মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট
সংক্ষেপ | এস.এস.সি. |
---|---|
ধরন | গণপরীক্ষা |
উন্নতিকারক / পরিচালক | মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর |
উদ্দেশ্য | মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান মূল্যায়ন করা। |
প্রথম গ্রহণ | ১৯৫৩ |
নম্বর / গ্রেডের সীমা | প্রতি বিষয়ে ০-১০০ নম্বর |
যতবার হয় | বাংলাদেশ |
দেশ / অঞ্চল | দেশব্যাপী (বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড) |
ভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
যোগ্যতা | জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট শেষে |
ওয়েবসাইট | dshe |
সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট বা এস.এস.সি. বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট হলো বাংলাদেশের দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য একটি গণপরীক্ষা।[১] মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য প্রদানকৃত সমমানের সনদকে বলা হয় দাখিল পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় এবং তাদের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। এই পরীক্ষা মাধ্যমিক পরীক্ষা হিসেবেও পরিচিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বাংলাদেশে এসএসসি পরীক্ষা পদ্ধতি ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে আমলে শুরু হয়। সময়ের সাথে সাথে এই পদ্ধতি বিকশিত হয়েছে এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে পরীক্ষাটি একাধিক আঞ্চলিক শিক্ষা বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।[২][৩]
পরীক্ষার কাঠামো
[সম্পাদনা]এস.এস.সি. পরীক্ষা বাংলাদেশে সমগ্র দেশব্যাপী নয়টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় এবং শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়।[৪][৫]
পরীক্ষা পরিচালনা
[সম্পাদনা]পরীক্ষার্থীদের তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট থেকে পরীক্ষা আরম্ভের কমপক্ষে তিন দিন পূর্বে সংগ্রহ করতে হয়। পূর্ব ঘোষিত সময়সূচি ও কার্যক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত পরীক্ষা কেন্ত্রসমূহে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনী পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদা উত্তরপত্র ব্যবহার করতে হয়। পরীক্ষার্থীদেরকে তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হয়। যেহেতু ওএমআর ফরম ওএমআর মেশিন দিয়ে যাচাই করা হয় তাই উত্তরপত্র ভাঁজ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। পরীক্ষার্থীকে প্রত্যেক বিষয়ে স্বাক্ষরলিপিতে অবশ্যই স্বাক্ষর করতে হয় কেননা এর দ্বারা নিশ্চিত হওয়া যায় পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন কিনা। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয় বা বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থায়ই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায় না, কিংবা করলে তা বাতিল বলে গণ্য হয়। পরীক্ষার্থীরা পদার্থবিদ্যা, গণিত বা অনুরূপ অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারে। পরীক্ষায় নকল ঠেকাতে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ব্যতীত অন্য কারোই পরীক্ষা-কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে অনুমতি থাকে না। পরীক্ষার ফল প্রকাশের ১০ দিনের মধ্যে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসএমএস-এর মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ থাকে।
বিষয়সমূহ
[সম্পাদনা]আবশ্যিক বিষয়সমূহ: শিক্ষার্থীদের কয়েকটি মৌলিক বিষয় অধ্যয়ন করতে হয় যার মধ্যে রয়েছে: বাংলা (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র), ইংরেজি (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র), সাধারণ গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা (শিক্ষার্থীর বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, অথবা খ্রিস্টধর্ম)। এই বিষয়গুলি সকল শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক এবং এই পরীক্ষার পাঠ্যক্রমের ভিত্তি গঠন করে।[৪][৫]
গ্রুপ-ভিত্তিক বিষয়সমূহ: শিক্ষার্থীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়; বিজ্ঞান, মানবিক এবং বাণিজ্য। প্রতিটি গ্রুপে মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও নির্দিষ্ট বিষয় রয়েছে।[৪][৫]
বিজ্ঞান: পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়।[৪][৫]
মানবিক: ইতিহাস, ভূগোল, নাগরিক বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সাধারণ বিজ্ঞান।[৪][৫]
বাণিজ্য: হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, অর্থনীতি, অর্থশাস্ত্র, সাধারণ বিজ্ঞান।
শিক্ষার্থীদের পছন্দের উপর ভিত্তি করে ঐচ্ছিক বিষয় যেমন কৃষিশিক্ষা বা গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বেছে নিতে করতে পারে।
এছাড়া আরও দুটি বিষয় রয়েছে শারীরিক শিক্ষা এবং কর্মমূখী শিক্ষা। নবম এবং দশম শ্রেণীর ধারাবাহিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই বিষয়গুলির জন্য নম্বর প্রদান করা হয়।
শিক্ষা বোর্ড
[সম্পাদনা]গ্রেডিং সিস্টেম
[সম্পাদনা]এস.এস.সি. পরীক্ষার ফলাফল নিম্নরূপ একটি গ্রেডিং সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়:[৬]
গ্রেড | নম্বরের ব্যাপ্তি (%) | জিপিএ |
---|---|---|
এ+ | ৮০% বা এর বেশি | ৫.০০ |
এ | ৭০–৭৯% | ৪.০০ |
এ- | ৬০–৬৯% | ৩.৫০ |
বি | ৫০–৫৯% | ৩.০০ |
সি | ৪০–৪৯% | ২.০০ |
ডি | ৩৩–৩৯% | ১.০০ |
এফ | ৩৩% এর কম | ০.০০ |
পরীক্ষার সামগ্রিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে গ্রেড প্রদান করা হয় এবং ফলাফল উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা নির্ধারণ করে। যে সকল শিক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করে তাদের পরবর্তী বছরের এসএসসি পরীক্ষায় সেই বিষয়গুলির জন্য পুনরায় পরীক্ষা দিতে হয়।[৭]
গুরুত্ব
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এসএসসি পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের যোগ্য, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পূর্বশর্ত। এসএসসি ফলাফল ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা এবং ব্যবসার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারের সুযোগের ভিত্তি হিসেবেও কাজ করে।[৮]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ড
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "A strange holding of SSC exams in 1986"। New Age (Bangladesh) (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা-। Dhaka Education Board। ২৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Welcome to BD Online Academy" (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০২৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Report. Barisal Board.
- ↑ "Grades and study results - Bangladesh | Nuffic"।
- ↑ "The failures of subject mapping and how they impact national curriculum students"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১২-০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "The all-important exam"। The Financial Express (Bangladesh) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫।