টেমপ্লেট:প্রবেশদ্বার:জ্যোতির্বিজ্ঞান/নির্বাচিত/এপ্রিল ২০০৭

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আজ থেকে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধারণাটিকেই ভৌত বিশ্বতত্ত্বে মহাবিস্ফোরণ বা বৃহৎ বিস্ফোরণ বলে বোঝানো হয়। বিজ্ঞানী এডুইন হাবল প্রথম বলেন, দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের বেগ একসাথে করে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ফ্রিডম্যান-লেমাইট্‌র নকশা অনুসারে এটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই তত্ত্বসমূহের সাহায্যে অতীত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সমগ্র মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন বিন্দু অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এই অবস্থায় সকল পদার্থ এবং শক্তি একটি অতি উত্তপ্ত এবং ঘন অবস্থায় ছিল। কিন্তু এই অবস্থার আগে কি ছিল তা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন ঐক্য নেই। অবশ্য সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে এর আগের সময়ের ব্যাখ্যার জন্য মহাকর্ষীয় ব্যতিক্রমী বিন্দু নামক একটি শব্দের প্রস্তাব করেছে।

মহাবিস্ফোরণ শব্দটি স্থূল অর্থে প্রাচীনতম একটি বিন্দুর অতি শক্তিশালী একটি বিস্ফোরণকে বোঝায় যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, আবার অন্যদিকে এই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও গঠন নিয়ে বিশ্বতত্ত্বে যে মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে তাকেও বোঝায়। এর মাধ্যমেই মহাবিশ্বের প্রাচীনতম বস্তুসমূহের গঠন সম্পর্কে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, যার জন্য মহাবিস্ফোরণ মতবাদের পরই আলফার-বেথে-গ্যামো তত্ত্ব প্রণীত হয়েছে। মহাবিস্ফোরণের একটি উল্লেখযোগ্য ফলাফল হল, বর্তমানকালে মহাবিশ্বের অবস্থা অতীত এবং ভবিষ্যতের অবস্থা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। এই তত্ত্বের মাধ্যমেই ১৯৪৮ সালে জর্জ গ্যামো অনুমান করতে পেরেছিলেন যে মহাজাগতিক ক্ষুদ্র তরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের (cosmic microwave background radiation - CMB) অস্তিত্ব রয়েছে। ১৯৬০-এর দশকে এটি আবিষ্কৃত হয় এবং স্থির অবস্থা তত্ত্বকে অনেকটাই বাতিল করে মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বকে প্রমাণ করতে সমর্থ হয়।