সন পল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সন পল
প্রাথমিক তথ্য
জন্মনামসন পল রায়ান ফ্রান্সিস হেনরিকস
জন্ম (1973-01-09) জানুয়ারি ৯, ১৯৭৩ (বয়স ৫১)
কিংস্টন, জামাইকা
ধরনড্যান্সহল, রেগে, ফিউশন
পেশাগায়ক, গীতিকার, সুরকার, রেকর্ড প্রডিউসার
কার্যকাল১৯৯৬–বর্তমান
লেবেলভিপি রেকর্ডস, আটলান্টিক রেকর্ডস
ওয়েবসাইটallseanpaul.com

সন পল রায়ান ফ্রান্সিস হেনরিকস (ইংরেজি: Sean Paul Ryan Francis Henriques) একজন জ্যামাইকীয় ড্যান্সহল এবং রেগে সংগীত শিল্পী যিনি সন পল নামেই বেশি পরিচিত।[১] (জন্ম: জানুয়ারি , ১৯৭৩)।[১][২] রেগে সংগীতে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার জন্য তিনি ২০০৪ সালে গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

জীবন ও চরিত[সম্পাদনা]

১৯৭২–৯৬: শৈশব ও পরিবার[সম্পাদনা]

সন পল জামাইকার কিংস্টন শহরে জন্ম গ্রহণ করেন এবং সেখানে শৈশবের বছরগুলো কাটান।[২] তার পিতা ছিলেন ক্রীড়াবিদ ও মাতা একজন গুণী চিত্রশিল্পী। পরিবারের আরও অনেক সদস্য খেলাধুলার সাথে জড়িত ছিল। সন নিজেও জামাইকার জাতীয় সাঁতার দলের জন্য ১৩ থেকে ২১ বৎসর পর্যন্ত খেলতেন কিন্তু গানের জন্য তিনি সরে আসেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি,জামাইকা (UOT) থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্টের উপর পড়াশোনা করেন।

১৯৯৮–২০০০: স্টেজ ওয়ান[সম্পাদনা]

প্রডিউসার জেরেমি হারদিঙ্গ তার ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে সনের প্রতিভার কথা শুনেন, যার গান গাওয়ার ধরন জনপ্রিয় ডিজে এবং টুইস্টার সুপার ক্যাট-এর মতন।[৩] পরবর্তীতে জেরেমি হারদিঙ্গ সন পলকে তার স্টুডিওতে ডাকেন। সাক্ষাৎ পর্বেই জেরেমি হারদিঙ্গ সন পলকে দিয়ে বেবি গার্ল গানটি রেকর্ডিং করান। যেটি পরবর্তীতে জামাইকাতে জনপ্রিয়তা পায়। সন পল জেরেমি হারদিঙ্গের স্টুডিওতে নিয়মিতভাবে গান রেকর্ড করা শুরু করেন। সন পলের একক গানসমূহ আঞ্চলিকভাবে শ্রোতাপ্রিয়তা পেতে শুরু করলে জেরেমি হারদিঙ্গ সন পলকে পেশাদার শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করতে থাকেন এবং তিনি সনের ম্যানেজারের দ্বায়িত্ব নেন। যার ফলশ্রুতে ২০০০ সালে তার প্রথম অ্যালবাম স্টেজ ওয়ান (Stage One) মুক্তি পায়।

২০০১–০২: ডাট্টি রক[সম্পাদনা]

২০০২ সালে, সন বেশ কিছু প্রতিভাবান কম্পসার এবং প্রডিউসারের সাথে কাজ করে মুক্তি দেন তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ডাট্টি রক (Dutty Rock) মুক্তি দেন, যা কিনা এখন পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে সফল অ্যালবাম। এতে রয়েছে দুইটি ইউএস #১ গান, তারমধ্যে একটি হল গেট বিজি এবং অন্যটি বিয়ন্সের সাথের বেবি বয়, যা কিনা টানা ৯ সাপ্তাহ প্রথম স্থান দখল করে ছিল। এছাড়া গিমি দ্যা লাইট (Gimme the Light), গেট বিজি (Get Busy), আ'ম স্টিল ইন লাভ উইথ ইয়উ (I'm Still in Love with You) এবং লাইক গ্লু (Like Glue) গানসমূহ তুমুল সাড়া জাগায়। অ্যালবামটি সারা বিশ্বে ৬০ লক্ষ কপির অধিক বিক্রি হয় এবং সেই সাথে সন পলের ক্যারিয়ার পৌঁছে যায় শক্তিশালী অবস্থানে। এই সাফল্যে অনেক বড় বড় শিল্পীর সাথে তার কাজ করার সুযোগ হয়। 'ডাট্টি রক' অ্যালবামের জন্য ২০০৪ সালে সন পল গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।

২০০৩–০৫: দ্যা ট্রিনিটি[সম্পাদনা]

