সংসদ ভবন (ভারত)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সংসদ ভবন
পার্লামেন্ট হাউস
New Delhi government block 03-2016 img3.jpg
রাজপথ থেকে দৃশ্যমান সংসদ ভবন
সংসদ ভবন (ভারত) দিল্লি-এ অবস্থিত
সংসদ ভবন (ভারত)
প্রাক্তন নামহাউস অব পার্লামেন্ট
বিকল্প নামপার্লামেন্ট বিল্ডিং
সাধারণ তথ্য
অবস্থাকার্যক্ষম
স্থাপত্য রীতিলুটিয়েনস দিল্লি
ঠিকানাসংসদ মার্গ, নতুন দিল্লি, ভারত
শহরনতুন দিল্লি
দেশ ভারত
স্থানাঙ্ক২৮°৩৭′০২″ উত্তর ৭৭°১২′২৯″ পূর্ব / ২৮.৬১৭১৮৯° উত্তর ৭৭.২০৮০৮৪° পূর্ব / 28.617189; 77.208084
নির্মাণ শুরু হয়েছে১৯২১
খোলা হয়েছে১৯২৭
স্বত্বাধিকারীব্রিটিশ ভারত(১৯২৭-১৯৪৭)
ভারত সরকার (১৯৫০-বর্তমান)
নকশা এবং নির্মাণ
স্থপতিএডউইন লুটিয়েন এবং হারবার্ট বেকার
অন্যান্য তথ্য
আসন ধারণক্ষমতা৭৯০

সংসদ ভবন ভারতের সংসদের আসন। এটি রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৭৫০ মিটার দূরত্বে সেন্ট্রাল ভিস্তাকে অতিক্রম করা সংসদ মার্গ বরাবর অবস্থিত; ভবনটি ইন্ডিয়া গেট, যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আবাস, মন্ত্রিসভা ও ভারত সরকারের অন্যান্য প্রশাসনিক একক দ্বারা বেষ্টিত। এটিতে লোকসভা ও রাজ্যসভা রয়েছে, যা ভারতের দ্বিখণ্ডিত সংসদে যথাক্রমে নিম্ন ও উচ্চতর সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব করে।

বিদ্যমান ভবনটি মোরেনার চৌসথ যোগিনী মন্দিরের অনুপ্রেরণায় নির্মিত এবং ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের জন্য নির্মিত হয়। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পরে, এটি ভারতের গণপরিষদ দ্বারা অধিগ্রহণ করা হয়, যা ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পরে ভারতের সংসদ হিসাবে পরিচিত হয়।[১]

২০১০-এর দশকে, সেন্ট্রাল ভিস্তা পুনর্নির্মাণ এবং ২০২৪ সালে সমাপ্তির প্রত্যাশায় একটি কর্মসূচী শুরু করায় বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক ভবন পুনর্নির্মাণ বা স্থানান্তর করার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।[২] যেহেতু ভারত তার সংসদের সদস্যপদ সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়েছে, সেই কারণে নতুন সংসদ ভবনটি অধিক আসনবিধানের জন্য ১,৩৫০ জন সদস্য আসন বিশিষ্ট হবে। ২০২২ সালের জুন মাসে নতুন ভবনটি কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এরপরে পুরাতন ভবনটিকে একটি যাদুঘরে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।[৩] ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর নতুন সংসদ ভবনের ভূমিপূজা ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী[৪][৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

নতুন দিল্লির বৃত্তাকার সংসদ ভবন হল কেন্দ্রীয় আইনসভার কেন্দ্র

মূলত হাউস অব পার্লামেন্ট হিসাবে ডাকা হয়, ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েনস ও স্যার হারবার্ট বেকার ব্রিটিশ ভারতের জন্য একটি নতুন প্রশাসনিক রাজধানী শহর নির্মাণের বৃহত্তর ম্যান্ডেটের অংশ হিসাবে ১৯১২-১৯১৩ সালে ভবনটির নকশা করেন। সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ ১৯২২ সালে শুরু হয় এবং এর কাজ ১৯২৭ সালে সমাপ্ত হয়।

সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ১৯২৭ সালের ১৮ জানুয়ারি গভর্নর-জেনারেল লর্ড আরউইন দ্বারা সঞ্চালিত হয়, যা তৎকালীন সময়ে ইম্পেরিয়াল আইন পরিষদ স্থাপন করে।[৬]

আরও স্থানের চাহিদার কারণে ১৯৫৬ সালে কাঠামোর সাথে দুটি তলা যুক্ত করা হয়।[৭]

২০০৬ সালে খোলা সংসদ জাদুঘরটি সংসদীয় গ্রন্থাগারের ভবনে সংসদ ভবনের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে।

ভবন[সম্পাদনা]

বাইরের পরিধিটি বৃত্তাকার, বাইরে ১৪৪ টি কলাম বা স্তম্ভ রয়েছে। ভবনের কেন্দ্রে বৃত্তাকার কেন্দ্রীয় চেম্বার রয়েছে এবং এই চেম্বারের চারপাশে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার হল রয়েছে, যা চেম্বার অফ প্রিন্সেস (বর্তমানে গ্রন্থাগার হল হিসাবে ব্যবহৃত হয়), রাজ্য কাউন্সিল (বর্তমানে রাজ্যসভার জন্য ব্যবহৃত হয়) এবং কেন্দ্রীয় আইনসভার (এখন লোকসভার জন্য ব্যবহৃত হয়) অধিবেশনগুলির জন্য নির্মিত হয়েছিল। ভবনটি চারপাশে বিশাল উদ্যান দ্বারা বেষ্টিত এবং পরিধিটি বেলেপাথরের রেলিং (জালি) দ্বারা ঘিরে দেওয়া হয়েছে।[৮]

নতুন ভবনের নির্মাণ[সম্পাদনা]

পুরানো কাঠামোর স্থায়িত্বের উদ্বেগের কারণে বিদ্যমান কমপ্লেক্সটি প্রতিস্থাপনের জন্য একটি নতুন সংসদ ভবনের প্রস্তাব ২০১০-এর দশকের গোড়ার দিকে উত্থিত হয়।[৯] বর্তমান ভবনের বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়ার জন্য একটি কমিটি ২০১২ সালে তৎকালীন লোকসভার অধ্যক্ষ (স্পিকার) মীরা কুমার গঠন করেন। বর্তমান ভবন ৯৩ বছরের পুরানো একটি কাঠামো, হাউজের সদস্য ও তাদের কর্মীদের স্থানের অপ্রতুলতা এবং কাঠামোগত সমস্যায় ভুগছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ভবনটি ঐতিহ্যের কারণে সুরক্ষিত করা দরকার।[১০]

ঘটনা[সম্পাদনা]

সংসদ ভবনে ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জইশ-ই-মুহাম্মদের পাঁচজন সন্ত্রাসী আক্রমণ করে। এই ঘটনাতে সকল হামলাকারী ছাড়াও ছয়জন সামরিক কর্মকর্তা এবং একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।[১১]

ছবি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; HT20 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Drishti নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. "Parliament session will be held in new building in 2022: Lok Sabha Speaker"The Times of India। ৮ জানুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  4. "নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস এবং ভূমিপূজা করলেন মোদী"। www.anandabazar.com। আনন্দবাজার পত্রিকা। ১০ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০২০ 
  5. "'দেশের এক গৌরবোজ্জ্বল দিন', আইনি জটিলতা কাটিয়ে নতুন সংসদ ভবনের ভূমিপুজো মোদীর"। bengali.indianexpress.com। আইই বাংলা - দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ১১ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০২০ 
  6. "History of the Parliament of Delhi"। delhiassembly.nic.in। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  7. https://indianexpress.com/article/india/central-vista-project-new-delhi-dr-bimal-patel-parliament-prime-minister-office-rajpath-6212011/
  8. "Parliament House: 144 pillars of pride"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৮ 
  9. "Delhi may see a new Parliament building"timesofindia.indiatimes.com। ১৩ জুলাই ২০১২। ১৫ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  10. Firstpost (১৩ জুলাই ২০১২)। "Speaker sets up panel to suggest new home for Parliament"। Firstpost। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১২ 
  11. "Terrorists attack Parliament; five intruders, six cops killed"rediff.com। ১৩ ডিসেম্বর ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]