ইয়াং গুডম্যান ব্রাউন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইয়াং গুডম্যান ব্রাউন
লেখকন্যাথানিয়েল হথর্ন
মূল শিরোনামYoung Goodman Brown
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি

ইয়াং গুডম্যান ব্রাউন হচ্ছে আমেরিকান লেখক ন্যাথানিয়েল হথর্ন এর একটি ছোটগল্প যেটি ১৮৩৫ সালে প্রকাশিত হয়। গল্পটির ঘটনা ১৭শ শতাব্দীর পিউরিট্যান নিউ ইংল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে, যেটি ছিলো হথর্নের গল্পের একটি সাধারণ পরিবেশ। গল্পটি ক্যালভিনিস্ট/পিউরিট্যান বিশ্বাস, যেটি বলে যে সকল মনুষ্যজাতির মধ্যে ভ্রষ্টাচার অস্তিত্বমান থাকে শুধুমাত্র তাদের ছাড়া যাদের নিষ্পাপ জন্ম, সেটিকে উদ্দেশ্য করে লেখা। হথর্ন প্রায়ই তার লেখায় পিউরিট্যান সংস্কৃতির ভণ্ডামি প্রকাশ করার প্রয়াস নেন। গল্পটি প্রতীকী কায়দায় ইয়াং গুডম্যান ব্রাউনের আত্ম-অনুসন্ধানের ভ্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়, ফল হিসেবে সে তার সদ্গুণ এবং বিশ্বাস হারায়।

কাহিনী সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

গল্পটি শুরু হয় সন্ধ্যায় ম্যাসাচুসেটস এর সালেম গ্রামে যেখানে ইয়াং গুডম্যান ব্রাউন তার স্ত্রী ফেইথকে রেখে, যার সাথে তার তিন মাসের বৈবাহিক সম্পর্ক, একটি অজ্ঞাত ভ্রমণে বনের মধ্য দিয়ে যান। ফেইথ তার স্বামীকে সনির্বন্ধ অণুরোধ করেন তার সাথে থাকার জন্যে কিন্তু সে জোর করে বলে যে এই ভ্রমণ এই রাতের মধ্যেই শেষ করতে হবে। বনের মধ্যে তার সাথে একজন বৃদ্ধ লোকের দেখা হয় যার পোশাক এবং দৈহিক অবয়ব ঠিক তারই মত। বৃদ্ধ লোকটি তার সাথে সর্প আকৃতির একটি লাঠিও বহন করছে। তাদের দুইজনের সাথে গুডি ক্লয়েস নামে একজন মহিলার সাথে দেখা হয় যে তার হাঁটা নিয়ে অভিযোগ করেন। গুডি ক্লয়েস ঐ বৃদ্ধ লোকের একজন পরিচিত মহিলা। গুডি ক্লয়েস বৃদ্ধের ঐ সর্প আকৃতির লাঠিটি নিয়ে খুব দ্রুত তার গন্তব্যে পৌঁছে যান।

শহরের অন্যান্য লোকও ঐ রাতে বনের মধ্যে উপস্থিত হয় এবং গুডম্যান ব্রাউন যে দিকে যাচ্ছিলো তারাও ঐ একই দিকে যায়। যখন সে গাছের সারির মধ্য থেকে তার স্ত্রীর কণ্ঠ শোনেন সে জোরে তার স্ত্রীকে ডাকেন কিন্তু কোন সাড়া পান না। তার পর মনে হয় সে যেন উড়ে বনের মধ্যে একটি ফাঁকা যায়গায় উপস্থিত হয় তার মত দেখতে বৃদ্ধ লোকটির দ্বারা তৈরি করা লরেল গাছের ডালের লাঠির সাহায্যে। ফাঁকা যায়গায় এসে সে শহরের অন্যান্য লোককেও খুজে পায় যারা সবাই ঐখানে সমবেত হয়েছে। ঐখানে পাথরের বেদিতে আগুন জ্বালিয়ে নতুন ধর্মান্তরিত দুইজন লোককে সামনে আনা হয় যারা হচ্ছেন গুডম্যান ব্রাউন এবং তার স্ত্রী ফেইথ। শহরের সব লোকের মধ্যে শুধু এই দুইজনই বনের ঐ আচার দ্বারা দীক্ষিত ছিলেন না। গুডম্যান ব্রাউন স্বর্গের আশ্রয় প্রার্থনা করেন তাদের ধর্মান্তর হওয়া বিরত রাখতে কিন্তু সাথে সাথে ঐ দৃশ্য মিলিয়ে যায়।

পরের দিন সকালে গুডম্যান ব্রাউন তার বাড়িতে ফিরে এসে দোটানায় ভোগেন যে, পূর্ববর্তী রাতের ঘটনা কি নাকি স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু ঐ ঘটনার দ্বারা সে গভীরভাবে আন্দোলিত হয় এবং সে যে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ে বাস করে তার সেই বিশ্বাস বিকৃত হয়। সে তার স্ত্রীর প্রতি আস্থা হারায় এবং এর সাথে সে সকল মনুষ্য জাতির প্রতিও আস্থা হারায়। সে দ্বেষী এবং সন্দেহপ্রবণ সিনিকের মত বাস করে এবং তার চারপাশের সবার প্রতি সে খুবই সতর্ক থাকে। গল্পটি শেষ হয় এই উক্তিটির মধ্য দিয়েঃ "And when he had lived long, and was borne to his grave...they carved no hopeful verse upon his tombstone, for his dying hour was gloom."

পটভূমি[সম্পাদনা]

গল্পটি সালেম উইচ ট্রায়ালস্‌ এর সময়ে সেট করা হয়, যার বিচারক ছিলেন হথর্নের দাদার বাবা জন হথর্ন। আমেরিকার সাহিত্য পণ্ডিত জেমস্‌ মেলো এর অনুসারে, হথর্ন তার পূর্বপুরুষের কাজের অপরাধে প্রকোপিত হয়ে গল্পটি লেখেন তার দাদার অভিযোগ মিথ্যা প্রতিপাদন করতে। এতে উইচ ট্রায়ালের জন্য দুইজন কাল্পনিক লোককে অবলম্বন করা হয় যারা ডাইনী ছিলো এবং ডাইনী শিকারে নির্দোষ ভুক্তভুগি ছিলো না।[১] হথর্ন তার এই বংশগত অপরাধ থেকে অণুপ্রাণিত হয়ে তার পারিবারিক নাম পরিবর্তন করেন Hathorne এর সাথে নতুন করে W যোগ করে (বর্তমান নাম- Hawthorne)।[২]

হথর্ন তার লেখায় প্রতিষ্ঠিত মতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন, বিশেষত নিউ ইংল্যান্ডের পিউরিট্যানিজম ও সমসাময়িক অতীন্দ্রিয়বাদে। তার অন্যান্য লেখার মত ইয়াং গুডম্যান ব্রাউনেও সে রহস্যময়তা প্রকাশ করেন।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mellow, James R. Hawthorne in His Times. Boston: Houghton Mifflin Company, 1980: 60. ISBN 0-395-27602-0
  2. McFarland, Philip. Hawthorne in Concord. New York: Grove Press, 2004: 18. ISBN 0-8021-1776-7.
  3. Gray, Richard. A History of American Literature. p. 200