এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
SOS Hermann Gmeiner College
এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজ
অবস্থান
মানচিত্র

,
১২১৬

তথ্য
প্রতিষ্ঠাকাল১৯ জানুয়ারি, ১৯৮৬
প্রতিষ্ঠাতাহারম্যান মেইনার
বিদ্যালয় বোর্ডমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা
ইআইআইএন১০৮২১৫ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
অধ্যক্ষরাফিয়া আখতার
শ্রেণীপ্লে থেকে দ্বাদশ শ্রেণী
লিঙ্গসহশিক্ষা
বয়সসীমা৪-১৮
শিক্ষার্থী সংখ্যা১১০০
ভাষাবাংলা
ক্যাম্পাসমিরপুর-১৩
শিক্ষায়তন২ একর (৮,১০০ মি)
ক্যাম্পাসের ধরনশহর
হাউসদুইটি (হকস্‌ ও ঈগলস্‌)
ক্রীড়াফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, টেবিল টেনিস, হ্যান্ডবল, ব্যাডমিন্টন
প্রকাশনাকলেজ বার্ষিকী ‘শতদল’
ফোন+৮৮০২৯০০০০১৬
ওয়েবসাইটwww.soshgcdhaka.edu.bd

এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজ বাংলাদেশে অবস্থিত একটি কলেজ। এটি ঢাকার মিরপুরে (মিরপুর-১৩) অবস্থিত। ১৯৮৬ সালে এ কলেজটি ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এসওএস কিন্ডারডর্ফ ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম হিসেবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরো অনেকগুলো দেশে এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার এই কলেজেটিতে প্রিপারেটরি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে এবং একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭১ সালে নয় মাসব্যাপী যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এমন এক মানবিক সংকটে পড়ে যা বর্ণনার বাইরে। জাতির সংকটকালীন সময়ে, অস্ট্রিয়ান সমাজসেবী ডঃ হারমান মেইনার ১৯৭২ সালে সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে আসেন।

ড. হারম্যান মেইনার সদ্য স্বাধীন জাতির এতিমদের জন্য একটি শিশু পল্লী প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে প্রস্তাব দেন। বঙ্গবন্ধু সেই প্রস্তাবে সম্মত হন যা শিশু পল্লী এবং পরবর্তীকালে কলেজ প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে, তৎকালীন শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ কার্যক্রম শুরু করার জন্য ১৭ মে, ১৯৭২ সালে সংস্থাটির সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।

শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য আবেদন সাপেক্ষে প্রাথমিক লটারি এবং পরবর্তীতে বাছাই সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যায়। এখানে একজন শিক্ষার্থী প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। স্কুল শাখায় দক্ষ শিক্ষকদের সংস্পর্শে শিক্ষার্থীরা ১ম থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারবেন।

৮ম শ্রেণির পর নিম্ন-মাধ্যমিক এর ফলাফল এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীরা নিজ পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞান অথবা ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন। এক্ষেত্রে সীমিত আসন এর বিপরীতে নিম্ন-মাধ্যমিকের ফলাফল এবং লিখিত-মৌখিক বাছাই এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। দুটি বিজ্ঞান বিভাগের শাখা এবং একটি ব্যবসা শিক্ষার শাখার মাধ্যমে মাধ্যমিকের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সাধারণ গনিত, উচ্চতর গনিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান সহ বিভিন্ন বিষয়ে একাধিক শিক্ষক পাঠদান করে থাকেন।

মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ এর পর সরকারের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসারে উচ্চ-মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। কলেজ শাখায় শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগ এর শিক্ষার্থীরা ভর্তি আবেদন করতে পারেন। উচ্চ-মাধ্যমিকের পাঠদানের জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী নিয়োজিত থাকেন।

সহশিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ভিত্তিক অলিম্পিয়াড, সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, গান, নাচ এবং অন্যান্য ক্রীড়া কার্যক্রমে যোগ দিতে উৎসাহিত করা হয়। প্রতি শ্রেণীতে নির্দিষ্ট সময় পর পর শ্রেণী ক্যাপ্টেন নির্ধারণ ও দায়িত্ব পালনের জন্য এক বছরের জন্য বছরান্তে নবম শ্রেণী থেকে দুই জন (ছেলে এবং মেয়ে) স্কুল প্রিফেক্ট এবং একাদশ শ্রেণী থেকে দুইজন (ছেলে এবং মেয়ে) কলেজ প্রিফেক্ট নির্বাচিত করা হয় ।

এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজ ২০০৪ সালে হারম্যান মেইনার বিজ্ঞান ক্লাব এবং হারম্যান মেইনার বিতর্ক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে যাতে বিজ্ঞান-ভিত্তিক ক্রিয়াকলাপ সহজতর করা যায় এবং অঙ্গনে বিতর্কের ধারণার বিকাশ ঘটে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে ২০০৯ সালে গণিত ক্লাব, ভাষা ক্লাব ও সাংস্কৃতিক ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও প্রতি বছর একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও ক্লাবগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় একটি কলেজ ফেস্ট আয়োজন করা হয়। উক্ত কলেজ ফেস্টে গণিত অলিম্পিয়াড, সুডোকু, বিতর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

হারম্যান মেইনার বিজ্ঞান ক্লাব দেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞান ক্লাবগুলির মধ্যে একটি জাতীয় পর্যায়ের সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা এবং অলিম্পিয়াডে তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রকাশ করে।

প্রতিষ্ঠানটি দেশের সেরা বানানবিদদের একজনকে পেয়েছে যিনি বাংলাদেশের শীর্ষ বিশটি বানানবিদদের মধ্যে স্থান পেয়েছেন। সংগঠনের ছাত্ররা আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে।