমস্যার সমাধান এবং নীতি বন্ধ করার দাবিতে দেশব্যাপী ২০২১ সালের ২৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া হরতাল (শ্রমিক ধর্মঘট) চালানোর কথা জানান। যা স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ আধাম বাবার এক বিবৃতি দেয়ার পর শুরু হয়, যেখানে চুক্তির ডাক্তার নীতি সমর্থন করার পাশাপাশি বৈষম্যমূলক ভূমিপুত্র সমর্থক নিয়োগকে সমর্থন করে। পরবর্তীতে এই সমস্যার সমাধানের জন্য মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আলোচনা হিসেবে চুক্তি নীতি পুনঃউত্থাপন করা হয়। এছাড়াও, সরকার এক বছরের জন্য একটি বিশেষ চুক্তিও চালু করে যা ২০২১-এর ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২২-এর ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা হিসাবে পুনরায় নিয়োগের প্রস্তাব দেয়। ধর্মঘটের আগে কয়েকদিনের মধ্যেই, চুক্তি-পরবর্তী ভবিষ্যতের অনিশ্চিত হতাশা ও ক্ষোভ থেকে চুক্তিবদ্ধ মেডিকেল অফিসাররা পদত্যাগ করতে শুরু করেন। মেডিকেল অফিসারদের মধ্যে চাপ কমাতে, ২২ জুলাই ২০২১-এ, সরকার বাধ্যতামূলক কর্মসংস্থানের সময়কাল ২৪ মাস থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করে; অর্থাৎ চুক্তিবদ্ধ অফিসারদের ১৮ মাসের পরে অবসর নেওয়ার জন্য শিথিলতা দেওয়া হয়।

জুলাই ২০২১ জুড়ে, চুক্তিবদ্ধ ডাক্তারদের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াসে অনলাইনে সক্রিয়তা চালানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় #HartalDoktorKontrak হ্যাশট্যাগ প্রবর্তন, কালো পতাকা ওড়ানো এবং সংহতির চিহ্ন হিসেবে কালো পতাকা পরিধান করা। ২০২১-এর ১২ জুলাই, সংহতির চিহ্ন হিসেবে ব্ল্যাক সোমবার নামে একটি পার্শ্ব প্রচারণার আয়োজন করা হয়।

ধর্মঘটের দিন

২০২১ সালের ২৬ জুলাই সারাদেশে ঠিকাদারী ডাক্তারদের দ্বারা পরিচালিত প্রকৃত ধর্মঘটের মাধ্যমে বিক্ষোভটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল, যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সরকারি হাসপাতাল। প্রায় ২০টিরও বেশি সরকারি হাসপাতাল ধর্মঘটে অংশ নেয়। কর্মচারীদের স্বাভাবিক বিরতির সময় সাধারণত সকাল ১১টায় একযোগে ধর্মঘট চালানো হয়, এবং ওই সময়ের পর দায়িত্বে ফেরার জন্য বিক্ষোভ বন্ধ হয়ে যায়। ধর্মঘটের পদ্ধতি ছিল চুক্তিবদ্ধ কর্মকর্তারা প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তবে বেশ কিছু সরকারি হাসপাতাল ধর্মঘটে যুক্ত হয়নি।

ধর্মঘটের পরে

হরতালের কয়েকদিন পর আন্দোলনের একজন প্রতিনিধি জানান, আগামী বছরের জাতীয় বাজেটে তাদের দাবিগুলোকে প্রাধান্য না দিলে তারা আবারও একই ধরনের ধর্মঘট করতে দ্বিধা করবে না।

পদক্ষেপ

সাধারণত, এই প্রতিবাদটি রয়্যাল মালয়েশিয়া পুলিশ (আরএমপি) কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। ধর্মঘটের দিনে পুলিশ দেশের মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডারের নিয়ম লঙ্ঘনের অজুহাতে আয়োজকদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে যা যেকোনো সমাবেশ অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করে। এছাড়া যারা ধর্মঘটে যোগ দেন তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি হাসপাতাল পরিচালকদের দেওয়া হয় বলেও চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন। ২০২১-এর ২৭ জুলাই চতুর্দশ সংসদের বিশেষ সভার মাধ্যমে, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ আধাম বাবা আশ্বাস দেন যে আগের দিন হরতালে যোগদানকারী চুক্তিবদ্ধ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ জুল্কফ্লাই আহমেদ সহ বেশ কয়েকজন এমপি এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন।