ব্যবহারকারী:Hossain Muhammad Ramzan/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী রহ্. ফুরফুরা (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফুরফুরা_(গ্রাম)) একটি গ্রামের নাম, ফুরফুরা একটি আধ্যাত্মিক দীনী সংগঠনের নাম। ফুরফুরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে অবস্থিত। গ্রামটি ফুরফুরা দরবারের শরিয়াত-ত্বরিক্বতভিত্তিক ইশাআতে ইসলাম (ইসলাম প্রচার) এর প্রাণকেন্দ্র রূপে পুরো উপমহাদেশে বিখ্যাত হয়ে আছে।[সূত্রঃ "The Hindu e-Paper Today: ePaper replica of the print newspaper"epaper.thehindu.com] এই গ্রামে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে দেশ-বিদেশ থেকে ফুরফুরা দরবারের খোলাফা, মুবাল্লিগীন, জাকেরিন, সাকেরিন, মুহেব্বীন, মুতাআল্লেকীন, মুতাআকেদীনসহ জাতি-ধর্ম বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আম জনতার ঢল নামে। করে।[তথ্যসূত্রঃ "Hooghly District"। Places of Interest, District administration] উল্লেখ্য, ১৩৭৫ সালে জনৈক মুকলিশ খান কর্তৃক নির্মিত একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে এই গ্রামের ইসলামী ইতিহাস শুরু হয়।[সূত্রঃ "West Bengal Tourism Policy, 2008"। Fairs and Festivals Tourism। Government of West Bengal, Department of Tourism] কথিত আছে যে, সেইসময়ে এক ক্ষত্রিয় রাজা এখানে রাজত্ব করত। রাজত্বকালে শাহ কবির হালিবি ও করমুদ্দিন নামে দুই মুসলিম সৈন্য এই ক্ষত্রিয় রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় লাভ করে।অন্য বর্ণনায় ৪ মুসলিম ভ্রাতা যুদ্ধ করে শহীদ হন।তাঁদেরকে ফুরফুরার ইতিহাসে ‘গন্জে শুহাদা’ বলা হয়।বিজয়ের পর যে আনন্দোৎসব করা হয়েছিল সে উৎসবকে ফার্সি ভাষায় ‘ফররে ফরাহ’ বলা হয়।কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে ‘ফররে ফরাহ’ শব্দ ফুরফুরা-তে পরিণত হয়।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম, ফুরফুরা দরবার, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর ঢাকা, বাংলাদেশ)। ফুরফুরা নামক এই গ্রামের জাঙ্গিপাড়ায় ১৯৪০ সালে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আগামী দিনের নায়েবে মুজাদ্দেদ, শেরে ফুরফুরা, আমির-উল-ইত্তেহাদ, যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ (তাওহীদবাদী), মহিউদ্দীন ওয়াল মহিউস্ সুন্নাহ হযরতুল আ’ল্লাম মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ। বংশ পরিচিতিঃ ফুরফুরা দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা মোজাদ্দেদে জামান খ্যাত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আবুবকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহর (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=ফুরফুরা+দরবারের+পীর+আবু+বকর+সিদ্দিকী+উইকি ) জ্যেষ্ঠ পুত্র শাইখুল ইসলাম আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহর (https://bn.wikipedia.org/wiki/=আবদুল+হাই+সিদ্দিকী+উইকি) বড় সাহেবজাদা মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ পবিত্র দীন ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন আবুবকর সিদ্দিকের رضي الله عنه (https://bn.wikipedia.org/wiki/ আবু_বকর) ৪১ তম অধ্বস্তন পুরুষ। ইঁনারা সবাই ইসলামের প্রথম খলিফা, মহানবী ﷺ এর প্রধান সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه এর সুযোগ্য জিসমানী(রক্ত সম্পর্কিত) বংশধর। এই বংশ মুররাহ ইবনে কাব (৮ম) পর্যায়ে স্বয়ং রসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মিলিত হয়ে ইবনে ফিহরে গিয়ে উভয় বংশ নিম্নরূপে আল কুরাইশে পরিণত হয়ঃ ১. হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ) ইবনে আবদুল্লাহ>২. আবদুল্লাহ ইবনে আবদে মুত্তালিব>৩. আবদে মুত্তালিব ইবনে হাসিম> ৪. হাসিম ইবনে আবদে মানাফ > ৫ মানাফ ইবনে কুসাই >৬.কুসাই ইবনে কিলাব > ৭.কিলাব ইবনে মুররাহ >৮.মুররাহ ইবনে কাব ৯. কাব ইবনে গালিব ১০ গালিব ইবনে ফাহর/ ১১.ফাহর/ফিহর (আল কুরাইশি) ইবনে মালিক। আবু বকর رضي الله عنه এর বংশ ধারা ১.আবদুল্লাহ ইবনে উসমান> ২. উসমান ইবনে আমির>৩. আমির ইবনে আমর>৪.আমর ইবনে কাব>৫. কাব ইবনে সাদ>৬. সাদ ইবনে তায়িম>৭. তায়িম ইবনে মুররাহ>৮.মুররাহ ইবনে কাব> ৯.কাব ইবনে লুয়াই> ১০.লুয়াই ইবনে গালিব>১১. গালিব ইবনে ফিহর (আল কুরাইশি)ইবনে মালিক। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ –হযরত মুহাম্মদﷺ ৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দ – আবদুল্লাহ ৪৯৭ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ আল-মুত্তালিব ৪৬৪ খ্রিষ্টাব্দ – হাশিম ৪৩৯ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ মানাফ ৪০৬ খ্রিষ্টাব্দ – কুসাই ৩৭৩ খ্রিষ্টাব্দ – কিলাব ৩৪০ খ্রিষ্টাব্দ – মুররাহ ৩০৭ খ্রিষ্টাব্দ – কা'য়াব ২৭৪ খ্রিষ্টাব্দ – লু'আহ ২৪১ খ্রিষ্টাব্দ – গালিব ২০৮ খ্রিষ্টাব্দ – ফিহর (সূত্রঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/মুহাম্মাদের_বংশধারা) হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রচলিত এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা জীবনঃ ফুরফুরা মাদরাসাতে হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। তৎকালীন সিলেবাস অনুযায়ী মোমতাজুল মুহাদ্দেসীন পর্যন্ত বিভিন্ন কেতাব, যেমনঃ তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাশশাফ, তাফসীরে বায়জাভী, সিহাহ্ সিত্তাসহ সকল কিতাব তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় আলেম ও মোহাদ্দেসদেরর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কুরআন, হাদীস, ফিকহ, আকাইদ, মানতিক, ফালসাফা, ইতিহাস ও কাব্য সাহিত্যে তিনি বিশেষ বুৎপত্তি লাভ করেন। দোঁক মাদ্রাসায় সালে আউয়াল, সালে দোম, শোম, চাহারাম,পাহ্চমসহ সালে শশম পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এ সময় তিনি বাকুরাতুল আদম, উর্দু পহেলি ও দুসরি, তাজবিদুল কুরআন, মিজান ও মুনশারি’ব, রওজাতুল আদব, আজীজুন নুহাত নাহু, উর্দু তেসরি, ফার্সি দুসরি, আরবি আদব, কিতাবুল মুনসেফ, উর্দু চৌথি, হেদায়াতুন নাহু, কায়লবী আদবের কেতাব, ফিকাহ মালাবুদ্দামিনহু, ফিকাহ নুরুল ইজাহ, গোলেস্তা, ফার্সি সাহিত্য, নাহুর কিতাব কাফিয়া, সরফের কিতাব সাফিয়া, ফিকাহ কুদুরী, উসুলে শাশি, তারিখে হাবীবে এলাহা ইত্যাদিসহ তাজবীদ, তার্জমাসহ কুরআন শরীফ অধ্যয়ন করেন। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) । আলেমে আউয়াল, আলেমে দোম, ফাজেলে আউয়াল, ফাজেলে দোম ও মোমতাজুল মোহাদ্দেসীন ক্লাসের বিভিন্ন কিতাব, যেমন আরবি আদব, সাহিত্য আল মুকতারাত, আল মুনতাখাবাত, মাকামাতে হারিরি, আল কেতাব, তারিখে ইসলাম, ফিকাহ হেদায়া, শরহে বেকায়া, মানতেকের কেতাব, মাইবুজি, সুল্লামুল উলুম, উসুলে ফেকাহ, নুরুল আনোয়ার, মুসালিমুস সুবুত, হেকমাতের কেতাব হেদায়াতুল হেকমত, তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাসসাফ, মেশকাত শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ , ইবনে মাজাহ শরীফ, তিরমিজী শরীফ আবু দাউদ শরীফ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এছাড়া দীনী শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ভূগোল ইত্যাদি জেনারেল বিষয় শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত ছিল। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫) পীর সাহেবের মেঝ ভাই মুফতীয়ে আজম মাওলানা আবু ইবরাহীম ওবায়দুল্লাহ সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ লিখেছেনঃ “আমাদের আব্বা হুজুর পরতাপে কাইয়ুমুজ্জামান শায়খুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবু নসর মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রহ.) ছোট বেলা থেকেই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বড় ভাই সাহেবকে গড়ে তুলেছিলেন। নিজের সরাসরি তত্ত্বাবধানে যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী ও ওলামায়ে কেরামের দরস-তালিমের মাধ্যমে তিনি বড় ভাই সাহেবকে যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তোলেন। সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আল্লাহর ওলীদের সোহবত ও তাওয়াজ্জুহ হতে আমার বড় ভাই সাহেব ইলমে লাদুন্নির ফায়েজ পেয়েছিলেন। যেমনভাবে মুজাদ্দেদে জামান (রহ.) তাঁর বড় ছেলে শায়খুল ইসলাম বড় হুজুর (রহ.)