উসমানীয় পোশাক-পরিচ্ছদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এক উসমানীয় কর্মকর্তা।

উসমানীয় পোশাক' বা উসমানীয় ফ্যাশন বলতে উসমানীয় সময়ে পরা পোশাকশৈলী ও নকশা বোঝানো হয়ে থাকে।

উসমানীয় যুগ[সম্পাদনা]

উসমানীয় সুলতান প্রথম সুলাইমান একটি চমৎকার কারুকাজখচিত কাফতান এ সজ্জিত হয়ে আছেন।
১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ের একজন স্টাইলিশ তরুণী। সে একটি শালভার (সেলোয়ার), একটি দীর্ঘ, সাদামাটা গোমলেক (শেমিজ) এবং একটি গোড়ালিদীর্ঘ বেগুনি এন্তারি (আলখাল্লা) পরে আছে যার প্রান্তগুলি আঁকড়ে ধরে আছে। তার ইয়েলেক (জ্যাকেট বা ব্লাউজ) এ পশমের আস্তরণ তাকে ধনী এবং উচ্চপদস্থ হিসেবে চিহ্নিত করছে।
সুলতান প্রথম আব্দুল মজিদ

প্রাসাদ ও দরবারে আড়ম্বরপূর্ণ পোশাক পরার রেওয়াজ থাকলেও সাধারণ মানুষ শুধুই শরীর ঢাকার ব্যাপারেই উদ্বিগ্ন ছিল। সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের রাজত্ব থেকে প্রশাসকরা পোশাকের উপর নিয়ন্ত্রণমূলক আইন প্রণয়ন শুরু করেছিলেন। সুলাইমানের শাসনামলে মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি সম্প্রদায়, পাদ্রী, ব্যবসায়ী এবং রাষ্ট্রীয় ও সামরিক কর্মকর্তাদের পোশাকের উপর বিশেষভাবে নিয়ম প্রয়োগ করা হত।

এই সময়ে মানুষ বহির্বাস হিসেবে পরতেন 'mintan' (মিনতান: খাট সদরিয়া), 'zıbın' (যিবিন: আজানুলম্বিত অন্তর্বাস), 'şalvar' (শালভার: সেলোয়ার), 'kuşak' (কুশাক: কোমরে বাঁধা কাপর বা পরিকর), 'potur' (পোতুর: ঢোলা পাজামা), entari বা kaftan (লম্বা আলখাল্লা)। মাথায় পরতেন 'kalpak' (কাল্পাক: প্রাচীন আনাতোলীয় টুপি), অথবা 'sarık' (সারিক: ফেজের উপরে ভারী পাগড়িবাঁধা টুপি); পায়ে পরতেন 'çarık' (চারিক: ত্রিকোণ জুতো), çizme (চিযমে: লম্বা গলার বুট), 'çedik' (চেদিক: একাধিক বেল্টবিশিষ্ট জুতো), 'Yemeni' (ইয়েমেনি: চারিকের মতই)। প্রশাসকমণ্ডলী এবং ধনী লোকেরা পরিধান করতেন পশমের আস্তরণ ও কারুকাজখচিত কাফতান, যেখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা পরতেন 'cübbe' (জুব্বে: জুব্বা, মিডিয়াম লেংথের আলখাল্লা) এবং 'hırka' (হিরকা: খাট আলখাল্লা বা স্যুট), আর নিম্নবিত্ত শ্রেণীর লোকেরা পরতেন কলারবিহীন 'cepken' (জেপকেন: বুক খোলা সদরিয়া) বা 'yelek' (ইয়েলেক: ব্লাউজ)।

মহিলাদের দৈনন্দিন পরিধেয় বস্ত্র ছিল শালভার (ট্রাউজার), গোমলেক (শেমিজ) যা মাঝ-হাঁটু বা গোড়ালি পর্যন্ত নামানো থাকত, ছোট ফিট করা জ্যাকেট যাকে zıbın বলা হয়, এবং স্যাশ বা বেল্ট যা কোমর বা তার ঠিক নীচে বাঁধা হত। লৌকিক কোন অনুষ্ঠানের জন্য, যেমন বন্ধুদের সাথে দেখা করা, মহিলারা পরতেন এনতারি বা কাফতান, একটি দীর্ঘ আলখাল্লা যা zıbın কাটে তৈরী হত কিন্তু একটু লম্বা। যিবিন এবং কাফতান উভয় বস্ত্রেরই কোমরে বোতাম লাগানো থাকত, তার নিচ থেকেই পরা হত স্কার্ট। উভয় পোশাকেরই গলা পর্যন্ত বোতাম ছিল, কিন্তু বেশিরভাগ সময়ে বোতাম লাগানো হত বুকের নিচের দিকে, বুকের উপর দিয়ে বক্ষবন্ধনী খোলা থাকত। এই সব জামাকাপড় উজ্জ্বল রঙের এবং প্যাটার্নযুক্ত হয়ে থাকত। তদুপরী যখন কোন মহিলা বাড়ি থেকে বের হতেন, তখন তার জামাকাপড় ঢেকে রাখতেন গাঢ়, শালীনভাবে কাটা পোশাক দিয়ে যেগুলোর গলা পর্যন্ত বোতাম থাকত। তাছাড়া চুল ও মুখের উপর একজোড়া ওড়না দিয়ে ঢাকা থাকত।

পাগড়ি বা উষ্ণিশ ছিল পুরুষদের সামাজিক অবস্থানের সবচেয়ে শক্তিশালী সূচক। সেসময় জনসাধারণেরা পরতেন "külah" (কুলাহ: ত্রিকোন টুপি) যা 'abani' বা 'Yemeni' দিয়ে মোড়ানো থাকত, আর উচ্চপদস্থ লোকেরা পরতেন নানাপ্রকার প্রশস্ত পাগড়িওয়ালা টুপি।

১৭ শতকের রাজনৈতিক সংকটের প্রতিফলন ঘটে পোশাকে বিশৃঙ্খলা হিসাবে। টিউলিপ যুগে ভোগবিলাশ ও প্রদর্শনীর অত্যধিক বিলাসবহুল বাধ্যতা ১৯ শতক পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ১৮৩০-এর দশকে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ-এর আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টা সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় খাতে প্রভাব ফেলে। তখন 'সারিক'-এর পরিবর্তে শুধু 'ফেজ টুপির' ব্যবহার শুরু হয়। সাবলাইম পোর্ট এ নিযুক্ত কর্মকর্তাগণ ট্রাউজার, 'সেটার' এবং 'পোটিন' পরা শুরু করেন।

নমুনা পোশাক[সম্পাদনা]

মিনতান
যিবিন


তানযিমাত যুগ[সম্পাদনা]

১৯ শতকে 'তানজিমাত' এবং 'মেসরুতিয়েত' সময়কালে, সাধারণ মানুষ তখনও তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের শৈলী বজায় রাখত। ইহা শাসকশ্রেণী এবং উচ্চবিত্ত সমাজের 'রেডিংগোট', জ্যাকেট, কোমরকোট, বয়ুনবাগি (টাই), 'মিনতান', তীক্ষ্ণ-বিন্দু এবং হাই-হিল জুতা পরিধানের সাথে একটি দুর্দান্ত বৈপরীত্য উপস্থাপন করে।

উসমানীয় আমলে 'রাজমঞ্জিল' এবং রাজদরবারের নারীদের পোশাক পরিলক্ষিত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে 'এন্তারি', 'কুশাক', 'শালভার', 'বাশোর্তু', 'ফেরাজে' তেমন পরিবর্তন হতে দেখা যায় নি। ষোড়শ শতকে, মহিলারা পরিধান করতেন দুই স্তরের লম্বা 'এনতারি' এবং 'তূল', এবং মাথায় মখমলের শাল। তাদের আউটডোর পোশাকের তালিকায় ছিল 'ফেরাজে' এবং 'ইয়েলদিরমে'। সপ্তদশ শতকে ইনার 'এন্তারি' পরার ক্ষেত্রে একটি সরলীকরণের আভাস দেখা যায়। তখন সেগুলো পরা হত একটি ছোট-হাতা, কাফতান-আকৃতির পোশাকের নীচে এবং এর সাথে আনুষঙ্গিক উপাদান ছিল বেল্ট।

