মাটির ঔদক ধর্মাবলি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভূত্বকের উপরিস্থিত মাটির অভ্যন্তরের ফাঁকা স্থানগুলো বায়ু ও পানি দ্বারা পূর্ণ থাকে। ফলে, মাটির প্রকৌশলগত গুণাগুণ বিশ্লেষণে প্রবাহী বলবিদ্যার সাহায্য নেয়া হয়। মাটির অভ্যন্তরস্থ ফাঁকা স্থানসমূহে স্থির বা প্রবহমান পানির ধারার মাটির গুণাগুণে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন আনে। পানি সংবলিত মাটির ধর্মাবলিকে মাটির ঔদক ধর্মাবলি বলা হয়। মাটিতে পানি থাকলে পরে মাটির বৈশিষ্ট্য এত বিচিত্র ধর্ম লাভ করে যে, মৃত্তিকা বলবিদ্যার জনক জনাব টারজাঘি বলেন যে, মাটিতে পানির উপস্থিতি না থাকলে মৃত্তিকা বলবিদ্যা অধ্যয়ন করবার প্রয়োজন পড়তো না।

মাটির মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে মাটির ভেদ্যতা, মাটির কার্যকরী চাপ, প্রবাহ জালিকা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যকে মাটির ঔদক ধর্মাবলি হিসেবে পাঠ করা হয়।

ভেদ্যতা[সম্পাদনা]

মাটির মধ্যকার শূন্যস্থানের ভেতর দিয়ে পানি বা কোন তরলের প্রবাহিত হবার ধর্মকে ভেদ্যতা বলা হয়। এটি মাটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঔদক ধর্ম। কোন অবকাঠামো যে মাটির উপর অবস্থিত, তার অন্তর্স্থিত পানির প্রবাহের হার কম-বেশি হলে, তথা ভেদ্যতার মান আদর্শ মানের চেয়ে কম বেশি হলে, পানির অধিক চোয়ানোর ফলে মাটির শক্তিমাত্রা পরিবর্তিত হতে পারে। ফলত, ঐ কাঠামো ধ্বসে পড়তে পারে।

যে মাটির মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে, সে মাটিকে ভেদ্য মাটি বলে। আর পানি প্রবাহিত হতে না পারলে তাকে অভেদ্য মাটি বলে। সাধারণত, বড় বড় পাথুরে কণা সংবলিত মাটির ভেদ্যতা অনেক বেশি হয়, এবং কর্দমাক্ত এটেল মাটির ভেদ্যতা সবচেয়ে কম হয়।

ভেদ্যতা সংক্রান্ত ডার্সির সূত্র[সম্পাদনা]

১৮৫৬ সালে বিজ্ঞানী ডার্সি কতকগুলো পরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে তার বিখ্যাত 'ডার্সির সূত্র' প্রকাশ করেনঃ

' মাটির ভিতর দিয়ে তরল পদার্থের প্রবাহের গতিবেগ মাটির ঔদক ঢালের সমানুপাতিক।'

অর্থাৎ, v varies as i

বা, v= ki

এখানে, v= বেগ

k= ভেদ্যতার সহগ

i= ঔদক ঢাল

ভেদ্যতার সহগকে k দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর এককঃ m/s.

ভেদ্যতা সংক্রান্ত এলেন হ্যাজেনের সূত্র[সম্পাদনা]

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এলেন হ্যাজেন তার অভিজ্ঞতালব্ধ নিম্নোক্ত সূত্রটি প্রদান করেছেনঃ

k= CD^2

এখানে, k= ভেদ্যতার সহগ

C= ধ্রুবক (এর মান সাধারণত ১০০ ধরা হয়)

D(10) = গোলকাকার মৃত্তিকা কণার কার্যকরী আকার (এই সূত্রের জন্য D(10) এর মান অবশ্যই সেন্টিমিটার এ নিতে হবে)