কে, মেজ হুজুর (রহ.)কে আল্লামা রুহুল আমীন (রহ.)-কে ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ দিয়েছিলেন তেমনি আমার বড় ভাই সাহেবও ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ পেয়েছিলেন।” (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫-৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) । বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের ঢাকার মীরপুরের ২/২ দারুস সালামে অবস্থিত ‘মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম’ নামক স্থাপনা নির্মাণ করে হুগলিতে পিতৃ (পীর আবদুল হাই সিদ্দিকী) প্রতিষ্ঠিত ‘বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ’ বাংলাদেশেও গড়ে তোলেন এবং সংগঠনের পরিচালক হিসাবে আমৃত্যু বিশ্বব্যাপী ইসলামের দাওয়াতি কাজ সম্পন্ন করেন। এছাড়া পীর সাহেবের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশিতে প্রায় ১০০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ আরবী বিশ্ববিদ্যালয়। এখানেও ঢাকা দার-আস-সালামের ন্যায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশ হতে লক্ষ লক্ষ মুরীদ-মুহেব্বীনের সমাগম ঘটায় এতদন্চলের মানুষ বিশাল এ ধর্মীয় সমাবেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ব ইজতেমা মনে করেন। মৃত্যুর পূর্বে ২০০৫ সালে দারুস সালামে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুবাল্লেগ সম্মেলনে উনার জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা আল্লামা শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকীকে গদ্দীনসীন পীর মনোনীত করে যান। সেমতে, বর্তমানে শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী যুগপৎ বাংলা-ভারতে ফুরফুরার গদ্দীনসীন পীরের দায়িত্বে রয়েছেন। উল্লেখ্য, শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী হাফিজাহুল্লাহ ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه (রদ্বিয়াল্লাহু আনহর) ৪২ তম অধ্বস্তন পুরুষ। তাছাড়া, মৃত্যুর আগে ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার আল কুরাইশী (রহিমাহুমুল্লাহ)সিদ্দিকী বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ সংগঠনের আওতায় ছাত্র-যুব সংগঠন ‘হিযবুল্লাহ হিলফুল ফুযুল’, মা-বোনদের জন্য ফাতেমা জামাত, কুরআন-হাদীস রিসার্চ সেন্টার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।পীর সাহেবের তত্ত্বাবধানে ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে শতাধিক দীনী কিতাব প্রকাশিত হয়। ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে প্রকাশিত কিছু বই• . ইসলামী আকীদা শিক্ষা • ফুরফুরার ইতিহাস • ওযীফা ও নামাজ শিক্ষা • আমপারা তাফসীর • জাহান্নামের ছয় রমনী • কেন মুসলমান হলাম? • সুন্নত ও বিজ্ঞান • ওপেন সিক্রেট • কম্পিউটার ও আল কোরআন • বান্দার হক • সৃষ্টির সেবা ও সুন্দর আচরন • আলামতে কিয়ামত • নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা • দি গাইড • মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবুবকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ)এর জীবনী • শাইখুল ইসলাম হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ) এর জীবনী • নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা • সংবাদ পত্রের পাতায় হযরত আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ) • প্রাথমিক চিকিৎসা গাইড • অল্প পুঁজি বেশী রুজি • মরা মানুষের কান্না • এই তো সেই ওলি • মুসলমানি বিবাহ • তালিমুন নিসা • জাহান্নামের আগুনে ত্রিশ সেকেন্ড • মাওলানা রুহুল আমিন (রহ)এর জীবন ও কর্ম বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম ঢাকা, বাংলাদেশের স্থাপনাসমূহ ►দারুল আজকার খানকাহ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ►দাওরাতুল হাদীস ভবন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা। ►তারবিয়াতুল মিল্লাত একাডেমী, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা। ►উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রদ্বিয়াল্লাহু আনহা)বালিকা মাদরাসা, মীরপুর দারুস সালাম, ঢাকা, ►দারুস সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ►কুতুবখানা গবেষণা কেন্দ্র, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ► মারেফাত হাউজ,ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ►কেন্দ্রীয় কার্যালয় সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ►ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা, ►ফুরফুরা খানকাহ, বাংলাবাজার, ঢাকা। পাবনার পাকশির ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ ►ওয়াজ মাহফিল স্টেজ, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা, ►দারুশ শরীয়ত রিয়াজুল জান্নাত মসজিদ কমপ্লেক্স, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা, ►দারুশ শরীয়ত ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা, ►দারুশ শরীয়ত কুতুবখানা, পাকশী, পাবনা, ►মাদরাসা ভবন,ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা, ►মেহমান খানা, পাকশী, পাবনা, ►দারুশ শরীয়ত গেইট, পাকশী, পাবনা। ঠাকুরগাও ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ ►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও, ►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ভবন, ফুরফুরা দরবার,ঠাকুরগাও, ►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মাদরাসা, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও,►ফুরফুরা খানকাহ, ঠাকুরগাও। এছাড়া, মেহেরপুর ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ ► দারুর রহমত খানকায়ে ফুরফুরা, মেহেরপুর ► গাংনী উপজেলা মারকাজ, ফুরফুরা খানকাহ, মেহেরপুর এছাড়াও বিভিন্ন জেলার স্থাপনাসমূহ নিম্নরূপঃ ●ফুরফুরা খানকাহ ও হুজরাখানা, ফরিদপুর ● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ফুরফুরা খানকাহ, রাজবাড় ● খানকায়ে ফুরফুরা, লেমুয়া, ফেনী ● ফুরফুরা খানকাহ, চট্টগ্রাম, ● ইসলাম মিশন মসজিদ, কালিগন্জ, ঝিনাইদা ● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা খানকাহ, খুলনা, ● ফুরফুরা খানকাহ, ভালুকা, ময়মনসিংহ। উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালের জুলাই-তে কলকাতায় পরবর্তীতে ঢাকা থেকে পৃথক সংস্করণে প্রকাশিত ফুরফুরার মুখপত্রঃ ‘নেদায়ে ইসলাম এবং ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাময়িকী ‘নেদায়ে মদীনার প্রধান পৃ্ষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেন নায়েবে মুজাদ্দেদ মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) । ভারতে ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ ভারতের অন্ততঃ ৫০ জেলায় ওয়াজ নসীহতসহ ফুরফুরা দরবারের বহুমুখী কার্যক্রম চলমান। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ ►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (টাইটেল) মাদ্রাসা, ভারত, ►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (কারিগরি) মাদ্রাসা, ভারত, ►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা হোস্টেল, ভারত, ►দার-আস-সুন্নাহ মেহমানখানা, ভারত, ►নেদায়ে ইসলাম অফিস, কোলকাতা, ভারত, দারুল আনসার ভবন, ভারত, ►ফুরফুরা খানকাহ, দোক, ভারত, ►উজল খানকাহ, ভারত ►হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ)জামে মসজিদ, ভারত। উল্লেখ্য, সিদ্দিকী বংশোদ্ভূত হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ) ছিলেন দিল্লীর মুঘল বাদশাহ আলমগীর আওরঙ্গজেবের পীর ভাই। সে সুবাদে হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুমুল্লাহ)কে বাদশাহ যে ভূমি লাখেরাজ করে দেন সেটি আজ ভারতের ঐতিহ্যবাহী মেদেনীপুর। (প্রকৃত নাম মাদানীপুর) নামে খ্যাত। (সূত্রঃ https://www.linkedin.com/article/edit/7074946711525216257/) মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহর তরিকতী জিন্দেগী মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ তরিকতের জিন্দেগীতে ধারাবাহিকভাবে যথাক্রমে স্বীয় পিতা শাইখুল ইসলাম মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিক রহিমাহুমুল্লাহ, তদীয় দাদা মোজাদ্দেদে জামান আবু সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ সূত্রে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আউলিয়াদের সাথে সম্পর্কিত হন। সেমতে পিতৃব্য মোজাদ্দেদে জামান খ্যাত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আবুবকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ সূত্রে যথাক্রমে তৎকালীন ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত পীর-ই-কামেল বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা নিবাসী সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুমুল্লাহ (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফতেহ_আলী_ওয়াসি), তদীয় পীর মীরশ্বরাইয়ের নিজামপুরে অবস্থিত ‘মলিয়াশ’ নামক গ্রামে শায়িত গাজিয়ে বালাকোট সুফী নূর মোহাম্মাদ নিজামপুরী রহিমাহুল্লাহ(https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সুফী+নূর+মোহাম্মাদ+নিজামপুরী) তদীয় পীর সৈয়দ আহামাদ শহীদ বেরেলভী রহিমাহুল্লাহর খলিফা, তদীয় পীর (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সৈয়দ+আহামাদ+শহীদ+বেরেলভী+)শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী ছিলেন (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=শাহ+আবদুল+আজিজ+মুহাদ্দিস+দেহলভী) উপমহাদেশে আধ্যাত্মিক জগতের প্রাণ পুরুষ শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রহিমাহুমুল্লাহ https://bn.wikipedia.org/wiki/শাহ_ওয়ালিউল্লাহ_দেহলভী এর সাহেবজাদা-এই সূত্রে রূহানী সম্পর্কে সম্পর্কিত ছিলেন ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনসীন পীর হযরতুল আল্লাম মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ। আহলে কাশফ ছিলেন ফুরফুরা দরবারের পীর হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) কাশফ মানে হল অজানা কোন বিষয় নিজের কাছে প্রকাশিত হওয়া। এ কাশফ কখনো সঠিক হয় আবার কখনো মিথ্যা হয়। কখনো বাস্তবসম্মত হয়, কখনো বাস্তব পরিপন্থী হয়। তাই এটিকে শরীয়তের কষ্টিপাথরে যাচাই করা আবশ্যক। সহীহ হাদীসে এসেছে عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ لِلشَّيْطَانِ لِمَّةً، وَلِلْمَلَكِ لِمَّةً، فَأَمَّا لِمَّةُ الشَّيْطَانِ فَإِيعَادٌ بِالشَّرِّ، وَتَكْذِيبٌ بِالْحَقِّ، وَأَمَّا لِمَّةُ الْمَلَكِ فَإِيعَادٌ بِالْخَيْرِ، وَتَصْدِيقٌ بِالْحَقِّ، فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ فَلْيَعْلَمْ أَنَّهُ مِنَ اللهِ، فَلْيَحْمَدِ اللهَ، وَمَنْ وَجَدَ مِنَ الْآخَرِ فَلْيَتَعَوَّذْ مِنَ الشَّيْطَانِ، ثُمَّ قَرَأَ {الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ وَفَضْلًا} [البقرة: ২৬৮] “নিশ্চয় মানুষের অন্তরে শয়তানের পক্ষ থেকেও কথার উদ্রেক হয়, ফেরেশতার পক্ষ থেকেও কথার উদ্রেক হয়। ফেরেশতার উদ্রেক হল, কল্যাণের প্রতি প্রতিশ্রুতি দান এবং হকের সত্যায়ন করা। যে ব্যক্তি এটি অনুভব করবে, তাকে বুঝতে হবে যে, তা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে, তাই তার প্রশংসা করা উচিত। আর যে ব্যক্তি দ্বিতীয়টি অনুভব করবে, তাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় কামনা করতে হবে। অতঃপর তিনি [সূরা বাকারার ২৬৮ নং] আয়াত পাঠ করেন, অর্থাৎ শয়তান তোমাদের অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। অপরদিকে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অধিক অনুগ্রহের ওয়াদা করেন”। {সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-১০৯৮৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৯৯৭, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৪৯৯৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৯৮৮} https://ahlehaqmedia.com//কাশফ-ও-ইলহাম-সম্পর্কে-শরয়/ আহলে ‘কাশফ’ এবং আহলে ‘ইলহামের’ অধিকারী ছিলেন নায়েবে মুজাদ্দেদ সাহেব-যার কারণে উনার জীবনের শেষ মুহুর্তের মূল্যবান সময়গুলির পূর্ণ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে করে নিজেকে চমৎকারভাবে আগাম গুছিয়ে ফেলা ছিল লক্ষ্যণীয়। সম্ভবতঃ এতে অনুপ্রাণিত করছিল কাশফ এবং ইলহাম।। বিশেষ করে সর্বদলীয় ইসলামী ঐক্য সম্মেলন অনুষ্ঠান কাশফের স্বাক্ষর বহন করে মৃত্যুর পূর্ববর্তী ২০০৫ সালে “তাঁর অবর্তমানে পরবর্তী গদ্দীনসীন পীর” মনোনয়নের মধ্যদিয়ে (যার বিশদ বিবরণী সামনে পেশ করা হবে ইনশাআল্লাহ)। হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ কাশফ সম্পর্কে বলেন, “বুযুর্গদের যে কাশফ হয়ে থাকে, তা তাঁদের ক্ষমতাধীন নয়।