এ সময় নারীদের পোশাক আরও বেশি জমকালো এবং অসংযত হয়ে উঠে, তখন মেয়েরা চুল খোঁপায় বাঁধত এবং বেণী করা হত। প্রকৃত অর্থে বেণী করা শুরু হয় এই সময়েই। মহিলাদের কাপড় পরিধানের ক্ষেত্রে স্টাইলের সেন্সটি প্রাথমিকভাবে ১৯ শতকে ইস্তাম্বুল এবং ইযমিরের মতো বড় বড় আবাসিক কেন্দ্রগুলিতে শুরু হয়। এরপর মহিলারা ধীরে ধীরে পশ্চিমাকরণ আন্দোলনের সাথে সামাজিক জীবনেও অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। পেরা অঞ্চলটি ফ্যাশনের কেন্দ্রে পরিণত হয়। গ্রিক এবং আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত দর্জিরা প্যারিসের ফ্যাশন অনুসরণ শুরু করে। সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ-এর সময়কালে, 'ফেরাজে'র (একটি আচ্ছাদনকারী ঘরের বাইরে পরার পোশাক, ইহা ঘরের ভিতরে পরার পোশাকের সাথে পরিমিত কাটের ছিল) স্থলে বিভিন্ন শৈলীর 'চারশাফ' কাপড়ের প্রতিস্থাপন হয়। তদুপরী গ্রামীণ মানুষেরা তাদের পোশাকের ঐতিহ্যবাহী শৈলী অব্যাহত রেখেছে।

পশ্চিমা নারীদের পোশাকে উসমানীয় প্রভাব[সম্পাদনা]

Madame de Pompadour portrayed as a Turkish lady in 1747 by Charles André van Loo
Man In Oriental Costume ("The Noble Slav"), oil on canvas, by Rembrandt, 1632. A significant example of European emulation of Ottoman dress for the purpose of portraying a dignified, elite appearance.

উসমানীয় এবং ব্রিটিশদের মধ্যে ইতিহাসজুড়ে সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়া ঘটেছিল। কিন্তু ১৮ শতকে, উসমানীয় সাম্রাজ্যে ইউরোপীয় পর্যটক এবং বিদেশী বাসিন্দাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায় এবং ১৯ শতকে গিয়ে তা বিস্ফোরিত হয়।[১] ফ্যাশন হল বর্ধিত মিথস্ক্রিয়া পরিমাপ করার একটি পদ্ধতি। ইতিহাসে দেখা যায়, ইউরোপীয়দের মধ্যে পুরুষ এবং মহিলাদের পোশাকের মধ্যে আরও বেশি বিভাজনমূলক ছিল। হোস এবং ট্রাউজার ছিল শুধুমাত্র পুরুষদের জন্যই সংরক্ষিত, অন্যদিকে মহিলদের জন্য ছিল স্কার্ট।[২] বিপরীত দিকে, উসমানীয় সাম্রাজ্যে, পুরুষ এবং মহিলাদের পোশাক আরও প্রাচুর্যপূর্ণ ছিল। তবে উভয় দিকেই একটি সাধারণ পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে শালভারের দেখা মিলত, ইহা ছিল সাদা কাপড়ের একটি বিশাল অন্তর্বাস যাকে এখন "হেরেম প্যান্ট" বলা হয়।[৩] উসমানীয় সাম্রাজ্যে ভ্রমণকারী ব্রিটিশ মহিলাদের কাছে শালভার বস্ত্রটি দ্রুত স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে ওঠে, কারণ তারা দেখতে পায় যে ব্রিটিশ মহিলাদের চেয়ে উসমানীয় মহিলাদের বেশি অধিকার পেয়ে থাকে। লেডি মেরি ওয়ার্টলি মন্টেগু (১৬৮৯-১৭৬২), যার স্বামী ছিলেন কনস্টান্টিনোপলে নিযুক্ত একজন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত, তিনি তার "এম্বাসি লেটারস"-এ তার ভ্রমণ সম্পর্কে উল্লেখ করেন যে, উসমানীয় মহিলারা "আইনগত সম্পত্তির অধিকার এবং সুরক্ষায় বেশী অধিকার পেয়ে থাকে যা পশ্চিমা মহিলাদের অধিকারকে অনেক বেশী ছাড়িয়ে গেছে"।[৪] বেশিরভাগ সময়ে এসব নারী পর্যটকেরা উসমানীয় সংস্কৃতির সাথে একটি ঘনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করতেন, মহিলা হওয়ার কারণে, তারা পুরুষ পর্যটকদের তুলনায় অভিজাত মুসলিম হেরেমে সহজে প্রবেশ করতে পারতেন।[৫] ১৯ শতকের শেষের দিকে শালভারের ব্যবহার সফলভাবে পুরো ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ বিভিন্ন নারী ভোটাধিকারী এবং নারীবাদীরা শালভারকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করত। অনেক ব্রিটিশ নারী, যেমন লেডি (জ্যানি) আর্কিবল্ড ক্যাম্পবেল (১৮৪৫-১৯২৩), এবং লেডি অটোলিন (ভায়োলেট অ্যান) মরেল (১৮৭৩-১৯৩৮) শালভার পরতেন "প্রথাগত ব্রিটিশ মান এবং যৌন পার্থক্যকে প্রত্যাখ্যান করার প্রয়াসস্বরূপ।"[৬] শালভারের ব্যবহার ইউরোপ ছাড়িয়ে অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে যখন অ্যামেলিয়া জেঙ্কস ব্লুমার আমেরিকান "ব্লাউজ" তৈরি করতে এই "তুর্কি ট্রাউজার"এর কিয়ৎ পরিবর্তন করে বসেন।[৭]

আরেকটি ক্ষেত্রে উসমানীয় নারীরা পশ্চিমা পোশাকের উপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়, আর তা হল লেয়ারিং এ। প্রাথমিকভাবে, লেয়ারিং ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্যের পূর্বপুরুষদের প্রাত্যহিক ব্যবহারবস্ত্র, যারা ছিল মেষপালক যাযাবর এবং ঘোড়সওয়ার। তাদের পরিবর্তনশীল তাপমাত্রার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে লেয়ার পরিধান করার প্রয়োজন ছিল।[৮] কিন্তু উসমানীয় সাম্রাজ্যের উদ্ভব হওয়ার সাথে সাথে, বিশেষ কিছু সম্প্রদায়ে পোশাকের লেয়ারিং কারও লিঙ্গ, শ্রেণী বা পদমর্যাদাকে আলাদা করার নিয়ামক হয়ে যায়; পাশাপাশি বহু জমকালো কাপড় প্রদর্শন করাও, যা কারো সম্পদ এবং মর্যাদা নির্দেশ করত। লেয়ারিং এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্যও বিদ্যমান ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামিক শিল্পে, বিভিন্ন প্যাটার্নের লেয়ারিং ঐশ্বরিক আদেশের একটি আধ্যাত্মিক রূপককে উপস্থাপন করে যা বোধগম্য বলে মনে না হলেও, আসলে তা পরিকল্পিত এবং অর্থবহ৷[৮]

ইউরোপে, ১৬ শতকে স্কার্টে লেয়ার যুক্ত করার চল শুরু হয়। ১৬ শতকের পূর্বে, স্কার্টে কেবল নীচের অংশে চেরা থাকত, কিন্তু উসমানীয়দের প্রভাবে দেখা যায় ১৬ শতকের স্কার্টগুলিতে নীচে আরেকটি বিপরীত স্তর প্রকাশ করতে স্কার্টের সামনের অংশকে দ্বিখণ্ডিত করা হত। বেশিরভাগই, নিচের লেয়ারটি একটি লেয়ারযুক্ত স্লিভের সাথে সমন্বয় করে দেওয়া হত।[৯] ঝুলন্ত হাতা ব্যবহারও উসমানীয়দের কাছ থেকে ইউরোপীয়রা ধার করে, যদিও ইহা লেয়ারওয়ালা স্কার্টের বহু আগে ইউরোপে প্রবেশ করে। ১২ শতকে, ইউরোপের ধর্মীয় এবং পণ্ডিত লোকেরা তুর্কি-স্টাইলের কাফতানের মতো ঝুলন্ত হাতাযুক্ত কোট পরতেন। এই ঝুলন্ত হাতাগুলির মানে ছিল যে কেউ বাইরের লেয়ারের নীচে কাপড়ের দ্বিতীয় লেয়ারটাও দেখতে পাবে।[৯] যদিও ১২ শতক থেকে ইউরোপে ঝুলন্ত হাতার ব্যবহার শুরু হয়, তবে উসমানীয় স্টাইলটি লেডি মেরি মন্টেগের মুগ্ধতা থেকে পালাতে পারে নি। ১৮ তম শতাব্দী, ১০ মার্চ ১৭১৭ তারিখের একটি চিঠিতে, মারাবাউটের আর্লপত্নী হাফিজ (হাফসা) সুলতান, যিনি ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সুলতান মুস্তাফার প্রিয়পাত্র, তার ব্যাপারে লেডি মেরি লিখেছিলেন: "কিন্তু তার পোশাকটি এতটাই আশ্চর্যজনকভাবে সমৃদ্ধ ছিল যে আমি এটি আপনাদের কাছে বর্ণনা করতে পারব না। তিনি ডোনালমা নামক একটি গেঞ্জি পরতেন, যা ছিল লম্বা হাতা এবং নীচে ভাঁজ করা, অবশ্য কাফতান থেকে আলাদা ছিল। এটি ছিল বেগুনি রঙয়ের কাপড়ের, আকৃতিতে সোজা, এবং প্রতি পাশে মোটা সেট, এটা ছিল পা পর্যন্ত লম্বা এবং গোলাকার হাতাওয়ালা, সেখানে খচিত ছিল সেরা জলের মুক্তো, সবগুলো ছিল একই আকারের যেমনটা সাধারণত তাদের বোতামগুলিতে হয়ে থাকে।"[১০]

