অগ্নিগড় উদ্যান
অগ্নিগড় | |
---|---|
অবস্থান | তেজপুর, শোণিতপুর জেলা, অসম |
অগ্নিগড় উদ্যান (ইংরেজি: Agnigarh park;অসমীয়া: অগ্নিগড় উদ্যান) ভারতের অসম রাজ্যের তেজপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক গড়(দুর্গ), বান রাজা এই দুর্গটি নির্মাণ করেছিলেন বলে কালিকা পুরাণে উল্লেখ করা আছে। এটি ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তর পারে অবস্থিত। ১৯২৮ সনে অগ্নিগড় সংরক্ষন করার উদ্যেশ্যে তেজপুর পৌরসভার পৌরপতী পদ্মনাথ গোহাঞি বড়ুয়া এখানে একটি উদ্যান নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমান তেজপুরের পারিপার্শ্বিক সমিতির দ্বারা এই উদ্যানটি পরিচালনা করা হয়।
নামকরণ
কালিকাপুরাণে উল্লেখ করামতে বানরাজা নিজ কন্যা উষাকে নিরাপদ রাখার জন্য নগরটিকে আগুন দ্বারা আবৃত করে রেখেছিলেন। ফলে স্থানটির নাম অগ্নিগড় হয়েছে।
প্রাচীন ইতিহাস
বানরাজা নিজ কন্যা উষাকে নিরাপদ করার জন্য অগ্নিগড় নির্মাণ করেছিলেন। উষা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধের সহিত প্রেম সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। বান রাজার অনুমতি না থাকার ফলে উষা ও অনিরুদ্ধ গন্ধর্ব বিবাহ করেন। ক্রোধিত হয়ে বানরাজা অনিরুদ্ধকে বন্দী করে। নাতীকে উদ্ধার করার উদ্যেশ্যে ভগবান কৃষ্ণ সৈন্য নিয়ে শোনিতপুর প্রবেশ করেন কিন্তু নগরের চতুর্দিক অগ্নি দ্বারা আবদ্ধ দেখে কৃষ্ণসেনা বিস্ময়িত হন। নগরে প্রবেশ করার কোনো উপায় না পেয়ে গরুড়ের সাহায্যে অগ্নি নির্বাপন করা হয় ও কৃষ্ণসেনা নগরে প্রবেশ করে । ভগবান শিব বানরাজার পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করে সেজন্য এই যুদ্ধটি হরি-হর যুদ্ধ নামে বিখ্যাত। এই কথা মহাভারতের হরিবংশের বিষ্ণুপর্বে উল্লেখ করা আছে। হরি-হর যুদ্ধে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল।অবশেষে বানরাজা নিজের ভুল উপলব্ধি করতে পেরে অনিরুদ্ধকে মুক্ত করে দেয়।
বর্তমান অবস্থা
১৯২৮ সনে তেজপুর পৌরসভার প্রথম অসমীয়া পৌরপতি পদ্মনাথ গোহাঞি বড়ুয়া ব্রহ্মপুত্রের পারে অবস্থিত টিলাটিতে একটি উদ্যান নির্মাণ করেছিলেন যা কালক্রমে অগ্নিগড় নামে পরিচিত হয়। ব্রিটিশ শাসনকালে এই টিলা থেকে দূরবীন যন্ত্র দ্বারা শহরটি নিরীক্ষন করা হত ফলে এর প্রাচীন নাম অবজারভেটরি হিল (Observatory Hill)। ২০০১ সনের জানুয়ারি মাসে এই উদ্যানটি নতুন রুপে সজ্জিত করা হয়। উদ্যানে হরি-হর যুদ্ধ ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়। বর্তমান তেজপুরের পারিপার্শ্বিক সমিতির তত্বাবধানে পরিচালিত অত্যাধুনিক সু-সজ্জিত উদ্যান। অগ্নিগড় উদ্যান থেকে ব্রহ্মপুত্র নদী ও কলিয়া ভোমরা সেতু দেখা যায়।[১]
যাতায়ত
তেজপুর সরকারি বাস আস্থান থেকে অগ্নিগড় উদ্যান যাওয়ার জন্য দুইটি পথ আছে। প্রথম পথে তেজপুরের বিখ্যাত গণেশ মন্দির ও দ্বিতীয় পথে উপায়ুক্তের আবাসগৃহ ও তেজপুর মহাবিদ্যালয় দেখার সুবিধা পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৪।