লোকেশ চন্দ্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লোকেশ চন্দ্র
জন্ম১১ এপ্রিল ১৯২৭
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষাএম.এ., ১৯৪৭, পিএইচডি, ১৯৫০
পেশাপণ্ডিত
উপাধিপ্রাক্তন সভাপতি, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস[১]

লোকেশ চন্দ্র (জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯২৭) হলেন বৈদিক যুগ, বৌদ্ধধর্ম এবং ভারতীয় শিল্পকলার একজন বিশিষ্ট পণ্ডিত। ১৯৪২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে তিনি ৫৭৬টি বই এবং ২৮৬টি নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি ভারত সরকারের অনেক পদেও অধিষ্ঠিত হয়েছেন এবং দুবার ভারতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন (১৯৭৪ - ১৯৮০) এবং (১৯৮০-১৯৮৬)।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

১৯২৭ সালের ১১ এপ্রিল লোকেশ চন্দ্র ভারতের ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের আম্বালায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মহান ভাষাবিদ, বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত,রাজনীতিবিদ এবং ভারতীয় ঐতিহ্যের দার্শনিক আচার্য রঘুবীর পুত্র। ১৯৪৭ সালে লোকেশ চন্দ্র লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি নতুন আবিষ্কৃত পাণ্ডুলিপির সাহায্যে বৈদিক রচনা জৈমিনীয় ব্রাহ্মণ-এর গভাময়ন অংশ সম্পাদনা করেন। লোকেশ চন্দ্র পুরাতন জাভানিজ ভাষা অধ্যয়নের জন্য নেদারল্যান্ডসে যান। নেদারল্যান্ডসের ইউট্রেখ্ট‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত ইন্ডোলজিস্ট জান গোন্ডার কাছে জাভানিজ ভাষা অধ্যয়ন করেন। ১৯৫০ সালের মার্চ মাসে সামবেদে জৈমিনীয় ব্রাহ্মণ বিষয়ের উপর গবেষণা করে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[২]

১৯৫৪ সালে তিনি জৈমিনীয় ব্রাহ্মণের সমগ্র পাঠের একটি সমালোচনামূলক সংস্করণ রচনা করেন। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত লোকেশ চন্দ্র ১২+৭ সম্পূরক খণ্ডে একটি "তিব্বতি-সংস্কৃত অভিধান" প্রস্তুত করেন যা তিব্বতি সাহিত্য ও সংস্কৃতি জানার জন্য প্রথম ব্যাপক আভিধানিক প্রচেষ্টা। এর প্রভাব এশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছিল।[৩]

তিনি শুধুমাত্র একজন বিশিষ্ট পণ্ডিতই ছিলেন না, তিনি বেশ কয়েকটি কমিটির সদস্য হিসাবে ভারত সরকারের অনেক অফিসিয়াল পদও অধিষ্ঠিত ছিলেন। শিক্ষা, সরকারী ভাষা, পর্যটন, ভারী শিল্প এবং আরও অনেক বিষয় সরকারি পদে সামলেছেন। এর একটি কারণ তার দক্ষতা সুধু বৌদ্ধধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ভারতীয় শিল্পও ছিল তার প্রিয় ক্ষেত্র। এছাড়াও তিনি দুইবার (১৯৭৪-১৯৮০) এবং (১৯৮০-১৯৮৬) ভারতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন।[৪]

তিনি ২০১৪-২০১৭ সময়কালে ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদের সভাপতি ছিলেন।[৫] তিনি ভারতীয় রাজ্যসভার সদস্য, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনসের যুগ্ম-সভাপতি এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩]

অবদান[সম্পাদনা]

১৯৪২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে লোকেশ চন্দ্র অসংখ্য বই (একক বা সহ-লেখক হিসাবে) এবং নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তার মোট ৮৬২টি প্রকাশনা রয়েছে। যদিও বই এবং নিবন্ধের সম্পূর্ণ তালিকা এখানে দেওয়া সম্ভব নয়, তবুও প্রায়শই উদ্ধৃত কিছু বই এবং নিবন্ধের তালিকা নীচে দেওয়া হলো:

বই[সম্পাদনা]

  • ১২+৭ খণ্ডে তিব্বতী-সংস্কৃত অভিধান, নিউ দিল্লি, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ ইন্ডিয়ান কালচার অ্যান্ড আদিত্য প্রকাশন, ১৯৬১, পুনর্মুদ্রণ ১৯৭১, ১৯৯১, ১৯৯৩ সালে আইএসএসএন 0581-8532
  • নীলকণ্ঠ লোকেশ্বরা অ্যাজ দ্য বৌদ্ধিস্ট এপোথিওসিস অফ হরি-হরা, নয়াদিল্লি, ভারতীয় সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক একাডেমি, ১৯৭৯, ১৮ পৃষ্ঠা।[৬]
  • দ্য থাউজেণ্ড-আর্মড অবলোকিতেশ্বরা, প্রথম খণ্ড, নিউ দিল্লি, অভিনব পাবলিকেশন্স, ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস, ১৯৮৮, ৩০৩ পৃষ্ঠা, আইএসবিএন ৯৭৮৮১৭০১৭২৪৭৫[৭]
  • বৌদ্ধ আইকনোগ্রাফি অভিধান : শতা-পিটক সিরিজ সিরিজ: ইন্দো-এশীয় সাহিত্য, ১৫ খণ্ড, নতুন দিল্লি, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ ইন্ডিয়ান কালচার এবং আদিত্য প্রকাশন দ্বারা প্রকাশিত, ১৯৯৯-২০০৫, আইএসএসএন 0581-8532
  • বিশ্ব চিন্তা ও সংস্কৃতিতে ভারতের অবদান (লোকেশ চন্দ্র সম্পাদিত যৌথ কাজ), মাদ্রাজ, প্রকাশক: বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল কমিটি, ১৯৭১, ৮৩৮ পৃষ্ঠা।[৮]
  • তিব্বতের ট্রান্সসেন্ডেন্টাল আর্ট, নিউ দিল্লি, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ ইন্ডিয়ান কালচার এবং আদিত্য প্রকাশন দ্বারা প্রকাশিত, ১৯৯৬, ২৩৪ পৃষ্ঠাআইএসবিএন ৯৭৮৮১৮৬৪৭১৮৯০
  • ভারতের সাংস্কৃতিক দিগন্ত: তন্ত্র এবং বৌদ্ধধর্ম, শিল্প ও প্রত্নতত্ত্ব, ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন, শতা-পিটক সিরিজ : ৭ খণ্ডে, ইন্দো-এশীয় সাহিত্য, নতুন দিল্লি, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ ইন্ডিয়ান কালচার এবং আদিত্য প্রকাশন দ্বারা প্রকাশিত, ১৯৯০-১৯৯৮, আইএসবিএন ৮১৮৫১৭৯৫২২ (প্রথম খণ্ডের আইএসবিএন)।[৯]

প্রবন্ধ[সম্পাদনা]

  • দ্য অরিজিন অফ আভালোকিটেশ্বর, ইন্দোলজিকা টাউরিনেনিয়া, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ সংস্কৃত স্টাডিজ, খণ্ড XIII, পৃ.১৮৭-২০২, (১৯৮৫-১৯৮৬)।[১০]
  • অরিজিন অফ দ্য অবলোকিতেশ্বর অফ পোটালা , হিমালয়ান স্টাডিজের একটি জার্নাল, ১৯৭৯।[১১]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

২০০৬ সালে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Home | Official website of Indian Council for Cultural Relations, Government of India"www.iccr.gov.in 
  2. "Bio Data of Prof. Lokesh Ckandra, p.3" (পিডিএফ)Sanchi University if Buddhist—Indic Studies। ২৮ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৪  and 11 September 2021.
  3. "Bio Profile of Prof. Lokesh Chandra, President, ICCR | Indian Council for Cultural Relations"। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫  and 11 September 2021.
  4. "Bio Data of Prof. Lokesh Ckandra, p.2" (পিডিএফ)Sanchi University if Buddhist—Indic Studies। ২৮ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৪  and 11 September 2021.
  5. "Prof. Lokesh Chandra appointed as the 17th President of Indian Council for Cultural Relations" .
  6. Nīlakaṇṭha Lokeśvara as the Buddhist apotheosis of Hari-hara, read online : [১]. Retrieved 11 September 2021.
  7. The Thousand-armed Avalokiteśvara, Volume1, read online :[২]. Retrieved 9 September 2021. The book is also available on Internet Archive, read online:[৩]. Retrieved 11 September 2021.
  8. India's Contributions to World Thought and Culture, read online :[৪]. Retrieved 11 September 2021.
  9. Cultural Horizons of India: read online [৫]. Retrieved 11 September 2021.
  10. "The Origin of Avalokitesvara" (পিডিএফ)Indologica Taurinenaia, publié par International Association of Sanskrit Studies (IASS), Volume XIII, p. 187-202। ১৯৮৫–১৯৮৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ .
  11. "Origin of The Avalokiteśvara of Potala" (পিডিএফ)A Journal of Himalayan Studies. Ratna Pustak Bhandar: 21 pages। ১৯৭৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ .
  12. "Padma Bhushan Awardees"archive.india.gov.in। Government of India। ২৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৪  and 11 September 2021.