বাদামী গাছফড়িং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(বাদামি পাতাফড়িং থেকে পুনর্নির্দেশিত)

Nilaparvata lugens
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Hemiptera
পরিবার: Delphacidae
গণ: Nilaparvata
প্রজাতি: N. lugens
দ্বিপদী নাম
Nilaparvata lugens
(Stål, ১৮৫৪)

বাদামী গাছফড়িং (ইংরেজি: Brown Planthopper) Delphacidae গোত্রের Nilaparvata lugens (Stal) প্রজাতির সাধারণ নাম। সবুজ ধানের অন্যতম শত্রু বাদামী গাছফড়িং।[১] এটি কারেন্ট পোকা নামেও পরিচিত।[২] এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে, ফলে এ পোকার সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত হপারবার্ণ - এর সৃষ্টি হয়।

আকার আকৃতি[সম্পাদনা]

এগুলোর গায়ের রঙ বাদামি বা গাঢ় বাদামী। পূর্নবয়স্ক পোকা লম্বা ও খাটো দু’ধরনের হয়ে থাকে। এগুলোর দেহ খুবই নরম এবং স্ত্রী পোকার পেট পুরুষ অপেক্ষা বেশ বড়ো।[২] পূর্নবয়স্ক পোকা ৩.৫-৫.০ মি.মি. লম্বা। স্ত্রী পোকা পুরুষ অপেক্ষা বড়।[৩]

জীবনবৃত্তান্ত[সম্পাদনা]

এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা (নিম্ফ) বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায় এবং পূর্ণবয়স্ক ফড়িং এ পরিণত হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয়। প্রথম পর্যায়ের (ইনস্টার) বাচ্চাগুলোর রং সাদা এবং পরের পর্যায়ের বাচ্চাগুলো বাদামী। বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়স্ক বাদামী গাছফড়িং ছোট পাখা এবং লম্বা পাখা বিশিষ্ট হতে পারে।[৩] ধানে শীষ আসার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশি থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো সাধারণত গাছের গোড়ার দিকে বেশি থাকে। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে, যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে।[২]

ক্ষতির প্রকৃতি[সম্পাদনা]

বাদামী গাছফড়িং খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে সংখ্যা এত বেড়ে গিয়ে আক্রান্ত জমিতে হপারবার্ণ এর সৃষ্টি হয়।[৪] আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলদে হয় এবং পরে শুকিয়ে মারা যায়। লম্বা পাখাবিশিষ্ট পূর্ণবয়স্ক বাদামী ফড়িংগুলো প্রথমে ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে। কখনও কখনও বাচ্চা ওপূর্নবয়স্ক উভয় অবস্থায় এ পোকা ধান গাছের গোড়ায় বসে রস শুষে খায়। বাদামী গাছফড়িং গ্রাসি স্টান্ট, র‌্যাগেট স্টান্ট ও উইল্টেড স্টান্ট নামক ভাইরাস রোগ ছড়ায়।[২]

দমন ব্যবস্থা

১. সারিবদ্ধ ভাবে ধান রোপন করতে হবে।

২.পাইমেটোজিন +নিতেনপাইরাম অথবা শুুুুধু পাইমেটোজিন প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম দিয়ে গাছের গোড়া ভালো ভাবে স্প্রে দিতে হবে।


আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Khush, GS (১৯৯৯)। "Green revolution: preparing for the 21st century."Genome42 (4): 646–55। ডিওআই:10.1139/g99-044পিএমআইডি 10464789 
  2. বিশ্বাস, বিবেকানন্দ (জুন ২০১৪)। "কৃষি কীটতত্ত্ব"। ওয়াহাব, আবদুল। আধুনিক কীটতত্ত্ব। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ৫০৩। আইএসবিএন 984-07-5355-X 
  3. ভট্টাচার্য, গোপালচন্দ্র (১৯৮৬)। "কৃষি কীটত্ত্ব"। বাংলার কীটপতঙ্গ। কোলকাতা, ভারত: দে’জ পাবলিশিং। 
  4. Preap, V.; Zalucki, M. P.; Jahn, G. C. (২০০৬)। "Brown planthopper outbreaks and management"। Cambodian Journal of Agriculture7 (1): 17–25।