কেরকাউনের নেক্রোপলিস

কেরকোয়ানের সমুদ্র উপকূল দৃশ্য

কেরকাউনের নেক্রোপলিস একটি প্রাচীন কবরস্থান যা উত্তর-পূর্ব তিউনিসিয়ার পুনিক শহরের কেরকাউনের প্রায় ১.৫ কিমি (০.৯৩ মা) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। নেক্রোপলিস সমুদ্রতীরবর্তী পাহাড়ে স্থাপিত খিলানগুলির একটি সিরিজ, চারটি প্রাথমিক কবর এবং আশেপাশের একটি সমাধিক্ষেত্র নিয়ে গঠিত। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো কেরকোয়ান এবং এর নেক্রোপলিসকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষণা করেছিল, কারণ "এটি ফিনিসিও-পুনিক শহরের একমাত্র উদাহরণ হিসাবে রয়ে গেছে।"

১৯২৯ সালে স্থানীয় একজন ইসলামিক স্কুলশিক্ষক এই নেক্রোপলিসটি আবিষ্কার করেছিলেন। এই স্কুলশিক্ষক সমাধিতে সমাধিস্থ সম্পদের একটি বড় ভাণ্ডার খুঁজে পেয়েছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবানটি তিনি গুপ্তধন শিকারি এবং সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করেছিলেন। বিক্রিত গুপ্তধনের মধ্যে বিভিন্ন গয়না, সিরামিক এবং স্কারাব রত্ন ছিল। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনেক বস্তু এবং খুব ভারী একটি বড় মৃৎপাত্র সমাধিতে ফেলে রাখা হয়েছিল। কিছু সময় পরে, স্কুল শিক্ষক তার সম্পদের উৎস একজন অনুসন্ধানকারী আইন কর্মকর্তার কাছে প্রকাশ করার আগে পর্যন্ত নেক্রোপলিসের আবিষ্কার আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করা হয়নি।

এরপর থেকে ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা এটি আরও খনন করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জিনিসপত্রের মূল্য অনেক কম ছিল, যা স্কুলশিক্ষকের লুটপাট এবং তার পরে কবর ডাকাতদের ছিনতাই থেকে অবশিষ্ট ছিল: হাড়, ডিম, বেদি, তাবিজ, ব্রোঞ্জের মুদ্রা, ক্ষুর, প্রসাধন সামগ্রী, অবসিডিয়ান এবং বেসাল্টের ধ্বংসাবশেষ এবং কানের দুল। ব্যতিক্রমগুলির মধ্যে রয়েছে একটি প্রাচীন গ্রীক সিগনেট রিং; একটি জ্যাসপার স্কারাব যা একটি পশুবাদী মিশরীয় দেবতাকে চিত্রিত করে; এবং বিরল সুগন্ধি ফ্লাস্কের একটি সেট, যা ফ্রান্সের গ্রাসে ফ্র্যাগনার্ড জাদুঘরের বলে দাবি করা হয়েছিল। নেক্রোপলিসটি থেকে আজ অবধি পাওয়া সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন হলো একটি লাল রঙের সারকোফ্যাগাস যা একটি মহিলার আকৃতিতে একটি আচ্ছাদন যা দেবী ইশতার (Astarte), মৃতদের রক্ষাকারী বা তার উপাসকদের একজন হিসাবে চিহ্নিত। মহিলাটি একটি পোশাক পরিহিত এবং একটি পবিত্র মুকুট পরেন যা পোলোস নামে পরিচিত। তিনি লাল, নীল এবং হলুদ প্লাস্টারে আবৃত, এবং - তার পা বাদে - পুরোপুরি আবৃত। সারকোফ্যাগাসটি এখনও বিদ্যমান একমাত্র পরিচিত পিউনিক কাঠের খোদাইগুলির মধ্যে একটি হিসাবে মূল্যবান; এই কারণে, এটি আবিষ্কারের পরপরই মেরামতের জন্য সুইজারল্যান্ডের জুরিখে নিয়ে যাওয়া হয়। যখন সন্ধানের খবর ছড়িয়ে পড়ে, তখন তিউনিসিয়ার প্রেস দ্বারা খোদাই করা মহিলাটিকে "কেরকাউনের রাজকুমারী" বলে অভিহিত করা হয়েছিল। সারকোফ্যাগাস এখন কেরকাউন সাইট মিউজিয়ামে আছে।