বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্যবহারকারী:তানজির/আজিজ সুপার মার্কেট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আজিজ সুপার মার্কেট[সম্পাদনা]

আজিজ সুপার মার্কেট শাহবাগ এ ,জাতীয় যাদুঘরের পাশে অবস্থিত। এটি একটি চৌদ্দ তলা ভবন।ভবনের প্রথম তিন তলা ও আন্ডারগ্রাউন্ড মার্কেট এবং বাকি অংশ আবাসিক ভবন।আজিজ সুপার মার্কেট_ বই, কাগজ ও কালির গন্ধে যেই পাড়াটা থাকত সবসময় মুখর, এখন সেখানেই পাওয়া যায় কাপড় আর রঙের গন্ধ। ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে শাহবাগ আসতেই হাতের বাঁ দিকে তাকালে চোখে পড়বে 'আজিজ সুপার মার্কেট'। কোনো ঝকঝকে, তকতকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক কোনো 'প্লাজা' নয়। অতি সাধারণ, সাদামাটা একটি মার্কেট। কখনোই চুনকাম হয়নি। ভালো লিফট নেই, পার্কিং নেই, সিঁড়ির অবস্থা করুণ, ভালো একটা রেস্টুরেন্ট নেই, কারেন্ট চলে গেলে পুরো মার্কেট অন্ধকারে ডুবে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়। যারা বাসাবাড়ি নিয়ে মার্কেটের ওপরে থাকেন, তাদের তো ভোগান্তির শেষ নেই। আহামরি কিছুই না, তারপরও আজিজ সুপার মার্কেটের কোনো বিকল্প নেই। আজিজ মার্কেটের তুলনা একমাত্র আজিজ মার্কেটের সঙ্গেই চলে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

জনৈক আজিজুল ইসলাম বায়নাসূত্রে মালিকানা নিয়ে নিজ নামে শপিং কমপ্লেক্স কাম অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করেন ১৯৮১ সালে। পাঁচ বিঘা জমির ওপর এই সুপার মার্কেটের যাত্রা শুরু হয় নব্বইয়ের দশকে। বই মার্কেট হিসেবে শুরু হয়েছিল এর যাত্রা। অল্পদিনেই পরিচিতি পায়। ধীরে ধীরে তরুণ লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক জগতের অনেকের আড্ডাস্থল আজিজ সুপার মার্কেট। এ মার্কেটের সামনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক লাইব্রেরি। ফলে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ছুটে আসতেন এখানে যখন-তখন। আজিজ সুপার মার্কেটকে এক কথায় পাঠাগারও বলা হতো প্রথম দিকে। মার্কেটটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল, যেখানে কলকাতার নন্দন চত্বর কিংবা কফি হাউসের স্বাদ পাওয়া যেত।

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

এখন এটি বাণিজ্যিক মার্কেটে পরিণত হয়েছে। সেখানে এখন স্বদেশী পোশাকের কাপড় ও রঙের গন্ধই নাকে এসে বেশি লাগে। কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের আনাগোনা এখনও রয়েছে, তবে আড্ডাটা জমে না আর সেভাবে। বরং সেখানে বেড়ে গেছে ফ্যাশনসচেতন তারুণ্যের পদচারণা। পেশাদারিত্ব নিয়ে যারা বইয়ের ব্যবসা শুরু করেছেন তারা এখনও টিকে আছেন, আর যারা তা করতে পারেননি তারা দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে এখান থেকে এভাবেই হারিয়ে গেছে অনেক বইয়ের দোকান। মুক্তচিন্তার মানুষের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠা আজিজ মার্কেট এখন দখল করে নিয়েছে অধিক মুনাফা অর্জনকারী নানা পণ্যের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৭ সালে 'পাঠক সমাবেশ' নিয়ে আজিজ মার্কেটের যাত্রা শুরু। এরপর বুক পয়েন্ট, প্রাকৃতজন, মনন, প্যাপিরাস, গ্রন্থ গ্যালারি, প্রাচ্য বিদ্যা, সুখ, এপিক ইত্যাদি নামে কয়েক বছরের মধ্যেই ৬০টির অর্ধিক বইয়ের দোকান গড়ে ওঠে। এখন মার্কেটটিতে বইয়ের দোকান আছে মাত্র ত্রিশটির কাছাকাছি। যাত্রা শুরুর সময়ের বুক পয়েন্ট, প্রাকৃতজনের মতো অনেক দোকান এখন কেবলই স্মৃতি। সেখানে দোকানগুলোর অস্তিত্ব পর্যন্ত নেই। আজিজ মার্কেটের সামনের খালি জায়গাজুড়ে এক সময় বৈশাখী, বর্ষা, স্বাধীনতা কিংবা অন্য শিরোনামে বইমেলার আয়োজন হতো। ফ্যাশন হাউসের পত্তনে সেসব মেলা আর হয় না। তবে এ মার্কেটের কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার উদ্যোগে ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরির সামনের খালি জায়গায় মেলার আয়োজন এখনও হয়। এখন মার্কেটটির নিচতলায় কেবল বইয়ের দোকান। নিচতলাসহ দোতলা থেকে শুরু হয়েছে টি-শার্টের দোকান, কিংবা ফ্যাশন হাউস। অথচ দোতলাতেই রয়েছে লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গণ, যা দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিনের অন্যতম ঠিকানা। এ প্রাঙ্গণে পাওয়া যায় তিন শতাধিক লিটল ম্যাগাজিন। আজিজ মার্কেটের এই বিবর্তনকে অনেকে দেখেন আধুনিকায়ন হিসেবে! অবশ্যই দেশীয় পোশাক নিয়ে আজিজ মার্কেটে যে আয়োজন রয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। তবে নতুন বইয়ের ঘ্রাণের সঙ্গে কি আর কিছুর তুলনা হয়?

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

http://www.samakal.com.bd/details.php?news=30&view=archiev&y=2012&m=06&d=11&action=main&menu_type=tabloid&option=single&news_id=265535&pub_no=1075&type