{ইলম ও আমল, বাসায়েরে হাকীমুল উম্মত-২১৫-২১৬} ইলহাম ইলহামের পারিভাষিক অর্থ হল, চিন্তা ও চেষ্টা ছাড়াই কোন কথা হৃদয়ে উদ্রেক হওয়া। ইলহাম কাশফেরই প্রকার বিশেষ। ইলহাম সহীহ হলে তাকে ইলমে লাদুন্নী বলা হয়ে থাকে। যে ইলহাম শরীয়তের কোন হুকুম আহকাম সম্পর্কিত এবং এর পক্ষে শরীয়তের দলীলও বিদ্যমান থাকে, শুধু এ ধরণের ইলহামকেই সহীহ ইলহাম বলা হবে এবং ধরা হবে এটি আল্লাহ তাআলা পক্ষ থেকে হয়েছে। এটি আল্লাহ তাআলার নিয়ামত বলে পরিগণিত হবে। এ ব্যাপারে তাঁর শোকর আদায় করা দরকার{ফাতহুল বারী-১২/৪০৫, কিতাবুত তাবীর, বাব-১০, রূহুল মাআনী-১৬/১৬-২২, তাবসিরাতুল আদিল্লা-১/২২-২৩, মাওকিফুল ইসলাম মিনাল ইলহাম ওয়াল কাশফি ওয়াররূয়া-১১-১১৪}। https://ahlehaqmedia.com//কাশফ-ও-ইলহাম-সম্পর্কে-শরয়/ অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, জটিল উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও আহলে হক্ব ফুরফুরা দরবারের পীর সাহেববৃন্দ ঐতিহ্যগতভাবে সুন্নাতি তরিকায় রয়ে সয়ে সবরে জামিলের মাধ্যমে ইলহাম-ইলকার আলোকে শরয়ী নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অন্তিমকালে যেভাবে প্রকাশমান হচ্ছিল ফুরফুরা দরবারের পীর হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) এর ‘কাশফ’ আর ‘ইলহাম-ইলকা’ ১৪২৬ হিজরি মোতাবেক ২০০৫ সাল থেকে পীর সাহেবের আখেরি জীবন-জিন্দেগিতে যেন প্রকাশমান হচ্ছিল কাশফ ও ইলহাম-ইলকা। মনে হচ্ছিল, হজ্ব কিংবা প্রবাসের দীর্ঘ সফরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার অনেক আগ থেকে যেমন দীর্ঘ পথযাত্রী মুসাফির তাঁর পারিবারিক, সামাজিক, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে জাগতিক লেনদেনের হিসাবের ইজা চুকিয়ে নেন; আত্মীয় স্বজন-বন্ধু বান্ধব যাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ জরুরী মনে করে তাঁদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ সেরে নেন, থাকেন প্রতিটা মুহুর্ত জরুরী কাজে ব্যস্ত সমস্ত- ঠিক সেভাবে আগামী দিনের নায়েবে মুজাদ্দেদ রহিমাহুল্লাহ উনার মৃত্যু পূর্ববতী একে একে সব কাজ যেন দ্রুত সেরে নিচ্ছিলেন। দারুস সালামে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুবাল্লেগ সম্মেলন-২০০৫ সম্পর্কে কিছু কথা ১৪২৬ হিজরী মোতাবেক ২০০৫ সাল। এই বছরের মাঝামাঝিতে পীর সাহেব আহবান করেছিলেন ঢাকার মীরপুরে অবস্থিত স্বীয় ফুরফুরা দরবারের মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম দারুস সালামে “জাতীয় মোবাল্লিগ সম্মেলন”। উদ্দেশ্যঃ এই সম্মেলনে ফুরফুরা দরবারের সর্বস্তরের মুবাল্লেগবৃন্দের প্রতি প্রয়োজনীয় অসমাপ্ত সাংগঠনিক দিক নির্দেশনা প্রদান এবং আগামীদিনের রাহবার মনোনয়নের ঘোষণা ইত্যাদি। জাতীয় মুবাল্লেগ সম্মেলনের কোনো এক দিবসের বাদ যোহর। খাওয়া দাওয়ার পর সবাই কায়লুলা অবস্থায়। এমন সময় দারুস সালাম মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা এলোঃ, মুবাল্লিগ ভাইয়েরা আপনারা সবাই মার্কায মসজিদে চলে আসুন, পীর সাহেবের জরুরী বয়ান আছে। জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হযরত মাওলানা আবুল বাশার জিহাদী (ওস্তাদ হুযুর) সাহেব পূর্বেই মসজিদে তাশরীফ এনেছেন। অতঃপর পীর সাহেব আসলেন। পীর সাহেব দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিভাগ, জেলা, থানাসহ সর্বস্তরের মুবাল্লিগবৃন্দের উদ্দেশ্যে বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরঅআনী-সূন্নী জমিয়তুল মুসলিমিন হিযবুল্লাহর জরুরী সাংগঠনিক দিক-নির্দেশনার ছাড়াও ফুরফুরা দরবারের আগামীদিনের রাহবার হিসাবে পরবর্তী গদ্দীনসীন পীর মনোনয়ন করেন। উক্ত মনোনয়নকালে পীর সাহেব জানালেনঃ ‘মেশকাত আমার সাথে জীবনে কখনও মিথ্যা বলেনি’। মনে করা হচ্ছিল, এতে পীর সাহেব সম্ভব্য সিদ্দিকে আকবার رضي الله عنه এর অনন্য আখলাক ‘সিদ্দিকীয়াতের’ প্রতি প্রসন্ন ইংগিত করলেন। ফুরফুরা দরবারের পীর হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) এর ২৯ বছরের নায়েবে মুজাদ্দেদী জীবন-জিন্দেগীর নির্বাচিত কতিপয় বরকতময় ওয়াজ-নসিহত তোমরা কুরআনের মুরীদ হও আশেকে কুরআন নায়েবে মুজাদ্দিদ রহিমাহুমুল্লাহ স্বীয় মুরীদানের প্রতি পীর সাহেবের অনুরোধঃ তোমরা আমার মুরীদ হয়ো না, তোমরা কুরআনের মুরীদ হও। তোমরা আল্লাহর হও ইশকে মাহবুব পীর সাহেব ওয়াজে বলতেনঃ তোমরা ফুরফুরার হয়ো না, তোমরা আল্লাহর হও। পবিত্র কুরআন নিষিদ্ধের দাবীর প্রতিবাদে পীর সাহেবঃ ভারতে একবার এক ইসলাম বিদ্বেষী কুরআন নিষিদ্ধ করা হোক-এই দাবীতে ভারতীয় আদালতে মামলা করে।