চট্টগ্রাম-ঢাকা তেল পাইপলাইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চট্টগ্রাম-ঢাকা তেল পাইপলাইন
অবস্থান
দেশ বাংলাদেশ
হইতেচট্টগ্রামের পতেঙ্গার গুপ্তখাল
অতিক্রম করেনদী ও সমতলভূমি
পর্যন্তঢাকার ফতুল্লা
সাধারণ তথ্য
ধরনতেল পরিবহন
অবস্থানির্মাণাধীন
নিয়ন্ত্রণকারীবাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন
নির্মাণ শুরু২০১৬
অনুমোদন২০২২
কারিগরী তথ্য
দৈর্ঘ্য২৫০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল)
সর্বোচ্চ নির্গমনবছরে ৩০ লাখ মেট্রিক টন যা পরবর্তীতে ৫০ লাখ টনে উন্নিত করা যাবে

চট্টগ্রাম-ঢাকা তেল পাইপলাইন বা ঢাকা-চট্রগ্রাম তেল পাইপলাইন হচ্ছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার পতেঙ্গার গুপ্তখাল থেকে ঢাকার কাছে ফতুল্লা তেল ডিপো পর্যন্ত তেল পরিবহনের লক্ষ্যে নির্মাণাধীন একটি পাইপলাইন। পাইপলাইনটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২২ সালে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

নিরাপদে এবং কম খরচ ও সময়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম-ঢাকা তেল পাইপলাইন প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। পাইপলাইন চালু হলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরাপদ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে জ্বালানি তেল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। দেশের মোট জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ তেল পরিবহন হয় নৌপথে। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর প্রায় ২০০টি কোস্টাল ট্যাঙ্কার নিয়োজিত রয়েছে। দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ছে। তবে অদূর ভবিষ্যতে চাহিদার বিপরীতে নৌপথে দ্রুত পরিবহন সম্ভব হবে না। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে প্রায় নাব্যতা সঙ্কট দেখা দেয়। তাতে স্বাভাবিক জ্বালানি তেল পরিবহন বিঘ্নত হয়। বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে মোট ব্যবহার হয় ৪২ শতাংশ। যার পুরোটাই চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল, ফতুল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে নেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়ক পথে পরিবহন করা হয়। এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত বিপণন কোম্পানিগুলো শ্যালো ড্রাফট ট্যাঙ্কারযোগে উত্তরবঙ্গের বাঘাবাড়ি, চিলমারী ও সাচনা বাজার ডিপোতে জ্বালানি তেল পাঠায়।[২] নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। অবরোধ, ধর্মঘটের মত কর্মসূচিতে ব্যাহত হয় জরুরি এ জ্বালানি পরিবহন। এসব বিবেচনায় নিয়ে জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ী ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক এ প্রকল্পটি বিগত ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেক-এ পাস হয়। তখন প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে নানা কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এখন প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের জন্য ১৯টি উপজেলার ৪৩৭ একর জমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল করা হচ্ছে।

প্রকল্পের মেয়াদ[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন শীর্ষক এ প্রকল্পটি বিগত ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেক এ পাস হয়। তখন প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০২০ সালে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।[৩]

স্টেশনসমূহ[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এলপিই কোটেড পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রামের গুপ্তখাল থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল-ফতুল্লা পর্যন্ত পাইপলাইন হবে। এর পাশাপাশি কুমিল্লা ডিপো থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত আরও ৬০ কিলোমিটার একটি শাখা পাইপলাইন বসানো হবে। সেই পাইপলাইন দিয়ে চাঁদপুর ডিপোতে যাবে জ্বালানি তেল। চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন দিয়ে দেশের মোট জ্বালানির প্রায় ৪০ শতাংশ পরিবহন করা হবে। বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যাবে। তবে বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী আপাতত ৩০ লাখ মেট্রিক টন সরবরাহ করা হবে। ঢাকার অদূরে গোদনাইল-ফতুল্লা ডিপো থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে জ্বালানি তেল যাবে। কুমিল্লা ডিপো থেকে কুমিল্লা ও ফেনী জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।[৪] পাইপলাইন দিয়ে প্রধানত ডিজেল সরবরাহ করা হবে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি পাইপ লাইন প্রকল্পে 'আলো'"দৈনিক আজাদী। ২০২১-১০-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২০ 
  2. সেলিম, রফিকুল ইসলাম। "বসছে পাইপ লাইন"দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২০ 
  3. "চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে ঢাকায় যাবে জ্বালানি তেল"www.sunnews24x7.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২০ 
  4. "কুমিল্লায় হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ তেল ডিপো, বদলাচ্ছে ৬৭ কিমি রুট"banglanews24.com। ২০২০-০২-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২০