এসএমএস ফ্রেড্রিক কার্ল
ইতিহাস | |
---|---|
জার্মান সাম্রাজ্য | |
নাম: | ফ্রেড্রিক কার্ল |
নামকরণ: | প্রিন্স ফেডরিখ কার্ল |
নির্মাতা: | ব্লম এন্ড ভস, হামবুর্গ |
মোট খরচ: | ১৫.৬৬৫.০০০ mark |
ইয়ার্ড নম্বর: | ১৫৫ |
নির্মাণের সময়: | ১৯০১ |
অভিষেক: | ২১শে জুন ১৯০২ |
কমিশন লাভ: | ১২ই ডিসেম্বর ১৯০৩ |
নিয়তি: | Mined and sunk ১৭ নভেম্বর ১৯১৪ |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | Prinz Adalbert-শ্রেণী cruiser |
ওজন: |
|
দৈর্ঘ্য: | ১২৬.৫ মি (৪১৫ ফু ০.৩১ ইঞ্চি) |
প্রস্থ: | ১৯.৬ মি (৬৪ ফু ৩.৬৫ ইঞ্চি) |
ড্রাফট: | ৭.৪৩ মি (২৪ ফু ৪.৫২ ইঞ্চি) |
প্রচালনশক্তি: | ১৭,২৭২ ihp (১২,৮৮০ কিওয়াট), three shafts |
গতিবেগ: | ২০.৪ নট (৩৮ কিমি/ঘ) |
সীমা: | ৫,০৮০ নটিক্যাল মাইল (৯,৪১০ কিমি; ৫,৮৫০ মা) at ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) |
লোকবল: | ৩৫ অফিসার, ৫৫১ লোক |
রণসজ্জা: |
|
অস্ত্র: |
|
এসএমএস ফ্রেড্রিক কার্ল ছিল একটি জার্মান সাঁজোয়া যুদ্ধজাহাজ যা নির্মিত হয় ১৯ শতকের প্রথমদিকে ইম্পেরিয়াল জার্মান নেভির জন্য। এটি ছিল প্রিঞ্জ এডেলবারট ক্লাসের দ্বিতীয় জাহাজ। এটি নির্মিত হয়েছিল হামবুর্গের ব্লম এন্ড ভস শিপইয়ার্ডে। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯০১ সালে এবং শেষ হয় ১৯০৩ সা্লের ডিসেম্বরে যাতে লেগেছিল প্রায় ১৫,৬৬৫,০০০ মার্ক্স। এই জাহাজটির ছিল চারটি ২১ সেমি (৮.৩ ইঞ্চি) অস্ত্রযুক্ত মেইন ব্যাটারি এবং এটি সর্বোচ্চ ২০.৪ নট (৩৭.৮ কিমি/ঘ; ২৩.৫ মা/ঘ) বেগে ছুটতে সক্ষম ছিল।
জাহাজটি জার্মান নৌবহরে যুক্ত হয় তার টর্পেডো ট্রেনিং জাহাজ হিসেবে ১৯০৯ সালে কমিশন পাবার পূর্বেই। ১৯১৪ সালের আগস্টে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে একে পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে নামানো হয় বাল্টিক সাগরে রিয়ার এডমিরাল বেহরিং-এর ফ্ল্যাগশিপ হিসেবে। এর যুদ্ধজাহাজ হিসেবে কর্মক্ষমতা শেষ হয়ে যায় যখন এটি একজোড়া রাশিয়ান মাইনের আক্রমণে পড়ে মেমেলে স্থানাঙ্ক: ৫৫°৪১′ উত্তর ২০°১১′ পূর্ব / ৫৫.৬৮৩° উত্তর ২০.১৮৩° পূর্ব। মাইনের আঘাতে জাহাজটির ভয়াবহ ক্ষতিসাধন হয়, যদিও জাহাজটি খুব ধীরে ডুবার কারণে বেশিরভাগ ক্রু'ই জাহাজ থেকে নিরাপদে নেমে যেতে সক্ষম হয়; শুধু সাতজন এই ঘটনায় নিহত হন।
নির্মাণ [সম্পাদনা]
ফ্রেড্রিক কার্লেকে অর্ডার দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিকভাবে ইরসাজ কনিগ উইলহেম নামে এবং এটি তৈরি হয়েছিল ব্লম এন্ড ভস নামক হ্যামবার্গে অবস্থিত শিপইয়ার্ডে ১৫৫ নম্বর নির্মাণ নম্বরে।[১][Note ১] এই জাহাজের তলি পাতা হয়েছিল ১৯০০ সালে এবং তা অবশেষে পানিতে যাত্রা করে ১৯০২ এর ২২শে জুন। যদিও বিভিন্ন ফিটিং কাজ সম্পন্ন হয় ১২ ডিসেম্বর, ১৯০৩ এ।[২] এর নির্মাণে জার্মান সরকারকে খরচ করতে হয় প্রায় ১৫,৬৬৫,০০০ গোল্ডমার্ক।[১]
ফ্রেড্রিক কার্ল নির্মাণের সময় ছিল ৯,০৮৭ টন (৮,৯৪৩ লং টন; ১০,০১৭ শর্ট টন) এবং মালবহনকৃত অবস্থায় ৯,৮৭৫ টন (৯,৭১৯ লং টন; ১০,৮৮৫ শর্ট টন), যার দৈর্ঘ্য ছিল ১২৬.৫ মি (৪১৫ ফু), একটি বীম ১৯.৬ মি (৬৪ ফু) এবং ৭.৪৩ মি (২৪.৪ ফু) ড্রাফ্ট সম্মুখে। এর তিনটি উলম্বিক ট্রিপল এক্সপানশন ইঞ্জিন ( বাষ্পীয় ইঞ্জিন) প্রায় ১৭,২৭২ indicated horsepower (১২,৮৮০ কিওয়াট)* ক্ষমতালাভ করতে সক্ষম ছিল এবং সর্বোচ্চ ২০.৪ নট (৩৭.৮ কিমি/ঘ; ২৩.৫ মা/ঘ) গতিতে যেতে সক্ষম। এটি ১,৬৩০ টন (১,৬০০ লং টন; ১,৮০০ শর্ট টন) কয়লা বহন করতে সক্ষম যা সর্বোচ্চ ৫,০৮০ নটিক্যাল মাইল (৯,৪১০ কিমি; ৫,৮৫০ মা)* পাড়ি দিতে সাহায্য করবে ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)[১] গতিতে ।
এটি সজ্জিত ছিল চারটি ২১ সেমি (৮.৩ ইঞ্চি) বন্দুক দিয়ে যা দুইটি যমজ সারিতে (gun turrets) অবস্থিত ছিল জাহাজের প্রতিদিকে। এছাড়াও এতে ১০টি ১৫ সেমি (৫.৯১ ইঞ্চি) SK L/40 বন্দুক, ১২ টি ৮.৮ সেমি (৩.৪৬ ইঞ্চি) বন্দুক এবং ৪টি ৪৫ সেমি (১৮ ইঞ্চি) নিমজ্জিত টর্পেডো টিউব , যার একটি গলুইয়ে এবং একটি পিছনভাগে এবং দুইটি দুই বিমে অবস্থিত ছিল।[১]
কর্ম ইতিহাস[সম্পাদনা]
ফ্রেড্রিক কার্ল নৌবাহিনীতে যোগদান করে ১২ ডিসেম্বর, ১৯০৩ সালে তার কমিশন পাবার পরপরই।[৩] একে সক্রিয় নৌবহরের ক্রুজার ডিভিশনের ১নম্বর সাব ডিভিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়। Frauenlob, Arcona এবং Hamburg এর মতো হাল্কা ক্রুজারের সাথে ফ্রেড্রিক কার্ল এর সাবডিভিশনকেও যোগ করা হয় স্কয়াড্রন ১ এ। ফ্রেড্রিক কার্ল ছিল রিয়ার এডমিরাল স্মিটের (Schmidt) ফ্ল্যাগশিপ, যিনি ছিলেন ক্রুজার ডিভিশনের কমান্ডার। একটি দ্বিতীয় সাবডিভিশন ও যোগ করা হ্য় স্কয়াড্রন ২ এর সাথে যাতে ছিল একটি অস্ত্র সজ্জিত ক্রুজার এবং তিনটি হাল্কা ক্রুজার। [৪] ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯০৬-এ ফ্রাঞ্জ ভন হিপার জাহাজের কমান্ড গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে ফ্রেড্রিক কার্লে থাকা বন্দুকযোদ্ধারা শ্রেষ্ঠ নিশানাবাজ বহর হিসেবে কাইজার পুরস্কার লাভ করে ১৯০৭-এ। হিপার ১৯০৮ সাল পর্যন্ত এই জাহাজকে নেতৃত্ব দেন।[৫]
ফ্রেড্রিক কার্ল মার্চ ১, ১৯০৯ পর্যন্ত নৌবহরে সক্রিয় ছিল যখন একে টর্পেডো ট্রেনিং এর জন্য নিয়ে চলে আসা হয়। পরবর্তীতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একে পুনরায় সক্রিয় যুদ্ধে নিয়গ দেওয়া হয় ক্রুজার ডিভিশনে বাল্টিক সাগরে। [৩][৬] অক্টোবর ১৯১৪ তে ফ্রেড্রিক কার্ল ছিল প্রথম জার্মান যুদ্ধজাহাজ যা সমুদ্রপ্লেন বহন করছিল। প্রাথমিকভাবে জাহাজটি দুইটি প্লেন বহন করছিল এবং এ কাজের জন্য এর কোন আলাদা মডিফিকেশন করা হয়নি। [৭] একে রিয়ার এডমিরাল বেহরিং-এর ফ্ল্যাগশিপ বানানো হ্য়, যিনি ছিলেন বাল্টিক সাগরে জার্মানদের কমান্ডার। স্কয়াড্রনের বেস ছিল ডানযিগের নেউফা'রয়াসেরে। জার্মান নৌ কমান্ডার জানতেন যে ব্রিটিশ সাবমেরিন বাল্টিক সাগরে রয়েছে, তাই তিনি বেহরিংকে আদেশ দেন লিবাউতে রাশিয়ান পোর্ট আক্রমণ করতে যাতে সেটি ব্রিটিশ সাবমেরিন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে না পারে।[৮]