২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর ২৭ তারিখে সন পল তার তৃতীয় অ্যালবাম দ্যা ট্রিনিটি (The Trinity) মুক্তি দেন। এই অ্যালবামটিও পূর্বেরটির মতন সাফল্য লাভ করে। এর মধ্যে ৫টি গান টপচার্টের শীর্ষস্থান দখল করে । উই বি বার্নিন (We Be Burnin'), এভার ব্লেইজিন (Ever Blazin'), গিভ ইট আপ টু মি (Give It Up To Me), নেভার গনা বি দ্যা সেম (Never Gonna Be The Same) এবং ইউএস টপচার্ট #১ গান টেম্পারেচার (Temperature)।

২০০৬–১০: ইম্পেরিয়াল ব্লেইজ[সম্পাদনা]

ইম্পেরিয়াল ব্লেইজ (Imperial Blaze) ২০০৯ সালের ১৮ অগাস্ট মুক্তি পায়। এই অ্যালবামটির অধিকাংশই প্রডিউস করেন তার দেশীয় ২১ বছর বয়সী প্রডিউসার স্টিফেন "দি জিনিয়াস" ম্যাকগ্রেগর। সাথে আরও ছিলেন সুপা ডাপস, ডিলানো থমাস, ডন করলেওন এবং সন পলের ছোট ভাই জেসন জিগজাগ সহ আরও অনেকে।[৪][৫] সো ফাইন (So Fine), প্রেস ইট আপ (Press It Up), হোল্ড মাই হ্যান্ড (Hold My Hand) এই অ্যালবামের শ্রোতা নন্দিত গানসমূহের কয়েকটি।

২০১১–বর্তমান: টমোহক টেকনিক[সম্পাদনা]

২০১২ সালে মুক্তি পায় সন পলের বহুল প্রত্যাশিত পঞ্চম স্টুডিও অ্যালবাম টমোহক টেকনিক (Tomahawk Technique)। এই প্রোজেক্টের জন্য সন পল কাজ করেছেন ইউরোপিয়ান প্রডিউসার স্টারগেট, শেলব্ল্যাক, বেনি ব্লাঙ্কো, ডিজে আমো, রিকো লাভ এবং আরও অনেকের সাথে।[৬][৭][৮] অ্যালবামটির প্রথম গান গট টু লাভ ইউ (Got 2 Luv U) মুক্তি পায় জুলাই ১৯, 20১১ তারিখে। এতে ফিচারিং করা হয় আমেরিকান গায়িকা আলেক্সিস জর্ডানকে। গানটি ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা ও এশিয়াতে প্রচুর সাড়া জাগায়। সেইসাথে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের টপচার্টে বেশ ভালো প্রভাব ফেলে। অ্যালবামটির দ্বিতীয় মুক্তিপ্রাপ্ত গান শি ডাজোনট মাঈণ্ড (She Doesn't Mind) মুক্তি পায় সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১১ তারিখে।[৯] শি ডাজোনট মাঈণ্ডের সাফল্য গোট টু লাভ ইউ-কেও পেছনে ফেলে দেয়। যথারীতি গানটি টপচার্ট সমূহে সেরা গানের খেতাব পায়। টমোহাক টেকনিকের গান সমূহ সন পলের গায়কীতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা ও স্বাদ। এই অ্যালবামের মাধ্যমে সন পল প্রডিউসার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার কম্পোজ করা রোল উইড দ্যা ডন এই অ্যালবাম-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৩ সালের আগস্ট-এ সন নিজের সপ্তম অ্যালবাম ফুল ফ্রিকোয়েঞ্চি প্রকাশের ঘোষণা দেন। অ্যালবামটি ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অ্যালবামটির শীর্ষ সংগীত "আদ্যার সাইড অব লাভ" মুক্তি পেয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

বরাবরই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে মিডিয়া থেকে দূরে রাখতে পছন্দ করেন সন। ২০১০ সালের জুনে হাঁটুর অস্ত্রপাচারের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি কনসার্ট বাতিল করেন এবং ডাক্তারের নির্দেশে দীর্ঘ ৬ মাস বেডরেস্টে ছিলেন।[১০] ২০০৭ সালের মার্চ মাসে সন পল নিজের দেশে অনুষ্ঠিত Cricket World Cup 2007-এ পারফর্ম করেন। হাইতিতে ২০১০ সালের ভুমিকম্পে খতিগ্রস্থদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। নিজ দেশে শিশু হসপিটাল গড়ে তোলার জন্য বন্ধু ও গায়ক শ্যাগি এবং আর অন্যান্য শিল্পীদের সাথে তহবিল সংগ্রহের কনসার্টে অংশগ্রহণ করেন। ২০১২ সালের মে, ২৬ তারিখে তিনি স্বদেশীও উপস্থাপিকা ও দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জোডী জিনক্সকে বিয়ে করেন। [১১] সন তার সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবাম টমোহক টেকনিকের হোল্ড অন (HOLD ON) শিরোনামের গানটি স্বদেশী দৌড়বিদ উসেইন বোল্ট এবং লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্‌স অংশগ্রহণকারী সকল জ্যামাইকীয় খেলোয়াড়কে উৎসর্গ করেন।

অ্যালবামসমূহ[সম্পাদনা]

স্টুডিও অ্যালবাম
মিক্সটেপ
  • দ্যা ওডিসি মিক্সটেপ (২০০৯)

চলচ্চিত্র তালিকা[সম্পাদনা]