সারা বিশ্বের মুসলমান তখন প্রতিবাদে গর্জে উঠে। ভারতের সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি যে রায় দেন পীর সাহেব তা উনার ওয়াজে অত্যন্ত আবেগের সাথে চমৎকারভাবে তুলে ধরতেন এই বলেঃ দাবী করে কুরআন ব্যান্ড করা হোক।ভারতের সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সাহেব উনার রায়ে বলেনঃ “কুরআন একটি স্বর্গীয় আইন-এই আইন রদ করার শক্তি পৃথিবীর কারো নেই”। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর (বেনজির ভূট্টো)হাতে কুরআন দেখে ক্লিনটনের বেটি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কী? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বললেন, এটা আমাদের পবিত্র কুরআন।তিনি (চেলসিয়া ক্লিনটন)কুরআন সংগ্রহ করে পড়ে মুগ্ধ হন এবং নিয়মিত কুরআন পড়েন। আর ঘুটে কুড়ানীর বাচ্চারা বলেঃ কুরআনে কীবা আছে? পীর সাহেব ছিলেন সত্যিকার হুব্বে রসূল ﷺ হুবে রসূল নায়েবে মুজাদ্দেদ প্রায় ওয়াজে ফরমাতেনঃ সুন্নাতের তাবেদারী নাজাতের একমাত্র পথ। আশেকে মুসলিম বলকান যুদ্ধ প্রসঙ্গে পীর সাহেবঃ বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সাথে সার্বদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বলা হয়।এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভয়াবহতা আশেকে মুসলিম জমিউল ক্বওল পীর সাহেব উনার ওয়াজে মাত্র একটি বাক্যে সুস্পষ্ট করতেন এই বলেঃ “বসনিয়ার মাটি খুঁড়লেই মুসলমানের কংকাল পাওয়া যায়”। আশেকে ইসলাম নাইন ইলেভ ট্রাজেডী প্রসঙ্গেঃ এই ট্রাজেডীকে কেন্দ্র করে ইসলামকে সন্ত্রাসবাদ, মুসলমানকে সন্ত্রাসবাদীরূপে চিহ্ণিতকরণের সুযোগ খুঁজে ইসলাম বিরোধী চক্র।এই সুযোগকে বানচাল করে পীর সাহেব নাইন ইলেভেন পরবর্তী ওয়াজ দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে ঘোষণা করতেন এই বলেঃ “শান্তির ধর্ম ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই”।(সূত্রঃ নেদায়ে মদীনা শরীফ, ২০০৩ ঈসাব্দ সংখ্যা) নায়েবে মুজাদ্দেদ মধ্যপন্থী ছিলেনঃ নায়েবে মুজাদ্দেদ মধ্যপন্থী ছিলেনঃ তোমরা একটি মধ্যপন্থী জাতি (আল কুরআন), মধ্যপন্থা নবুয়তের অংশ (আল হাদীস), মধ্যপন্থা উত্তম (আল হাদীস)। মধ্যপন্থী জাতি সত্বার অধিকারী পীর সাহেব মধ্যপন্থায় দরবার পরিচালনা করেছেন। ডানে ছিলেন শরীয়তের সিপাহসালার রূপে আল্লামা মুফতি সাঈদ আহামাদ মুজাদ্দেদী, পরবর্তীতে আল্লামা ডক্টর আ.ন.ম.আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহিমাহুল্লাহ বামে ছিলেন ত্বরিক্বতের সিপাহসালাহর মর্দে জাহিদ হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবুল বাশার জিহাদী হুযুর রহিমাহুল্লাহ। একজন তাওহীদের অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে অপর জন শিরকমুক্ত মারেফাতের অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে গদ্দীনসীন পীর সাহেবের নেতৃত্বে ফুরফুরা দরবারকে শতভাগ শিরক-কুফরমুক্ত বিশুদ্ধ শারিয়াত-ত্বরিক্বতী দরবারের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতেন। পীর সাহেব ছিলেন ধর্মীয় সহনশীল মহান ব্যক্তিত্বঃ পীর সাহেব ধর্মীয় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ব্যাহত করে-এমন কোনো ওয়াজ কখনও করতেন না। এমনকি যেদিন দিনের বেলায় ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেশব্যাপী চলছিল; সেদিন রাতে পীর সাহেবের ওয়াজ মাহফিল ছিল চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র আগ্রাবাদের ঐতিহাসিক জাম্বুরী মাঠে। কিন্ত্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকর কোনো বক্তব্য সেদিনের ওয়াজে তিনি দেন নি। গভীর রাতে যখন মাহফিল শেষে হেঁটে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ রোড দিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম, রাস্তায় টহলরত ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষী দল। দাঁড়ি টুপিওয়ালা হিসাবে আমাদেরকে দেখেই তেড়ে আসে সত্য; কিন্ত্ত যখন বললাম: “জাম্বুরী মাঠে ফুরফুরা শরীফের মাহফিল থেকে এসেছি”-শুনেই সাথে সাথে ছেড়ে দিলেন আমাদেরকে। বিধর্মীর ঘরে আগুনঃ মুসলমানের করণীয় সম্পর্কে দরবারে ফুরফুরার শিক্ষা হিন্দুর ঘরে আগুন লেগেছে। এমন সময় মুসলমান নামাযরত-এমতাবস্থায় করণীয় নির্দেশ করে পীর সাহেব ফুরফুরা দরবারের ফতোয়া উদ্বৃত করে বলতেনঃ নামায ছেড়ে বিধর্মীর ঘরের আগুন নেবাও (সূত্রঃ ফুরফুরা দরবারের মুখপত্র নেদায়ে ইসলাম)। জাতীয় ঘটনা প্রবাহের প্রতিও পীর সাহেবের ছিল সজাগ দৃষ্টি বৈশ্বিক ঘটনা প্রবাহের পাশাপাশি জাতীয় জনগুরুত্বসম্পন্ন ঘটনাবলীর প্রতিও পীর সাহেবের ছিল সজাগ-সচেতন দৃষ্টি। এ পরিপ্রেক্ষিতে পীর সাহেব এ ব্যাপারে দেশবাসীর উদ্দেশ্য প্রায়শঃ দিক নির্দেশনামূলক বার্তা প্রকাশ করতেন দৈনিক ইনকিলাবসহ জাতীয় পত্রপত্রিকায়। উল্লেখ্য, পীর সাহেবের ইনতেকালের পর ভারত-বাংলাদেশে শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। নামাযে জানাযায় মাওলানা মুহিউদ্দিন খানসহ দেশবরণ্য উলামায়ে কিরাম, বুজুর্গানে দীন, রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ শরীক হন। আমিরুল ইত্তেহাদ, নায়েবে মুজাদ্দেদ, ফুরফুরা দরবারের পীর হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) এর মূল্যবান ওয়াজ-নসিহাত ►কোনো মুসলমানের দোষ না খুঁজে গুণ খুঁজবেন আর ভাই বলে জানবেন। কোনো মানুষকে, এমনকি কোনো বোবা জানোয়ারকেও কষ্ট দেবেন না। কাউকে ঘৃণা বা হিংসা করবেন না। হিংসামুক্ত হৃদয়ের অধিকারী জান্নাতী হবে এবং জান্নাতে সে রাসূলুল্লাহ ﷺএর সাহচর্য লাভ করবে। ►সকাল সন্ধ্যায় বেশি বেশি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ জিকির করবেন। কমপক্ষে ১০০বার অবশ্যই করবেন। এশাবাদ দরুদ শরীফ পড়বেন। তওবা-ইসতেগফার বেশি বেশি করবেন। ►বিপদে মুসিবতে পড়লে লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন এবং ওয়াল্লাহুল মুসতা’আনু আ’লা মা-তাসিফুন-পড়বেন। ►অসুখ—বিসুখে সূরা ফাতেহা পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে খাবেন। এমন ভাববেন না যে, হুযুরের মুখ পাক আর আপনার মুখ নাপাক। আল্লাহপাক সবার মুখই পাক করে সৃষ্টি করেছেন। ►আপনি যদি আল্লাহর সাথে কথা বলতে চান, কুরআন পড়ুন। ►যাদেরকে মসজিদ পাওয়া যাবে, তাদেরকে জান্নাতে পাওয়া যাবে। ►বাচ্চাদের আল্লাহ ওয়ালা বানান, দীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করুন। নেককার সন্তান কবরের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে, গোর আজাব বন্ধ হয়ে যায়। ►দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় অলি আল্লাহ ঐ ব্যক্তি; যিনি হালাল খানা খান, পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন এবং সুন্নাত মোতাবেক জীবন যাপন করেন। ►মেয়েরা নবী হয়নি কিন্ত্ত নবীদের মা হয়েছেন তারা। ওমা, তোমাদের কদর তোমরা বুঝলে না? সারা জীবন ঘর গোছালে, এবার একটু কবরটা গোছাও না মা। ►যে মেয়েলোক বেপর্দা হয়ে আধ নেংটা হয়ে রাস্তায় বের হয়ে যায়, এ তাকায়, ও তাকায়, সে তাকায়, ঐ মেয়েটা যেন হাজার হাজার মানুষের সাথে জেনা করতে করতে জাহান্নামের দিকে যাচ্ছে। মানুষের মন নষ্ট করে জান্নাত তো দূরের কথা, (জান্নাতের) সুঘ্রাণও নসিব হবে না। ►যে মেয়ে লোক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে, পর্দার সাথে থাকে, স্বামীর খেদমত করে, নিজের আব্রুর হেফাজত করে, ঐ মেয়ের জন্য আল্লাহর বেহেশ্তের আটটা দরজাই খোলা থাকে। ►মুসলমান কাকে বলে? যে আল্লাহর মতে চলে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাত মোতাবেক জীবন যাপন করে তাকেই মুসলমান বলে। ►ইসলাম মিটে না, মিটানো যায় না। যুগে যুগে যারা মিটাতে এসেছে-তারাই মিটে গেছে। ইসলাম ইসলামের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। ►যারা আল্লাহর হবে-তাদের পিছে রয়েছে খোদায়ী বল।