রাশিয়ান নেভি সেসময় বাল্টিক সাগরে মাইন যুদ্ধের সুচনা করেছিল। রাশিয়ানরা মেমেল, পিল্লাউ এবং অন্যান্য জার্মান পোর্টে অক্টোবর ১৯১৪ এ অনেক মাইন পুঁতে রাখে যা জার্মান নেভি টেরও পায়নি।[৯] এই সময়ে ফ্রেড্রিক কার্ল ব্যস্ত ছিল লিবাউতে তার সমুদ্রপ্লেনের কর্মকাণ্ড নিয়ে। [৭] বেহরিং-এর উপর আদেশ ছিল নভেম্বরে লিবাউতে আক্রমণের যা খারাপ আবহাওয়ার কারণে ১৬ তারিখ পর্যন্ত বিলম্বিত হয়। ১৭ তারিখ সকালে ফ্রেড্রিক কার্ল যখন ৩০ নটিক্যাল মাইল বেগে মেমেলের দিকে ধাবিত হচ্ছিল তখন এর সাথে দুইটি রাশিয়ান মাইলের সংঘর্ষ ঘটে। জাহাজটি কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ভেসে থাকতে সক্ষম হয়, যে সময়ে জাহাজের ক্রু রা জাহাজ ত্যাগ করতে পারে। এদিকে অপারেশন পূর্বপরিকল্পিত সময়েই শুরু হয় এবং লিবাউতে ব্লকশিপ ডুবাতে সক্ষম হয়।[৮] ফ্রেড্রিক কার্লের ক্রুরা জাহাজ ত্যাগের পর ৬৩০ এ জাহাজটি ডুবে যায়। [৮][৯] এ ঘটনায় সাতজন মারা যায়। [৩]
মিডিয়ায়[সম্পাদনা]
- ফ্রেড্রিক কার্লের নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনা রাশিয়ান মুভি এডমিরালে ফুটিয়ে তোলা হয়, যেখানে রাশিয়ান এডমিরাল আলেক্সান্ডার কলচাক একটি জাহাজকে রাশিয়ান মাইনফিলডের ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হন।
টীকা[সম্পাদনা]
- পদটীকা
- জার্মান যুদ্ধ জাহাজগুলো প্রভিশনাল নামে অর্ডার করা হতো। নতুন যুক্ত হওয়া জাহাজের জন্য বরাদ্দ হত একটি অক্ষর নাম হিসেবে আর কোন পুরান বা হারান জাহাজের বদলি হিসেবে অর্ডার করা জাহাজের নামের আগে যুক্ত হত "এরসাজ ..জাহাজের নাম...."
- টীকা
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- বই
- Corbett, Julian Stafford; Newbolt, Henry John (১৯২২)। Naval Operations ...: From the Battle of the Falklands to the entry of Italy into the war in May 1915। London: Longmans, Green and Co.।
- Gardiner, Robert; Chesneau, Roger; Kolesnik, Eugene M., সম্পাদকগণ (১৯৭৯)। Conway's All the World's Fighting Ships: 1860–1905। London: Conway Maritime Press। আইএসবিএন 0-85177-133-5।
- Greger, Rene (১৯৬৪)। "German Seaplane and Aircraft Carriers in Both World Wars"। Warship International। Toledo, Ohio: Naval Records Club, Inc.। I (1–12): 87–91।
- Gröner, Erich (১৯৯০)। German Warships: 1815–1945। Annapolis: Naval Institute Press। আইএসবিএন 0-87021-790-9। ওসিএলসি 22101769।
- Halpern, Paul G. (১৯৯৫)। A Naval History of World War I। Annapolis: Naval Institute Press। আইএসবিএন 1-55750-352-4।
- Koop, Gerhard; Schmolke, Klaus-Peter (২০০২)। Vom Original zum Modell: Große Kreuzer Kaiserin Augusta bis Blücher। Bonn: Bernard & Graefe। আইএসবিএন 3-76376-233-7।
- Philbin, Tobias R., III (১৯৮২)। Admiral von Hipper: The Inconvenient Hero। Amsterdam: B. R. Grüner Publishing Co.। আইএসবিএন 90-6032-200-2।
- জার্নাল
- "Naval Notes — Germany"। Journal of the Royal United Service Institution। London: Royal United Service Institution। 48: 1318–1321। ১৯০৪।