প্রজাতন্ত্রের যুগ[সম্পাদনা]

১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে প্রচলিত পোশাক শৈলীগুলি রিপাবলিকান আমলে একটি রূপান্তর পর্যায়ে প্রবেশ করে। এই আমলে ১৯২৫ সালে কাস্তামোনুতে মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক এর নেতৃত্বে 'şapka' (শাপকা) এবং তার পরের 'kılık kıyafet' (কিলিক কিয়াফেত) সংস্কার ইস্তাম্বুলে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। মহিলাদের 'চারশাফ' এবং 'পেচে'র পরিবর্তে কোট, স্কার্ফ এবং শাল চাপিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষেরা হ্যাট, জ্যাকেট, শার্ট, কোমরকোট, টাই, ট্রাউজার এবং জুতা পরা শুরু করে। ১৯৬০-এর দশকের শিল্পায়ন প্রক্রিয়ার সাথে সাথে, মহিলারা কর্মজীবনে প্রবেশ করে এবং দর্জির বদলে রেডিমেড পোশাক শিল্পের প্রতিস্থাপন হয়। বর্তমান সমসাময়িক ফ্যাশনের ধারণা, যেটা সমগ্র বিশ্বেই ছড়িয়ে রয়েছে, তুরস্ক-এও সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই তা স্পষ্ট।

আধুনিক ব্যবহার[সম্পাদনা]

আধুনিক তুর্কি ফ্যাশনবিদ যেমন রিফাত ওজবেক, জেমিল ইপেকচি, ভুরাল গোকচায়লি, ইলদিরিম মায়রুক, সাদিক কিজিলাগাক, হাকান ইলিয়াবান এবং বাহার কোরচান প্রমূখেরা তুর্কি বস্ত্রে ঐতিহাসিক ও উসমানীয় প্রভাব নিয়ে এসেছেন। আর উসমানীয় বা উসমানীয়-প্রভাবযুক্ত নকশা তুর্কি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য অত্যধিক গুরুত্ববহ।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

Religious garb

ধ্রুপদী যুগ

পতনকালীন

Folk costumes in 1873[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

নোট[সম্পাদনা]

  1. Charlotte Jirousek. Ottoman Costumes: From Textile to Identity. S Faroqhi and C. Neumann, ed. Istanbul: Eren Publishing, 2005.
  2. Inal, Onur. "Women's Fashions in Transition: Ottoman Borderlands and the Anglo-Ottoman Exchange of Costumes." Journal of World History 22.2 (2011): 243–72. Web. p. 234
  3. Inal, p. 252
  4. Jirousek, p. 8
  5. Inal, p. 264
  6. Inal, p. 258
  7. Jirousek, p. 9
  8. Jirousek, p. 2
  9. Jirousek, p. 12
  10. Inal, p. 253

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Feyzi, Muharrem। Eski Türk Kıyafetleri ve Güzel Giyim Tarzları 
  • Koçu, Reşat Ekrem (১৯৬৭)। Türk Giyim Kuşam ve Süslenme Sözlüğü। Ankara: Sümerbank। 
  • .Küçükerman, Önder (১৯৬৬)। . Türk Giyim Sanayinin Tarihi Kaynakları। İstanbul: GSD Dış Ticaret AŞ। 
  • Sevin, Nurettin (১৯৯০)। Onüç Asırlık Türk Kıyafet Tarihine Bir Bakış। Ankara: T.C. Kültür Bakanlığı। 
  • .Tuğlac, Pars (১৯৮৫)। Osmanlı Saray Kadınları / The Ottoman Palace Women.। Istanbul: Cem Yayınevi। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]