বানৌজা ধলেশ্বরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা ধলেশ্বরী
নির্মাতা: হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি
নির্মাণের সময়: ১৮ অক্টোবর, ১৯৭৯
অভিষেক: ২৯ অক্টোবর, ১৯৮০
অর্জন: ১৪ মে, ২০১০
কমিশন লাভ: ৫ মার্চ, ২০১১
মাতৃ বন্দর: মোংলা
শনাক্তকরণ:
  • এফ৩৬
  • আইএমও নাম্বার: ৭৯২০০০৩
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: ক্যাসল-শ্রেণীর কর্ভেট
ওজন: ১,৪৩০ টন
দৈর্ঘ্য: ৮১ মিটার (২৬৬ ফু)
প্রস্থ: ১১.৬ মিটার (৩৮ ফু)
গভীরতা: ৩.৬ মিটার (১২ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × রাস্টন ১২আরকেসি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ডিজেল,
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ:
  • ১৯ নট (৩৫ কিমি/ঘ; ২২ মা/ঘ) সর্বোচ্চ,
  • ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) সাধারণ
লোকবল: ৪৫ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • টাইপ ৩৬০ সার্ফেস সার্চ র‍্যাডার ই/এফ ব্যান্ড;
  • টাইপ ৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল রাডার (প্রধান গান এর জন্য);
  • কেলভিন হিউগজ শার্প আই সার্ভেলেন্স র‍্যাডার এস ব্যান্ড;
  • কেলভিন হিউগজ শার্প আই নেভিগেশন র‍্যাডার এক্স ব্যান্ড
রণসজ্জা:
  • ১ × এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি নেভাল গান;
  • ৪ × সি-৭০৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: হেলিকপ্টার ডেক

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) ধলেশ্বরী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি ক্যাসল-শ্রেণীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কর্ভেট। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বানৌজা ধলেশ্বরী জাহাজটির নির্মাণকাজ ১৮ অক্টোবর, ১৯৭৯ সালে স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিনের হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক শুরু হয়। ২৯ অক্টোবর, ১৯৮০ সালে জাহাজটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। জাহাজটি রাজকীয় নৌবাহিনীতে ২৭ অক্টোবর, ১৯৮১ সালে এইচএমএস লিডস ক্যাসল হিসাবে কমিশন লাভ করে। জাহাজটি ১৯৮১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রাজকীয় নৌবাহিনীতে বহুমুখী দায়িত্ব পালন করে এবং ফকল্যান্ডস যুদ্ধে। পরবর্তিতে এপ্রিল, ২০১০ সালে জাহাজটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট বিক্রয় করা হয়। ১৪ মে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি অধিগ্রহণ করে। ২১ মে, ২০১০ সালে জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আপগ্রেড ইনস্টল এর মাধ্যমে একটি বড় সংস্কার কাজের মধ্য দিয়ে যায়, যা ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জাহাজটি একটি দীর্ঘ সফর পারি দিয়ে ২১ জানুয়ারি, ২০১১ সালে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। পরিশেষে ৫ মার্চ, ২০১১ সালে জাহাজটি বানৌজা ধলেশ্বরী নামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।

বানৌজা ধলেশ্বরী ২০১১ সালের নভেম্বরে ল্যাংকাউই ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এক্সিবিশন ২০১১ (লিমা-২০১১) এ যোগ দিতে মালয়েশিয়া যায়।

২০১৩ সালে, জাহাজটি একটি অভ্যন্তরীণ নৌ মহড়ায় চারটি সি-৭০৪ জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং তাদের চারটিই সফলভাবে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে।

২০১৫ সালের ১৯ থেকে ২১ মে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডিফেন্স এক্সিবিশন (আইএমডিইএক্স) এশিয়া-২০১৫-এ অংশ নিতে জে জাহাজটি ৮ মে বাংলাদেশ ত্যাগ করে। জাহাজটি ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাথে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক মহড়া কো-অপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (ক্যারেট) এ অংশ নিয়েছিল।

বানৌজা ধলেশ্বরী ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৬ মার্চ থেকে ১৩ মার্চ, ২০১৮ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সামুদ্রিক মহড়া, দশম অনুশীলন মিলানে অংশ নিয়েছিল। জাহাজটি ২০১৮ সালের ৩ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে পোর্ট ব্লেয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

২৪ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখে বানৌজা ধলেশ্বরী ১৪তম আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনী ও সম্মেলন (আইডিইএক্স)-২০১৯ এবং ৫ম নৌ প্রতিরক্ষা প্রদর্শনী (এনএভিডিইএক্স)-২০১৯-এ অংশ নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে মোংলা ত্যাগ করে। জাহাজটি ১২ মার্চ, ২০১৯ এ দেশে ফিরে আসে।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

বানৌজা ধলেশ্বরী জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৮১ মিটার (২৬৬ ফু), প্রস্থ ১১.৫ মিটার (৩৮ ফু) এবং গভীরতা ৩.৬ মিটার (১২ ফু)। জাহাজটির পূর্ণ অবস্থায় ওজন ১,৪৩০ টন (১,৪১০ লং টন)। জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ক্ষমতা সম্পন্ন রাস্টন ১২আরকেসি ডিজেল ইঞ্জিন। যার ফলে জাহাজটি সর্বোচ্চ ১৯ নট (২২ মা/ঘ; ৩৫ কিমি/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ১২ নট (১৪ মা/ঘ; ২২ কিমি/ঘ) গতিতে ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি) সমুদ্র এলাকা জুড়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। এছাড়াও, জাহাজটিতে হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য ডেক ল্যান্ডিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

বানৌজা ধলেশ্বরী জাহাজটির উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং গভীর সমুদ্রে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ, চোরাচালান রোধ এবং জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ১টি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি নেভাল গান;
  • ৪টি সি-৭০৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ২টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বানৌজা ধলেশ্বরী এবং বিজয় - কমিশনিং অনুষ্ঠান" (পিডিএফ)প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১২ 
  2. "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ০৭ (সাত) বছরের অগ্রগতির তথ্য প্রচারের ব্যবস্থাকরণ সম্পর্কিত" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৪-০৭। 
  3. "Sailing under a different flag – former Royal Navy vessels serving with other navies | Navy Lookout"www.navylookout.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭ 
  4. Oryx। "Ship Lore: The Story of Bangladesh's Castle Class Corvettes"Oryx। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৬ 
  5. "Bangladesh Naval Ship ! | পশুর নদীতে নেভির জাহাজের টহল কার্যক্রম। । | By SeVen Seas | Facebook"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১১ 
  6. "নৌ বাহিনীর কুইক রেসপন্স | Bangladesh Navy | Cyclone Mocha | Relife | Somoy TV" 
  7. "BNS Dhaleshwari arrives at port of Colombo" 
  8. "bns dhaleshwari departs colombo harbour"