হিমবিদ্যা
হিমবিদ্যা (ইংরেজিতে: Glaciology) হল হিমবাহ সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা অধ্যয়ন। প্রকৃতিতে হিমবাহ বা তুষারপাত সম্পর্কিত ঘটনাবলি হিমবিদ্যায় আলোচিত হয়। হিমবিদ্যা ভূবিদ্যার অন্তর্গত একটি শাখা। এর সাথে ভূপদার্থবিদ্যা, ভূগোল, ভৌতিক ভূগোল, জলবায়ুবিদ্যা, আবহাওয়াবিজ্ঞান, পানিবিদ্যা, জীববিজ্ঞান এবং বাস্তসংস্থানবিদ্যা জড়িত। মানুষের উপর হিমবাহের প্রভাব নিয়ে আলোচিত হয় নৃবিজ্ঞান ও মানব-ভূবিদ্যায়। চাঁদ, মঙ্গলগ্রহ এবং ইউরোপাতে পানি বা বরফের আবিষ্কার হিমবিদ্যার অধীন একটি নতুন শাখার উন্মোচন করেছে যাতে পৃথিবীর বাহিরে গ্রহ-উপগ্রহের তুষারপ্রবাহ, তুষারপাত বা হিমবাহ ইত্যাদি বিষয়াবলি আলোচিত হয়। এর নাম "নভোহিমবিজ্ঞান" (ইংরেজিতে 'অ্যাস্ট্রোগ্ল্যাসিওলোজি' Astroglaciology)।[১]
বিবরণ
[সম্পাদনা]হিমবিদ্যায় পৃথিবীর হিমবাহসমূহের ইতিহাস, পুনর্গঠন ইত্যাদি আলোচিত হয়। হিমবিদ হলেন হিমবিদ্যার গবেষক। মেরু অঞ্চলে গবেষণার অন্যতম প্রধান বিষয় হল হিমবিদ্যা। হিম বা হিমবাহ হল দীর্ঘসময় তুষারপাতের ফলে গঠিত বিস্তৃত আকারের বরফখন্ড। অনেক সময় এধরনের বরফখন্ড বিশাল এলাকা জুড়ে গঠিত হয়। এসব বরফখন্ড প্রায়ই উচ্চপর্বতগাত্র থেকে ধীরে ধীরে নিচের দিকে পতিত হয়। আবার মহাদেশীয় হিমবাহের ক্ষেত্রে এধরনের বিস্তৃত বরফখন্ড গঠিত হওয়ার স্থান থেকে ধীরে ধীরে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
হিমবিদ্যা প্রধান দুইটি ভাগে বিভক্ত: আলপাইন হিমবিদ্যা এবং মহাদেশীয় হিমবিদ্যা। আলপাইন হিমবিদ্যায় আলোচিত হয় উপত্যকা অঞ্চলে নদীর পানিপ্রবাহ ঠান্ডার কারণে জমে বরফখন্ডে পরিণত হওয়া। অপরদিকে মহাদেশীয় হিমবিদ্যায় বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বরফখন্ডের গঠন পর্যালোচিত হয়, এধরনের বরফখন্ডের গঠন উত্তর মেরু অঞ্চলে প্রধান্ত দেখা যায়।
- আলপাইন - পর্বতগাত্র থেকে উপত্যকায় তুষার পতিত হয় এবং জমাট বরফে পরিণত হয়। এধরনের বরফখন্ড উপত্যকার সমতল থেকে নিম্ন উচ্চতাবিশিষ্ট ভূমির দিকে পড়তে থাকে। আলপাইন বরফখন্ডগুলো সাধারণত উচু-নিচু এবং অমসৃণ পৃষ্ঠ সম্পন্ন হয়।
- মহাদেশীয় – মহাদেশীয় বরফখন্ড অধিক উচ্চতাবিশিষ্ট অঞ্চলে গঠিত হয়। অধিকাংশ সময়ই এধরনের বরফখন্ড হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত থাকে এবং তাদের গভীরতাও কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার মিটারবিশিষ্ট হয়ে থাকে। মহাদেশীয় বরফখন্ডগুলো সাধারণত মসৃণ পৃষ্ঠসম্পন্ন হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Richard S. Williams, Jr. (১৯৮৭)। "Annals of Glaciology, v.9" (পিডিএফ)। International Glaciological Society। পৃষ্ঠা 255। ৩ মে ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- Benn, Douglas I. and David J. A. Evans. Glaciers and Glaciation. London; Arnold, 1998. আইএসবিএন ০-৩৪০-৫৮৪৩১-৯
- Greve, Ralf and Heinz Blatter. Dynamics of Ice Sheets and Glaciers. Berlin etc.; Springer, 2009. আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৬৪২-০৩৪১৪-৫
- Hambrey, Michael and Jürg Alean. Glaciers. 2nd ed. Cambridge and New York; Cambridge University Press, 2004. আইএসবিএন ০-৫২১-৮২৮০৮-২
- Hooke, Roger LeB. Principles of Glacier Mechanics. 2nd ed. Cambridge and New York; Cambridge University Press, 2005. আইএসবিএন ০-৫২১-৫৪৪১৬-৫
- Paterson, W. Stanley B. The Physics of Glaciers. 3rd ed. Oxford etc.; Pergamon Press, 1994. আইএসবিএন ০-০৮-০৩৭৯৪৪-৩
- van der Veen, Cornelis J. Fundamentals of Glacier Dynamics. Rotterdam; A. A. Balkema, 1999. আইএসবিএন ৯০-৫৪১০-৪৭১-৬